Wednesday, September 25, 2019

তোমাকে পাওয়া হলো না




                                  

                   তোমাক পাওয়া হলো না

                                এম এ মাসুদ রানা

এইচ এস সি পরীক্ষা দিয়ে বেকার বসে আছি রেজাল্ট এর আশায়।
আর বেকার থাকবো কেন?
উপার্জনের জন্য ছোট বেলা থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি কাজ ও খেলাধুলা করি নিয়মিত। বাবা মায়ের বড় ছেলে আমি। মাঠে একদিন কাজ না করলে কপালে ভাত জুটে না। তাই বড় হওয়ার সাথে সাথে হাত খরচও বাড়তে থাকে এই জন্য কাজের চাপও বাড়তে থাকে। নিয়মিত কাজ করার চেষ্টা আছে কিন্তু নিয়মিতকাজ পাবো কোথায়, তাই কোন দিন বেকার বসে থাকতে হতো। একদিন পাশের বাড়ির ভাবি আমাদের বাড়িতে এসেছে মায়ের সাথে গল্প করতে। আমার বাজারে যাওয়া খুব দরকার। বাজারে আমার কয়েকজন বন্ধু বসে আছে। আমার কাছে সে দিন টাকা ছিল না। আমার বাড়ি থেকে বাজার মুটামুটি অনেক দুর। বিশ টাকা লাগে রিক্সা বাড়া। হেঁটে যেতে প্রায় ২০/২৫ মিনিট লাগে। আমার জন্য তো ওরা এসে বসে আছে। যদি হেটে যাই তাহলে অনেক দেরি হবে ওরা রেগে যাবে। রিক্সা দিয়ে যাব হাতে টাকা নেই। ভাবির সামনে মায়ের কাছে চাইতেও লজ্জা লাগছে। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। লজ্জা দুর করে মাকে গিয়ে বললাম- মা আমাকে ১০০(একশ)টাকা দাও।
টাকা দিয়ে কি করবি?
আমি বাজারে যাব, বন্ধুদের সাথে দেখা করতে।
দাঁড়া দিচ্ছি।
তবে দেরি করিস না, তাড়াতড়ি চলে আসবি। তাই বলে মা টাকা বের করে দিল। ভাবি আমার কথা শুনে বলে ওঠল,কি গো এত বড় হইছো এখনো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে যেতে মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতে হয়?
কি করব ভাবি কোন কাজ তো পারি না, কোন ছেলে মেয়ে ও পাই না যে প্রাইভেট পড়াবো। বেকার ছেলেকে কে টাকা দিবে বলেন।
তুমি কি সত্যিই প্রাইভেট পড়াবে।
হুম, তবে ছাত্র/ছাত্রী পাব কোথায়।
তুমি তাহলে সনজিদাকে পড়াও। তোমাকে প্রতিমাসে ৩,০০০ টাকা দেব।
আমি টাকা এর লোভ সামলাতে না পেরে বললাম ওকে ঠিক আছে কাল থেকে পাঠায়েন। আমি এখন যাই।দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার বলে রওনা দিয়ে দিলাম বাজারে। বাজার থেকে ফিরতে একটু দেরি হয়ে যায়। তাই রাতে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে যাই। সকালে ঘুম ভাঙ্গল মায়ের ডাক শুনে। ঘুম থেকে ওঠে দরজা খুলে দেখি সানজিদা দরজার সামনে দাড়ানো।
তুমি রুম এ গিয়ে বস, আমি ফ্রেস হয়ে আসছি।
ওকে ঠিক আছে।
সানজিদা সম্পর্কে আমার ভাতিজি লাগে। বাংলা মিডিয়াম স্কুলের ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী। দেখতে খুব সুন্দরী। মায়াবী চেহেরার মিষ্টি একটা মেয়ে। আমাকে অবশ্য মামা বলে ডাকে। আমি নাকি দেখতে তার মামার মতো।মেয়েটি খুব পাকনা পাকনা কথা বলে। মাঝে মাঝে আমিও পেরে ওঠি না তার সাথে কথা বলে। তাই ভয় হচ্ছে আমি কি পারব তাকে পড়াতে। ভাবতে ফ্রেস হয়ে আসলাম রুমে। এসে দেখি সানজিদা পড়ার টেবিল রেখে আমার খাটে বসে আছে। আমাকে দেখে বলে ওঠল আমি কিন্তু তোমাকে স্যার বলতে পারব না। আমি তোমাকে মামা বলেই ডাকব।
আর হ্যাঁ আমার টেবিলে বসে পড়তে ভালো লাগে না তাই তোমার খাটে বসে পড়ব।
ওকে বাবা! ঠিক আছে। এবার বই বের করো। মেয়েটি একটু দুষ্ট প্রকৃতির। তাই একটু বেশি দুষ্টামি করে। তবে লেখাপড়ায় খুব ভালো। একটু বলতেই বুঝে যায়। সনজিদাকে পড়াতে পড়াতে আর ওর পাকনা পাকনা কথা শুনে ওর প্রতি আরো মায়া বেড়ে যায় আমার। সানজিদার সাথে গল্প না করলে ভালো লাগে না আমার।প্রত্যেকদিন বিকেল বেলা সানজিদা  স্কুল থেকে এসে আমার সাথে গল্প করতে চলে আসত। দুজনে বসে গল্প করতাম। মেয়েটি মোবাইলে গেমস খেলতে পছন্দ করত অনেক। আর গেমস খেলতে প্রায়ই আমার মোবাইল নিয়ে যেত। আমি ওর গেমস খেলা দেখে অবাগ হয়ে যেতাম। এতটুকু ছোট্ট মেয়ে কেমন করে গেমস খেলে।আর পারবেই না কেন? ডিজিটাল বাংলাদেশের মেয়ে সানজিদা। এইটুকু ট্যালেন্ট না হলে কি চলে। আমি ললিতার কাছ থেকে clash of clan গেমস খেলা শিখি। এভাবে প্রায় তিন মাস কেটে গেল। আমি ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে গেলাম। সামনের মাসে আমার ক্লাস শরু হবে। তাই ভাবিকে বললাম ভাবি আমার তো ক্লাস শুরু হয়ে যাবে। আপনে ১ তারিখ থেকে সানজিদাকে অন্যকারো কাছে পড়তে পাঠাইয়েন। সামনে ওর বার্ষিক পরীক্ষা। তাই এখন আর পড়ায় গেভ দিয়েন না। আমি পরের মাসে ঢাকা চলে আসি। আমার ভার্সিটি বন্ধ থাকে যখন বাড়িতে গেলে সানজিদার  বই আর খাতা কলম নিয়ে দৌড়ে আসে, মামা আমাকে এই অংকটা করে দাও, এই প্রশ্নটা একটু বুঝিয়ে দাও। আমি যতটুকু পারি বুঝিয়ে দেই। আর আমি যত দিন বাড়ি থাকি আমার পিছ ছাড়ে না। একটু পর পর এসে একটু গল্প করে আর মোবাইল নিয়ে গেমস খেলে। মেয়েটি ভালো রেজাল্ট করে ৫ম শ্রেনীতে ওঠেছে। আমাকে অনেকবার বলেছে মামা তুমি বাড়িতে আস। তোমাকে ছাড়া ভালো লাগে না। কিন্তু ক্লাস থাকায় আমার বাড়িতে আসা হয়ে ওঠেনি। রমজানের কয়েকদিন আগে বাড়িতে আসি আমি। রমজান পুরোটাই বাড়িতে কাটাই। এদিকে রমজানের ছুটি পেয়ে সানজিদা ওর নানার বাড়ি চলে গেছে। আমার একা একা ভালো লাগে না। সানজিদার ছেলে মানসিকতা দেখে আর গেমস খেলা দেখে আমিও ওর মত হয়ে গেছি। তাই এখন বসে বসে গেমস খেলি। হঠাৎ আমি ঈদের পর অসুস্থ হয়ে পড়ি।আমাকে হাসপাতাল এ ভর্তি করা হয়। একটা অস্রপ্রাচার করা হয় মাথায়। সবে মাত্র দুইদিন হল হাসপাতাল থেকে বাড়ি আসছি। এর মাঝেই সানজিদার ফোন। মামা কেমন আছো তুমি। কই আছো তুমি। তোমাকে আমার নানার বাড়ি আসতে হবে।
কেন মা মনি?
আমি তো অসুস্থ।
এখন তো আমি আসতে পারব না।
আগামী পরশু আমার জন্মদিন। আমি এত কিছু বুঝি না। তোমাকে ছাড়া আমি কেক কাটব না।
এত করে বুঝালাম পাগলীটাকে বুঝলই না।
তোমাকে ছাড়া আমি কেক কাটব না।
এত করে বুঝালাম পাগলীটাকে বুঝলই না। বাধ্য হয়ে আসতে হলো আমায়। গেমস খেলার জন্য একটা এনড্রোয়েট মোবাইল কিনে নিয়ে জন্মদিনে আসলাম। আমাকে দেখে খুশিতে আত্মহারা সানজিদা। আরো ফোন পেয়েতো সব যেন ভুলে গেছে মেয়েটা। সন্ধ্যার পর কেক কাটা হলো। কেক কেটে সবাইকে খাওয়া দাওয়া করিয়ে বিদায় করে দেওয়া হলো। আমি অসুস্থ থাকার কারণে খেয়ে চুপ করে শুয়ে ছিলাম। সানজিদার নানার বাড়ি থেকে আমার বাড়ি মোটামুটি ৩০ কি.মি দুরে। তাই আমাকে রাত করে আসতে দেয়নি। রাতে ললিতা আমার কাছে আসে মোবাইল সফটওয়্যার নিতে। আমি অসুস্থ দেখে কিছু না বলে আমার মোবাইল নিয়ে ওই নিজেই সফটওয়্যার নেয়। কি খুজতে যেন গ্যালারিতে যায়। গ্যালারিতে একটা ছবি দেখে অবাগ হয়ে যায় সানজিদা। মোবাইল রেখে চলে যায় সে।


সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেস হয়ে বাড়িতে আসার জন্য রেডি হচ্ছি। এর মধ্যে ভাবি এসে বলছে তুষার  আজ যেও না। কালকে আমরা এক সাথে যাব। তোমার ভাইয়ের অফিসে যেন কি কাজ আছে তাই খুব ভোরে চলে গেছে। বাধ্য হলাম থেকে যেতে। সকালের নাস্তা খেয়ে আমি গাছের নিচে একা বসে আছি। সানজিদা  আমাকে দেখে কাছে এসে বসে। আমার পাশে বসেই গল্প শুরু করে দেয়। গল্পের এক পর্যায়ে সানজিদা  বলছে মামা তোমার মোবাইলটা দাও।
কি করবে মোবাইল দিয়ে?
দাও না মামা,
তুমি এমন করো কেন?
এই নাও।
এইতো আমার লক্ষি মামা।
আচ্ছা মামা তুমি প্রেম করো।
আমি তো ওর কথা শুনে অবাগ হয়ে গেলাম। এত টুকু পুচকে মেয়ে আবার প্রেম ও বুঝে। আর বুঝবে না কেন?
স্টার জলসা,
জি বাংলা,
দেখে কথার বলা শিখার আগেই তো প্রেম শিখে। আর বাংলা নাটক তো এখন প্রেম ছাড়া হয়ই না। আজ ললিতার এমন প্রশ্ন করা অস্বাভাবিক কিছু না। এর জন্য আমরা দায়ী, আমাদের বিবেগ আর আমাদ সংস্কৃতি দায়ী। প্রথমে অবাক হলেও এখন স্বাভাবিক বলেই মেনে নিছি। মোবাইলের গ্যালারি থেকে একটা ছবি বের করে আমাকে দেখিয়ে বলছে, আচ্ছা মামা এটা নিশ্চয় মামি।
আমি ওর কথা শুনে একটু অবাগ হয়ে মোবাইলের দিকে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি এটা সুলতার ছবি। সুলতানার ছবি যে মেমুরি কার্ড এ ছিলো সেটা তো মা ভেঙ্গে ফেলেছে। এ ছবি কোথা থেকে আসল। একটু অবাগ হয়েই দেখছিলাম সুলতানাকে। অনেকদিন হয়ে গেছে সুলতানাকে দেখি না। খুব মন চাচ্ছিছিলো সুলতানাকে এক পলক দেখতে। ছবিটা পেয়ে ভালোই হলো মাঝে মাঝে অন্তত সুলতানার ছবি দেখে মনকে শান্ত করতে পারব। আমার কান্ড দেখে সানজিদার আর কিছুই বুঝতে বাকি রইল না। আজে বাজে সিরিয়াল দেখে মেয়েটা বড় বেশি পাকনা হয়ে গেছে।
মামা,  মামিকে দেখতে কিন্তু হেব্বি। তোমার সাথে দারুণ মানাবে।
আমি অবাক হয়ে ললিতার কথা শুনছিলাম আর অপলক দৃষ্টিতে মমিতাকে দেখছিলাম। কিছু সময়ের জন্য কল্পনায় চলে গেছিলাম।
মামা, মামা, ও মামা
হ্যাঁ বলো
ভাব তো ভালো বুঝতাছি না। বড় হয়ে গেছ দেখছি। দাড়াও বাড়ি গিয়ে নেই আগে, দাদুকে বলব লক্ষি একটা মামি এনে দিতে। এবার আমাকে তোমার প্রেমের গল্প শুনাও।
তুমি কি পাগলী হয়ে গেছ। আগে বড় হও পরে শুনাব।
মেয়েটি হাত তোলে আমাকে বলে দেখ আমি কতো বড় হইছি। তাছাড়া আমি নিয়মিত আত্মত্যাগ সাহিত্য, মাঝের বাড়ি পড়ি। এমনকি জহির রায়হানের  এর লেখা “বরফ গলানো নদী”, ”আর এক ফাল্গুন”  উপন্যাস পড়েছি। আমার অনেক ভালো লাগে জহির রায়হানের  এর লেখা।

আগেই বলেছিলাম মাঝে মাঝে আমি সানজিদার সাথে কথা বলে পেরে ওঠি না। আজও পারলাম না। মেয়েটির মামা ডাক শুনে মনটা ভরে যায়। তাই ওর কোন চাওয়া অপুর্ণ রাখি না। তাই বাধ্য হলাম বলতে।
শুন তাহলে মেয়েটির নাম সুলতানা। আমি আর ওই একই স্কুলে একই ক্লাসে পরতাম। আমি সেই হাই স্কুল থেকে ভালবাসি। আমি মমিতাকে পাগলের মত ভালবাসি। একসময় সেও আমাকে অনেক ভালবাসত। হঠাৎ করে সুলতানা  আমাকে একা ফেলে দুরে সরে যায়। আর সেই থেকে আমি নির্বোধ মানুষের মত বেঁচে আছি। সুলতানার ভালবাসার অভাবে আমার হৃদয় জুড়ে আজ আগ্নেয়গিরির অগ্নি শিখা জ্বলছে।
আমার কথা শুনে সানজিদার চোখ দিয়ে বৃষ্টি ঝড়ছে। আমি সুলতানার ছবিটি দেখে এতটাই আবেগ প্রবন হয়ে পড়েছিলাম যে নিজের বোধ শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাইতো নিরবোধ এর মতো এত ছোট্ট একটা মেয়ের সাথে গল্পটি শেয়ার করলাম। এখন নিজেকে খুব অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি আর গল্প আগে না বাড়িয়ে থেমে গেলাম।
সানজিদা : মামা থামলে কেন?
পরে কি হল?
মা মনি আজ আর কিছু বলতে পাচ্ছি না। অন্যদিন তোমাকে বাকি অংশ শুনাব কেমন।
ওকে মামা। চল রুমে যাই। সবার সাথে আড্ডা দিলে তোমার ভালো লাগবে।
ওকে তাই চল। সবার সাথে গল্প বলতে বলতে দিন শেষে রাত হলো। রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে ঘুম থেকে ওঠে ফ্রেস হয়ে বাড়ি চলে আসলাম। বাড়িতে এসে পাকনা মেয়েটা আম্মুকে সব বলে দিছে। সুলতানা  নাম শুনতেই তো আম্মুর বুঝার আর কিছু বাকি রইল না। সুলতানা  সম্পর্কে আম্মু সব জানে। আমার জীবনে বেস্ট ফ্রেরেন্ড আমার আম্মু। তাই আম্মুকে ছোট থেকেই সব শেয়ার করতাম। সুলতানার কথা, সানজিদার মুখ থেকে শুনার পর তো বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য খুব চাপ দিচ্ছে। আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধেই পরিবারের বয়ষ্করা মেয়ে দেখা শুরু করে দেয়।
এক পর্যায়ে বিয়েও ঠিক করে ফেলে। আমাকে কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করে ফেলে। সমাজে সম্মানের কথা চিন্তা করে পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু না বলে সব নিরবে মেনে নিলাম। গায়ে হলুদ এর আগের দিন বাড়ি ভর্তি হয়ে গেল মেহমান এসে। সবাই খুব আনন্দ করছে। কিন্তু আমার মনে বিন্দু মাত্র আনন্দ নেই। সুলতানার কথা ভেবে মন সর্বদা ব্যাকুল হয়ে আছে। নিজের ভিতরে অস্তিরতা শুরু হয়ে গেছে। সুলতানার সাথে এক মিনিট কথা বলার জন্য খুব ইচ্ছে হচ্ছে।
তবে কল দিয়ে কি বলব।
আমার কথা শুনে সহ্য করতে পারবে কি মেয়েটি?
এসব কথা ভাবতে ভাবতে আর কথা বলা হল না সুলতানার সাথে। বাবা মায়ের পছন্দ করা মেয়েকেই বউ সাজিয়ে নিয়ে এলাম। বাস্তবতাকে কোন ভাবে মেনে নিতে পাচ্ছি না। কি থেকে কি হয়ে গেল কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব এলোমেলো হয়ে গেল। নিজের মনের অস্তিরতা কাউকে বুঝতে না দিয়ে সবার সাথে মজা করে চলে গেলাম শুয়ার ঘরে। শুয়ার ঘরে গিয়েতো রিতি মত অবাগ হলাম। আমার খাটের ওপর এটা কে বসে আছে। কতক্ষণ নিরব হয়ে দাড়িয়ে রইলাম। মেয়েটি খাট থেকে নেমে এসে সালাম করতে শুরু করল। তৎক্ষণে মনে পড়ল আমি তো বিয়ে করেছি। মেয়েটি সালাম করে আমার সামনে দাড়িয়ে রইল। আমি মেয়েটির নাম জানি না, আর কোনদিন দেখিও নাই। আজই প্রথম দেখেছি। কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানোর সময় কি নাম জানি বলে ছিলো মনে পড়ছে না। ইদানিং কেমন জানি সব ভুলে যাই। শুধু ভুলতে পারি না সুলতানার কথা। একটা অপরিচিত মেয়ের সাথে থাকতে হবে ভেবে নিজের কেমন জানি লাগছে। নিজেকে মেনে নিতে পাচ্ছি না। আজ তো এই মেয়েটির জায়গায় মমিতার থাকার কথা। কিন্তু কোথায় আমার মনের রাজ্যের মহারানী।
সুলতানা কেন আমার সাথে এমন করল?
এখন নিজের মাঝে আরো অস্তিরতা বেড়ে গেল। এ দিকে মেয়েটি আমার সামনে দাড়িয়ে আছে, এখন কি বলব ভেবে পাচ্ছি না, হঠাৎ করে মুখ ফসকে বেরিয়ে এল তুমি যাও শুয়ে পড়, রাত জেগো না। মেয়েটির চেহারা দেখে মনে হচ্ছে কিছু বলতে চাচ্ছে। এখন যদি সে কিছু বলে তাহলে মাথা গরম হয়ে যেতে পারে। তাই কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে, জোড়েধমক দিয়ে বলে ওঠলাম,
তুমি এখনো দাড়িয়ে আছো কেন?
তোমাকে শুয়ে পড়তে বলছি না।
যাও বলছি। মেয়েটি আমার কথা শুনে আর দেরি না করে শুয়ে পড়ল।
আমি আর দেরি না করে বাহিরে চলে আসলাম। হাটতে হাটতে দোকানে চলে আসলাম। এসে দেখি দোকান বন্ধ। দোকানদার কে ডেকে তুলে এক প্যাকেট সিগারেট আর কয়েল নিয়ে চলে আসলাম রুমে। রুমে এসে কয়েল জালিয়ে শুয়ে পড়লাম ফ্লোরে। শুয়ে শুয়ে একটার পর একটা সিগারেট জালাচ্ছি আর সাথে নিজের ভিতরটাও।  রাত শেষে ভোর হল। সবাই কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলো। আজ আবার শুশুর বাড়ি থেকে মেহমান আসবে আমাদের বাড়ি। এদিকে কিছুক্ষণ পর পর আশে পাশের বাড়ির মহিলারা আসছে নতুন বউকে দেখতে। এসব দৃশ্য দেখে মেজাজটা আরো খারাপ হচ্ছে। আজ তো সুলতানাকে দেখতে আসার কথা। ঐ মেয়েটির জায়গায় সুলতানার থাকার কথা।
 কিন্তু সুলতানা কোথায়?
 কোথাও যে সুলতানাকে খুজে পাচ্ছি না। শুধু বুকের ভিতরটা তার জন্য হাহাকার করছে। এদিকে আবার খুব টেনশন হচ্ছে, রাতে মেয়েটার সাথে যে খারাপ ব্যবহার করছি তা যদি আম্মুকে বলে দেয়, তাহলে আম্মু খুব কষ্ট পাবে। এ বিষয়ে মেয়েটার সাথে কথা বলা দরকার। মেয়েটি যে আম্মুর সাথে বসে আছে।
ডাক দিব কিভাবে?
আর এখন না বলে দিলেও তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। নামও তো জানি না। এখন যে কি বলে ডাক দিব ভেবে পাচ্ছি না। হঠাৎ মাথায় আসল সানজিদাকে ডাক দেই। সানজিদাকে দিয়ে ডাকিয়ে আনি। আমি আর দেরি না করে সানজিদাকে দিয়ে মেয়েটাকে ডেকে আনলাম।
সানজিদা : এই যে মামা, মামিকে এনে দিয়ে গেলাম। তোমরা কথা বল। আমার অনেক কাজ আছে। আমি গেলাম।
সানজিদার  কথা শুনে মেয়েটা দাড়িয়ে দাড়িয়ে শাড়ির আচলে মুখ ডেকে মুচকি মুচকি হাসছে। আর আমি খাটের উপর শুয়ে আছি। অনেক কষ্টে মিষ্টি হেসে বললাম বস। মেয়েটি আমার দিকে তাকিয়ে খাটের ওপর বসল।
আচ্ছা তোমার নামটা জানি কি?
মেয়েটি আমার কথা শুনে অবাগ দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর অবাক হওয়ারই কথা। বিয়ে করে ঘরে তোলে এনেছি,
অথচ তার নামটা জানি না?
আমি বুঝতে দিলাম না যে আমি তার নাম জানি না। মেয়েটিও কিছু বুঝতে না পেরে নাম বলে দিল।
কবিতা।
কেন আমার নামটা কি খারাপ?
আরে না, অনেক সুন্দর নাম, আর তোমার মুখ থেকে এত সুন্দর নাম শুনার মজাটাই আলাদা।
আমার কথা শুনে মেয়েটি মনে হয় লজ্জা পেয়েছে। রাতে তোমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি, তার জন্য সরি। আসলে আমার মন ভালো নেই। তাই তোমার সাথে খারাপ ব্যহার করছি। প্লিজ কিছু মনে করো না।
ওকে, একটা কথা বলতে চেয়েছিলাম!
ওকে বল
আপনি সিগারেট খান কেন?
আমি সিগারেট এর গন্ধ সহ্য করতে পারি না।
কই আমি সিগারেট খাই না তো!
সিগারেট আমাকে খায়।
প্লিজ রুমে আর সিগারেট খাইয়েন না।
ট্রাই করবো।
আচ্ছা আমাকে আপনার পছন্দ হয় নাই?
কেন এমন প্রশ্ন করতাছ জানতে পারি কি?
আগে আমার প্রশ্নের উত্তর দেন।
হুম হয়েছে।
তাহলে কেন আমাকে একা খাটে রেখে আপনি ফ্লোরে শুয়েছিলেন।
তুমি বুঝবে না। তুমি এখন যাও। আর হ্যা রাতের ব্যবহারের কথা কাউকে বল না প্লিজ।
আগে বলেন। নয়তো আমি আম্মুকে সব বলে দিব।
শুনে তুমি সহ্য করতে পারবে না। দুই এক দিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে।
না কিছু হবে না,বলেন।
না শুনে যখন ছাড়বে না।
শুনো তাহলে
আমি এক পাষাণীকে এ মনে জায়গা দিয়েছি। যে আমাকে ভুলে গিয়ে মনে হয় খুব সুখে আছে। কিন্তু আমি তাকে কোন ভাবে ভুলতে পাচ্ছি না। আজ তোমার জায়গায় ওর থাকার কথা। কিন্তু ভাগ্যের নির্মল পরিহাস, তাই ওর জায়গায় তুমি। আমরা স্কুল লাইফ থেকে এক সাথে পড়তাম। তার নাম সুলতানা। আমরা খুব ভালো বন্ধু ছিলাম। স্কুল লাইফ থেকেই আমি সুলতানাকে খুব ভালবাসতাম। কিন্তু সুলতানা  ভালবাসে অন্য এক ছেলেকে। সুলতানা আমাকে বলেছিলো ছেলেটি সম্পর্কে আমার ভাই লাগে। একটা মেয়ের সাথে প্রেম করত সে। মেয়েটি তাকে রেখে চলে গেছে। তারপর থেকেই সুলতানা  সাথে ফোনে কথা বলত। প্রতিদিন ফোন করে কান্না করত ছেলেটি। আমি ওর কান্না শুনে ওর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি। আসতে আসতে ভালবাসতে শুরু করি তাকে। ভালোই চলছিল আমাদের সম্পর্ক। হঠাৎ করে ছেলেটি আমাকে ছেড়ে দুরে সরে যায়। আমি অনেক কান্না করেছি একটু ভালবাসার জন্য। কিন্তু আমাকে ভালবাসা দিবে তো দুরের কথা, আমার সাথে ভালোভাবেই কথাই বলে না। আমাকে দুর দুর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। ওর জন্য কান্না এখন আমার প্রতি রাত এর সাথী। সুলতানা  অন্যজনকে এত ভালবাসত আমি জানতাম না। আমিও তাকে স্কুল জীবনে কোনদিন বলতে পারি নাই। কলেজে এসে একদিন দেখা হয় আমার মমিতার সাথে। চেয়েছিলাম ওই দিন আমার মনের কথা বলব সুলতানাকে। ঐ দিন ছিলো সুলতানার কলেজে বিদায় অনুষ্ঠান। সুলতানাকে দেখে অনেক আনন্দিত লাগছিলো ঐদিন। আর সুলতানাকে দেখে কোনদিন মনে হয় নাই ঐ কারো সাথে রিলেশন করে বা করবে।
কেমন জানি ছিলো সুলতানা?
খুব রাগী একটা মেয়ে। ঐ দিন কেন জানি মন বলল আজ বলার দরকার নেই। চলে আসলাম বাড়ি। ঐদিন না বলে আমার জন্যই ভালো হইছে। ঐদিন বললে হয়তো সুলতানাকে পেতাম না। কেননা সুলতানার মনে তখন আর একজন বাসা বেধে আছে। কোন ভাবেই সুলতানাকে বলতে পারছিলাম না আমার মনের কথা গুলো। বলতে না পেরে অনেক যন্ত্রনা হচ্ছিল নিজের মাঝে।
এখন কি করেই বা বলব?
 সুলতানা কোন কন্টাক্ট নেই আমার কাছে। একদিন এক বন্ধুর কাছ থেকে সুলতানার কন্টাক্ট নাম্বার নেই। পরে কথা হয় আমার। খুজে পাই ফেসবুক একাউন্ট। পরে চ্যাট হয় ফেসবুক এ। আমি দেরি না করে প্রপোজ করে বসি। ওই আমার কাছ থেকে সময় নেয় ভাবার জন্য। কয়েকদিন পর না করে আমায়। আমি তাকে মন খারাপ করে বলেছিলাম না ই যখন করবে তখন সময় নেওয়ার কি দরকার ছিলো। সে আমার কথা শুনে আমাকে বুঝানোর জন্য ফোনে কথা বলে। আমাকে সরাসরি না করে দেয়। আমার পরিবার থেকে এগুলো মেনে নিবে না। আর আমি একই ভুল দ্বিতীয়বার করব না। আমি তাকে ফেসবুক এ প্রতিদিন মেসেজ করতাম। এই মেসেজ করার জন্য একদিন তার একবান্ধবী আমাকে কল দিয়ে অনেক কথা বলে। আমি অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম ঐদিন। রাগে তার নাম্বার ডিলেট করে দিয়েছিলাম। নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলাম সবাইতো ভালবেসে আপন করে পায় না। তাই আমিও পেলাম না। গল্পটা এখানেই শেষ হলে ভালো হত।
কিন্তু নিয়তীর খেলায় আরও দুঃখ লেখা ছিল আমার কপালে তাই শেষ হয়েও হল না। কয়েকদিন পর সুলতানার ওই বান্ধবী আমাকে ফেসবুক এ মেসেজ করে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করছে। আমার অনেক রাগ হচ্ছিল তার ওপর, তারপর ও উত্তর দিচ্ছিলাম আমি। ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করার পর আমাকে একটা নাম্বার দিয়ে কল দিতে বলে। আমি জিজ্ঞেস করলে বলে এটা সুলতানার নাম্বার সুলতানা আপনাকে কল দিতে বলছে। আর হ্যাঁ সুলতানা  আমার বেস্ট ফেরেন্ট, আজ থেকে ওর দায়িত্ব আপনাকে দিলাম। ওরে কোন কারণে কষ্ট দিয়েন না। আপনা সুখী হন। আমি সুলতানাকে কল দেই। কথা হয় তার সাথে। শুরু হয় আমাদের রিলেশন। আমাদের সম্পর্ক ভালোই চলছিল। প্রেম এ যদি অভিমান না হয় তাহলে প্রেম জমে ওঠে না। মাঝে মাঝেই দুজনে খুব অভিমান করতাম। একদিন আমি অভিমানে নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করে রক্তাক্ত করি। অসুস্থ হয়ে পড়ি আমি। একপর্যায়ে দুরে সরে যায় সুলতানা। আমি আবার কাছে আনার চেস্টা করি। সুলতানা  তার বোনকে বলে আমার বিষয়ে সব কিছু। সুলতানার বোন সুলতানার কন্টাক্ট নাম্বার পরিবর্তন করে দেয়। তারপরও আবার আমাদের কন্টাক্ট হয় প্রতিদিন। আমাদের সম্পর্ক খুব ভালোই চলছে। মমিতা ও আমাকে প্রচন্ড ভালবাসে।আমাকে ছাড়া কিছু বুঝে না মেয়েটি।
আমিও তাকে পাগলের মত ভালবাসি। সুলতানা আমাকে শুধু একটা কথাই বলত আমাকে ছেড়ে চলে যেও না। আর আমাকে কখনো ভুল বুঝ না। হঠাৎ এক ঝড় এসে আঘাত করে আমাদের রিলেশনে। সুলতানা আমাকে দুরে সরে যেতে বলে। কারণ জানতে চাইলে বলে না আমায়। আমি খুব টেনশনে আছি।
কি এমন ভুল করছি?
যে কারণে আমাকে দুরে সরে যেতে হবে। ভেবে পাচ্ছি না কিছু। আমি অসুস্থ হয়ে মেডিকেল এ ভর্তি হই। ডক্টর বলছে অপারেশন করতে হবে। না হয় পরে আরো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমি রাজি হয়ে যাই অপারেশন এর জন্য। সুলতানা  জানে আগামিকাল আমার অপারেশন হবে। ওই জানতো ওর সাথে কথা না বলে আমি রাত এ ঘুমাতে পারি না।  অথচ সে আমার সাথে কথা বলা বাদ দিছে। খুব কথা বলতে ইচ্ছে আমার।
কিন্তু কি কর?
ওই আমাকে না করে দিয়েছে আমাকে আর ভালবাসতে পারবে না। তাই হয়ত কথা বলবে না আমার সাথে।  যে মানুষ সামান্য স্বর্ধি লাগলে আমাকে দিনে অন্তত ২০টা কল দেয়। সে এত বড় সমস্যার কথা শুনে একবার ও কল দিলো না আমায়। মনে হয় তার বিশ্বাস হয়নি আমি অসুস্থ। আমি বার বার সুলতানার কথা বলছিলাম। আমার বাবা মা ও জানত আমি সুলতানাকে ভালবাসি। তাই মা আমাকে বলত তোর অপারেশন শুরুর আগে দেখবি ঠিক সুলতানা  চলে আসছে। আমিও ভেবে ছিলাম তাই। কিন্তু সেই আশায় গুড়ে বালি। আমার অপারেশন এর সময় হয়ে গেল সুলতানা  এলো না। আমি রাগে বলেছিলাম মা আমি যদি মরে যাই বা বেঁচে থাকি আপনি আর এই জায়গায় থাকবেন না। আমাকে দুরে কোথাও নিয়ে যাবেন। মা আমাকে কথা দিয়েছিলো। আল্লাহর রহমতে এক ঘন্টায় আমার অপরেশন ভালোভাবে শেষ হয়েছে। বিকাল দিকে আমার জ্ঞান ফিরে। আমি মাকে বার বার সুলতানার কথা বলছিলাম। মা ও তোতক্ষণে রেগে গেছে। যাকে আমি এতটাই ভালবাসি সে কি না আমাকে এক নজর দেখতে আসতে পারল না। এটা কেমন ভালবাসা ছিলো তার। তাই মা ঠিক করে আমাকে নিয়ে আর ঐ এলাকায় যাবে না। আমাকে ৪দিন পর হাসপাতাল থেকে ছুটি দেয়। আমাকে নানির বাড়ি নিয়ে যায় মা। আমি সুলতানাকে বার বার বুঝিয়েছি, যা হবার হইছে তুমি চলে এসো। চলো আমরা আগের মত হয়ে যাই। বার বার বলেছি অন্তত আর একবার ভেবে সিগ্ধান্ত নাও। কিন্তু সুলতানা  নাছর বান্দা। সে তার সিগ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারবে না। আমার বন্ধুকে দিয়ে বুঝালাম কোন কাজ হল না। আমাকে দুরে সরিয়ে দিলো। একিদন তার নিষ্পাপ ভালবাসা নিয়ে প্রতারনা করেছিলো অন্য কেউ। আজ সে আমার ভালবাসা নিয়ে প্রতারনা করল। আমার নিষ্পাপ ভালবাসায় অবিশ্বাসের চাদর ছুড়ে দিয়ে আমাকে মিথ্যা অববাদ দিয়ে দুরে সরে গেল সুলতানা । আমরাও চলে আসি নানার এলাকায় আমাদের আরেক বাড়িতে।
কবিতা আমার প্রেমের কাহিনী শুনে এতটাই দুর্বল হয়েছে আর তাকে এতটাই আঘাত করেছে যে তার চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে। আচ্ছা আপনি সুস্থ হওয়ার পর তার সাথে দেখা করতে চাননি?
হ্যাঁ চেয়েছিলাম।
সে ও দেখা করতে চেয়েছিলো। আমি দেখা করতে গেছিলাম। কিন্তু তার সময় হয়ে ওঠেনি।
আচ্ছা চলে আসলেন যখন সে কি না করে নাই?
হুম করছে।
বলেছে তোমরা চলে গেলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবোনা। আমি এতোটাই খারাপ যে যার প্রভাব পুরো এলাকায় পড়ছে। যার জন্য তোমরা এই এলাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছো।
আপনি তার সাথে আর কোন কথা বলেন নাই।
হ্যাঁ বলতে চেয়েছিলাম,
আমার বাবা, মামা তাদের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলো তাকে বুঝাতে আর তার মায়ের কাছে বলে তাকে আনতে। আমি বলেছিলাম আমি আগে সুলতানার  সাথে কথা বলে নেই। আমি বলার পর যাবেন। ঐদিন ফেসবুক এ চ্যাট করেছিলাম।
ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করার পর বলে ছিলাম মামা তোমাদের বাড়ি যেতে চায়।
তুমি কি বল?
আমি কিছু জানি না। আর এখন আসলে সমস্যা হবে।
আর কেন ই বা উনি আসবে?
তোমার মায়ের কাছ থেকে তোমাকে নিতে আসবে।
তুমি আর আমার সাথে কথা বলো না। আমার ভালো লাগে না।
যার কাছে তোমার কথা ভালো লাগে না তার কাছে গেলে ভালবাসাতো দুরের কথা একটু হাসতেও পারবে না। আমি কোন দিন সুলতানাকে ভুলতে পারব না। কিন্তু কষ্ট একটাই আমাকে বিশ্বাস না করে ভুল বুঝে দুরে সরিয়ে দিলো। আজ আমি ওর মতো করে কেদেই ওর কাছে একটু ভালবাসা চেয়েছিলাম। ভালবাসা তো পেলাম ই না। আর ও কষ্ট নিয়ে চলে আসলাম। এখন আমি সুলতানার থেকে অনেক দুরে সরে আছি। নিজেকে আড়াল করে ফেলি সুলতানার কাছ থেকে। কিন্তু মন থেকে আড়াল করতে পারলাম না সুলতানাকে। আর কখনো পারবোও না হয়তো। আজ সুলতানা  আমার চোখের পানির কারণ। এখন আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে সুলতানা। এখন আমি সারা রাত গল্প পড়ে আর গল্প লিখে পার করি। সুলতানাকে এখনো অনেক ভালবাসি আমি। তাই তাকে এখনো নিজের মাঝে নিজের কাজের মাঝে বড্ড বেশি মিস করি। এখনো মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকি সুলতানার একটি কলের জন্য। সুলতানা তোমাকে বড্ড বেশি ভালবাসি।
পারলে চলে এসো।
আমি তোমার পথ চেয়ে বসে আছি। কিছুদিন পর সুলতানা  আবার ফিরে আসে আমার জীবনে। পুরনো ভুল সুদ্রে নিয়ে আমরা খুব ভালোভাবে জীবনকে উপভোগ করছিলাম। দুজনে মিলে সংসার করার স্বপ্ন দেখতাম। রাতভর ফোনে কথা বলতাম। কিভাবে সুন্দর সুখী পরিবার গঠন করা যায় সেই কথা চলত সব সময়। আমি ওর কথা মত সব করতাম। হঠাৎ কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি আমি। সুলতানাকে আর আগের মত সময় দিতে পারি না। আমার পরিবারে দুর্যোগ নেমে আসে। দুর্যোগ কাটিয়ে ওঠার আগেই সুলতানা  নিজে পাল্টে ফেলে। নিজেকে নতুন করে সাজাতে শুরু করে। তার নতুন জীবনে সবাই আছে। শুধু নেই আমি আর আমার নিষ্পাপ ভালবাসা। আমি আবারও তাকে বুঝানোর চেষ্টা করি। কিন্তু সে আমার কোন কথা শুনতে রাজি হয় না। আমার বন্ধু নামের শত্রু একজনের পরোচনায় পড়ে আমার নিষ্পাপ ভালোবাসাকে গলা টিপে হত্যা করে। আজ তার কাছে আমার চেয়ে সেই শত্রুই প্রিয়। সুলতানা  আমাকে ভালবাসার স্বপ্ন দেখিয়ে আমার গুছানো জীবনকে এলোমেলো করে দিয়ে নিজেকে নিয়ে খুব সুখে আছে। আর আমার বুকে বইছে কালবৈশাখী ঝড়। যে ঝড় আমার হৃদয়টাকে খন্ড-বিখন্ডিত করে দিয়েছে। আমি এখনো তারে পাগলের মত ভালবাসি।
গতকাল তোমার সাথে যে আমার বিয়ে হয়েছে তা আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে হইছে। এ বিয়েতে আমার কোন মত ছিলো না। আর আমার মনে অন্য একজনের বসবাস। তাই তোমাকে আমি ওইভাবে নিতে.
 পারচ্ছি না।
আর কোন দিন নিতে পারব কি না?
তাও জানি না!
যদি কোন দিন আমি তাকে ভুলতে পারি আর তার মায়া কেটে ওঠতে পারি সেদিন তোমাকে আপন করতে পারব। আমার কথা গুলো শুনে কবিতার সুন্দর চেহারা কালো হয়ে গেল নিমিশেই। কতক্ষণ চুপ করে থেকে
হুম আমি সব বুঝতে পারছি। আপনি কোন চিন্তা কইরেন না, আমাদের দুজনের এই দুর সম্পর্কের কথা কেউ বুঝতেও পারবে না। আমি সব মানিয়ে নিব।
আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি
হুম বল
আপনি কি সুলতানার  সাথে কোনভাবে যোগাযোগ করেছেন?
হুম সব শেষ একটা চিঠি দিয়ে ছিলাম। কিন্তু কোন উত্তর পাই নাই।
কি লিখেছিলেন ওই চিঠিতে?

শুনো তাহলে

প্রিয় পাগলী,
তোমাকে পাগলী নামে ডাকার দুঃসাহস আর সৌভাগ্যই বল কোনটাই আমার নেই। তবু ভুলেই ডেকে ফেললাম। জানই তো ভুল নিয়ে মাতামাতি করে লাভ নেই। ভুল তো তুমিও করেছিলে একদিন আমাকে ভালবেসে। আমি কি মাতামাতি করেছি?
আমি অনেক বেশি ভাল আছি। অবাক হলে তাই না, প্রথমে তোমার কথা জানতে না চেয়ে আমার কথা বললাম দেখে। জানি, তুমি মুখে না বললেও তোমার মন আমার কথাই আগে জানতে চায়।
তোমার কথা আর জানতে চাইলাম না।কষ্ট দিয়ে লাভ কি ?
তুমি যে ভাল নেই তা অজানা নয়।
প্রথমে তোমাকে ধন্যবাদ আমার কথা মতো সেদিন দেখা করার জন্য। তোমাকে বলার অনেক কথা আছে আমার, কিন্ত আজ হয়তো তোমার হাতে আমার কথা গুলো শুনার মতো সময় নাই। একদিন তোমার মনে আমার বসবাস ছিল। আজ হয়তো অন্য কেউ বাস করছে। জানি তোমার চিঠি পড়তে ভালো লাগে। তাই লিখে পাঠালাম।
তুমি মুখে না বলেও তোমার মন সব সময় জানতে চায় আমি ভালো আছি কি না?
ভালো থাকা এখন ততটাই কঠিন। যতটা কঠিন ভুলে থাকা। ভালো থাকার আশায় সিগারেট ছেড়েছি। জায়গা বদলেছি। ঘর দুয়ার সঙ্গ সব ছেড়েছি নিজেকে রুটিন মাফিক বেঁধে ধরেও ভালো থাকতে পারিনি। হয়তো আর ভালো হতে পারবো না।
আমার মতো অক্ষরজীবীদের চোখে অশ্মরী জন্ম নেয় আর জানতে ইচ্ছে হয় তুমি ভালো আছো তো?
তুমি হয়ত বলবে ভালোই থাকি সব সময়। আর ভালো-খারাপ থাকাটা নিজের কাছে। হয়তোবা তাই। কিন্তু নিজেকে কার কাছে রাখবো বলতে পারো?
আমার ভালো থাকা আর আকাশ দেখা এখন সমান কথা। তুমি একদিন স্বনির্ভর হবার স্বপ্ন দেখাতে!
আজ সেই তুমি স্বপ্ন ভেঙ্গে দিলে।
ভুলে গেছো?
ভোলাটাই স্বাভাবিক। ভুলকুমারী বলে কথা। আগেও তো একটুতেই আমাকে ভুলে যেতে। আমাকে এখন আর তোমার মনে পড়ে না।
আর মনে পড়বেই বা কিভাবে?
মনে রাখার মতো কোন কাজই করতে পারি নাই। সুলতানা ভুলে থাকার আরেক নাম অভিমান। আর সেই অভিমানকেই পাশবালিশ ভেবে জড়িয়ে আছো তুমি। তোমার মতো মেঘালয়ের পাহাড় গুলোও যেন আজকাল অভিমান করে আছে। তার গায়ে জমে থাকা মেঘগুলো অবচিত। তিলতিল করে জমে থাকা অভিমান, তোমাকে ছেড়ে আমাকেও গ্রাস করে নিচ্ছে ক্রমশ। তাই বোধ হয় চোখের উত্তাপে কাছের সম্পর্ক গুলোতে ছড়াচ্ছে ম্লান হবার পূর্বাভাস। মনে হয় তোমার নরম তুলতুলে হাত দুটোতে পাথরের মতো অসমান কোন চড় জেগেছে। যেন অদৃশ্য কংক্রিট। আলসে ভরা সেই সব ঘুমে ভরা বা শুয়ে শুয়ে এস.এম.এস এ কথা বলা দুপুর তোমার মুঠোতে এখন এনে দিয়েছে হাজার রকম কাজ আর কাজ। দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে তোমার বৈভব। তোমার মেসেজটা পড়ে ঐদিন খুব হেসেছিলাম। তোমাকে দেখে নাকি আমি এফবি থেকে বের হয়ে গেছি। মনে রাখার ভয়ে মানুষ যে এভাবে ভুলে যায় সেদিনই প্রথম জেনেছিলাম। আদর করে তোমার নাম রেখেছিলাম ‘পাগলী’নামটা তোমার খুব পছন্দ হয়েছিল। আমি কিছু বলতেই তুমি খুব মজা করতে।
আমি রেগে গেলে মিষ্টি হেসে বলতে রাগ করো কেন?
আমি না তোমার পাগলী,তাই না হয় একটু পাগলামী করেছি তোমার সাথে। এটাও ভুলে গেছ নিশ্চয়। আমিও সব ভুলে গেছি,আমার শৈশব, কৈশোর, যৌবন, আত্মীয় স্বজন, পরিবার, বন্ধু বান্ধব সব। তুমি বলতে পারো এসব আমার জন্য হয়েছে এ কথা সত্য। কিছু কাজ আমি ইচ্ছে করেই করেছি, কিছু কাজ পরিস্থিতির শিকার হয়ে করছি।
কেন জান?
তুমি ধনীর দুলানী। অভাব কি জিনিস কোন দিন তুমি বুঝ নাই। তাই মনে খুব ভয় জাগত,
তুমি আমাকে ভুলে যাবে নাকি?
তুমি আমাকে ভালবাস নাকি মুখে বল আমাকে ভালবাস! কিন্তু আজ বুঝলাম তুমি আমাকে কখনো ভালবাস নাই এখনো বাস না। তুমি তো অতীত ভুলে খুব সুখে আছো। ভুলে গেছো সেই ১৪ ফেব্রুয়ারি  এর কথা। ভুলে গেছো সেই ১ লা অক্টোবর এর কথা। ভুলে গেছো সেই ১৫ নভেম্বর এর কথা। সেই অনন্ত ভবন থেকে আসার পর তুমি বলেছিলে হয়তো আজকের আগে বাড়ি থেকে চাপ দিলে অন্য কোথাও বিয়ে বসতাম। কিন্তু আজকের পর আমি আর অন্য কাউকে মেনে নিতে পারব না। তুমি কিভাবে আমাকে নিবে জানি না। তুমি তাড়াতাড়ি আমাকে নিয়ে যাও। আর সেই তুমি ওই দিন বললে যে খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করবে। এত অল্প সময়ে সব ভুলে গিয়ে নিজেকে কেমন নতুন ভাবে সাজিয়ে নিলে। তুমি তো শুধু আমার সাথে অভিনয় করে গেছো, যে অভিনয় বুঝার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলাম আমি তোমাকে পাগলের মত ভালবেসে। তুমি বল আমি নাটক করেছি তোমার সাথে, তুমি যেহেতু বলেছো, হয়তো তাই করেছি আমি। তবে নাটকের মাঝে ভালবাসা ছিল সে ভালবাসা বুঝার মত ক্ষমতা তোমার ছিলো না এখনো নেই। কথায় আছে পৃথিবীটা রঙ্গমঞ্চ,আমরা সবাই অভিনেতা। তাই আমিও একজন অভিনেতা।
কিন্তু নিজেকে একটা প্রশ্ন করেছো কখনো?
কত বড় অভিনেতা হলে নিজের অতীত ভুলে নিজেকে নিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখা যায়। বা মমিতা বা।আমি আজ সত্যিই জিতে গেছি তোমার ভালবাসা বুকে আগলে রেখে। তবে তুমি হেরে গেলে আমার নিষ্পাপ ভালবাসার কাছে। তুমি বার বার বলেছো আমি তোমাকে রেখে অন্য কারো কাছে যেতাম। তোমাকে রেখে অন্য কাউকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম। আমি এতটাই বোকা যে তোমার এই কথা বুঝতে পারি নাই। আমার কাছে এর অর্থ এখন একদম পরিষ্কার, তুমি বার বার বলছো আমি বিয়ে করতাম যাতে করে আমিও এক শিকারীর শিকার হয়ে পড়ি। সারা জীবনের বাঁধনে বাঁধা পড়ি
কিন্তু আমি চাইনি পাহাড় সমান দুঃখ, বেদনা, কষ্টগুলি তোমার সামনে দাঁড় করাতে। অনেকের মত আমিও তো চাই আমার জীবনে দুঃখের পরে সুখ, বেদনার পরে আনান্দ, কষ্টের পরে শান্তি আসুক। আজ তো আমি দুঃখের সাগরে হাবু ডুবু খাচ্ছি। চাই না তুমিও তাই করো। আমি কখনো তোমাকে বুঝাতে চাই নি, যে একটি বৃক্ষ বড় বড় দাঁত ওয়ালা কাঠ কাটা করাত দিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছ।অন্য ভাবে বিচ্ছিন্ন হলে হয়তো কথা ছিল না কিন্তু যে দিন সব চুড়ান্ত হলো সেদিন থেকে কয়েক দিন ধরে চলল বড় বড় দাঁত ওয়ালা কাঠ কাটা করাত দিয়ে আমার বুকের উপর মহড়া। থাক সে সব কথা। আমার সাথে যে অভিনয় করে মাঝ নদীতে ফেলে দিয়ে নৌকা নিয়ে তীরে চলে গেলে,ওই ভাবে কারো মন ভেঙ্গো না। তুমি তো কারো মন ভাঙ্গনা, মনের মাঝে তোমার জন্য যে জায়গা হয় সেই জায়গায় নদী ক্ষনণ করে ফেলো। তুমি হয়তো জান না, আজ তুমি যে মন এ আঘাত করলে সেই মন এ তোমার ই বসবাস ছিল। তুমি না বুঝে আঘাত করলে। আমার কথা শনে অভাক হলে তাই না। হয়তো মাঝে মাঝে আমাকে ভাবলে তোমার মন মেঘ হয়ে যায়।
তখন হয়তো তোমার খুব জানতে ইচ্ছে করে তোমার মতো আমারও এমন হয় কিনা?
সূর্যের মতো সত্যি এই যে নন্দিত হতে গিয়ে আমি বোধহয় তোমার কাছে নিন্দিত হয়ে গেলাম।
নিন্দিত হয়ে পুরোনো কথা ভেবে কি হবে?
সেসব কথা ভেবে মনকে মেঘ করো না। রোজ রাত জেগে তোমার কথা ভাবি, যখন খুব খারাপ লাগে তখন তোমাকে নিয়ে কিছু লিখি, আজ তোমাকে খুব মিস করছি তাই লিখলাম। এখন আমার খাতা কলম আর ফোন টাই সঙ্গী আমার। কেউ হয়ত জানবে না কোনদিন! হয়ত আমি আর খোলা আকাশ জানবে মন খারাপের কথা। জানবে আমার ভাবনাতেও বিরহের তুলির আঁচর পড়ে। বিরহের সুর বাজে। করুণ বিউগলের সাথে সাথে কেউবা সেখানে রাজত্ব করে বেড়ায়। আমাদের ফেলে দেয়া সোনালী সে সময়কার সব স্মৃতির পাতায় আজ বন্দি। আজকাল যখন তোমায় স্বপ্নে দেখি তখন নিজেকে হ্যাংলাটে মনে হয়।তোমার মায়াবী চোখ,কাজল কালো চোখ পাগল করা সেই হাসি আর তোমার কোমল হাতে লেখা এস.এম.এস খুব মিস করি ! মাঝে মাঝে চিৎকার দিয়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়। এখন জীবনের সেই সোনালী দিন খুইয়ে পাথর যুগে এসে গেছি। পাথরের ভারে চোখ মেলতেই যতো যন্ত্রনা। প্রতি মুহূর্তেই সময়ের দাসত্বের অনুবর হয়ে যাচ্ছি, ভালো কিংবা ভুলে থাকার চেষ্টায় ক্রমাগত পরাজিত হবার শঙ্কায় ভুগছি। তুমি ভেবে নিও মুদ্রার এ পিঠের মতো জীবন হলেও আমি ভালো নেই। একটু একটু করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি সময়ের কাছে। আজও মনে হয়,
আমায় ছেড়ে একা থাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে তোমার?
ভেবো না, ভীড়ের মাঝে যখন তুমি একা হয়ে পড়বে, কাছে থেকেও যখন সবাই দূরের কেউ হয়ে যাবে, আর নিজেকে খুব একা মনে হবে, ঠিক তখনই আমায় ভেবো, তোমার ভাবনা মাঝেই সঙ্গী হব। ব্যাস্ত এ শহর যখন নিশ্চুপ হয়ে যাবে, ঘড়ির কাটার টিকটিক শব্দও যখন খুব কানে লাগবে, তখন যদি অঝোর ধারার কান্নারা বুকে জমাট বাঁধে, মনে রেখো ,আমি অশ্রু হয়ে তোমার কাছেই ফিরে আসব।
প্রিয় গানটি শুনে যখন উদাস হবে, শুন্য দৃষ্টি যখন আমায় খুঁজবে, তখন যদি চেয়ে দেখো, একটু দূরেই আমায় পাবে।
মাঝরাতে যখন জানালার পাশে বসে আমায় ভাববে মোবাইলে আমার ছবি দেখে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরবে, আর কাঁদবে আমি নেই তো কি হয়েছে?
দূর আকাশের তারা’রা তো আছে, তাদের একজন হয়েই না হয় তোমার সাথে গল্প করব….।
তোমার বরের দিকে খেয়াল রেখো, তাঁকে ঘরমুখি করো, বেশি রাত বাইরে থাকতে দিও না, শাড়ীর আঁচলে বেঁধে রেখো বা ওড়নায়। পরিবারে যখন বাস করি তখন তো পরিবারের নিয়মে থাকতে হবে। আমার পরিবার এর মতে এখন আর আমার একা থাকাটা বেমানান। আমাদের সমাজের দম্পত্তিদের সুখি হওয়াটাই সকলের বড় লক্ষ্য। আর বুঝি সংসারে সুখি হওয়াটা নিজেদের উপর নির্ভর করে। তুমি তো ভালো করে জান কোন বাবা মা-ই চায় না তার ছেলে কষ্ট পাক, কষ্টে থাকুক, প্রতিটি রাত কাউকে ভেবে কেঁদে কেঁদে বালিশ ভিজাক, চায় না একবুক কষ্ট বুকে চেপে রেখে একজন নির্বোধ মানুষ হয়ে বেঁচে থাকুক। তাই পরিবার থেকে বেশি চাপ দিচ্ছে বিয়ের জন্য। আর আমি ভালো করে জানি যে বিয়ে করে ব্যস্ত থাকার মধ্যে একটি জীবনের সার্থকতা থাকে। জীবন পরিপূর্ণ হয়। সমাজে পরিবারে একটি আলাদা মর্যদা পাওয়া যায়।
এসব জেনে কি হবে?
আমি যে তোমাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারি না। আমার মনে যে আজও তোমার বসবাস। আমি এখনো তোমার পথ চেয়ে বসে আছি। আমি যে তোমার দেওয়া ভালবাসা আগলে ধরে বেচে থাকতে চাই। যদি কখনো তুমি আমার ভালবাসার অভাব অনুভব করো,আমার ভালবাসার প্রয়োজন মনে করো,আমাকে কাছে ডেকো, পাশে পাবে। যদি কখনো ভালবাসার শুণ্যতায় ভুগ তাহলে চলে এসো, সব কিছুর অভাব থাকলেও ভালবাসার অভাব হবে না। তোমার অপেক্ষায় ছিলাম, আছি, আর ওই দিন পর্যন্ত থাকব। তোমাকে খুব ভালবাসতাম, ভালবাসি, আর তোমার ভালবাসা বুকে নিয়েই পৃথিবী থেকে চলে যাব। তোমাকে খুব বেশি ভালবাসি। খুব মিস করব তোমায়। যদি সম্ভব হয় উত্তর দিও।
যাই হোক আজ অনেক কথা বললাম। ভুল হলে মাফ করে দিও। শরীরের যত্ব নিও। ভালো থেকো। অনেক অনেক ভালো থেকো।
ইতি,
তোমার পাগল

যখন সুলতানার জন্য চিঠিটা লিখি তখন কেন জানি মনে হল, চিঠিটার একটা ছবি তুলে রাখি। আজ মনে হচ্ছে কবিতাকে পড়ে শুনানোর জন্যই হয়তো ছবি তুলতে মনে হয়েছিল। চিঠি পড়ার পর কবিতার দিকে তাকিয়ে দেখি চোখ দুটি রক্তের মতো লাল হয়ে গেছে। আর ওর সুন্দর লাল টুকটুকে মুখটা কালো হয়ে গেছে।
কবিতা তোমার এসব শুনার দরকার নাই। তুমি এসব শুনে সহ্য করতে পারবে না।
না, কোন সমস্যা নাই। আপনি বলেন। এত দিন বইয়ে পড়েছি। তখন মনে হয়েছে গল্প মনে হয় লেখক বানিয়ে লিখে। কিন্তু আজ আপনার জীবন কাহিনী শুনে মনে হচ্ছে বইয়ে যা পড়েছি তা বানিয়ে লেখা না। হয়তো কারো জীবন থেকে নেওয়া।
দুজনে কথা বলার মাঝে হঠাৎ করে আম্মু রুমে চলে আসল।
আম্মু : কবিতা আমাদের বাড়ী তোমার কেমন লাগছে?
কবিতা : জি ভালো লাগছে।
আম্মু: কবিতা তোমার মন খারাপ কেন?
কবিতা: কই না তো মা।
আম্মু: সত্যি করে বল কি হইছে?
কবিতা: না আম্মু ছোট ভাইকে খুব মিস করতাছি তো!
আম্মু: তোমার ভাইকে মিস করতাছো নাকি তুষার  তোমাকে কিছু বলছে।
কবিতা: না আম্মু উনি কিছু বলে নাই। বসে বসে আমাদের বাড়ি নিয়ে গল্প করতাছি তো তাই এমন লাগছে। আর উনি খুব ভালো মানুষ।
আম্মু : হইছে হইছে এই বাদরটা সম্পর্কে এত সাপাই গাইতে হবে না। আমি ওর সম্পর্কে জানি। ওই ভালোভাবে কারো সাথে কথা বলে না। সবার সাথে একই রকম ব্যবহার করে। শুনো মা এই বাদরকে ভালো বানানোর দায়িত্ব কিন্তু তোমার।
কবিতা: ঠিক আছে মা। আপনি কোন চিন্তা কইরেন না।
আম্মু: তুষার শুন, কবিতা কিন্তু এই বাড়ির বউ না। কবিতা আমার মেয়ে। তোর কোন ব্যবহারে যদি ও কোন কষ্ট পায় তাহলে তোর কিন্তু রক্ষা নাই বলে দিলাম। আর এখন কোথাও যাসনে। মেহমান আসার সময় প্রায় হয়ে আসছে। বলেই আম্মু রুম থেকে বাহির হয়ে গেল। কবিতা এখনো মন খারাপ করে বসে আছে। দেখে নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। মনে হয় মেয়েটি মনে খুব কষ্ট পেয়েছে।
আর কষ্ট পাবেই না কেন?
মেয়েদের বিয়ের আগে এক রকম থাকে। বিয়ের পর তার সব কিছু তার স্বামীকে ঘীরে হয়। মেয়েটি স্বামীর ভালবাসা তো পেলই না।
বরং আর কোন সে তার স্বামীর ভালবাসা পাবে কি না?
তাও জানে না। হঠাৎ করেই কেন যেন মনে হচ্ছে মেয়েটিকে একটু হাসানো দরকার।
তাই দুষ্টামির ছলে বলে ফেললাম শুনছ আম্মু কি বলছে?
এই বাদরকে ভালো করার দায়িত্ব দিয়ে গেছে।
পারবে তো ভালো করতে?
আর আম্মুর কথা শুনে মনে হল আমাকে হয়তো আমাকে গুগুল থেকে ডাউনলোড করছে। তাইতো বলল তুমি উনার মেয়ে। তোমার কষ্ট আমার রক্ষা নেই।
কবিতা আমার কথাগুলো শুনে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে বলল আপনার খুব হিংসা হচ্ছে তাই না।
হুম অনেক হিংসা হচ্ছে এই ভেবে যে আমাকে ছাড়া বাকি সবাই তোমাকে কেমন আপন করে নিছে।
কবিতা: আপনি শুধু আমাকে এই ভালবাসা টুকু পাওয়ার সুযোগ দিয়েন তাহলেই হবে। আর আপনি পাশে থেকে আমাকে একটু সাহস দিয়েন। আমি বাকি সব মেনেজ করে নিব।
মেয়েটির কথা শুনে নিজের প্রতি একটু সস্তি আসল।
আপনি যান ফেস হয়ে আসেন। কিছুক্ষণ পরে আমাদের বাড়ি যেতে হবে।
তুমি যাও আমি একটু বাজারে যাব। বাজার থেকে এসে ফেস হব।
এখন আবার বাজারে যাবেন কেন?
একটা চা খেয়ে এসে পরে ফেস হব।
এখন আর বাজারে যেতে হবে না। আমি চা করে দিচ্ছি।
তুমি চা বানাতে পার।
হুম
আপনি একটু বসেন আমি চা বানিয়ে নিয়ে আসছি।
বলেই বাহিরে চলে গেল। আমি বসে বসে সুলতানাকে নিয়ে ভাবছি। আর মোবাইল এ সুলতানার ছবি বের করে অপলক দৃষ্টিতে সুলতানাকে দেখছি।
হঠাৎ করে সানজিদা এসে বলছে মামা মামিটা কেমন হয়েছে।
সানজিদার কথা শুনে মোবাইলটা তাড়াতাড়ি করে বালিশের নিচে রেখে সানজিদার কথায় সাড়া দিয়ে বললাম হুম ভাল হয়েছে।
সানজিদা : হুম বুঝতে হবে না,দাদুিট কার?
দাদুর পছন্দ আছে বলতে হবে।
দুজনার কথা বলার মাঝে কবিতা চা নিয়ে আসল।
কি ব্যাপার আমাকে নিয়ে মা-ছেলের মাঝে কি কথা হচ্ছে হুম।
না তেমন কিছু না মামি। তুমি খুব কিউট মামি। তাই শুনলাম মামার কাছ থেকে।
এই নেন চা খান।
চা এর কাপ হাতে নিয়ে কবিতার দিকে তাকিয়ে আছি। কবিতাও আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এ দৃশ্য দেখে সানজিদা  পাশ থেকে বলে ওঠল মামা হইছে হইছে আর দেখতে হবে না। এত দেখলে চা ঠান্ডা হয়ে যাবে।
সানজিদার  কথা শুনে চা এ মুখ লাগালাম। চা মুখে নিয়ে তো রিতি মত অভাক হলাম। যেমন সুন্দর চেহারা তেমন সুন্দর তার হাসি, তেমন তার হাতের চা। চা খেয়ে মনে তৃপ্তি পেলাম। চা খেতে কবিতার ফ্যামেলি সম্পর্কে কথা হল। চা খাওয়া শেষ হলে কাপটা কবিতার হাতে ধরিয়ে দিলাম। কাপ হাতে নিয়ে কবিতা দাড়িয়ে আছে।
কিছু বলবে কি?
না! যাও তাহলে আম্মুকে সময় দাও।
চা টা অনেক ভালো হয়েছে।
ধন্যবাদ
যান এখন ফেস হয়ে রেডি হয়ে নেন। আমাদের বাড়ি থেকে ওরা রওনা দিয়ে দিছে।
ওকে যাচ্ছি।
গোসল দিয়ে এসে রেডি হতে না হতেই মেহমান চলে আসছে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এসে মেহমানদের সাথে কোসল বিনিময় করলাম। কোসল বিনিময় শেষে তাদের চলে গেলাম খাবার টেবিলে।খাবার শেষ করে রুমে চলে আসলাম।বয়স্করা বাহিরে বসে আড্ডা দিচ্ছে। কবিতার দুই জনন বান্ধবী আর চাচাতো দুই বোন আসছে। তাদের দেখে কবিতা তার আনন্দ ফিরে পেয়েছে। ভুলে গেছে কাল থেকে এপর্যন্ত যা হয়েছে। পাশের রুমে গিয়ে রেডি হচ্ছে তাদের বাড়ি যাওয়ার জন্য। আর তার দুই বান্ধবী আমার সাথে আড্ডা দিচ্ছে। তাদের সাথে আড্ডা দিয়ে কিছু সময়ের জন্য হলেও ভালো লাগছিল। তৎক্ষণে মনে পড়ে গেল মমিতার কথা।তাদের বুঝতে না দিয়ে আড্ডা চালিয়ে যাচ্ছি। আড্ডা দেওয়ার মাঝে কবিতার বোন এসে বলছে ভাইয়া চলেন!
কোথায় যাব?
কোথায় আবার আমাদের বাড়ি।
ও তাই বল।
তাদের সাথে চলে গেলাম কবিতাদের বাড়ি। আমাদের বাড়ি থেকে কবিতাদের বাড়ি প্রায় ৫০ কি.মি.দুরে।তাদের বাড়ি পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে গেছে অনেক। প্রায় ১১ টা বাজে। রাতের খাবার শেষে শুয়ে পড়লাম। কবিতা ঘাটের কোণায় বসে আছে চুপ করে। আর আমি শুয়ে শুয়ে সুলতানার কথা ভাবছি। কিছুকক্ষণ পর কবিতা বলছে একটা কথা বলব।
হুম বল
আমাদের আপনাদের বাড়ির মত এত রুম নেই। আর রুমের মেঝেতেও জায়গা কম।
তো কি হয়েছে?
আমার খুব খারাপ লাগছে। কাল রাতে একটুও ঘুম আসি নাই। এখন খুব ঘুম পাচ্ছে। যদি আপনার কোন সমস্যা না হয় তাহলে আমি কি আপনার পাশে শুইয়ে ঘুমাতে পারি।
ওর কথা শুনে একটু খারাপ লাগল।
কি বলব ভেবে পাচ্ছি না?
শুধু তার দিকে তাকিয়ে আছি।
সমস্যা থাকলে থাক। আমি ঘাটের কোনায় বসে ঘুমিয়ে যাব।
আরো অবাক হলাম কথাটা শুনে। মেয়েটি আমাকে বিয়ে কতটা অসহায় হয়ে গেছে। তার শুয়ার জায়গাটা ও আজ আমি দখল করে আছি। নিজের কাছেই খারাপ লাগছে। তাই বাধ্য হয়েই বললাম আচ্ছা শুইয়ে পড়।আমার কোন সমস্যা নাই।
ধন্যবাদ
বলেই শুয়ে গেল।
আচ্ছা আমি যে আপনার পাশে শুইছি সুলতানা  শুনলে কষ্ট পাবে না।
পেলে পাক আমি তো দুখের সাগরে ভাসছি।সে সুখে থাকবে কেন?
একটু কষ্ট অনুভব করুক।
জানেন আমার খুব স্বপ্ন ছিল জীবনে যার সাথে বিয়ে হবে,তার সব দুঃখ কষ্ট নিজের করে নিব। আর সুখটুকু দুজনে মিলে উপভোগ করব।
সুখটুকু দুইজনে মিলে উপভোগ করব। স্বামীর সেবা করে নারী জীবন ধন্য করব।
দেখছেন আমার ভাগ্যটা কেমন?
ভাগ্য গুনে আপনার মত স্বামী পেয়েছি। কিন্তু আপনার দুঃখ নিজের করে নিতে পাচ্ছি না। আর আপনার সেবা তো দুরের কথা। আপনাকে একটা অনুরোধ করব রাখবেন প্লিজ।
কি বল শুনি।
আমি আপনাদের বাড়িতে গিয়ে আম্মু আব্বুর যে ভালবাসা পাইছি তা কোনদিন ভুলতে পারব না। আপনি প্লিজ আমাকে এই ভালবাসা থেকে বঞ্চিত কইরেন না। দরকার হলে আমি আপনাদের বাড়িতে জি এর কাজ করব। আপনাদের খাওয়ার পর যা অবশিষ্ট্য থাকবে তাই খেয়ে দিন পার করে দিব। আমি কোন দিন আপনার কাছে স্ত্রী এর অধিকার চাবো না। প্লিজ আমাকে এই সুযোগ টুকু দিবেন।
কবিতার।
 কথা গুলো শুনে নিজের কাছে নিজেকেই অপরাধী মনে হচ্ছে। আমি কেমন করে একটা নিষ্পাপ জীবন নষ্ট করে দিচ্ছি। আমি কত টা বিভেকহীন হয়ে গেছি।
আবার ভাবছি আমার এখানে কি বা করার আছে?
আমার মন থেকে যে সুলতানার নাম মুছতে পারছি না। আমার শরীরের প্রত্যেকটি রক্ত কণিকায় সুলতানার নাম লেখা।
এই মনটা যে সুলতানার জন্য বেকুল হয়ে আছে।
কবিতা রুপে গুনে মমিতার থেকে রূপসী হলে কি হবে?
তার দিকে যে আমার বিন্দু পরিমান আকর্ষণ নেই। দুইদিন ধরে খুব চেষ্টা করছি অতীত ভুলে গিয়ে বাস্তবতায় ফিরে আসতে। কিন্তু কোনভাবেই মমিতার স্থানে কবিতা বসাইতে পাচ্ছি না। আমি এখন কবিতা কি বলব ভেবে পাচ্ছি না। শুধু বললাম তুমি এখন ঘুম আস তো। কপালে যা আছে তাই হবে। বলে আমি কবিতার বিপরীত দিক কাত হয়ে ঘুম আসার ভান করে সুলতানাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ছি কিছু বলতে পারি না। সকালে কবিতার ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আমার। শুইয়ে থেকেই মোবাইলে হাত দিয়ে দেখি ৮.৩০ বাজে।
উঠুন ফ্রেস হয়ে এসে নাস্তা করুন। অনেক বেলা হইছে। এখন আর ঘুম আসতে হবে না।
কবিতার কথা শুনে ফ্রেস হয়ে এসে সকালের নাস্তা করলাম। নাস্তা করে আবার রুমে এসে ঘাটের উপর শুয়ে আছি। এমন সময় কবিতার বান্ধবী তানহা এসে বলছে দুলাভাই চলেন বাহিরে যাই।
না গেলে হয় না
ডং কইরেন না তো চলেন।
আমি কি সার্কাস এর পুতুল নাকি ডং করব?
আপনি বাহিরে আসবেন নাকি পানি ঢেলে দিব?
ওকে আসছি।
বাহিরে এসে দেখি কবিতার আরও কয়েকজন বান্ধবী এবং চাচাতো, মামাতো বোনেরা অপেক্ষা করছে আমার সাথে দেওয়ার জন্য। তাদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে দুপুরের খাবারের সময় হয়ে গেছে। কবিতা এসে সবাইকে ডেকে নিয়ে গেল খাওয়ার জন্য। খাবার খেয়ে রুম এ গিয়ে বসে আছি। এমন সময় কবিতার একমাত্র ছোট ভাই এসে পাশে বসল।
ভাই আপনি কি আপু কে নিয়ে এখনি চলে যাবেন?
হুম তোমার আপু রেডি হলেই রওনা দিব।
ভাই আপনাকে একটা কথা বলি

হুম বল
আমরা দুই ভাই-বোন সব সময় এক সাথে থাকতাম। জানেন আপু খুব লক্ষী একটা মেয়ে। কোন সময় কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করে নাই। ও নিজে কষ্ট পেয়েও অন্যকে আনন্দ দিতে চায়। কোন সময় কোন কিছু আবদার করে না। আপনার কাছে একটা রিকুয়েস্ট আপনি আপুকে কষ্ট দিয়েন না।
এমন সময় কবিতা এসে হাজির।
কিরে আমার নামে কি বদনাম করা হচ্ছে?
তুই যে আমাকে বোকা বানিয়ে দেস নাই তাই ভাই এর কাছে বিচার দিছি। দেখিস তোরে কি মাইর দেয়। বলেই দৌড় দিয়ে রুম থেকে বাহিরে চলে গেল।
কবিতা: আপনার কি বাড়ি যেতে হবে না?
হুম তুমি রেডি হয়ে নাও।
আমি রেডি। চলেন বের হওয়া যাক।
পরে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
বাড়িতে আসার পর থেকেই মমিতাকে এক নজর দেখার জন্য খুব ইচ্ছে হচ্ছে। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। প্রায় প্রায়ই সুলতানাদের বাড়ির দিকে যেতাম কিন্তু তার দেখা পাইনি। একবুক কষ্ট নিয়েই বিয়ের ১০ দিন পর থেকে আবার আমার কাজে যোগ দেই। রাত ১ টা-২টার দিকে বাড়ি আসি। প্রত্যেকদিন বাড়িতে এসে দেখি কবিতা খাবার রেডি করে নিয়ে বসে আছে। কত দিন না করছি আমার জন্য খাবার নিয়ে বসে থাকতে হবে না, তুমি খেয়ে ঘুমিয়ে যেও। আমি এসে খেয়ে নিব। কিন্তু মেয়েটি আমার কথা শুনেই না। রোজ রোজ একই কাজ করে। খাবার শেষে দুইজনই ঘুমাই যাই। দুজনে এক ঘাটে থাকলেও মাঝখানে কোলবালিশ দিয়ে ভারত-পাকিস্তান এর সীমানা তৈরি করা হয়। এভাবেই চলে গেল ৬ মাস। আম্মু একদিন আমাদের শুইয়ে থাকতে দেখে ফেলে। তার পর থেকেই আম্মু আমার কাছে বিভিন্ন কিছু জানতে চায়। কবিতাকে আমার পছন্দ হয়েছে কি না। আমাদের মাঝে ঝগড়া চলছে কি না ইত্যাদি। আমি আম্মু কে নয় ছয় বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাই। হঠাৎ আমার প্রচন্ড জ্বর হয়।
_____
 আম্মু আমাকে ডাঃ এর কাছে নিয়ে যায়।
ডাঃ আমাকে বেশ কিছু টেষ্ট করতে বলে। টেষ্ট গুলোর করানোর পর ডাঃ রিপোর্ট দেখে বলে আপনি অনেক দেরি করে ফেলছেন।
আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
উনি আর ২মাসের বেশি বাচবে না।
উনি যা যা খেতে চায় বাসায় নিয়ে গিয়ে খাওয়ান সাথে এই ঔষুধ খাওয়ান আল্লাহ্ চাইলে সুস্থও হতে পারেন।এর বাহিরে এ রোগের কোন চিকিৎসা নেই। আমি কথা গুলো শুনে খুশিই হয়েছিলাম। কেন না সুলতানার  ভালবাসা বুকে আগলে রেখেই মরতে পারব জেনে। আমার সকল আত্মীয় স্বজনরা এসে দেখে যাচ্ছে আর আমার জন্য আফসোস করছে। এদিকে কবিতা নাছর বান্দা। রিতি মত রাত-দিন আমার খেজমত করে যাচ্ছে। আমি বার বার বুঝিয়েছি তুমি চলে যাও ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করে নিজের জীবনকে সুন্দর করে সাজাও।
কবিতা শুধু আমাকে বলত বাঙ্গালী মেয়েদের বিয়ে একবারই হয়। আমি আপনার ঘরে বউ সেজে এসেছি লাশ হয়ে বের হব। আপনি আমাকে সহ্য করতে না পারলে, আমাকে মেরে ফেলেন, আমি লিখে দিয়ে যাব আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। না তারপরও এ কথা বইলেন না।
কথা গুলো শুনে মন ভরে যেত। কিন্তু কষ্ট একটাই মেয়েটির জন্য কিছুই করতে পারলাম না। কবিতা নামাজ ও কোরআন পড়ে মুনাজাতে বসে অঝোর কান্না করত আর আমার জীবন ভিক্ষা চাইতো আল্লাহর কাছে।যত দিন যাচ্ছে ততো
আমি সুলতানাকে শেষবার দেখার জন্য পাগল হয়ে যাই।
সুলতানাকে দেখা করার জন্য বার বার বলা হইছে। কিন্তু সে আসে নাই। আমি ওর সাথে ফোনে কথা বলি।
সুলতানা  আমি তোমাকে একনজর দেখতে চাই।  শুনেছো তো মৃত্য আমাকে ক্রাশ করে নিয়েছে।
সুলতানা : তুমি কে?
আমি তোমাকে চিনি না।
তুমি মরে গেলে আমার কি?
আমি দেখা করতে পারব না।
সরি!
এভাবে ১০ দিন চলে গেল। আমার জ্বর কমে গেল। আমি সুস্থ হতে শুরু করি। এদিকে সুলতানা অন্য একটা ছেলেকে বিয়ে করে সংসার শুরু করে।

তোমাকে ভালোবেসে এই জীবনে তোমাকে আর পাওয়া হল না। তবুও বলি তুমি সুখী হও। তোমার আপন নীড়ে। স্বপ্নগুলো সাজাও তোমার মনের মত করে।  কোনদিন ভালবাসার অধিকার নিয়ে আসবো না তোমার কাছে। আমাকে নিয়ে তুমি ভেব না। মন থেকে আমাকে খোঁজ  করলে তোমার কাছে চলে আসবো।
সব দোষ তো আমার,  এখানে কবিতার কি করার আছে।  তাই কবিতার সাথে আর অবিচার করলান না।
তাকে তো আমার বাবা মা পছন্দ করে ইসলামি সরিয়ত মতাবে নিয়ে এসেছে। আমিও কবুল করেছি আল্লাহর কলেমা পড়ে।

তাই, কষ্ট হলেও,               
আমি কবিতাকে স্বামীর অধিকার দেই। সুলতানার বিয়ের খবর শোনার পর আব্বুর কাছ থেকে শুনতে পাই, আম্মু জেনে গেছিলো কবিতা আর আমার দুরসম্পর্কের কথা।
তাই আম্মু ডাঃ কে দিয়ে এমন মিথ্যা রোগের কথা বলিয়ে ছিল।
যাতে করে আমি আমার ভুল বুঝতে পারি।
সুলতানার বিয়ের পর থেকে আমি কবিতাকে ভালবাসতে শুরু করি। এখন কবিতা আর আবির এর মাঝে ভালবাসার অভাব নেই।

বি.দ্র. গল্পটি কারো জীবনের সাথে মিলে গেলে লেখক কোনভাবে দায়ী নয়।লেখক তার আপন ভাবনা থেকে লিখেছেন?গল্পে যে নাম গুলো ব্যবহার করা হয়েছে তা লেখকের কল্পনা থেকে নেওয়া।গল্পটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক।

গল্পটি কেমন লাগলো? দয়া করে জানাবেন।লিখার মাঝে কোন ভুল হলে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।আপনার মন্তব্য আমাকে আরো গল্প লেখার জন্য উৎসাহ প্রদান করবে।

Saturday, September 21, 2019

বিরহী মন

       বিরহী মন

এম এ মাসুদ রানা


আষাঢ় ও শ্রাবনের মধ্য রাত,
তুমুল বৃষ্টি করেছে যে, কাত,
মনের মাঝে জাগে প্রনয়ের স্বাদ।
উষ্ণতা খুঁজে হৃদয়ের আকুলতা
বুক জুড়ে একাকীত্বের হাহাকার।

নেই কোথাও আলো নিশানা
আঁধারে ঢেকেছে ঘোটা পল্লী।
জানালার পাশে শুধু  তুই নেই
বিষন্নতা লাগে বিরহী হৃদয়ে।
ব্যকূলতায় আছি আলো ছাড়ায়
দু"চোখে নেই কোন নিদ্রা।

পথিকেরা ভুলে গেছে পথ
হারিয়ে ঠিকানা হয়েছে নিঃস্ব।
বিরহী দু’চোখে, হয়েছে
একাগ্র বর্ষার জলে সিক্ত।

নেশায় যুবক

➡➡➡➡  নেশায় যুবক   ➡➡➡➡
⬅⬅⬅   এম এ মাসুদ রানা   ⬅⬅⬅

বেকার যুবক যারা হয়ে দিশাহারা
ধুমপান বিষপান মানে না তো ওরা।

পথে ঘাটে ঘুরে ওরা খায় হিরোইন
গাজা, ভাঙ্গ খেয়ে ওরা মাতলামি করে।

চোখ দু'টো গাঢ় লাল নেশায় বিলিন
পথে-ঘাটে ঘুরে তারা করে পাগলামি।

মন ভাঙ্গা যুবকের বল নাই কিঞ্চিত
মদ, বাবা,ডাইল খেয়ে ঢলে নিশ্চিত।

আর কত এই দেশে নেশা করবে বিস্তার
ঘুঘখোর, চাঁদাবাজ পেয়ে যাবে নিস্তার।

নাইট ক্লাব ক্যাসিনো খুলে দেয় সরকার
এর ফলে যুব সমাজ হয়েছে  ছাড়খার।

বেকার জীবনখানি করতেছে ছাড়খার
নেশা নিয়ে করতেছে রাত-দিন পারাপার।

আসবে না"কি তাদের যৌবনের বাণ
সংসার জীবনে পাবে না'কি তারা পরিত্রাণ।

Saturday, September 14, 2019

নিরাশার আশা

  নিরাশার আশা 

   এম এ মাসুদ রানা


শরতের জ্যোৎস্না ভেজা হাসী
তারা জ্বলা প্রদীপের নিশি।
গানে ছন্দে ভেসে যাওয়া
তোমার কথার প্রতিটি ফুলকলি।

হারিয়ে ফেলেছি সব কবিমনা ভাব
এঁকেছিলাম মনের ভীতরে যে, ছাপ।
জীবন কাহিনীর পাতা, রয়েছে শুধু ফাঁকা,
ভরে গেছে নিশ্চুপ কারুকাজের খাতা।

শূন্য আকাশে ছড়িয়েছে যে, বিশালতায়
সুখ নেই তাতে বর্নহীন ধূষরে মেঘমালা
পুরনো স্মৃতিগুলো মনে দেয় শুধু জ্বালা।
হারিয়ে ফেলেছি জীবনের প্রাপ্তির বাসনা
প্রতিক্ষার ক্ষণে ক্ষণে জাগে না কোন কামনা।

Friday, September 13, 2019

দূষিত আকাশ

 দূষিত আকাশ

 এম এ  মাসুদ রানা


তরা বাংলার আকাশ দেখ
উড়ছে দেখো কালো মেঘ
উন্নয়নের জোয়াড়ে ভাসে!
কথা থেকে দূর্নীতিতে আসে
কথায় কথায় কারা কাঁদে
এরই ফলে মেধা ফাঁসে ।

কালো মেঘের ঘনঘটায়
চারিদিকে বইছে হাওয়া
হচ্ছে কি আর মেধার খাওয়া।
কখনো কি কভু মুক্ত হবে?
এই বাংলার আকাশ বাতাস
মেধার গলায় যে, পরেছে ফাঁস
সবাই বলে সাবাস সাবাস।

হলো নিকষ কালো রঙে 
দুর্নীতিতে বাংলার আকাশ।
সবাই মিলে ঐক্য হবো,
দুর করতে নিকষ কালো
জ্বালাতে হবে মেধার আলো
উন্নয়ন সবে রাস্তায় ফেল।

Thursday, September 12, 2019

চাই না বিভেদ

 চাই না বিভেদ

 এম এ  মাসুদ  রানা


আলিয়াও না, ক‌ওমিয়াও না,
হানাফিও না, আহালেও না,
মালিকিও না, শাফিয়িও না,
হানবালিও না, হানিফিও না,
চাই না বিভেদ মুসলিমে।
চাই না ভেদাভেদ মোরা
কুরআন-সুন্নাহ ও হাদিসে।

শ্রেষ্ঠ নবীর পথটা ধরি
তাঁর কথায় মোনাজাত করি।
আখিরাতের পথ সুগম করি
এই বাসনায় ইমান ডোরী
যেন না হয় জাহান্নামের খড়ি।

নাজাত পেতে চান গুনাহ ছাড়ুন
আর ছেড়ে দিন শিরক, বদী।
পদ পদবীর লোভটা ছাড়ুন
নবীর ডাকে এগিয়ে আসুন
জান্নাত পেতে ইবাদত করুন।

Tuesday, September 10, 2019

দম

________  দম  _______
__ এম এ মাসুদ রানা __ 


দেহের খবর বলি শোন।
উত্তর দিকে আছে বেশী
দক্ষিণেতে আছে কম।
দেহের খবর না জানিলে
মৈত্রতত্ত্ব কিসে মেলে
অরুণ ভীতু সিয়া সীস-শ্রেত
দশদিকে এই চারি কোণ।
আগে খুঁজে ধর তারে
নাসিকাতে চলে ফেরে
নাভি পদ্মের মূল দূয়ারে
উঠে বসে সর্বক্ষণ।
সারা জাহানের মানুষ
যে জানে সে হয় বেহুস
মাসুদ বলে, থাক রে বেহুস
আদ্য জাহান তার আসন।



Sunday, September 8, 2019

বিনোদন

  ________ বিনোদন  ________

___ এম এ মাসুদ রানা ____


নেচে-গেয়ে চল তুমি

আগুনে কর পূজা!

মাঝেমাঝে কর নত শির

আবার রাখোও রোজা!


নাচ-গান চললে হয়

শয়তান বেজায় খুশি!

মুমিনর গায় না গান 

বজায় রাখে তাদের মান।

এপথে হয়ও না বেহুঁশ

পাপ পুণ্যে থাকে যেন হুশ।


নাচ-গান শোনে করো

ঈমানের  বিনাশ!

মুসলিম হয়েও তমি

মালউনদের হয়েছো দাস!


হক্ব কথা বলতে মনে আসে ভয়

সময়ে সময়ে থাকে  সংশয়!

হক কথা প্রচারে থাকে যত ভয়।

বিবেক আর তো বিবেক নয়

দিনে দিনে হচ্ছে বিবেকের ক্ষয়

করবে নাকি তোরা ইমানের জয়।


Wednesday, September 4, 2019

শহীদ

          শহীদ

   এম এ মাসুদ রানা 


শহীদের কাফেলায়
আজ প্রতি ওক্তে মুসলিম।!
কাশ্মীরি যোগ দেয়
রক্তের লেলিহান শিখায়!

রক্তের লালে রঞ্জিত
আজ পৃথিবীর জান্নাত!
একতার জল দিয়ে
ধুতে কেন চায় না মোরা?

কাশ্মীর কি নিবে কেড়ে?
তোদের কোনকিছু!
মূল কারণ ওটাতো না!
যত ক্ষোভ বিদ্বেষ হোক
মোদের তেলাওয়াত প্রার্থনায়!

আর কত লাশ নিবে?
আর কত রক্ত দিবে?
মোর কাশ্মীরের ভাই।
এজাজত নেতারা!
একটুও ভাবো না কি তোরা?
কত অসহায় হয়েছে তারা,
তোদের বিবেকের দরবারে
দেয়নি এখনো কোন সাড়া।

Tuesday, September 3, 2019

দালাল

           দালাল 

       এম এ মাসুদ রানা 


আজ জীর্ণশীর্ণ মুসলিম বিশ্ব
ছিন্নভিন্ন করেছে আরববিশ্ব,
সর্বক্ষেত্রে ঠোকাচ্ছে দিবানিশি
মুসলিম বিশ্ব হয়েছে একাকী।
ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব মানবতা
নিপীড়িত হচ্ছে মুসলিম উম্মাহ
লাঞ্চিত হচ্ছে মুসলিম বিশ্ব
রক্তাক্ত করেছে মুসলিম জাহান।

আজ ইহুদীরা মেতে উঠছে
রক্তের হলি খেলায়,
মুসলিম নিধনে মাতাল হয়েছে।
আজ আরব বিশ্বও এক হয়েছে
মুসলিম নিধন সাধনে
কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে করছে কাজ।

আফগান ধ্বংস হলো
মুসলিমের সুরের সাধনে।
ইরাক ধ্বংসের কারনে
নাই কি মুসলিমের হাত।
দীর্ঘদিন রক্তে খেলা খেলছে
ফিলিস্তিনের মুসলিম।
আজ কাশ্মিরেতে মালাউনরা
করছে মায়ের বুক খালি।
আজ আরব বিশ্ব তবুও 
করছে মালাউনের দালালি।

Monday, September 2, 2019

বসন্ত

         বসন্ত 

এম এ মাসুদ রানা 


আসে শীত, যায় শীত
মিটে সব মনের জিদ।
অপ্রত্যাশিত  ইচ্ছেগুলো
ব্যবধানে রয়ে গেলো।

পিঠাপুলির উৎসব হলো
পায়েস পোলাও, খেজুর রস
ভাপা পিঠা আর দুধ ভাত
খেয়েদেয়ে করি কাজ।

ভোরবেলা রোদের আশায়
ছুটে চলি যেথায় সেথায়,
উঠবে কবে দীপ্ত প্রভা ,
সবাই করে তার অপেক্ষা ।

কেমন করে কেটে গেল
ঘোটা দুই দুইটি মাস।
লেখাপড়া হয়নি তেমন
সেই যাতনা জ্বালায় এমন
রুদ্ধ করে শ্বাস-প্রশ্বাস ।

আসল আবার নয়া কাল
প্রকৃতিকে করেছে লাল।
সেই আমেজে ছুটে চলি
পথ-ঘাট আর অলি-গলি।

পাখিরা সব পেল পরিত্রাণ,
ঠান্ডা ভুলে ধরল সুরের গান।
এলো বসন্ত , এলো বসন্ত বলে
শীত গেলো সবে মাত্র চলে।
ফুলের আলোতে সুসজ্জিত গগণ
আকাশ বাতাস মুখরিত এখন।
এ যেন উঠে আসা নতুন প্রাণ
জরাজীর্ণ শীত থেকে অবসান।

এই ফুল , সেই ফুল
গন্ধরাজ গাদা জবা শিমুল
জাম্বুরা নয়নমণি বেলি বকুল
 হাসনাহেনা গোলাপ পানিকচুরি
সজনে ডালিয়া আতা বরই সূর্যমুখি
চন্দ্রমল্লিকা আর শত ফুল ও ফল।
সে সব কারনে, পাখির ধরে গান
প্রস্ফুটিত সৌন্দর্যের বাড়াল মান।

আমি বলি স্বাগতম !
স্বাগতম হে বসন্ত ,
তোমার রূপ অফুরন্ত
শীতকে করেছ ক্ষান্ত।

Monday, August 26, 2019

শবে বরাত

     শবে বরাত

   এম এ মাসুদ রানা 


ছলছল জলধারা
তোলপাল করে তোলে
তল পড়ে আজ!
টলটলে অশ্রু জলে
মুখরিত হবে যে, রাত
কিছু আশায় তুলবো যে, হাত।

অবনত শীর করবো তো নত
ধীর হয়ে ধীর হয়ে কথা হবে কত।
পাপের প্রাচীর মুছবো আজ
চৌচির হবে গুনার যত খাতা
মাথার উপর রবে না গুনার ছাতা
মন খুলে বলবো পুণ্যের কথা।

ঘুচে দাও, মুছে দাও
আছে যতশত পাপের দাগ
প্রাণবাঁশি পাক ফিরে
স্বর্গে আছে যত সুখ
মিটে যাক মনের যত দুখ। 

দূর হতে যতসব জীবনের
আছে যত কালো রাত!
এসেছে ক্ষমার রাত্রী
শবে-ই বরাত!

কলম

           কলম 

  এম এ মাসুদ রানা


কলম চলে বজ্রকঠিন
শব্দ দিয়ে বারুদ পরে
কাপুরুষদের ঠিকানা নড়ে
গ্রেনেড বোমা ছুড়ে মারে।

কলম চলে গোপন পথে
আঁধার রাতে থাকে সাথে!
নির্বিচারে পারুল মরে
অমানুষের গহীন বনে,
হচ্ছে কথা ক্ষণে ক্ষণে
নুসরাত কি রবে বনে।

কলম চলে দেশব্যাপী
লাশের বন্যায় ভাসাভাসি।
ধর্ষণ করে যে, মা বোনেরে
বেঁচে থাকা কি আর সাজে,
মরণ সুর হৃদয়ে বাজে।
মরণ জালা মনে নিয়ে
অপেক্ষায় থাকে দিনে রাতে।

Sunday, August 25, 2019

মনের আয়েশ

    মনের আয়েশ  

    এম এ মাসুদ রানা 


একা তোমার সাথে
হবে কি কোনদিন দেখ?
তোমাকে দেখার আশায়
 বেঁধেছি আমি বাসা।

মিছে করে দিওনা
আমার মনের আশা
মিছে হলে আমার আশা
ভেঙ্গে যাবে সাজানো বাসা।

শুনেছি সবাই বলে
মন ভাঙ্গলে নাকি মসজিদ ভেঙ্গে যায়
ভেঙ্গো না ভেঙ্গো না আমার মন
তুমি ছাড়া বাঁচবেনা আমার জীবন।


বিনয়

         বিনয় 

   এম এ মাসুদ রানা


ব্যবহারে কর জয়
তোমরা মানুষের মন!
পরাজিত হলে ভেবনা
এটাতেই তোমার মরন,
মরনকে সরণ করে
ফেল অশ্রু জল!
তখনি পাবে অশ্রুর ফল।

বিনয়ের অফুরান বানী
কর সর্বক্ষণে টানাটানি
কেউ হরন করলে হবে না মানামানি।
মনের মাঝে শক্তি রেখে
করবে তুমি বিনয়ের বিনিময়
বিনয় বিনিময়ে হবে নাতো ক্ষয়।
পৃথিবীও ঋণী হয় বিনয়ের কাছে
পণ করবো মোরা বিনয়ী হওয়ার আয়েশে।

অমোঘ প্রীতি

  অমোঘ প্রীতি 

 এম এ মাসুদ রানা 


তোমার কথায় ফুল ফোটে
      আঁধার রাতে জ্যোছনা ,
        হৃদয় মাঝে কাননে কাননে
           নীরবে নীরবে কূজন গোপনে
                     মধুর মিলনে মোহনা।

তোমার ভাবনায় সুর আসে
    অঙ্গে অঙ্গে নতুন বাসনা
         মন বিতানে মঞ্জুরিতে
             গানে গানে রাগের ঝংকার
                      অমোঘ প্রীতি টানে।

তোমার সঙ্গে সুখ তরঙ্গ
        চৈত্র ফাগুনে পলাশ ,
           উপত্যকার শীতল বাতাস
               জুড়িয়ে মনের উষ্ণ হতাস
                      প্রাণে শ্বাস প্রশ্বাস ।

Wednesday, August 21, 2019

শেষ কথা

 শেষ কথা

এম এ মাসুদ রানা 

তোমার শেষ চিঠিতে
ভালো আছিস, ভালো থাকিস
তোমার নমুনা প্রণয় বিনয়
সত্যি কি দারুণ অভিনয় করেছো? 

তুমি পারো বটে,
ছাড়িয়ে গেছিস অনেক আগেই
সত্য-মিথ্যা, অদল-বদল, যখন-তখন।
তুমি কার, কে তোমার?
জানো কি তুই নিজে?
অবাক হই তোমাকে দেখে দেখে
বিনাশ হই আমি ভেতরে ভেতরে।

থাক!
তুমি থাকো তোমার মাঝে,
আমি নেই আর তোমার কাছে
সাজতে চাইনা আর কোন নতুন সাজে।

তুমি সুখী হও দূর দেশে 
ডের বেশি সুখে।
আমি বেদনায় কাতুর রবো দূরে 
কখনো আসবো না তোমার নড়ে।

Monday, August 19, 2019

কাশ্মীর বলছি

  কাশ্মীর বলছি 

এম এ মাসুদ রানা 


হে মুসলিম শোন,
মন দিয়ে সব শোন!
তোমাদের কেন এতো ভাব?
ভার আছে শান্তির যে, অভাব।
তোমরা সবাই হর্ষে রবে!
আমার এই বেদন দেখে।

গ্রেনেড বোমায় চূর্ণ হয়ে
আমরা না হয় বিবর্ণ হয়!
জরন মরন যন্ত্রের ফলে
আমায় নিচ্ছে মৃত্যু কোলে!
এই পৃথিবীর মাস্তি আমেজ
ফূর্তি থেকেও বঞ্চিত র‌ই!
সর্বদাই বিনয়ীভাবে তোমাদের কই।

আমার লাশের গন্ধ থেকে
তোমরা ফেল তৃপ্তির ঢেকুর!
আমার গায়ের রক্ত দেখেও
তামশা দেখ দাঁড়িয়ে দূর!
বাজায় বাঁশি করুন সুরে
তবুও তোমরা থাকো দূরে।

তোমরা থাকো আমাদের তরে
ভরসা করি তোমাদের পরে।
বিপদ এলে পাশে রবে
মনের কথা খুলে কবে।
সব যাতনা ভুলিয়ে দিবে
ভাই বলে বুকে টেনে নিবে।
এটাই হবে বড় চাওয়া
এর চেয়ে বেশি কিছু যায় না পাওয়া।

Sunday, August 18, 2019

অন্ধ আইন

       অন্ধ আইন 

    এম এ মাসুদ রানা 


অন্ধ আইনের, বদ্ধ কথা
বলবো কি যে, আর?
আঠারো বছর হয়নি ছলে,
মেয়ের বিয়ে বন্দ বলে।
স্বর্গ সুখ খোজার জন্য
মজনু জন্য ছোটে তার
খুঁজে খুঁজে  দিশেহারা,
চলে না কেউ মজনু ছাড়া
যতই থাকুক কড়া পাহাড়ায়।

একুশ বছর হয়নি বলে
ছেলের বিয়ে বন্দ,
লিভটুগেদার আছে বলে
করে নাতো কেউ গালমন্দ।
কথায় কথায় বলে শুধু
গান, গল্প, আর ছন্দ।

সৎ পথে যে করে গমন
তার  চলার পথ হবেই তো বন্ধ,
চোখ থাকিতে  তাকে বলি অন্ধ।
অসৎ কাজ রুখার মতো
বায়না করে শত শত।
অসৎ কাজের বেলায়
আইন চলে কথায় কথায়।
হবে না কোন বাদ বিচার
আইন হয়ে যায় অন্ধ
বিবেকের কথা বন্দ।

Wednesday, August 14, 2019

কুরবানী

       কুরবানী

    এম এ মাসুদ রানা 


কুরবানী হোক আল্লার জন্য
লোক দেখানো নয়,
আল্লাহর জন্য কুরবানীতে
আল্লাহ  তুষ্ট হয়।
আল্লাহর হুকুমে কুরবানী দিলে
আল্লাহর তাকওয়া লাভ হয়।

সুদ ঘুষের আর কালো টাকাই
যতই করি না কুরবানী,
থাকুক না কত আহাজারি।
লাভ হবে না কোন কিছু
আল্লাহর হুকুম যদি না মানি।

সৎপথে ঐ কামাই করে
কিনবো কুরবানীর পশু
হোক না যতই ছোট,
প্রতিদান তো দিবেন আল্লাহ
দিবে না কোন লোকে। 


সুখের সন্ধানে

     সুখের সন্ধানে

      মোঃ মাসুদ রানা


বয়সের সূর্য ঠিক মাথার উপরে,তবু
ক্লীষ্টতার ছোঁয়া ষোড়শী যুবতীর মতো
 টকবক করে আহনীর্শ,
হঠাৎ মাচরাঙ্গা রুপ নিয়ে
ঝপ করে ঝাপ দেয় সুখ।

দাঁত ভাঙ্গা দান নিয়ে ফিরে এলে ঘর
হঠাৎ দ্যাখে কালোমেঘে এলোকেশী ঝড়
ছুটে আর ছুটে ঝড়ে খেলো না-কি ঘর?
হেথা গিয়ে দেখি কে আপন পর?

চারদিকে ওরা সব সুখ ন্যায় দ্যাখে
পুবের গগনে উঠেছে কি সূূর্য না-কি ডুবেছে?
প্রিয়তমা মোর ছেড়া আঁচলে ছেড়া
কণে মুছে জোড়া চোখ,
অবশেষে ঘুরে ফেঁড়ে দ্যাখে মোরে
নিস্তন্ধ, নিথর এইবুঝি সুখ।

Tuesday, July 30, 2019

সুরের বাঁধন

     সুরের বাঁধন 

    এম এ মাসুদ রানা 


‘আমি তোমার  বাঁধিতে চাই
আমার প্রানের , সুরের বাঁধনে
তুমি জান না, আমি যে, তোমায়
পেয়েছি এক অজানা সাধনায়।
সত্যিই কি মাধবী অপরূপ রূপ তোমার।

আমি পেয়েছি তোমায়
তুমিতো গ্যাস বেলুনের মতো উড়ে চলো
দুরন্ত অজানা আকাশের পানে
অন্য কারো সুরের বাঁধনে।
তুমি তো বুঝ না, তোমার কী সম্মান
কোথায় গেলে বাড়বে তোমার মান।

আমি পেয়েছি তোমায়,
আমার এ প্রাণ তোমাতে অবিচ্ছেদ্য
এক নিরাকার চিরন্তন ধ্রুব শিখা
হৃদয়ের গভীরে অজানা কম্পনের দিশা।

তোমাকে পেয়েছি অজানা সাধনে
হয়ত পাইনি কিছুই-
তবু স্বপ্নও কখনো সত্যের অধিক
রঙিন ছায়ার আচ্ছাদনে আচ্ছাদিত
সুরের মূর্ছনায় ঢেউয়ের তরঙ্গে
প্রাণস্পন্দন উত্থিত ক্রমশ জোয়ার
বিকালের সোনালি রোদ-মখমল উষ্ণতা
ছেড়ে চলে যেতে পারি না অন্য কোথাও
মায়ার বাঁধনে রূপশালি ধানভানা শরীরের ঘ্রাণ

মাথার ভিতরে আছে
এক চিরন্তন বোধ সদা আবর্তিত
আমি তারে নেভাতে পারি না
অন্য কোন অজানা সাধনে
সুরেরও বাঁধনে,শান্তির লগনে
তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার পরমাত্মা
ছেড়ে চলে যেতে পারি না সুরের মূর্ছনা।

Sunday, July 28, 2019

ভালোবাসায় সম্মান

 ভালোবাসায় সম্মান 

  এম এ মাসুদ রানা 


রাত বাড়লে মেরুদণ্ড ঋদ্ধ
হাড়ে বাড়ে এক অজানা শক্তি
প্রেমে-অপ্রেমে, বেলা-অবেলায়,
খেয়ালে-বেখেয়ালে ভালোবাসা পালায়।

বিড়াল ছানার মতো আদর করা,
ময়নার মতো কথা শেখানো।
নয়'তো বাঁকা হাড়গোড়ে এক অনুভূতি
বাসমতি গন্ধ ছড়িয়ে সে পালায়, গাংচিল
তেপান্তরে- হায় হায় জীবনবেদে সজারু
ভালোবাসার আশায় বসে থাকা বটতলায়।

ভালোবাসার তড়খড় লতিয়ে লালনের কালীগঙ্গায়
কবির কবিতায় ভালোবাসার মোহন বাঁশি বাজায়,
প্রেম-ভালোবাসার মরুদ্যানে ভালোবাসার শব্দগুলো
শুকিয়ে খড়খড়ে মড়েমড় শব্দ আসে যায়।

আপেক্ষিক সূত্র মানা যায় না, হৃদয়াঞ্চলের নদীতে পানশি চায়,
ছলছলিয়ে খিলখিলিয়ে ময়ূর সময় পেলে, ভালোবাসারা ডানা মেলে।
তেল ছড়িয়ে, হৃদয় জুড়িয়ে সন্ধ্যার আগেই আঁচলে জড়ায়।
ভালোবাসতে গেলে একটু পাগল হতে হয়, মজনু তো নয়
জীবনভর  ভালোবাসায় থাকে কবিরা, তাদের কল্প রাজ্যে
ভালোবাসার কাব্যমালা গাঁথতে হয়, নইলে কী ৩০ বছর যায়?

আপন না পর

      আপন না পর

       এম এ মাসুদ রানা 


আপন করার স্বাদ জাগে মনে
আপন করার ভাব থাকে
আপন করার আশায় থাকি
আপন করার ভাবনা ভাবি
আপন করার চেষ্টায় থাকি
আপন করার কামনা থাকে
আপন করার ইচ্ছা থাকে
আপন করার উপায় খু্জি।

আপন করে ভাবি সবসময়
আপন করে যাচি সবসময়
আপন করে বাঁচিতে চাই
আপন করে সাজিতে চাই
আপন করে হাঁসিতে চাই
আপন করে কাঁদিতে চাই।

আপন কেউ করে না আমায়
আপন কেউ করে ভাবে না আমায়
আপন কেউ  করে না আমায়
আপন কেউ সাজে না আমার।

আপন ভবনাটা আমার মিথ্যা
আপন ভাবনাটা আমার পাপ
আপন ভাবনাটা আমার অপরাধ
আপন ভাবনাটা হলো আমার অনুতাপ।

গরীব

       

     গরীব

এম এ মাসুদ রানা 


গরীবের বন্ধু হয় না
গরীবের সুখ সয় না
গরীবের কথা থাকে না
গরীবের আশা থাকে না
গরীবের কেউ কাছে থাকে না
গরীবের স্বপ্ন থাকে না
গরীবের অবলম্বন থাকে না
গরীবের যন্ত্রণা কেউ বুঝে না
গরীবের কথার অর্থ থাকে না
গরীবের মূল্যও থাকে না।

গরীবকে কেউ বিশ্বাস করে না
গরীবকে কেউ কাছে ডাকে না
গরীবকে কেউ পছন্দ করে না
গরীবকে কেউ সাহায্য করে না
গরীবকে কেউ পথ দেখায় না
গরীবকে নিয়ে সবাই খেলতে ভালবাসে।

গরীব জানেও জানে না
গরীব মানেও মানে না
গরীব কর্মের ফলও পায় না
গরীব চাওয়া আশা করেও চায় না
গরীব করে না কোন বায়না।
গরীব উচ্চ বাসনা করে না
গরীব ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে না

গরীব নিম্ন কামনায় থাকে
গরীব সমান্য খাবার নিয়ে ভাবে
গরীব সামান্য খাবার খাবে
গরীব সামান্য ভাবনায় থাকে
গরীব সবসময় শূন্য থাকে।

Thursday, July 25, 2019

মানব শিখা

    

     মানব শিখা 

   এম এ মাসুদ রানা


মানব শিখায় উঠেছে মানবতা
শুঁকুন সেজেছে বিহঙ্গ।
কুকুর-বিড়াল ঘুরছে বুক ফুলিয়ে
মানুষকে করেছে কীটপতঙ্গ।

আকাশ ছায়ায় শকুন উড়েছে
পরিমল মানচিত্র ভয় পয়েছে,
পতাকা হবে কী কিছু ক্ষয়?
স্বাধীন বাংলায় কেমনে এ-সব হয়?
দাসের জীবন বহন করে জনতার।
নদীর জলে লাশ ভাসে
শুকুনেরা খেতেই আসে।

পরিমল মানচিত্র ঠুকরে খাচ্ছে,
কোন এক শুঁকুনের দল?
জাতীকে করেছে পদতল।
বিবেক জুড়ে বইছে ঝড়ো
হরিলুটের বাতাস!
পরবো না'কি আর স্বস্তির শ্বাস।

Tuesday, July 23, 2019

ঝড়ের ডরে

ঝড়ের ডরে

জিল্লুর 


মেঘ ভেঙে যাই
মেঘ ভেঙে যাই
থালায় থালায় জল।
মনের ভিতর ভয়ের রাজা
করছে কলাহল।

মেঘ ফেটে যাই
মেঘ ফেটে যাই
আগুন নিয়ে খেলে
চোখ জোড়াতে ঝাপসা লাগে
খেলা দেখতে গেলে।

জল পড়ে যাই
জল পড়ে যাই
একটু নাহি থামে
ঘরের ভেতর জল ভরেছে
ভয় ধরেছে দমে।

বান ভেসে যাই
বান ভেসে যাই
ধবংস লীলা নিয়ে
ঘর ভাসছে মানুষ ভাসছে
জীবন ছেড়ে দিয়ে।

শিশু কেঁদে যাই
বুড়ো কেঁদে যাই
ঝরের হাওয়ায় বেগে
মা ভেসে যাই বানের ঝরে
ভাই কেঁদে যাই রেগে।

Friday, July 19, 2019

তোমার ফুল

 তোমার ফুল  

এম এ মাসুদ রানা


গোলাপ রজনীগন্ধা ফুল থাকতে
তুমি দিলে যে, ফুল আমায়!
জুঁই চামেলি গাঁদা বকুল
এ কোন ফুল দিলে আমায়?

এই ফুল নয়তো সেই ফুল
যে ফুলের কারণে প্রতিনিয়ত হচ্ছিল
আমার  শত শত ভুল।
স্বপ্নদেশে নিত্য নিয়ে রাঙিয়ে যাও।
এসো কাছে, বসো পাশে
দূর থেকে কী যে, সুখ তুমি পাও?

কথা ছিল তো,
এসে হৃদয় বাগানে, ফুটাবে প্রেমের ফুল
তা না করে করেছো তুমি
অন্তর আমার কাঁটার দুই কূল।

যে ফুল ফুটিয়েছো, সে ফুল তো ফুল নয়
তবে কী ছিলো, সব তৃষ্ণার্ত ভুল?
তোমার প্রেমের বাগানে,
হাঁটতে যাওয়ায় হয়েছিলো বড় ভুল
তাই তো এখন হারিয়েছি দুই কূল।

Sunday, July 14, 2019

চোখের ভাষা

_______ চোখের ভাষা ________
_____ এম এ মাসুদ রানা _______

চোখে বুঝা যায় মনের কথা 
তারই মাঝে থাকে মনের ব্যথা।
চোখে চোখ রেখে শুধু নয়
হাতে হাত রেখেও শুধু নয়।
চোখের ভাষা বুঝতে হলে
চোখের মত চোখ থাকা চাই।

জীবনে কখনও চোখে চোখ রেখে
অনুরাগে অনুরাগের পত্র লেখে।
পত্রের সে, ভাষা বুঝতে হলে
মনের মতো একটা মন থাকা চাই।।

তাই তো এ চোখ, 
কখনও হাসে, কখনও কাঁদে।
অশ্রু জলে আবার কখনও ভাসে।
চোখের ভাষা বুঝতে হলে
চোখের মত চোখ থাকা চাই।

Monday, July 8, 2019

অধঃপতন

  অধঃপতন

এম এ মাসুদ রানা 


অধঃপতনে গেছে দেশ
এরই ফলে মেধা শেষ।
এই সমাজ চালান যারা
অধঃপতনে দিয়েছে সারা।

খুন ধর্ষণ খাদ্যে ভেজাল
ঘুষ ও দুর্নীতির ছড়াছড়ি।
নিয়োগবাজি আর চাঁদাবাজি
এই সব নিয়ে মাতামাতি।

নিচ্ছে নাতো দেশের খোঁজ
দূর্নীতি নিয়ে চলে ভোজ।
ধনী হবে এই বাসনায়
অর্থ নিচ্ছে গুনায় গুনায়।

কবে নাগাদ বন্ধ হবে
অমানুষী আর জোচ্চুরি?
মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আজ
সুযোগ বুঝে করবে কাজ।

Sunday, July 7, 2019

প্রার্থনা

        প্রার্থনা 

এম এ মাসুদ রানা 


প্রভু আমায় নিয়ও ক্বাবা ঘরে
তোমার অসীম দয়া ঢেলে!
আমার হৃদয় শান্ত হবে
তোমার ক্বাবার দেখা পেলে!

মুলতাজামে বুক ছোঁয়াবো
চোখ ভেজাবো জলে!
হাজরে আসওয়াদে চুম্বন দেব
পাপ থেকে পাবো পরিত্রাণ।
জমজম কূপের পানি করবো পান
করবে পূরণ তুমি মনের টান।
ইয়া ইলাহীর ক্বাবার ছোঁয়ায়
আমার হৃদয় হবে ম্লান!

দিন রজনী স্বপ্ন জাগে
কবে যাবো ক্বাবা ঘরে।
হৃদয় মাঝে আহামরি
করছি আমি ছুটাছুটি!
কখন যাবো ক্বাবা ঘরে!

Friday, July 5, 2019

ফিরে এসো তুমি

                            

                  ফিরে এসো তুমি

                        এম এ মাসুদ রানা 


কখনো বলি ফিরে এসো তুমি, আবার কখনো বলি এসো না ফিরে!
হঠাৎ ঘুম ভাঙার পর জানালার পর্দা ভেদ করে মৃদু আলো চোখের ওপর পরাতে শরীরের কম্বলটা টেনে মাথাটা ঢেকে নিজেকে জড়সড় করে আবার ঘুমাতে চেষ্টা করলাম। এক চোখে প্রচণ্ড ঘুম ভাব থাকা সত্তেও আর এক চোখ যেন ঘুম না পারার দলে। এক পলক ঘুম আসতে দেয় না।

চোখ খোলা রেখেই বালিশের পাশে থাকা মোবাইলটা হাতে নিয়ে সময়টা দেখলাম। সময় তখন সকাল ০৭.৩০ মিনিট।
কি যেন মনে হতে লাগল ঠিক এই সময়টাতে। কি যেন করতে হবে সকাল ০৭.৩০ মিনিটে ঠিক মনে করতে পারছি না। প্রতিদিনই তো এই সময়টাকে ঘিরে কিছু একটা করতে হয় আমাকে কিন্তু আজ কেন মনে পড়ছে না ?
 ভাবছি হয়ত মনের ভুল, তাই ভেবে নিরব হয়ে দুই চোখের পাতা বন্ধ করে ভাবনার সাগরে ডুব দিলাম। হ্যাঁ মনে পড়ছে কি করতে হবে আমাকে। ভেবেই আমি আনন্দিত কিন্তু কাজটা করার পর কতটুকু আনন্দিত হবো তা একমাত্র ওপরওয়ালা ছাড়া আর কাউকে বুঝাতে পারবনা।
প্রথম তোমার কণ্ঠস্বর শুনে দিনের শুরু করতে হয় আমাকে এই সমটাতে। জানি তোমার ফোন ১০ মিনিট কম ০৮টাতেই সুইচ অন করবে। তারপরও কেন জানি ঠিক ০৭.৩০ থেকেই তোমার ফোনে ট্রাই করতে ভালো লাগে ঠিক এই কথাটার জন্য যে, তোমার মত তারছিরা পাগল আমি আমার জিন্দেগিতেও দেখিনাই যে কিনা গত ১ বছর যাবত একই সময়ে একই কথা বলার জন্য অনবরত ফোনে ট্রাই করে যায়, শুভ সকাল মাসুদ , লাভ ইউ সো মাচ।

শুরু হল আমাদের কথা চলা। দুপর ২টা পর্যন্ত চলবে আমাদের এই ননস্টপ এস এম এসে কথা বলা। চলে আসবে অনেক রকম কথা বার্তা, হাসি কান্না, সুখ দুঃখ এমনকি হাজার বার একই কথা, লাস থেকে ওঠে অফিসে ওপর একটু রহম করোরে বাবা। শুধু চুপটি করে কথাগুলো হজম করতাম আর ভাবতাম, আল্লাহর অসীম মহিমা দ্বারা সৃষ্টি তুমি। কখনও কি পারবো আমার এই আমার এই কথা বলা মানুষটাকে। সে কি আমাকে একা ফেলে দূরে কোথাও চলে যেতে পারে ? মনে পড়ে অতীতের সব পুরোনো  কথাগুলো ?

আজও আমি সেই ধ্যান ধারনা, চিন্তা ভাবনা থেকে বের হয়ে আসতে পারি নাই। আমাকে আজও অপেক্ষা করতে হয় ঠিক এই সময়টার জন্য। রাতে যত দেরি করেই ঘুমাই না কেন ঘুম ভেঙ্গে যায় এই সময়টাতেই। ফোন চেক করে দেখি ভুলবশত যদি ১টা এস এম এস আমাকে করে ফেল ?
তাহলেই হয়ত একটু কথা বলার সুযোগ পেয়ে যাবো। তাই আজও আছি আমি তোমার অপেক্ষায়।

প্রতিটা মানুষ সুখের স্বপ্ন দেখে, আমিও দেখেছিলাম তোমায় নিয়ে যা তুমি ভেঙ্গে দিলে। কেমন করে পারলে তুমি ? মনে আছে তোমার সেইদিন গুলোর কথা, মনে পড়ে আমাদের দুঃখ আনন্দের দিন গুলো ?
হয়তো মনে পরে না, তাইতো আজ তোমায় প্রশ্ন করি তোমার ভালোবাসায় কি সত্যতা ছিল না ?
তোমার কান্না কণ্ঠের কথাগুলোও কি মিথ্যা ছিল ? মাঝে মাঝে ভাবি কি অন্যায় ছিলো আমার, তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখাটা নাকি তোমায় অনেক ভালবাসাটা ! বদলে গেছ তুমি তাইতো আজ আমি তোমার কাছে অচেনা মানুষ।

আমার পৃথিবী হঠাৎ যেনো স্তব্ধ হয়ে গেছে আজ । চারিদিকে হাকাকার। হৃদয় নিংড়ানো ভালবাসায় বাস্তবতা, ভবিষ্যৎ ও স্বপ্নময়তায়, স্বপ্নেই বেঁধেছিলাম তোমায় তাইতো যন্ত্রণাময় অসীম অপেক্ষা করছি । জানি না কখনও কারো  ছিলাম কি'না। শুধু জানি ভালবাসি তোমায়। যে হেরে যায় তাকে পরাজিত বলা হয় না, পরাজিত তাকেই বলা হয় যে জিততেই চায় না। আমি তো তোমাকে ছেড়ে যায়নি, এখন তুমিই বল তুমি জয়ী হলে নাকি আমি হেরে গেলাম তোমার কাছে ?

ভালোবাসাবা সীমাহীন এই দিন সব নয়, শেষ নয়, আরো দিন আছে, ততো বেশি দূরেও নয় বারান্দার মতো, যেন ঠিক দরজার কাছে। যখন তোমাকে অনুভব করি আমার পৃথিবী কিছুক্ষনের জন্য থমকে যায়, হয়ত তোমার মধ্যে পৃথিবী ছাড়া কিছু আছে। সত্যি, লোকে বলে মন থেকে ভালবাসলে ভালোবাসা একদিন না একদিন জীবনে ফিরে আসেই। একা একা আর দিন কাটে না, মনের ভিতরের অঘটনগুলো আর কতকাল বেঁধে রাখব সেথায় ভরসার জলে কান্না শুনিয়ে তোমাকে বলতে চাই, মেয়ে ফিরে এসো, এসো না ফিরে জানিইতো আর আসবে না। তবুও মন বলে তুমি একদিন ফিরে আসবে। তাই আবার বলি তুমি ফিরে এসো আমার পানে। আবার নতুন করে সাজাবো আমাদের প্রেমের ভূবন।

অর্জন

 ___ ____ অর্জন _________

__ এম এ মাসুদ রানা ____


সংবাদ পত্র পড়ে মনে হলো

দেশটা গেছে রসাতলে। 

সোনা দেশে নারী ধর্ষণ হলে 

ধর্ষক ধরা পরেনা কলে।


শিশুর সাথে বৃদ্ধা ধর্ষণ 

চলছে ধর্ষণ দিনেরাতে। 

স্বামীকে বেধে তার সামনে

স্ত্রী ধর্ষণ শেষে মেশে। 


মায়ের সামনে মেয়ে ধর্ষণ, 

ছেলের সামনে মা ধর্ষণ, 

ধর্ষণ উৎসব ভেবে ধর্ষক 

করে বেড়ায় সুখের বর্ষণ।


মেতেছে এমন হলি খেলায়

বিচার বিভাগের নেই গর্জন, 

স্বাধীন দেশে লাভ করে হলো

কি তাহলে এটাই অর্জন?


সব মানুষের মনে ব্যাথা

হচ্ছে না কথা বলা। 

অপরাধীর মুক্ত হয়ে করছে

দারুণ হলি খেলা।


হচ্ছে না তো কারো সাজা

নিত্য নতুন করছে পাপ,

তারাই নিচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন সাজ

বিরুদ্ধে হচ্ছে না কাজ।


সবাই বলে এটা হলো আমাদেরই 

বিশেষ কিছু অর্জন 

তাই আইনের অজুহাতে করছে না

প্রশাসন এটাকে বর্জন।

Wednesday, July 3, 2019

বিনিময়

        বিনিময় 

এম এ মাসুদ রানা 


বিভাবসুর তীব্রতা
ক্লিষ্ট জনজীবিকা
জ্যোত্স্মা ভাস্কর কিরণ দেয়
ভবা স্বর কিরণে আছে যে, অভিমান।
স্পর্শকাতর হবে জ্যোত্স্ম,
জ্যোত্স্মগ্রহনে।

শৈল্পিক স্বর্গে সোহাগী বরণ
সম্প্রদায় আজি বিব্রত পতনে
পূর্বে ছিলো কি রতন?
যাচেনি কেউ  তার যাতনা।

উচ্চ শিখার গলুক প্রস্তর
আসুক বয়ে শৈল্পিক স্বর্গ
থাকুক না মড়িঘরে-
আশাতীত মানবের লাশ।

তুলির ডগায় বিকৃতি রক্ত
রক্তে মাঝে মাঝে ভেসে আসে
আশাতীত রক্তের স্বপ্ন।
রক্তের প্রতিটি ফোঁটা
যাচিতে চাই কি এর কারন?

Monday, July 1, 2019

মুক্তমনের পাখি আমি

মুক্তমনের পাখি আমি

_ এম এ মাসুদ রানা _

___________________
___________________
মুক্তমনের পাখি আমি,
স্বপ্ন আমার ডানায় ভরা।
উড়ে চলি দূর অজানায়
সুখ পাখির সন্ধানে।

মেঘহীন এ গগণ,
পুরোটাই যেন আমার শহর।
পারো তো এসো এই শহরে,
চাঁদনী রাতের মৃদু বাতাস হয়ে,
পূর্ণদীপ্ত শশী হয়ে এসো
রৌদ্র হয়ে পোড়াতে নয়।

আমার এই সুখের শহরে
মুক্তডানায় মাখবো জোছনা।
না হয় এসো মুক্ত পাখি হয়ে,
আপন মনে, দুর্বার ডানায় উড়ে উড়ে।
দূর অজনায় হারিয়ে যাব,
ভালবাসার গহীন বনে।

Saturday, June 29, 2019

ফিরে এসো তুমি

ফিরে এসো তুমি

এম এ মাসুদ রানা


ফিরে এসো তুমি
দূর আকাশের নীলিমা হয়ে
চারিদিকে নীলিমার রঙ হয়ে
হ্নদয়ের সকল আঁধার দূর করে।

ফিরে এসো তুমি
দূর আকাশে গোধুলী বিকাল হয়ে
নির্জন মাঠে অতি গোপনে
আমার হৃদয় ছুয়ে দিতে।

ফিরে এসো তুমি
দূর আকাশের ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়ে
চারিদিকে ভিজিয়ে দিয়ে
আমার হ্নদয়টা সতেজ করে।

ফিরে এসো তুমি
সাগরের ঢেউ হয়ে
চারিদিক প্লাবিত করে
আমার পুরো হ্নদয় ভরে।

ফিরে এসো তুমি
রাত্রি বেলার জোৎস্না হয়ে
নির্জনে বলব কথা দুজন মিলে
অতি গোপনে গোপনে।

ফিরে এসো তুমি
বিদেশী অতিথি পাখি হয়ে
আপ্যায়ন করবো তোমায়
অনেক দিন পরে পেয়ে।

ফিরে এসো তুমি
বসন্তের পাখির গানে গান হয়ে
শুনব তোমার মন দিয়ে
হ্নদয় মন পুলকিত করে।

ফিরে এসো তুমি
আকাশের পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে
সারা রাত দেখব তোমায়
আকাশের দিকে তাকিয়ে।

ফিরে এসো তুমি
জ্যোৎস্না রাতের জোনাকি হয়ে
দু’হাত দিয়ে ধরে রাখব তোমায়
জন্ম জনমের তরে।

ফিরে এসো তুমি
পোষ মানা পাখি হয়ে
মনের খাঁচায় রাখব তোমায়
আজীবন বন্দি করে।

ফিরে এসো তুমি
ফুলের বাগানের মৌ মৌ গন্ধ হয়ে
সুভাষিত গন্ধে আমার কোমল হৃদয়
হ্নদয় তোমার ঘ্রাণে ভরে যাবে।

ফিরে এসো তুমি
খণ্ড-বিখণ্ড এই হ্নদয়ে
ভাঙ্গা মনে লাগবে জোড়া
কোন দিনও যাবে না ছিড়ে।

Wednesday, June 26, 2019

আমার কিছু কথা

সালাম নিবেন কাকা!
আমার কিছু কথা!
আমিই বাংলাদেশ!
আমার ডাক নাম লজ্জা!!
আমি বিশ্বজিত,আমি অভিজিৎ,আমি নাদিয়া, আমি তনু, আমি খাদিজা, আমি রাজন, আমি নুসরাত!
আমি ব্যার্থ ছাত্র,
আমি প্রশ্নপত্র না পাওয়া হত দরিদ্র!
আমি অবিরাম বাংলার মুখ!
আমি লাল সবুজের কফিন!
আমি পিলখানার অসহায় সেনা অফিসারের আঁধারে দাফন!
আমি পাতানো নির্বাচন!
আমি স্বাধীন দেশের পরাধীন জনগন!
আমি আন্তর্জাতিক 'নিরাপরাধ' ট্রাইবুনাল!
আমি শেয়ার বাজার, ডেসটিনি, হলমার্ক, রিজার্ভ চুরি! আমি বাসে ধর্ষিতা মাজেদা!
আমি ছেলের সামনে ধর্ষিতা মা!
আমি ভাইয়ের সামনে ধর্ষিতা বোন!
আমি এমপির গুলিতে গুলিবিদ্ধ সৌরভ!
আমি গুম হওয়া সন্তানের মায়ের নিরব কান্না!
আমি রানা প্লাজার ধুলোয় উড়া লাশ!
আমি সরকারী ভবনে রডের বদলে বাশঁ!
আমি তাজরীনের অগ্নিকান্ডের অসহায় গরীব কর্মচারী! আমি শিল্পী হয়েও স্তব্ধ আসিফ আর মনির খান!
আমি 'দৈনিক আমার দেশ, ইসলামিক ও দিগন্ত টিভি'! আমি শত্রু রাষ্ট্র ভারতের পা চাটা গোলাম!
আমি ধ্বসে পড়া ভবনের নিচে গলিত লাশের গন্ধ আর পদ্মার লঞ্চ ডুবি!
আমি গুম হওয়া ইলিয়াস,আযমী, আরমান আর হুম্মাম!
আমি সাগর-রুনির মেঘ!
আমি ছিনতাই হওয়া অসহায় পথচারীর ব্যাগ!
আমি জন্মের আগেই গুলিবিদ্ধ নবজাতক শিশু!
আমি শাপলা চত্বরের নির্মম গনহত্যা!
আমি সাত খুণ শীতলক্ষ্যার পাড়!
আমি ফেলানী,
আমি ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য ঝুলে আছি কাঁটাতারে!
আমি অন্ধ, তাই আমার বিবেকের দরজা বন্ধ।


Friday, June 21, 2019

প্রিয়ার কাছে নিবেদন

প্রিয়ার কাছে নিবেদন

        এম এ মাসুদ রানা 


আমি যাবো তোমার কাছে
আমি করবো দেখা তোমার সাথে
আমি বলবো কথা মিষ্টি সুরে
আমি পরিশেষে চলে এলাম তোমার কাছে।

তুমি আসবে বলে ওয়াদ করছিলে
তুমি দেখা করবে বলে কথা দিয়েছিলে
তুমি কথা বলবে বলে বেকুল হয়েছিলে
তুমি আয়োজন নিয়ে ব্যস্তও হয়েছিলে।

তুমি এসেছি, ওয়াদর কারনে
তুমি বলেছিলে, কথা দেওয়ার কারণে
তুমি নিজে রেখেছিলে ডেকে, ওয়াদার চাদরে
তুমি ব্যস্তও ছিলে, অবয়বে ছিল বিস্বাদের স্বাদ।

আমি শুধু নিঃচুপ ছিলাম
আমি চিন্তায় চিন্তায় বিভোর
আমি ভেবেছি শুধু তোমায় সারাক্ষণ
আমি চিন্তায় জানার চেষ্টা করছি এর কারণ।

তোমার অবয়বে যে, আঘাতের দাগ
তোমার অবসবে কি ব্যথার অনুতাপ?
তোমার  এই কারণে করেছি নিজের উপর রাগ,
তোমার প্রতি ছিল যে,  প্রবল অনুরাগ
তোমার আসার জন্যও ছিল বড় চাপ।

তোমায় তাই তো করেছিল অনেক চাপ
তোমায় করেনি এই কারনে মাফ।
তোমায় করেছে আঘাতের উপর আঘাত।
তোমায় করছে আঘাত, সেই কারনে কেঁদেছি দিনরাত।

তোমার আঘাতে আহত যে, আমি আজ
তোমার ব্যথায় ব্যথিত যে, আমি আজ
তোমার বোবা কান্নায় কাঁদিতেছি যে, আমি আজ
তোমার ব্যথা ভরা মনের জন্য দায়ী যে, আমি আজ।

পরিশেষে বলি,
আমি করিতছি মিনতি
আমি হলাম সবচেয়ে বড় দোষী
আমি হলাম সবচেয়ে বড় অপরাধী
আমি করিছে যে, ক্ষমার অযোগ্য ভুল।
আমায় তুমি করিও ক্ষমা, মাফ করে ভুল
আমায় ক্ষমা না করিলে পাবো না যে, কোন কুল।

Tuesday, June 18, 2019

ভাগ্য



ভাগ্য
এম এ মাসুদ রানা  

বয়সটা আর কত হবে?
সাত কিংবা আট,
পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়ায়
নেই কোন ফাট্।

ভাবনায় ঘুম ভাঙ্গে
মাকে নিয়ে চিন্তা,
সকালটা কি মধুর হবে
কেমন যাবে দিনটা?

ঘড়িতে জানান দেয়
বেজে গেছে সাতটা,
তড়িঘড়ি ছুটে বেড়ায়
হাতে নিয়ে প্রাণটা।

দাদা দিদি কেউ নেই
নেই তার বাবা,
আছে শুধু মা তার
তাও আবার বোবা ।।

শরীর তো নয় আর
শুধু রোগে ভর্তি,
চিন্তায় ঘুম নেই
নেই মনে ফূর্ত্তি।

পেটে নেই দানাপানি
পকেটটা শূণ্য,
রাতভর মায়ের সেবায়
নিজে হয় ধন্য।।

মনে মনে ভাবে আর
করে কাজ আনমনে,
বিধাতার একি খেলা
শয়নে ও স্বপনে।

পাশাপাশি দুটি পথ
জীবন ও মরণ,
মানা ছাড়া গতি নেই
ভাগ্যের লিখন।।
*****

Sunday, June 16, 2019

শ্রদ্ধেয় বাবা


শ্রদ্ধেয়  বাবা 

 এম এ মাসুদ রানা 


ঘাম ঝড়ানো পরিশ্রম করে
অন্ন তুলে দিতো আমার মুখে,
তিনি আর কেহ নয়
 আমার শ্রদ্ধেয় বাবা।

রোজ ভোর বেলাতে ডেকে দিতো
আযানের সময়।
যায়তো ছুটে ফসলের  মাঠে
আহার বুনেন ক্ষেত খামারে
করতো ফসলের তল্লাশি।

সন্ধ্যা সাঁঝে ফিরতো ঘরে
রৌদ্র মাখা ক্লান্ত দেহ
স্বার্থ বিহীন এমন মানুষ
ধরাতে হবে নাতো কেহ।

বাবার ছবি বুকে আঁকা
বাবা মনের কাবা ঘর।
জগৎ মাঝে কোন নেই তুলনা
বাবা আমার বাবা।

Friday, June 14, 2019

তুমি কি শুনবে

তুমি কি শুনবে
এম এ মাসুদ রানা 

আমার ভাল-মন্দ
কিংবা দুঃখ ব্যথা!
তুমি কি শুনবে
আমার কিছু কথা?

আমার ভাল-মন্দ
কিংবা দুঃখ ব্যথা!
মাঝে মাঝে নিজেকে
লাগে বড্ড একা।

মনের মত বন্ধুর দেখা
পাবো আমি কোথায়?
চুপচাপ বসে থাকি
কিছু মনের ব্যথায়।

অচেতন মন বলে ওঠে,
কিছু একটা কর
কি করবো পাই না কিছু 
এবার তুমি নড়।

কখন যে হয়ে যায় পার‌
সকাল-দুপুর-সাঁঝ!
একা একা কোন কিছুতেই
উঠে না মনের বাজ।

ইশ্ একটা কাজ যদি
থাকতো আমার হাতে!
ভাল কিছু করতাম আমি
দিনে কিংবা রাতে।

উদ্ভট কিছু চিন্তা ভাবনা
মাথায় চলে আসে
সেইসব চিন্তা ভাবনার
আগা মাথায় ভাসে।

চিন্তার সাগরে কখনো ডুবে
হাবুডুবু খাই!
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে
বলি বাই বাই।

কি আর পড়বো? এখন তো
লাগছে সবই বাসি।
কখনো কখনো মনে হয়
সব কিছুই কাছাকাছি।

কখনো বা জানালা দিয়ে
দূরে তাকায়ে দেখি
চোখের দৃষ্টি মাঝে মাঝে
সুদূরে হারিয়ে যায় জ্বি।

মনের গভীর কল্পনা ছেড়ে
অনন্ত নীলিমায়।
কখনো আমি বন্ধুর কাছে
বলি তোমার আশায়।

উত্তরের প্রতিক্ষায় থাকে
আমার নয়ন দু'টি।
চোখের সামনে ভাসে যে
স্বপ্নে রঙ্গীন জুটি।

মনের মাঝে জাগে কত
হাজারো জটিল প্রশ্ন
মাঝে মধ্যে লিখে ফেলি
ছড়া, কবিতা বা রত্ন।

কখনো পড়তে ভাল লাগে
রূপকথার গল্প কথা
পড়ে বুঝে মনের মাঝে আসে
আসে যথাতথা। 
 

রজনী পোহালেই ঈদ



 রজনী পোহালেই ঈদ

     এম এ মাসুদ রানা 


রজনী পোহালে আসছে ঈদ
তাড়াও না তোমার চোখের নিঁদ
খুশির ছটা বুকে নিয়ে গাও সেই গীত
দূর করে দাও সকল ভেদাভেদ ।

আজকে বাসো সবাইকে ভালো
তাড়াও মনের বিভেদ কালো
মিষ্টি চাঁদের হাসি দেখে নিজে হাসো
হাসির রেখায় হৃদয় করো আলো।

নিজকে নিজে নতুন সাজে গড়ো
বিশ্বটাকে দৃঢ় করে ঈদের নামাজ পড়ো
ঈদের খুশির খুশবু মেখে ঈদগাহে যাও
হৃদয়টাকে ছোট করে খোদার কাছে চাও।

Tuesday, June 11, 2019

অপেক্ষা

   
        

             অপেক্ষা 

         এম এ মাসুদ রানা 


কীসের আশায়, কীসের নেশায়?

কার জন্য আপেক্ষায় আছি?

ক্ষণে ক্ষণে ফেলি দীর্ঘশ্বাস ।

আপেক্ষা যে, আপেক্ষা নয়,

বিষ পান করার মতই স্বাদ। 


কথা ছিলো আসবে 

আসতেও চেয়েছিলে

আসার জন্য মিনতিও ছিল। 

করুণ সুরে বলেছিলে আসবে,

আসতেই হবে তোমাকে। 


কেন করলে তুমি মিছে আয়োজন? 

আয়োজন সাজেলে তোমার মত করে

আমার অপেক্ষায় থাকবে তুমি

বলেছিলে কেঁদে কেঁদে।

কথা ছিল অপেক্ষায় থাকবে 

সেটা না করে অপেক্ষায় রাখলে।

জগৎ সংসার

     

        জগৎ সংসার 

       এম এ মাসুদ রানা 


আপন আপন করিয়া,  কাঁদিলাম জনমভর
কী পেলাম, সেই কান্নার ফল?
কান্না করিয়া কাতোর হলাম
নিরাশ হইলাম আবশেষে, বুঝল না কেউ।

হেলেদুলে দিন গেল, বুঝলে না জীবনের হাল,
এই ভাবে কি আর চলবে কত কাল।
জীবন হলো কঞ্চি বাঁশের মতো,
জন্ম নেওয়ার সাথে  ভাঙ্গে অবিরত।
ধনীরা ধন বাড়ায়, গরীবের তুলে পিঠের ছাল
দয়াল দয়ালেরে তোমার কী কোন দয়াময়া নাই?

জীবন দিলা জীবনের তরে,  সদায় করিবো বাস
সদায় চলিবো সদায় বলিবো এমন ছিল আশ,
কেমনে হল নিরাশার ভীতরে বাস।
আশায় আশায় আছি, আমি হবো যে, সুখী।
যে, সুখের তরে ষাট লক্ষ বীর আছে উচ্চতরে,
না সিধীলে  বিধিয়া কেবল, নর জনম ভর।

Wednesday, June 5, 2019

অভিমানী ভুলে যেওনা

   

অভিমানী ভুলে যেওনা

      এম এ মাসুদ রানা  


অভিমানী, চলে যেওনা…!
সবেতো এলে!
এখনো ভালবাসাই হয়নি।
শুভ্র বেলী ফুলের সুভাস মাখিয়ে,
এখনো বলা হয়নি ভালবাসি!
এখনি চলে যেওনা!
শব্দের ছন্দে তোমায় শিশিরে সিক্ত করা হয়নি।
উচ্ছল প্রকৃতির চোখে চোখ রেখে,
এখনো তোমার মোহে সন্মুহিত হইনি।
নিশ্চুপ গভীর মায়ায় জড়িয়ে ধরা হয়নি!
গুধুলী লগ্নে তোমার মায়াবী মুখে সপর্শ করা হয়নি!
অভিমানী, চলে যেওনা!
সবেতো এলে!
এখনো তোমায় ভালই বাসা হয়নি!
তোমার চোখে সার রং মাখিয়ে,
পৃথিবীর বুকে আল্পনা করা হয়নি।
তোমার হাসিতে মুখোরিত পুষ্প কাঁননে,
বিহঙের কলতান শুনা হয়নি!
একটা রাত তোমার আবেশে শিহরিত হইনি!
ভোরের মিস্টি আলোয় চোখ মেলে,
তোমার উস্কোখুস্কো চুলে বিলি কাটা হয়নি!
অভিমানী, চলে যেওনা!
সবেতো এলে!
তোমায় এখনো ভালবাসাই হয়নি!
তোমায় ছাড়া যার ভোর হয়,
সে তো বড় হতভাগিনী!!
তোমার আবেশে যার চোখের পাতা এক না হয়,
সে তো কলংকিনী!
অভিমানী, চলে যেওনা!
সবে তো এলে!
এখনো ভালবাসাই হয়নি!
সবে তো দেখা হলো..!
তোমার ভাগ্যে আমার জীবন শুরু হলো।।
এখনো ভালবেসে ভালবেসে ক্লান্ত হইনি।
সবে তো তোমার ইচ্ছেয় আমার পথ চলা শুরু হলো,
এখনি থেমে যেতে বলোনা!
সবে তো তোমায় ভালবাসলাম।
এখনো ছন্দের সুঁতোয় শব্দ দিয়ে কবিতা লিখা হয়নি।
অভিমানী…..
চলে যেওনা…!
সবে তো এলে,
এখনো ভালবাসাই হয়নি।

Monday, June 3, 2019

কষ্টের সীমানা

কষ্টের সীমানা

এম এ মাসুদ রানা   

কষ্টের সীমানা কতদুর ?
এর শুরু কোথায়? শেষ কোথায় ?
কারো কষ্ট মুহুর্ত মাত্র,
কারো কষ্ট অষ্টপ্রহর।
কারো কষ্ট সপ্তাহ, মাস বা বছর,
কখনো বা যুগ !
কারো কষ্ট জীবনের অন্তিম শয়নেই সমাপ্তি টানে।
কারো কষ্ট শুকতারার মত হঠাত খসে পরে।
কারো কষ্ট ইন্দুরবির মত পালাক্রমে আসে।
কারো কষ্ট তমঃবিষাদে নক্ষত্রের মত জ্বলে।
কারো কষ্টে কষ্টেই গাঁথা সুখের মালা।
কষ্টের সীমানা কতদুর ?
কারো কষ্ট এলোমেলো, কারো কষ্ট একা।
কারো কষ্ট নিরবে কাঁদে, যায়না তারে দেখা !
কারো কষ্ট দিন দুপুরে, কারো কষ্ট রাতে,
কারো কষ্ট লালে লালে নীল,দাগ কেটে রয় সুপ্রভাতে।
কারো কষ্ট নস্ট বলে, নস্টেই কাব্যের কষ্ট ,
নস্টে নস্টে এক জীবন হারে, কষ্টের গল্পটি স্পস্ট।
কষ্ট আমার চোখের কোনে, বুকে কষ্টের মরুভুমি,
কষ্ট আমার একলা রাতের, কষ্ট আমার তুমি।
কষ্টের সুতোয় কাব্য গাঁথি ,কষ্টেই আমি বাঁধা ,
অশ্রু দামে কষ্ট কিনি, কষ্টেই সুখ গাঁথা ।
কষ্ট আমার একটা আকাশ, বরফ গলা নদী,
কষ্ট আমার একটা অতীত, ছুঁয়ে দেখতে যদি।
কষ্ট আমার ঘরের চোকাঠে, শীতল পায়ে হাটে,
কষ্ট নড়ে চোখের ভিতর, কষ্টের কোলে বছর কাটে।
কষ্ট আমার দুপুর বেলা, কষ্ট একলা রাতি,
কষ্ট বুকের ভাসমান পাঁজর,কষ্ট পথের সাথী।
কষ্ট তোমার বিমুখ হওয়া, কষ্ট জলরাশি,
কষ্টের সাথে সন্দ্বি আমার, কষ্টে কষ্টে হাসি।
কষ্ট খুঁজি সকাল সন্দ্ব্যা, কষ্টেই যত ভয়,
কষ্ট আমার গোপন রাতের, সন্দ্ব্যাতারা সাক্ষী রয়।

Saturday, June 1, 2019

নিমন্ত্রণ

       
নিমন্ত্রণ 

মোঃ জুলফিকার আলী জিল্লুর 


দু'টি
উজ্জ্বল
বর্ণ -
একটি শব্দ
নিয়ে এলো -
একটি
রুপালী ধনুকী চাঁদ
সাথে এলো -
সোনালী বিহন
নানা সাজ নানা রুপে
অপেক্ষিত ঈদ-
অবিরাম অন্তহীন সুখ-
অপেক্ষা,অফুরান ভালবাসা
হৃদয় ডাক তুলে-
আপন জন
প্রিয়োজন
বন্ধু স্বজন
নতুন নাম
নতুন ইঙ্গিত
নতুন ভাষা
নতুন নিমন্ত্রণ।

মা

__________মা____________
____এম এ মাসুদ রানা_______

মা!
তোমার আঁচল এতো যে নিরাপদ
আমি বুঝতে পেরেছি আজ।
তোমার গর্ভ হতে জন্ম আমার
তবু কেন এত জীবনের লাগি বাজি।

মা'গো!
তোমার আমার একই নরীতে বাধা প্রান
ভুলে যাইনি গো মা আজো আমি।
কাজের চাপে ভুলে আছি মা
'করো না অভিমান!
করলে অভিমান
তোমার অভিমানে হবে অকল্যাণ।
তুমি মমতা ময়ী মা' গো তুমি মমতা ময়ী!
আমি পরাজিত তুমি জয়ী।।

মা !
তোমার কাছে তোমার খোকা
তোমার জীবনের চাইতে দামী
তাইতো আমারে রেখেছিলে যঠরে জানে অন্তযামি।

তোমার বকনিতে মধু মাখা
মাগো শাষনেও আদর মাখা!
আমি দৃষ্টির আড়ালে গেলে
পরে মাগো তোমার হৃদয় হাহাকার করে।

 (শূন্য )ফাঁকা !
আমি  অধম মাগো
তোমার সন্তান
তুমি উওম আমি জানি ।
মা বড়ই আমি অপরাধী মাগো •••••••••○○

Tuesday, May 21, 2019

কালবৈশাখী

কালবৈশাখী 

এম এ মাসুদ রানা


 এক বৈশাখে নদীর বাঁকে
চৌরাস্তা বাজারে,
দলে দলে কোলাহলে
যেই না সবাই ঘাটে।

আকাশ  কালো বজ্র আলো
উল্থাল জমিন পর,
এমনি হলো এলোমেলো
কালবৈশাখী ঝড়।

হাওয়ার তোরে সবই ওড়ে
লন্ডভন্ড হলো বালিয়াডাঙ্গী,
ঝড়ের সাথে বৃষ্টি নামে
যায় ভেঙ্গে গাছ-পালা ও বাড়ি।

তৃপ্ত হাওয়ায় দগ্ধ দেহে
শীতল পরশ মনে,
বোশেখ এলে কালবৈশাখী
ভাবায় ক্ষণে  ক্ষণে।

Monday, May 20, 2019

অব্যক্ত কথা

   

________ অব্যক্ত কথা ___________
******* এম এ মাসুদ রানা *******

তুমি ছিলো আমার প্রথম ভাল লাগা
ভাল লাগাতে হয়েছিল ভালবাসা,
ভালবাসা নিয়ে ফুটল ভালবাসার ফুল
ভালবাসার  ফুলে হয়েছিলও মালা
পরবো পরবো বলে হল না পরা।

আজও ভালবাসি বড় বেশি তোমায়
তোমার কথা মনে পরে বারে বারে,
প্রানটা হয় ব্যাকুল। 
ভূলি নাই আমি , তুমিও রেখেছে মনে
 হৃদয়ের গভীর অতলে।

আজ বহু দিন পড়ে মনে পরে যায়
আছড়ে পড়ে হৃদয়ে স্মৃতির ঢেউ, 
যেমনি আছি আমি ,তুমিও ঠিক তাই,
কিছুটা ভাজ বদনে। 
মনের সজীবতা ,চাওয়ার গভীরতা
একটুও পরিবর্তন হয়নি এখনো।