Tuesday, September 22, 2020

আমি

___________ আমি
________ এম এ মাসুদ রানা 

তুমি বলো, আমি আমিত্বেই বিভোর, 
খোলে দেখি না, বলো মনের দোর। 
নিজের ভাবনায় থাকি, এটাই আমার স্বভাব,
সর্বক্ষেত্রে নিজের জন্যে, রাখো অনেক জবাব 
কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত, কষতে থাকো হিসাব।

আমি আমিত্বেই থাকি, এটা তোমার মনের ভুল 
মনের দোয়ার খুলে, দেখি সবারই মনের কূল
অযাচিত হয়ে গেলে, সরাসরি মারে দেয় হুল।
অন্যের তরে কিছু করতে হলে পেতে হয় মাশুল 
আমি যে, সকলের তরে রহিতে চাই সর্বদাই ব্যাকুল।

আমি আমিত্বেই থাকি না জব্দ 
অন্যের তরে কিছু করতে হৃদয়ে হয় শব্দ;
তবুও তো কেহ করতে পারে না কখনো কবজ্ব
সবার কাছাকাছি থাকতে নিজেকে করেছি হেফজ।

তোমার মনের ধারণায়, সঠিক ভাবে ছড়ায় না
তোমার গভীরে থাকে, সর্বদাই অন্য সব ধারণা। 
তোমার তুমিতেই, থাকে বিষন্ন মন মানসিকতা 
তোমার ভাবনায় রাখো, কথার কথা যথাতথা
তোমার মতো করতে পারি না, কখনো বোকাসোকা।

আমি আমিত্বেই থকি না, কখনো বিভোর 
আমি সবই দেখে করি, এই মনকে সবুর।
আমি কখনো কখনো, দেখে করি না দেখার ভান
আমি ভাবি না এতেই, চলে যাবে আমার মান
আমি কারো জন্যও করি, কখনো নিজেকে কোরবান।

আমার আমি

______ আমার আমি
____ এম এ মাসুদ রানা

আমার হারিয়ে যাওয়া কবিতা;
আমার হারিয়ে যাওয়া ছবিটা।
আমার হারিয়ে যাওয়া শৈশব
আমার হারিয়ে যাওয়া কৈশোর।

আমার নষ্ট জীবন ;
আমার ছন্নছাড়া মন।
আমার মনে বাজে করুন সুর,
আমার অতলে আসে বিশ্রী দেবাসুর।

আমার বেহিসাবী ভালবাসা ,
আমার বেসামাল কাছে আসা।
আমার বেমালুম চলন বলন
আমার অগোছালো কথার ধারণ।

আমার আলোকিত হারিয়ে যাওয়া শহর,
আমার আলোকিত জীবনে নেমেছে কহর।
আমার নীল নীলিমায় আঁধারে ঘনঘটা
আমার দিবসে আলোর মাঝে কুয়াশার ছটা।

তুমি এসো মেঘলা আকাশে, মেঘ হয়ে,
তুমি এসো দূঃখ ভরা মনে,  কষ্ট হয়ে।
তুমি এসো ক্লান্ত হৃদয়ে, অবসন্ন হয়ে,
তুমি এসো জরাজীর্ণ দেহে, দূর্বলতা নিয়ে।

ফিরে আসবেই আমার জীবনে, 
আসবে না কেউ স্বাধীনতা হরণে।
অপেক্ষায় আছি তোমায় করবো বরণ
তাই সময়ে অসময়ে করি তোমায় স্মরণ।

Friday, September 18, 2020

উল্টো পাল্টা

উল্টা পাল্টা 

এম এ মাসুদ রানা


উল্টে গেছে শব্দমালা
পাল্টে নিও অর্থমালা।
ভালো বললে মন্দ বুঝো
শান্তি বললে অশান্তি।


ঘৃণা করার পরিবর্তে কি?
ভালবাসার অর্থ বুঝায় না।
দুরে যাওয়ার বিপরীতে
কাছে আসার পথ খুঁজো না।


তুমি আমায় রাখোনি মনে,
আমি তোমায় রাখেছি দমে।
আমার কথা যদি আসে কোন ক্ষণে
বুকের ক্ষত চিহ্ন পরবে তোমার মনে।


অনেক ভাল আছি আমি
না হয় তুমি মানিয়ে নিও।
তুমি আমায় ভুলে গেলে
জানিয়ে দিয়ো পত্র দিয়ে।

প্রতিশোধ

             প্রতিশোধ 
       এম এ মাসুদ রানা

তুমি আমার ক্ষত স্থানে গাচুলি দিয়ে যাও
এটাতে তুমি অনেক সুখ পাও।
ভেবেছো এই স্বভাবে পাবে না জবাব
এতে তো হয় আমার অনেক আজাব
তখনি মনে আনন্দে বলো শাবাশ শাবাশ।

নীল গগনে সূর্যটাও তো থাকে ফাঁকা
কেউ করতে পারে না তার সাথে দেখা।
দেখতে চাইলেও হবে এটা শুধুই বৃথা
যেমন সবাই জানে নিম ফল তিতা।

তুমি আমায় নিয়ে যাও অজানা কোন আকাশে
ফিরিয়ে দাও ফিরে আসার ঠিকানা দাও না শেষে,
আমি পথহারা হয়ে, নিরাশ হয় না অবশেষে,
ফিরে আসতে চেষ্টা করি অজানা পথ দেখে দেখে
তখনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠো নেচে নেচে।

তুমি আমায় ক্ষত স্থান বিক্ষত করে যাবে,
তোমায় আমি ছেড়ে দিবো সহজে কিভাবে,
আমিও প্রতিশোধ নিবো কোন এক সময়ে,
ভেবো না নিরব আছি, শুধু তোমার ভয়ে।
আমিও নিবো প্রতিশোধ চরম প্রতিশোধ
আমার থাকবে না তখন কোন হিতাহিত বোধ
শত চেষ্টা করেও করতে পারবে না প্রতিরোধ।

অভিসারিণী

____ অভিসারিণী
   এম এ মাসুদ রানা

তোমার অন্তঃসত্ত্বায় অন্তঃপুরে
যখনি ডাকিলাম মা
তখনি বললে ভুবনে আসবে তুমি
তা হবে না, তা হবে না।

ছুটেছিলে বিদিশায় দুষ্ট নেশায়
মিছে কিছু পাবার আশায়
চলেছিলে আপন মনে অজানা বনে
মাতাল ছিল যৌবন তৃষ্ণায়।

ক্ষণি ক্ষণের আবেগে তোমার
কয়েক মিনিটের সুখ!
তুমি কেন মা দেখতে দিলা না
আমায় ধরনীর মুখ?

এমনি করে তো আসিনি
তোমার গর্ভে আমি!
পৃথিবীতে নাকি সন্তান হয়
জীবনের থেকে দামি?

সুখের তরে কেন তুমি
আমায় গর্ভে নিলে?
সুখের শেষে আমায় কেন
কেটে ফেলে দিলে?

রোজ হাসরে আসবে তুমি
ঠিকই আমার কাছে!
কি বলবে খোদার কাছে
রেখেছো তো বেছে?

আমায় তো মরেছো তুমি
বাঁচিয়ছো আমার মান!
নয়তো সবাই বলতো আমায়
অবৈধ নাজায়েজ সন্তান!

নিষিদ্ধ সুখ পেতে তুমি
আমায় গর্ভে নিলে!
কলঙ্ক থেকে বাঁচতে তুমি
ডাস্টবিনে ছুড়ে দিলে।

তোমার মাতো করনি ওগো'মা
তোমার সাথে অবিচার এমন?
তুমি তাঁর কাছে অমূল্য রতন
সয়ে ছিলো যন্ত্রণা কেমন?

তেমার সাথে করতো যদি
তোমার মাও এমন!
বুঝতে ওগো'মা  তুমি সেদিন
মৃত্যু যন্ত্রণা কেমন!

Thursday, September 17, 2020

রক্তদান

রক্তদান
এম এ মাসুদ রানা

মানুষে মানুষে হচ্ছে বাঁচার লড়াই,
কেহ নাহি গাই মানবতার গান।
চারিদিকে ঝরছে রক্ত করছে চিৎকার
সবাই জানে সবার রক্তের একই আকার।
রক্তদানে আমাদের হয় কত্তো ভয়!
হবে কি কখনো সত্যিকারের মানবতার জয়?
এসো সবাই গাই মানবতার জয়গান
চলো সবাই আমরা করি স্বেচ্ছায় রক্তদান।
রক্তের অভাবে হারায় না যেন কোন প্রাণ
সবার মাঝে থাকুক ভালোবাসা অফুরান।
রক্তে নেই কোন জাত-পাত, ধর্ম কিংবা বর্ণ
এই কথাটি আমাদের জীবন হোক অর্থপূর্ণ।
আমরা সবাই এসে যদি করি রক্তদান
তাহলেই তো বাড়বে এই জাতির মান।
রক্তদানে ফিরে পেতে পারে কেউ প্রাণ
রক্তদানের দিতে পারবে না কোন প্রতিদান
রক্ত দিলে হয় কি কখনো কোন ক্ষতি?
কেন রক্তদানের থাকে অনেক ভয়-ভীতি?
যদি মানুষের মত মানুষ হতে চাও
তবে তুমি সেচ্ছায় রক্ত দাও৷

Sunday, September 13, 2020

অশরীরী প্রেম

অশরীরী প্রেম
এম এ  মাসুদ রানা 

চুপি চুপি করে অবুঝ মন 
প্রেমে পরেছো যখন
মিছে কিছু পাবার আশায়
অভিসারীর কালোমেঘ
নিষিদ্ধ কামনার রং
দেখেছো রঙিন স্বপন
নিভৃত রুদ্ধতার দ্বারে।

ঠোঁটে ঠোঁটে মিলিয়ে নয়
শরীরে প্রনয়ের সাথে নয়
চোখে চোখে দেখা শুধু  নয়
তিব্রতার অনুভূতির অনুভবে;
মনের মাঝে উতল তরঙ্গের তরে;
ছুঁয়ে দিতে হয় প্রেমময়ী মন
রাধাপদ্ম সৌরভে জুটেছিল যেমন।

তুই বালিকা

তুই বালিকা 
এম এ মাসুদ রানা 

বালিকাটি দেখিতেছে প্রাকৃতিক রুপ
আকাশে ছিলো তখন অনেক ধুপ,
বৃষ্টি আসিবে বলে প্রকৃতি হয়েছে চুপ
মেঘ দেখিয়া গৃহস্থালির সব কিছুই চুপ।

বালিকাটি দেখিতেছে বর্ষণের মেঘ
মাঝে মাঝে বলিতেছে তুইও চেয়ে দেখ।
ঘুড়িটা উড়িতেছে না আগে মত বেশ
গগনে থাকিবার আশা হয়েছে তাহার শেষ।

পাখিটা খিদের জ্বালায় করিতেছে চুঁই চুঁই
তখনি শুনিলাম আয় কাছে আয় তুই তুই।

বালিকাটি দেখিতেছে বৃষ্টি ভেজা পাখি
দেখিতে দেখিতে হইয়াছে সজল আঁখি।
পাখিগুলোকে আনন্দ দিয়াছে ফাঁকি
বালিকাটির কপলে নেই আর হাসি
তাহার হৃদয়ে বাজে করুণ সুরে বাঁশি।

স্বপ্ন অয়ন

----------- স্বপ্ন অয়ন ------------
       এম এ মাসুদ রানা

ভুলে ভুলে শুরু হয়েছে জীবন
ভুলে ভুলে হবে হয়তো মরণ,
ভুলের মাঝেও করি তোমায় স্বরণ
কাজের মঝেও থাকে না কোন ধরন।

ভুল দিয়ে জীবন হলো সবে শুরু,
ভুলে ভুলে তো মন করে দুরুদুরু।
আমার কল্পনার মাঝে আছে কল্পনা
এটা নিয়ে করি কত্তো সব জল্পনা,
মনের মাঝে আছে আঁকা কত আল্পনা
মনে যে, স্বপ্ন বুনেছি এটাও অল্প না।

তোর মনের মাঝে আসেনি কোন ভাবনা
আমায় নিয়ে করোনি কোন সাধনা
মনের মাঝে বাঁধানি কোন রকম বসনা
আমারে মনের মাঝে একটুও রাখো না।

আমার করুন ক্ষণে হয় না তোর যাতনা,
তাই তো কোন প্রহরেও তুমি আসো না,
কেমন আছিস! তুমি এটও তো যাচো না,
আমায় নিয়ে তুমি কখনো কিছুই ভাবনা?
তোমার ভাবনাতে আমার কিছু নেই 
দ্যাখো না তো তুমি আমায় কাছ থেকেই। 

বলি তোরে অতি যতনে, 
আমারে যদি না করো স্বরণ
বুঝে নিয়ও তখনি হবে আমার মরণ
দেখবে আমার আত্মা বিধাতা করেছে হরণ। 
করো না তখনো মন নিয়ে ছলনা 
ছলনার মিষ্টি কথা কখনো বলনা।

আমারও তো মন আছে, আমারও তো মন
ব্যথা পেলে সেও তো ভাসাবে নয়ন,
ভাল আর মন্দে করতে পরে তো চয়ন
ভুলের মাঝে আঁকতে পারে তো স্বপ্ন অয়ন।

গোধুলির বিকেলে

গোধুলির বিকেলে 

   এম এ মাসুদ রানা


দেখা হলো কোন গোধুলী বিকালে নিরালায়
কথা হলো দুজনে দুজনায় 
গোধুলীর বিকালে ছিলো অনেক তাপ
কথার মাঝেও হয়নি আনমনা।

প্রথমে হলো কিছু সামান্য ভোজন
সেখানে দেখালাম কিছু স্বজন,
ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত  হয়ে গেলাম 
পরে দেখে তাঁরা আমার বদন।

হাসি খুশি ছিলাম তো অনেক বিভোর 
তবুও কথা হয়নি শেষ,
টুকিটাকি দুষ্টুমি আর মিষ্টি কথার মাঝে
কথা হচ্ছিল তবুও বেশ।

নির্জন নিরিবিলি, ছিল না চেচামেচি 
বসেছিল তো অনেক কাছাকাছি, 
কথার মাঝে কথা হয়েছিল অনেক বেশি 
মাঝে মধ্যে হয়তো চোখাচোখি। 

কথা শুরু হলো একসাথে হাটাহাটি 
রাস্তার পাস নিয়ে কাটাকাটি, 
মাঝে মাঝে বলে আমি চিল্লাতে পারি
চিল্লাবো বলে করে ছুটাছুটি। 

কিছু হলো কেনাকাটা এটা ওটা সেটা
খাকি খামে হলো বাঁধা, 
দাম নিয়েও হয়েছিল অনেকে কথা
মূল্য দিতে হলাম বৃথা। 

শেষমেষে আবারও হলো নতুন ভজন 
তখন ছিল না কোন স্বজন,
তারাহুরো করে খেয়ে বলে হলাম আমি প্রথম
বাড়ি ফিরার তরে চলে আয়োজন। 

পরিশেষ বাড়ি ফিরা একসাথে দু'জন
রাস্তায় বেজেছিল মোবাইল ফোন,
আলাপ আলোচনায় ফিরতেছিলাম 
কারো ফোন ধরিনি তখন।

অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে ছিলো আমার তরে
আমার এক অতি আপনজন, 
কিছু কথা বলতে বলতে কি খাবো বলল যখন
একটু দেরী হলো বললাম তখন।

মনের কথা

 মনের কথা 
এম এ মাসুদ রানা 

রোজ আমি ঘুরি ফির, তড়িঘিড়ি
জীবনে তারনার তরে,
ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে বলি
স্বপ্নগুলি গেল মরে।

আমি ঘুরি ফির আর খুঁজি
জীবনের কঠিন মনে,
জীবন যে জীবনের কাছে বন্দী
জীবন তাতো জানে।

হেলা আবহেলায় করে কোলাহল
খুঁজি শুধু কর্মের ফল,
চারিদিকে ছুটাছুটি করে পায় না খুঁজে
পানের এক গ্লাস জল।

ক্লান্ত দেহ তার সাথে অশান্ত মন
মাথাটা করে ফনফন,
কথার মাঝে কথা বলি শুধু আমি
ফোন বাঁজে টনটন।

অশান্ত মনের কথা সবাই বলে
শুধু যথাতথা।
সবার কাছে অনায়াসে পেয়ে থাকি
ব্যথা আর শুধু ব্যথা।

কেহ তো বুঝে না এই মনের কথা
লুকিয়ে আছে কি ব্যথা
বুঝতে চাই তো গভীরে গভীরভাবে
সময় নেই বলে শুধু কথা।

বুঝল না কেহ এই মনের কথা
করল না তো কেহ রফা
জনেজনে ঘুরে ফিরে হলাম একা
কেহই শুনল না মনের কাথা।

অপেক্ষা

অপেক্ষা
এম এ মাসুদ রানা


আমি সেই সময় টুকু চিনি
যাকে তোমরা অপেক্ষা বলো!
অপেক্ষা যে অপেক্ষা নয়,
মনে হয়, প্রতিটি মুহূর্তে বিষ পানের শামিল।
প্রতিটি দমে, পলে অনুপলে, ক্ষণে অনুক্ষণে,
মনে হয়তো দীর্ঘ্য দিনের মতন
যখন তোমরা বলো, অপেক্ষা কর,
একটু অপেক্ষা কর,
আমি আসবো, আবার আসবো।


অপেক্ষায় কেটে গেছে দিন, মাস, বছর
বলেছো তোরা যাই, চোখের পলকে আসবো,
হৃদয়ের প্রবণতাও নিভে গেছে অপেক্ষার তরে।
কিছুটা সময় বাকী আছে,
লাশ হয়ে পরে রব অচেনাদের কাছে,
তোমার তরে অপেক্ষায় থেকে যদি নাহি বাঁচি
লাশ হয়েও থাকতে পারবো কিছুক্ষণ তোদের কাছাকাছি
অপেক্ষায় রেখে গেছো শুধুই মিছামিছি।


বলি কারো তরে অপেক্ষা করবো না আর,
অপেক্ষা করতে করতে করেছি জীবনটা পার
সেও কারো জন্যে অপেক্ষা করেনি তো আবার!
সময় বয়ে চলে তার গতিতে,
অনেকটা মৃত্যুর মতো,
তবুও মরিনি এখনো আমি।

হয়নি যাবার বেলা

 হয়নি যাবার বেলা 
 এম এ মাসুদ রানা  

যেদিন এই দেহে থাকিবে না প্রাণ
সেদিন দুঃখ কষ্ট সবে হবে অবসান। 
বিদেহী হবে আত্মা আমার
কমল দেহ করে চুরমার।

আত্মীয় স্বজনরা করবে শুধু চিৎকার 
পিতা-মাতা ভাই-বোন পাবে না নিস্তার 
সময়ে অসময়ে করবে তাঁরা হাহাকার 
বলবে খোদা এই ছিল তোমার বিচার।

বন্ধু বান্ধব শুভাকাঙ্ক্ষী সকল 
একবার দেখার জন্য হবে তাঁর বেকুল।
পড়শীরা দেখে বলবে হলো কি আবার
সেবায় ত্রুটি এমন কি ছিলো তাঁর 
কেন পৃথিবীতে থাকতে পারলনা আর।

সেই ক্ষণে তুমিও বলবে কি কিছু কথা
রেখো না আমার তরে পেয়েছো তুমি যে ব্যথা।
কিছু কিছু ভুল আছে মেনে নিতে হয় 
জমিয়ে রাখলে তা শুধু বারাবে সংশয়। 
অভিযোগ থাকলে তুমি লুকিয়ে রেখে
বিরহ গড়াবে শুধু সত্যি ডেকে।

সন্ধ্যার ছন্দে

________ সন্ধ্যার ছন্দে
          এম এ মাসুদ রানা  

পাখিদের ঐক্যতানে গান
তুই সন্ধ্যা এবার নাম।
বাগানে গোলাপ, জবা, গাঁদা
দোলনচাঁপার গন্ধও চাঁপা।
গৌধুলি বিকালে নানান রঙ্গে রঙ
ধরেছো তুমিও আমার সঙ।
দোলছে গোলাপ কলি, বাদমী কলমী,
ঝিলে ফোটেছে সাদা শাপলা, আর পদ্ম
তোমার আমার সঙ্গোপনে ছিল না ছদ্ম।
অভিসার ছন্দ আনে আপন মনে
গুছানো খোঁপার কোন এক কোনে।
ধরি ফুল দুই আঙ্গুলে,
চুপি চুপি কইছি কথা আসে যেন মঙ্গলে।
ভেঙ্গে গেছে লাজ, ভয়,
নিরবতায় হাতে হাত একটা কিছু কয়।
অপলক দৃষ্টিতে, মিষ্টি মিষ্টি কথা রয়
তবুও মনের মাঝে সংশয় হয়।
তোমার স্পর্শে হৃদয়ে শিহরণ জাগে,
মধুর আলিঙ্গনের তরে আমায় ডাকে।

শহর

শহর
এম এ মাসুদ রানা 
নগরের নাগরিক, সভ্যতায় সভ্য সমাজ
দফায় দফায় কঠিন কাজ বেরেছে আজ।
গনতন্ত্র , রাষ্ট্রযন্ত্র, চালায় কি এক ভিষণ যন্ত্রে
পুঁজিবাদ ও সহিংসতাও চলে কোন মন্ত্রে।
আমি এই নগরের নাগরিক, সভ্যতায় সভ্য,
গনতন্ত্রের নিয়ামক, পুঁজিবাদের নিশানা নিয়ে লিখবো গদ্য।
তাঁহারা কি করে জানবে আমাদের ক্ষুধার কথা?
জাত-পাত, ধর্ম,  মধ্যবিত্ত চর্চার বিষয় কথা বলে বৃথা।
হিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায়, ব্যাভিচার, নির্যাতনে একাকার 
গভীরে আমাদের বসবাস, ক্ষুধা আর তৃষ্ণার হাহাকার।
আকাশকুসুম লোভ লোভ দেখিয়ে সৃষ্টি করে তুলকালাম 
চেয়ারের চাষাবাদের নেশায়, তাঁহারা হয় বেশামাল।
কখনো বেরিয়ে আসে বর্ণচোরা মূখ, লোভের দীর্ঘশ্বাস,
চকচকে চোখ, লকলকে জিহবা আর লালার স্রোত
ছায়াটাকেও সন্দেহের চোখে দেখে, বিশ্বাসে আছে  ক্রোধ।
খুন, ধর্ষণ, জ্বালাও, পোড়াও, অবরোধ আর হরতাল,
পদাশ্রিত হতেই হবে, এই নিয়ে হয় তাঁরা মাতাল
লোভের তারনায় তাঁহারা খুঁড়ে দেখে পাতাল।

ইন্দ্রজাল

 ইন্দ্রজাল
এম এ মাসুদ রানা 

কোন এক নিষিদ্ধ রাত
কুয়াশা মাখা অন্ধকারে কাত।
আমার পাশে একজন মায়াবী
হাতের ইশারায় করে ভিন্ন দাবী।
হাতের মুঠোয় পেষিত আমার হাত
কিছু করতে চাইলে চলে যাবে জাত।
জল স্থল অন্তরীক্ষের সকল বাস্তবতা
হারিয়ে যাচ্ছে রহস্যময় গভীরে মনের কথা!
আমার চোখ খেলা করে তার চোখে,
পদ্মার স্রোতে ভেসে আছে অজানা রোগ।
মাকরাশা অদ্ভুত দ্রুততায় বুনে চলে তার জাল,
প্রতিটা টানে টানে জ্বালাময়ীর ভালবাসা ঝাল।
হঠাৎ হানা দেয় দমকা হাওয়া,সব মুহূর্তেই ছিন্ন ভিন্ন,
কোথায় ঊরে যায় কুয়াশার চাঁদরে তন্নতন্ন। 
এক স্বপ্নহীন অনশ্তিত্তের অন্তহীন ঘুম,
স্বপ্নের চাদরে চাষ করছি একাএকা পাহাড়ি জুম।
রাত্রির কোন প্রহর ঘোষণা করছে শেয়ালের দল?
চাঁদের মুখে ডানা মেলে ঊরে যায় এটাই পখিদে বল।

শুন্যতা

শুন্যতা 
 এম এ মাসুদ রানা 
মনের গভীরে দীর্ঘ মায়াময় ছায়ামূর্তি
শয়নে স্বপ্নে চলে আসে ভিন্ন উক্তি 
উক্তির মাঝেও থাকে তো যুক্তি
এরই মাঝে প্রাণে নিয়ে আসে শক্তি
শুন্যতা থাকা শর্তেও সৃষ্টি হয় ভক্তি।
যখন নিরবে চক্ষু তুলে তাকায়!
মনে গভীরে আবার ছায়ামূর্তি আঁকায়।
দীর্ঘশ্বাস হতে থাকে দীর্ঘ, তপ্ত হয় হৃদয়
আকাশের ওপারে আকাশ, আছে ততই। 
বাতাসে প্রিয় গন্ধ, খোঁজে স্পর্শ, শিহরণ
এতে জাগবে মনে ভীতর আরো জাগরণ 
তখনি মন দিয়ে মন হবে হরণ।
নিবিড় মেঘের দল খোঁজে কোলাহল
নিবিড় মনে আসে আরো বেশি মনোবল। 
খুঁজে পায় শুন্যতা, পাণ্ডুর, বিবর্ণতা 
নিরবে নিবিড়ে হবে যতশত মনের কথা।
হঠাৎ খামচে ধরে,ছিরেফেলতে ইচ্ছে করে
হৃদয় আমার! মায়াবি স্বপ্নের আঘাত প্রতিক্ষণ
শুন্যতার কারণে কখন আসবে আমার মরণ
পূর্ণতা না হলে কেউ করবে না কখনো স্মরণ।

তোমার অতলে

তোমার অতলে
এম এ মাসুদ রানা 

গভীর রাতে নেমেছে পরীরা আজ,
জোছনার আলোয় হচ্ছে তাদের কাজ।
রুপালী নদীর বুকে রয়েছে তারা শুকে
নিটোলে উঠেছো কিসের তরে ঝুঁকে।

সজল নয়নে চকিত ছলছলা পানি,
বিলাসী অহংকারেও দিয়েছে হাতছানি। 
ঠোঁটের ভাঁজে অগ্নি জোছনার রূপ
ডাকিতেছে নীরব প্রণয়ের ধুপ।

ছুঁয়ে দেবো আশাতীত ভালবাসার ছাপ,
আমার হবে বলে ধরবে, এই হাত।
খুঁজে নেই অনন্ত মধু মাস পশুরা খায় ঘাস
তখুনি মনে হয় তোমার অতলে হল বাস।

অপরিচিতা

অপরিচিতা
এম এ মাসুদ রানা 

পরিচিত জনও মাঝে মাঝে ভীষণ অপরিচিত লাগে।
অন্ধকারে পেঁচার ডাকে  প্রিয়ার কান্নাও কানে বাজে।
রোদেলা দূপুরটাকেও মাঝে মাঝে অপরিচিত লাগে
কা কা ডাকে তোমার বিচ্ছেদের ডাকও মনে জাগে।

তুমি কি একবারও ভাবে দেখনি?
আমার বুক ছাড়া, অন্য কারো বুকে সুখী হবে না
একটু কোমল পরশে ঝলসে যাবে তুমি;
পায়ের নিচে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য থাকবে না ভূমি! 

আমি মনে মনে ভেবেছিলাম 
লাল পলাশের মত ফাগুনের ফুলে ফুলে
এটা ফাগুন ভাবা ছিল তোমার ভুলে ভুলে
হাতছানি দিয়েছিল বিচ্ছেদ দুলে দুলে।
তখনি তোমাকেও লেগেছিল ভীষণ অপরিচিতা
তোমাকে ভালোবাসা হলো আমার বৃথা!
গাঙ চিলের মতো মেলেছো বিলাসী ডানা
উড়ে গিয়ে দিবে কখন কাকে হানা।
ওহ! 
কি ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছিল তোমায় 
ব্যথিত হওয়া পরেও থাকতে পারি নাই ঝিমায়।

বসনায় অধীর

 বসনায় অধীর  
            এম এ মাসুদ রানা 

জীবন যেখানে ছিলো, 
সেখানেই থমকে আছে।
ফিরে যদি আসতে চাও 
টেনে নিবো আমি আবার। 

আমার শহরে ডাক পরেছে,
ধুলো মেঘ ব্যস্ততা থমকে রয়েছে। 
আসছে কত্তো সুমিষ্ট সতেজ বাতাস 
থাকছেনা এতে কোন তিক্ততার আচ।

এখানে তুমি আর আমি বলবো কথা,
কথার মাঝে থাকবে না যথাতথা। 
প্রচন্ড কোলাহলে কতো নিরবতা
এটাই তোমার প্রতি আমার একাত্মতা।

অভিমান ভাঙ্গবে কি তোমার  সহসা?
অভিমান আছে কি হৃদয়ে কঠিনভাবে বসা?
দীর্ঘশ্বাস এখনো হয়নি এক রতিও নিরাশ
আশা আছে করবে তুমি এই হৃদয়ে বসবাস।