Monday, November 9, 2020

প্রেম এসেছিল নীরবে

 প্রেম এসেছিল নীরবে

লাবিব আল সরকার, এই নাম সম্পর্কে ও তার জন্মসূত্র পিতামাতা তা সবার অজানা। কেন না কোনো এক ডাস্টবিনের পাশ্বে এক পাগলী এক নির্জন প্রান্তে শিশুটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিল। শিশুটির শরীরে তেমন কোন প্রতীক ও কোন রকম পোষাক পরিহিত ছিলো না। 

বেশ কয়েকদিন শিশুটিকে সযত্নে রেখে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত। যেখান সেখান থেকে ময়লা ও নোংরা খাবার খাওয়াতো শিশুটিকে।

এমন এক সকালে এক নিঃসন্তান ভদ্রমহিলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়, পাগলীটার কোলে এই কোমলমতি শিশুটাকে দেখ, (এক অপরিচিত নোংরা বস্ত্র পরিহিতা মহিলার কোলে শিশুটিকে দেখে) দেখতে পেয়ে ভদ্র মহিলা এগিয়ে গেলেন। 

শিশুটিকে জড়িয়ে রেখেছে মহিলাটি। শিশুটিকে জরিয়ে রাখার করণে বয়স তেমন বোঝা না গেলেও পা দুটো দেখে মনে হয় ৩ থেকে ৪ মাসের বেশি বয়স হবে না। শিশুটির মা যে এই মহিলা নয় তা সহজে বোঝা যায়। মহিলাটির বয়স কম করে হলেও ষাটের বেশি হবে। তবুও শিশুটাকে বুকে আগলে রেখেছে অনেক যতনে। পাগলী হলেও শিশুটার প্রতি ছিলো তার অনেক ভালোবাসা, এটা বুঝতে ভদ্রমহিলাটার বাকি রইলো না। ভদ্রমহিলাটা ভাবলো শিশুটা এখানে এমন অবস্থায় থাকলে বাঁচতে পারবে না এটা নিশ্চিত। শিশুটাকে বাঁচাতে হবে যে কোন উপায়ে।


এই ভদ্রমহিলাটা ছিলো মরনব্যাধি রোগে আক্রান্ত, যে কোন মূহুর্তে চলে যেতে হতে পারে আত্মা দেহের বাহিরে। মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে সবসময়, কখন আসে যমদূত তাকে দেখা করতে।


এই আগন্তুক মহিলা নিজের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় শিশুটিকে উদ্ধার করে এক অনাথ আশ্রামে রেখে দেন। সেই মহিলাটি নিজের কাছে না রেখে। প্রায় খোঁজ খবর রাখতেন শিশুটির, যাবতীয় খরচও বহন করতেন, এভাবে তার দিন চলে যেত , শিশুটি পাঁচ বছরে পা দিয়েছে। সেই আগন্তুক মহিলাটি নিঃসন্তান হওয়া মাতৃসুলভ মন দিয়ে শিশুটির থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে সারা জীবনের বিদায় নিলেন এই মায়াভরা  ধরণী তল হতে।


তারপর অনেক কথা, তার জীবনে অনেক বাধা পার হতে হয়েছে লাবিব আল সরকারকে । স্কুল জীবনে অনেক সমালোচনা কটুকথা ও ব্যঙ্গর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু ওকে থামিয়ে রাখা যায়নি কেবল তার মেধা ও কর্মকুশলতার কারণে। তিনি ছিলেন অনন্য মেধার অধিকারী, সহপাঠী ছাড়াও আশ্রমের প্রায় সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকাটা তার স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সবার সাথে সবসময় হাসি খুশিতে থাকতো। সবাইকে মাতিয়ে রাখতো বিভিন্ন ছন্দ কথা দিয়ে।


আনন্দ ও মুক্ত স্বাধীনতায় সে অতিবাহিত করল ইই স্কুল ও কলেজ জীবন। হাই স্কুল ও কলেজ জীবনে ছিলো তার ব্যাপক সফলতা। অনেক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিল সে। এগুলো প্রতিটি সফলতার পিছনে ছিলো তার কঠোর প্ররিশ্রম ও দূরদর্শিতা। 


তারপর কলেজের চৌকাঠ অতিক্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করল। সেখানে ও মাথা উঁচু করে পথচলা শুরু করলো। তবুও সে নিজেই কোন কোন মহূর্তে, যেন পরাজিত সৈনিকের মতো মনে হতো। কারণ কৈশোর জীবনে তার পরিচয়টা সে বুঝতে পারেনি, বয়ঃসন্ধি ও কালের পরিবর্তনের সাথে তাকে আঘাত করে। সময়ে অসময়ে খুঁড়ে খুঁড়ে জখম খায়। 

যখন সে একা থাকত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মানপত্র গুলিতে চোখ বুলিয়ে দেখে নিত। জীবনে চলার পথে কোনো না কোনো সময় বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়, তাই হয়েছিল লাবিব আল সরকার জীবনে। 


সেদিন ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠান সূচীতে ছিল কবিতা, নৃত্য, সঙ্গীত আর ছিল এক বিশেষ আলোচনা সভা। 

আলোচনার বিষয় ছিল বর্তমান যুব সমাজের কাছে কাজী নজরুল ইসলাম কতটা জনপ্রিয় ? 

জীবনানন্দ দাশের "বনলতা সেন" কবিতার বিশেষ আলোচনা ও আবৃত্তি। 

আর সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিল লাবিব আল সরকার। রাত তখন প্রায় দশটা। বিচারক মণ্ডলী মূল মঞ্চের বিপরীত দিকে বসে আছেন। দর্শক সংখ্যা গত বছরের থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে। মাঝে মাঝে দর্শক হাততালি দিচ্ছে মনানন্দে। ছোটরা বেলুন ও বিভিন্ন খেলনা নিয়ে খেলা করছে। কোথাও আবার আতসবাজি ফোটানোর আওয়াজ। প্যান্ডেলের মধ্যে কোথাও ফেরিওয়ালা খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে। সব মিলিয়ে এক অসাধারণ রাত্তির সম্মুখীন লাবিব আল সরকার।

হঠাৎ আলো নিভে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে কিসের চিৎকার, হৈ হুল্লা, হুড়োহুড়ি পড়ে গেল চারিদিকে। ঠিক সেই সময় কারা যেন এসে জাপটে ধরল লাবিব আল সরকারকে। টেনে নিয়ে গেল মঞ্চের বাইরে, গায়ে মারও পড়ল লাবিব আল সরকারের । তারপর কি হল আর কিছুই জানেনা লাবিব আল সরকার।

অচেন অবস্থায় পরে রইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে।.........  একজন তাকে নিয়ে ভর্তি করেছে এক নার্সিংহোমে।


অচেতন অবস্থায় কেটেছে কয়েকদিন। যখন তার চেতনা ফিরল চোখ খুলে দেখল কোনো এক নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে বসে আছে চেনা মুখ অতিথি। অনুষ্ঠান সূচীতে তার নাম ছিল। জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’কবিতা আবৃত্তি করবে। বাবা মাকে নিয়ে এসেছিল সেদিন। বাকি বিষয়টা লাবিবের অজানা।

অতিথির সঙ্গে ব্যাক্তিগত ভাবে আলাপ হয়নি কোনোদিন। লাবিব কিন্তু সেদিন দেখল খুব আপনজনের মতো পাশে বসে আছে। ছোট শিশুর মতো চোখে ভরে গিয়েছিল সেদিন। কথা ছিলনা দুজনের মুখে। অতিথি হাতের রুমাল দিয়ে চোখ মুছাতে গিয়ে নিজের চোখের জল গড়িয়ে পড়ছিল। অতিথিকে কাছে পেয়ে লাবিবের স্বপ্ন দেখছিল। নানা প্রশ্ন জেগেছিল তার মনের মনের গোপনে । কে এই মেয়েটি, কেনই বা তার পাশে বসে আছে? চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক অনন্য সুন্দর রোমান্টিকতা অনুভবের অনুভূতি হচ্ছিল লাবিবের।

ঠিক তখনি অতিথি পরিস্কার ভাবে বলল

কেন এতো চিন্তা করো? 
কিসের এতো ভাবনা তোমার?

এইতো আমি আছি তোমার পাশাপাশি। 


মনটাকে স্থীর করার চেষ্টা করল লাবিব। 

কিন্তু তার আগে চোখ পড়ল অতিথির দিকে। পরনে হালকা রঙের গোলাপি শাড়ি, পাশে থাকা রজনীগন্ধার তোড়া, এলোমেলো কেশ ভাগে বকুল ফুলের মালা দিয়ে জড়ানো, কপালে আলতো করে বসানো ছোট গোলাপি টিপ, খোলা জানালা দিয়ে পড়ন্ত বিকেলের শেষ আলোর রেখা পড়েছে শাড়ির ভাঁজে। বড়ই সুন্দর লাগছিল অতিথিকে। 

অতিথি এমন ভাবে কাছে আসবে তা লাবিব বুঝে উঠতে পারেনি। 

আর পারেনি বলেই রোমান্টিকতা ছুঁয়ে যাচ্ছিল একে অপরকে।

অতিথি বলল –
‘সারাক্ষণ কার কথা ভাবছেন ? 

কেনই বা ভাবছো? 

এই ভাবনার দরকার কি আছে? 

আমি তো রয়েছি তোমার পাশে।


লাবিবের চোখে জল। ছড়িয়ে পড়া আঁচলের এক কোন দিয়ে লাবিবের চোখ মুছিয়ে দিয়ে অতিথি বলল। 
এমন করে ভেঙে পড়লে তোমার শরীর খারাপ হয়ে যাবে। 

যাক সে কথা ডাক্তারবাবু বলেছেন আজ তোমাকে ছুটি করে দেবে। 

তাই আমি আগেই চলে এসেছি। বাবা মা একটু পরে গাড়ি নিয়ে আসছে।

এদিকে সন্ধের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠল। সেই আলোতে অতিথিকে এক পলকে দেখে নিল লাবিব। এমন এক সময়ে যৌবনা যুবতীর সন্নিধ্যলাভ লাবিবের কাছে পরম আনন্দের বিষয় ছিল। 

এমন সময় নার্সিংহোমের সামনে একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল। অতিথির মধ্যে বেশ খুশির ভাব। জানালা খুলে দেখে নিল বাবা ও ভাই গাড়ি থেকে নামছে। কিন্তু তখন অতিথির চোখে মুখে এক বিষণ্নতার ছাপ। 

সে বলল –
এই যে তোমার ছুটি, এবার কোথায় যাবেন বল,

তোমাকে পৌঁছে দেওয়া হবে সাবধানে থাকবেন কিন্তু’।
লাবিব ভাবল কোথায় যাবো, 

আশ্রম থেকে এসেছি কতদিন হয়ে গেল। লাবিব আর কিছু বলতে পারছিল না। এমন সময় অতিথির বাবা এসে ঢুকল। কিছু বলার আগেই লাবিবকে নিয়ে গাড়িতে উঠল। লাবিবকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে না। গাড়ি চলতে আরম্ভ করল। পৌঁছালো অতিথির বাড়ি। লাবিব হয়ে উঠল পরিবারের একজন। অতিথির সংস্পর্শে বেশ ভালোই কাটছিল লাবিবের দিনগুলি।

সেদিন ছিল ফাগুনী পূর্ণিমা। চাঁদ উঠেছে আকাশে , অন্য দিনের মতো এ-রাত্রিটা বেশ মোহময় লাগছিল। জানালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় কদম আর বড় অশ্বথের গাছ। ফুলে ভরে গেছে কদম গাছ। আর অশ্বথের ঝুড়ি গুলো মাটিতে নেমে এসেছে। ঘুম নেই লাবিবের। কাছে পেতে চায় অতিথিকে। 

এ এক নীরব ভালোবাসা টানছে

মনটা করে সবসম ছটপট, তাকে দেখার আশায়, দুটি কথা বলবো অতিথির সাথে। মাঝে মাঝে মনে অনেক ভয়ও আসে।

রাত কতটা হবে তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। চোখে ঘুমও আসছে না। এমন সময় খুব হালকা কন্ঠস্বর ভেসে আসছে। হালকা হলেও বোঝা যাচ্ছে কার গলা। অতিথির মা ও বাবা কথা বলছে অতিথির জন্ম পরিচয় নিয়ে। অতিথি মন দিয়ে শুনছিল, শুনছিল লাবিবও। চাঁদ যে কখন গড়িয়ে পড়ছে পশ্চিম আকাশে তা বুঝতেই পারেনি লাবিব। হয়তো সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, আর কেউ জেগে নেই। জেগে আছে শুধু লাবিব। কেবল ছোট একটি কাগজে লিখল 
আমাকে খুঁজো না অতিথি..........।

তেমার তরে আমার মনে প্রেম এসেছিল নিরবে।



লুকোনো স্মৃতি

লুকোনো স্মৃতি

৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রাত্রি তখন ঠিক ৯টা ছুঁই ছুঁই । হঠাৎই মোবাইল ফোনের আওয়াজ। বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্যমনস্কতাকে সরিয়ে ফোনের দিকে মনোনিবেষ করল। তৎক্ষণাৎ দৌড়ে এসে ফোনটি হাতে তুলে নিল। দেখল অচেনা এক নম্বর। ফোন ধরবে কি ধরবে না এই নিয়ে নিজের মনের ভিতর মতবিরোধ দেখা দিচ্ছিল। কেননা কয়েক দিন আগে এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। ফোন ধরা মাত্রই নিজের ফোনের সমস্ত নথি চুরি হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে সাইবার ক্রাইম যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই কথা ভাবতে ভাবতে ফোন কেটে গেল। আবার কিছুক্ষণ পর আবার সেই নম্বর থেকে ফোন বাজল। এই নম্বর হয়ত পরিবারের কারুর চেনা , এইসব কথা ভাবার পরও তার ফোন ধরার প্রতি অনিহা দেখা গেল। সে নিরুপায় হয়ে ফোন ধরল। ফোনটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে এক মহিলার কন্ঠস্বর ভেসে এলো

ভালো আছিস নিলু।

কন্ঠস্বর চেনা চেনা মনে হলেও সেই মুহূর্তে বুঝতে পারেনি। কার গলা , কে আবার আমাকে এরকম আমাকে সম্বোধন করে। কিছুক্ষণ স্তম্বিত হয়ে থাকার পর কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে উঠল –

কে তুই ; 

আমি তো বুঝতে পারছি না , 

দয়া করে বলবি আমায় কে তুই ‘।

এই কথা বলার পর অধির আগ্রহে কান পেতে শুনতে লাগল উত্তর পাওয়ার জন্য।

ফোনের ওপারে মহিলা কন্ঠস্বরটি নিলুর এইরকম প্রত্যুক্তি শুনে নিজেকে সরিয়ে নিল। 

সে আশা করেনি নিলুর কাছ থেকে এরকম কথা গুলো শুনতে পাবে বলে। 

মহিলাটি ভেবেছিল অনেকদিন পর কথা হচ্ছে ,নিলু নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে কথা বলবে। 

কেননা বহু দিনের বন্ধুত্ব।

মাঝখানের কয়েক দিনের আমার আচরনে এখনও রেগে রয়েছে নিলু।

এই কথা ভেবে ফোন কেটে দিল। 

নিলু কিন্তু বুঝতে পারেনি যে ফোন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তৎক্ষণাৎ নিলু ও ফোন ব্যাক করলো। কিন্তু কোন লাভ হলো না।

তার কারণ মহিলাটির ফোন বন্ধ। 

তখন থেকে নিলু আরও অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল। 

কেন জানিনা নিজেকে আর স্থির রাখতে পারছে না । 

সে অধীর আগ্রহে ব্যকুল চিত্তে মুখিয়ে ছিল কখন সে ওই মহিলাটির গলা শুনতে পাবে , ও তার নাম জানবে।

এই কথা ভাবতে ভাবতে রাত কেটে গেল , পরের দিন সকালে নিলু আর একবার চেষ্টা করল যাতে ফোন ধরানো যায়। কিন্তু সেই একই কথা। ফোন রেখে দিয়ে আবার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু জানতো সে একদিন না একদিন আবার ফোন করবে। কারণ নিলু বুঝেছিল কোনোদিন তার সঙ্গে আমার নিশ্চয়ই পরিচয় ছিল । নিলু জানতো একবার যখন কথা হয়েছে আবার কথা হবে কোনো না কোনোদিন। নিলু সেই প্রতীক্ষায় রইল । প্রতীক্ষা মতো সেইদিন আবার সন্ধ্যায় আবার ফোন এলো। নিলু আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল পরিচয় আগে নেবে।

-‘কে তুমি ? 

পরিচয় না দিলে আমি কথা বলবো না’।

অপর দিকে মহিলাটি পরিচয় না দিয়ে থাকতে পারলো না। 

সে নিজের পরিচয় ব্যক্ত করলো নিলুর কাছে।

পরিচয় তো আমি দেব ;

তার আগে কয়েকটা কথা বলছি সেটা শুনে তুই যদি বুঝতে পারিস আমি কে।

মহিলাটি পরিচয় দেওয়ার ঢঙে নিজের বর্ননা করতে লাগল।

মনে আছে তোর আমরা দুজন সেই ২০০৭ সাল থেকে এক সঙ্গে পড়তাম। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর দুজনের বিষয় প্রায় একই ছিল , শুধু দুটি বিষয় আলাদা । ২০১৪ সালের প্রথমের দিকে আমি তোকে কিছু বলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম কিন্তু ভয়ে আমি বলতে পারিনি।

এই কথা শুনে নিলু নিস্তব্ধ হয়ে ফোনটি কানে ধরে রেখে শুধু দাঁড়িয়ে থাকল কোনো কথা বলল না। কেন এরকম হল তার ; সে কি আগে থেকেই জানত , 

নাকি আরো কিছু। 

নিলু ফোনটি কেটে দিল। 

দুই হাত মুখে চেপে ধরে নিজের পাতা বিছানায় মুখ নিচু করে শুয়ে পড়ল। নিলু ভাবতে লাগল একি করে হতে পারে যাকে আমি একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম , সে আনার আমার কাছে , আমাকে ফোন করছে । নিলু নিজেকে অনেকটা নীচে নামিয়ে নিল।

একি হতে পারে , 

কি ঘটেছিল সেদিন কেনই বা নিলু তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

সবে মাধ্যমিক শেষ করে নতুন ক্লাসে ভর্তির আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে কারণ যেই স্কুলে মাধ্যামিক পর্যন্ত পড়েছে সেই স্কুলে আবার পড়ার জন্য। আবার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হই হুল্লোড় আরও অনেক কিছুই। সেই সঙ্গে কৈশোর অতিক্রম করে বয়ঃসন্ধিতে পা , মনকে একজায়গায় রাখার চেষ্টা করলে ও কিছুতেই আর সংযত হয় না। নতুন ক্লাস , নিজেদের মনে কোন এক চাপ থাকলেও পুরোনো বন্ধুবান্ধব পেয়ে সবাই খুশি। ক্লাসে নতুন কিছু মুখও দেখা গেল , যারা অন্য স্কুল থেকে এসেছে। পুরোনো নতুন দের নিয়ে এভাবেই কাটছিল দিনগুলি। আবার মাঝে মধ্যে মনে হতো আর মাত্র দুই বছর , কয়েকটা দিন কেটে গেলে সবাই আলাদা , এই বিষয়টা নিয়ে নিজেরা প্রকাশ না করলেও একটা চাপানোত্তর সৃষ্টি হয়েছিল।

এই ভাবে ৫-৬ মাস কেটে যাওয়ার পর নিলুর সামনে আকস্মিক ভাবে শ্রুতি নামের এক মেয়ে। নিলু অবশ্য তাকে চিনতো। নিলু ভেবেছিল প্রতিদিনের মতো কোনো সাহায্যের জন্য এসেছে । কিন্তু সেদিনের তার চাউনি ছিল অন্যরকম । 

নিলু তো 

অনায়াসে বলে ফেলল –

কী বল ?

শ্রুতি বলে উঠল

আজ আমি কিছু সাহায্য চাইতে আসিনি। 

তোকে কিছু বলতে এসেছি’।
তো বলনা কী অসুবিধা হয়েছে , 

আমি তো রয়েছি সব সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছি।
‘আমি তোকে ভালোবাসি’।
এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে নিলুর সারা শরীর শীতল হয়ে এলো। যেন নিথর দন্ডায়মান বৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে থাকল। নিলু ভেবেছিল পাঁচ বছর একই ক্লাসে পড়াশুনা করেছি আমার তো কোনো মনে হয়নি , আর মনে হবার মতো কিছুই নেই , নিজেরা নিজেদের মতো একসঙ্গে মেলামেশা করেছে। 

নিলু এক মনে কি যেন ভাবছিল। 

তখন শ্রুতি বলে উঠল
কি এত ভাবছিস ; কিছু তো বল।
নিলু যখনই কিছু বলতে যাবে শ্রুতি আবার বলতে আরম্ভ করল 


‘তুই আজ আর আমায় ফেরাতে পারবি না । তোকে এই কথাটা বলবো বলে কতদিন অপেক্ষা করছি , কিন্তু নিজের মধ্যে সাহস পাইনি। যখন আমরা ক্লাস ফাইভ এ পড়তাম তখন একে অপরকে ভালোভাবে জানি না । যেদিন তোকে প্রথম দেখলাম সেদিন ছিল এক বৃষ্টির দিন। ছাত্র ছাত্রী বেশী না আসার জন্য একসঙ্গে ক্লাস হয়েছিল , আর তুই ক্লাসের মনিটর ছিলি। আর আমি তোকে স্যারের কাছে মার খাইয়েছিলাম। তুই প্রচুর কেঁদেছিলি। প্রথমে রাগের মাথায় আমি আনন্দ পেলেও পরে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। 

আর তখন কী ভালবাসা , 

কী প্রেম কিছুই জানতাম না? 

শুধু তোকে দেখলে আমার ভালো লাগত।এরপর আর অনেক ঘটনা রয়েছে।

তুই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিসনা।'


এই সব কথা শোনার পর নিলু বলে উঠল 
‘দেখ তোর ধারণাটাই ভুল , আমরা সহপাঠী ভালো বন্ধু ও বলতে পারিস , আর এই সব ভালোবাসা আমি মানি না। আমার পক্ষে এইসব ভালোবাসা প্রেম করা সম্ভব নয় , আর আমি তোর ভালোর জন্যই বলছি সামনে পরীক্ষা আছে তাতে মন দে। তোকে তো ভালো রেজাল্ট করতে হবে’
আরও বলল

‘জানি আমার উপর তোর রাগ হচ্ছে , রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। জানি আমাকে ভুলতে তোর কষ্ট হবে , যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে ভুলে যা , যত তাড়াতাড়ি ভুলতে পারবি তত তাড়াতাড়ি তোর নিজের সাফল্যের দিকে এগোতে পারবি।'

এই বলে নিলু ফিরে এলো। শ্রুতি যথাস্থানে দাঁড়িয়ে থাকল।
কয়েক দিন পর পরীক্ষা , পরীক্ষায় মন দিতে চাইলেও কিছুতেই মন বসতে চাইছিল না । কোনো রকমে পরীক্ষা শেষ হলো , যে যার নিজের রাস্তায় পাড়ি দিয়েছে , তবুও শ্রুতি আশায় বুক বেঁধেছিল। রেজাল্টের দিন আবার দেখা হবে। হয়তো বা নিলু সেদিনই তার প্রত্যাশা পূরণ করবে। সেদিন নিলু রেজাল্ট নিতে এলো না। শ্রুতি রেজাল্ট হাতে দাঁড়িয়েছিল শুধু একবার নীলুকে জানাবে তার রেজাল্ট ভালো হয়েছে । কিন্তু আর বলা হলো না। সেদিনের পর থেকে নিলুর সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হয়নি।

আবার ফোন বাজল , শ্রুতি আর নিজেকে সামলাতে না পেরে বলেই ফেলল আমি শ্রুতি।

‘তুই কেমন আছিস , 

অনেক দিন পর নাম্বার জোগাড় করে তোকে ফোন করলাম । এর পরেও তুই আমার সঙ্গে কথা বলবি না।'

পুরোনো বান্ধবীর সঙ্গে কথা হচ্ছে , নিলু বাইরে আনন্দিত হলেও অন্তর যেন ফেটে যাচ্ছে । যাকে একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিল সে আবার ফিরে এসেছে । আবার সেই পুরোনো বন্ধুর মতো কথা হয় । কিন্তু শ্রুতি যেন নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও সে যে আগের নীলুকে পেয়েছে। সময় পেলেই নীলুকে ফোন আর নীলু বসে থাকত কখন সেই পতিক্ষিত গলা শুনতে পাবে।নিলু তার আগের ভুল বুঝতে পেরে ঠিক করেছিল ভুল শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে । এবার সে মনস্থির করল সামনে সরস্বতী পূজার দিনই তাকে সেই কথাটা বলবে সে যে কথাটা শুনতে চেয়েছিল , তাকে নীলু ফিরিয়ে দিয়েছিল। দুজনের কথাবার্তায় ঠিক হলো তারা সরস্বতী পূজোর দিন একে অপরকে এক ভালো উপহার দেবে। নীলু ভাবল শ্রুতি হয়তো আমাকে আবার সেই কথাটা বলবে। আবার উল্টো টাও হতে পারে আমি যদি সেই কথা বলি এই যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয় । সে যাই হোক আমি বলবোই।

পঞ্চমীর সকালে তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হয়ে অঞ্জলীর জন্য রওনা হয় স্কুলের দিকে। সবুজ পাজামা সবুজ পাঞ্জাবিতে নীলুকে খুব সুন্দর লাগছিল। দুজনে একসঙ্গে অঞ্জলী দেবে বলে নীলু অপেক্ষা করতে লাগল। কখন শ্রুতি আসবে আর কখন অঞ্জলী দেবে। স্কুলে অনেক ভিড় ,আর এই ভিড়ে খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। যতটা সম্ভব খোঁজা যায় ততটাই চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু পাওয়া গেল না। 

নিরাশাগ্রস্ত হয়ে একজায়গায় চুপটি করে বসে ভাবতে লাগল। কেমন দেখতে হবে শ্রুতিকে , ওকি সেই আগের মতোই হবে নাকি শরীরের পরিবর্তন ঘটেছে। সে আগে যখন অঞ্জলী দিতে আসত কি অপরূপ সুন্দর লাগত তাকে। 

যখন শাড়ী পড়তো, চোখে কাজল লাগত, রজনীগন্ধার মালা দিয়ে খোঁপা বাঁধতো, তখন ওকে ফাল্গুনের শুক্লপঞ্চমীতে এক স্বরস্বতীর মতো লাগত ওকে। তাহলে কেন তাকে আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে ক্রমে অঞ্জলী শেষ হতে চলল। এদিকে পুরোহিত মশাই ডাকছে যারা বাকি রয়েছে তাদের অঞ্জলী দেওয়ার জন্য। শ্রুতি আসবেনা ভেবে নীলু বিষণ্ন বদনে মণ্ডপের দিকে এগোতে লাগল। হঠাৎ তার চোখে পড়লো ফুলের সাজি হাতে স্কুলের সেই চিরায়ত নীল পাড়ের সাদা শাড়ী পরে এক মহিলা স্কুলের গেট দিয়ে মণ্ডপের দিকে এগিয়ে আসছে। প্রথম দেখাতে চিনতে না পারলেও মণ্ডপের দিকে এগিয়ে আসতে তাকে চিনতে পারলো।
‘এই তো শ্রুতি’।
এই আনন্দমুখর অনুষ্ঠানে কেন এমন শাড়ী পরে এসেছে। কোথায় গেল সেই ফুল দিয়ে খোঁপা বাঁধা, কোথায় গেল সেই চোখের কাজল কোনো কিছুই নেই শ্রুতির বদনে। এখন এসব কথা ভাবার সময় নয়, অনেকদিন পর দেখা হয়েছে আগে অঞ্জলী শেষ করি তারপর বাকি কথা। শ্রুতি কাছে আসতেই নীলু বলে উঠল
‘চল শ্রুতি আগে অঞ্জলী দিয়ে দিই’।
‘হ্যাঁ,চল অনেক দেরি হয়ে গেল’।

দুজন একসঙ্গে অঞ্জলী দিল,দেওয়ার পর প্রসাদ খাওয়া শেষ করে একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে দুজনে মিলে গল্প করতে লাগল। নীলু যেই বলতে যাবে সেই কথাটি অমনি সেই সময় মা-মা চিৎকার করতে করতে এক বাচ্চা মেয়ে তাদের দিকে দৌড়ে আসছে। নীলু এদিক ওদিক তাকাল কাউকে দেখতে পেল না। সেইখানে কেবল তারা ছাড়া আর কেউ ছিলনা। বাচ্চা মেয়েটিকে দেখে মনে হয় তিন বছরের বেশি হবে না। সেই মেয়েটি দৌড়ে এসে শ্রুতিকে জড়িয়ে ধরল, শ্রুতি তাকে কোলে তুলে নিল। ততক্ষনে নীলু ভারাক্রান্ত মনে পরাজিত সৈনিকের মতো ফিরে আসছে। শ্রুতি যখন চোখ তুলে দেখে নীলু অনেকটা দূরে চলে গেছে। শ্রুতি ডাকল নীলুকে
‘নীলু শোন, দাঁড়া তুই, আমার উপহার টুকু নিয়ে যা’।
নীলু পিছন না ফিরে উত্তর দিল 
‘না থাক, আমি উপহার পেয়ে গেছি’।

———-/—-সমাপ্ত———-/——

Friday, November 6, 2020

কম যান

 কম যান


নেশার ঘরে, জুয়া খেলায়

যত পারো কম যান

রঙ তামশার রঙ্গধরণী সল্পক্ষণ

কবে জানি যাই জান


পাপনদে থাকলে ডুবে

দিলটাকে সমজান

যত পারে করে যাক

পূণ্যের সন্ধান


সময় থাকতে ভাল হোন

নেওয়ার আগে যম জান

মৃত্যুর পূর্বে পাও যেন তুমি 

জান্নাতের সুঘ্রাণ

মানতে হয় আলেম

 মানতে হয় আলেম

            এম এ মাসুদ রানা 


আলেমের কাছে কলমা শিখে

হলে তোরা মুসলমান

তোরাই করছিস আজ দেখি

আলেম চরম অপমান


আলেম পড়াবে তোর জানাজা

যখন হবি লাশ

আলেম হলেন এই ত্রিভুবনে 

মহান খোদার দাস


আলেমের কাছে কোরআন শিখে

বদদ্বীন খোঁজে দ্বীন

কেমন করে শোধ করিবে তুই 

আলেমগণের এই ঋণ


দ্বীনের পথে অবিরাম চলছে ছুটে 

পিছু হটে না তবু

কাফের বেদুইন কখনো তাদের 

করতে পারে না কাবু।


একদিন তোরা বুঝবে সবি

করতে পারবে না কিছু 

লজ্জা ঘৃণায় চলবে চলবে তোরা

মাথা করবে নিচু


আবার বলি তোমরা শোনো 

আলেমদের সম্মান কর

উপযুক্ত সম্মান দিয়ে তোরা 

তাদের সজহ পথ ধর।

গাজওয়ায়ে হিন্দ

গাজওয়ায়ে হিন্দ 

এম এ  মাসুদ রানা 


হাতের মুষ্টিতে শক্ত করে শান দাও

প্রতিবাদের তরে মনকে শক্ত করে নাও।

অচিরেই শুরু করতে  হবে মহসযুদ্ধ

মুসলিম সমাজ আজ বেজায়  ক্ষুব্ধ। 


প্রতিহতর তরে বেঁধে নাও মহাজোট 

কোন মালাউন বসাতে না পারে যেন ঠোঁট। 

ইমানের জোরে আত্মাকে করে নাও শুদ্ধ

মক্তভাবে বাঁচাতে মনুষ্যত্বকে করে নাও বিশুদ্ধ। 


গাজওয়ায়ে হিন্দের তরে আজো

মজলুম কান্না হৃদয়ে করুন সুরে বাজে। 

কাশ্মীর বসনিয়া সিরিয়া,লিবিয়া ফিলিস্তিন 

হরদমে খুজে ফিরে মুজাহিদ প্রতিদিন। 


খালিদের তারিকের, শিষ্য তুমি বিন কাসিমের

মুক্ত করিতে আকসা, তুমিও তৈরি হ‌ও অসীমের।

কি দূর্বল আহ কি মুমূর্ষু যন্ত্রণায় হয়েছে তারা কাতর

ফিরে কি পাবে না তাঁরা কখনো স্বাধীনতা আবার।


ফিরাতে হবে তাদের স্বাধীন জীবিকার তরে 

অন্যায় জুলুমে যেন আর নাহি কেহ মরে।

প্রতিহত করতে হবে তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে

শান্তি পাবে তারা আমাদের ঐক্যের জোরে।

এসো মুমিন মুজাহিদ

 এসো মুমিন মুজাহিদ

এম এ  মাসুদ রানা 


এসো মুমিন মুজাহিদ তোরা

রাখো ভাই হাতে হাত,

ছেড়ে যেওনা অবেলায় 

বিনিময় করি দ্বীনের সৌওগাত।


কতই সুন্দর মধুর বানী পাঠিয়েছে

কালেমায় শাহাদাত,

এ বাণীটি পৌঁছাতে হবে

করতে হবে আঘাতে প্রতিঘাত।


যদি তোরা সমান্যতে ভয় পাও

প্রতিবাদেবকার হবে হিম্মত,

তাই এসো ভাই মুমিন মুজাহিদ

মোরা রুখে সব জুলমাত।

মুসলিম শাসক

 মুসলিম শাসক

এম এ মাসুদ রানা 


হৃদয়ে থেকে রক্ত ঝরে

আঁখি থেকে পরে জল।

উষ্ণ জলে ভাসছে হৃদয়

জনপ্রিয়তা নিয়ে ভয়।


কোন সুখেতে হাসছো তুমি

মনপুড়ে আজ হচ্ছে খাক্

বলো যা হবার তা হয়ে যাক

আরো বলো সততা দূরে রাখ।


দেখতে তোমায় মানুষরুপী

মনুষ্যত্ব নাই তোমার মনে

ঘুরে আবার তুমি জনে জনে

গুজব ছড়াও ক্ষণে ক্ষণে। 


কুকুর বিড়াল অনেক দামি

মুসলিম হয়ে করো বোকামী

প্রযোজনে করো হানাহানি 

প্রমাণ করতে চাও তুমি দামী।


মুসলমানের মৃত্যুতে আজ

উৎসাহ দেওয়া তোমার কাজ।

বিশ্ব জুড়ে নিঃস্বর খেলায়

মা-বোনদের কান্নার মেলায়।


তোরা হলো মসলিম শাসক

কাজকর্ম করো কেমন আজব

মসলিম হয়ে মুমিন মারো 

বেধর্মীদের হাতটি ধরো।

ইচ্ছে আছে

  ইচ্ছে আছে

 এম এ মাসুদ রানা 


আরব মরুর হেরার বুকে

নবীর ধ্যানের গর্ত আছে!

সেথায় যাবো আমার আশা

আমায় ধরেছে চরম নেশায়। 

ঘুরতে যাবার ইচ্ছে আছে

মনের ভিতর বাজনা বাজে। 


আমার চোখে স্বপ্ন জমা

সুরমা ওয়ালা সুরমাও আছে!

ফরিয়াদ জানাই এই অসহায়

প্রিয় নবীর মাজারে যায়। 

মন ভরিয়ে করবো সালাম 

মনে মনে সফত নিলাম। 


আজ শুধু আমার একটি চাওয়া

আমার নবীর পরম কাছে!

স্বপ্নে হলেও একবার তোমায় দেখার

আমার বড় ইচ্ছা আছে!

নেই

 নেই 

এম এ  মাসুদ রানা 


ঈমান আছে, আমল আছে

নেই তবে এখলাছ

মরন হবে, স্মরণ আছে

নেই শুধু এহসাস


কোরআন আছে, হাদিস আছে 

নেই তার আলোচনা 

দ্বীন আছে, ইসলাম আছে 

নেই শুধু প্রকাশ 


কলম আছে, কালি আছে

নেই শুধু  জ্ঞান 

প্রাণ আছে, জ্ঞান আছে

নেই কোন অনুশোচনা


চোখ আছে, মুখ আছে

নেই শুধু স্বাধীনতা

দল আছে, বল আছে

নেই শুধু একতা


টাকা আছে, পয়সা আছে 

নেই শুধু উদারতার 

ছেলে আছে, মেয়ে আছে 

নেই শুধু সুশিক্ষা।

বিদায়(সাঃ)

  বিদায় (সাঃ)

এম এ  মাসুদ রানা 


কান্নার তরে গগন কাঁপে

চন্দ্রও লুটাই পরে ধরায়।

সোমবারেতেই জন্ম তোমার 

সোমবারেতেই মৃত্যু তোমার।

ছাড়লো তিনি ধরনী তল

কিছুটা হারালাম মনের বল।


থেকে গেল আসা মধুর বানীর

বার্তা নিয়ে জিব্রাইল আসবে না জানি।

সেই শোকে কাঁদলো আরো বিশ্ববাসী

ভুলতে পারে না নবীর ভালো বাসাবাসি।

নেমে আসলো আত্মা ঘাতক আজ্রাইল, 

সাথে নিয়ে নবীর আত্মা হননের ফাইল। 


সকল সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ নবী দু"জাহান 

তাঁর বিদায়ে কলিজা হলো খানখান।

তিনি ছিলেন নূর নিনাদ, করেনি কোন বিবাদ!

বিদায় নিলো দ্বীনের রবী, শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ!

কম মানি

 কম মানি 

এম এ মাসুদ রানা 


আমরা এখন খোদার হুকুম

আগের চেয়ে অনেক কম মানি।

তাই ধরাতে মুসলিম সমাজ 

হচ্ছি সদা লাঞ্চিত আজ।

জুলুম করে দাঁত কেলিয়ে 

পৃথিবীর পরিবেশে থেকে বেড়িয়ে।

বলি সবাই, কি হয়ে যাবে এমন হলে

পর্দা ছেড়ে পরী-বেশে নারী চলে। 

পর্দা করি জীবন গড়ি

আসবে নাকো আর নির্যাতন।

কুকুরদলের ধ্বংসী হানা

নির্যাতিত হবে না, এটাও জানা।

খোদার হুকুম মানলে সবে

আপদ থেকে নিরাপদে সবাই রবে।

শ্রেষ্ঠ আদর্শ

 শ্রেষ্ঠ আদর্শ 

এম এ  মাসুদ রানা 


মোর নবীজি চাইতো যদি

হতো সোনার পাহাড়,

সেই নবীজি অনেক সময়

করেনি কোন অনাহার।


নিজের ভোগে চায় নি কিছু

চাইতো সবার তরে,

সেই নবীজির আদর্শ ভাই

রাখনা বুকে ধরে।


যাঁর জীবনটা কাটলো কেঁদে-

উম্মতী উম্মতী করতে

তাঁহার আদর্শ করলে ধারন

শয়তান নাহি পারবে ধরতে।


মোদের নবী শ্রেষ্ঠ নবী, শ্রেষ্ঠ নবী

শ্রেষ্ঠ ছিলো দু'জাহান,

নবীর সুপারিশ ছাড়া শেষ দিবসে 

পাবে না কেউ পরিত্রাণ।

সালাত

 সালাত

এম এ মাসুদ রানা 


সালাত পড়ি, জীবন গড়ী

সালাত আদায় করি,

সালাত পড়ে সঠিক পথে

নেকীর পাহাড় গড়ী।


সালাত মোদের হৃদয় নীড়ে

এনে দিবে জান্নাতী ঘ্রান,

জাহান্নামের আগুন থেকে

মোরা পাবো পরিত্রান।


সালাতে মাঝে হয় কথা 

খোদা তাআলার সাথে,

চাওয়া পাওয়ার যত কথা 

বলবো খোদার কাছে।


সালাত আদায় করলে হবো 

খোদর অতি আপন,

পরকালে পেয়ে যাবো মোরা

অতি সুখের ভুবন।

Tuesday, November 3, 2020

তুমি কি আমার হবে?

 তুমি কি আমার হবে?

     এম এ মাসুদ রানা 


তুমি কি বৃষ্টি হবে?

ভিজিয়ে দিবে আমায় সকাল দুপুরে।

তুমি কি সূর্য্য হবে?

আমায় আলো দিবে চুপটি করে।


তুমি কি আকাশ হবে?

ঢেকে রাখবে সযত্নে আমায় শুধু।

তুমি কি বাতাস হবে?

তোমার কমল ছোঁয়ায় দিবে যাদু।


তুমি কি রাত হবে?

আদর করে, আমায় রাখবে বুকে।

তুমি কি চাঁদ হবে?

আমাবস্যায় জ্বলবে ধুঁকে ধুঁকে।  


তুমি কি আমার সাথী হবে?

সবসময় আমায় নিয়ে কথা কবে।

তুমি কি আমার হবে?

চিরকাল আমার কাছে রবে।

Friday, October 30, 2020

প্রানান্তর প্রচেষ্টা

 প্রানান্তর প্রচেষ্টা 

   এম এ মাসুদ রানা 


জেগে উঠো মুমিন মুসলিম

জিহাদের দাও ডাক।

নবীকে (সাঃ) নিয়ে ব্যাঙ্গকারীর 

মাথায়  মারো লাথ।


বেশি বাড়াবাড়ি করছে তারা

কলিজায় করছে আঘাত।

শক্ত জবাব দিয়ে হবে ওদের 

ভাঙতে হবে কালোহাত।


ওরা মাঝে মাঝে বদনাম রটায়

পরিনামে পায় জবাব।


বিবেক মোদের ডাক দিয়েছে

করতে হবে প্রতিবাদ,

হাসিমুখে নবীর তরে শহীদ হবো 

করবো মোরা জিহাদ।

Wednesday, October 28, 2020

হৃদয় রানী

  হৃদয় রানী 

 এম এ  মাসুদ রানা 


বুকভরা স্বপ্ন, মনে আছে ভালোবাসা

সাথে আছে সেই নিষ্পাপ হৃদয়ের আশা।

স্বপ্নরা মেলছে ডানা, হৃদয়ে দিয়েছে হানা

সেই তরে ধরেছে নতুন নতুন বাহানা!


আচ্ছা!

একবার কি ফিরে দেখা যায় না?

একবার কি কাছে আসা যায় না? 


তাছাড়া; 

নতুন করেও কিছু বলা হয় না!

নতুন করে কি আকাশে ঘুড়ি হওয়া যায় না?

এই হৃদয় একবার কমল পরশ দিতে পারবে না?

ভালবেসে কি হাত দুটি একবার বাড়াতে পারো না?


হ্যাঁ, 

আমি বসে আছি,

তোমার পথেই চোখ মেলে চেয়ে আছি,

আমি জানি তুমি ফিরবেই, 

আমার প্রিয়োসী হয়ে। 


তুমি আবার আসবেই,

হ্যাঁ আমি জানি সত্যি আমি জানি,

কারণ তুমি যে, আমার হৃদয় রানী।

Tuesday, October 27, 2020

ফরিয়াদ

   ফরিয়াদ  

এম এ মাসুদ রানা 


যে দেশে চলে না পর্দার বিধান 

গাজা সেবানে নাবালক ছেলে,

পীর সাহেবরা করে শরাব পান

বার আসলে এমপি-মন্ত্রী মিলে।


ডিসকোর ভিতর রয় মাতোয়ারা 

ধর্ষক দিয়ে করে জয় লাভ,

সুদ ঘুষের কারবার চলে যথাতথা 

সিদ্ধ ছাড়া আসেনা ভাব।


শিরক করে পীরের সাহেবরা

বিদ'য়াত হলো চির সঙ্গী, 

কুফরি করে মহা আনন্দে

ইমানের সাথে চালাই ভঙ্গি। 


কুরআনের পাখি যায় নির্বাসনে  

তাফসির প্রচার বন্ধ হয়,

শত্রুর সাথে দফায় দফায় সন্ধি

হক কথাতে নীরব রয়।


জুব্বা টুপি রাখলে গাঁয়ে

দেখলে দাড়ি পুলিশ ধরে,

কেউ হয় না দেখেও অবাক 

মেধাবীর সব কারাগারে মরে।


এমন দেশে আসবে না কেন ঘূর্ণিঝড়? 

কারণ মোরা জানতে চাই,

আল্লাহর কাছে করে আবদার 

লজ্জা সমর বলতে কিছুই নাই?


মহান মালিকের পবিত্র বানী 

পড়লে বলো জঙ্গিবাদী,

রাষ্ট্র বিধান হলো না কুরআন 

উল্টো দিলো চরম অপবাদ। 


এমন এক জালিম রাজ্যে

আসবে গজব স্বাভাবিক এটা, 

অনুপাত হয় না নিজ কার্যকর্মে

ভালো কথা বললে বলে বেটা।


আল্লাহ তুমি সর্বশক্তিমান  

ক্ষমার তরে দুই হাত তুলি,

পবিত্র মহান সত্তা তুমি

কষ্টের মাঝে তোমায় নাহি ভুলি


তোমার দয়াতে রয়েছি বেঁচে 

মৃত্যু দিলে কিছু করার নাই,

আমার সোনার বাংলাদেশে

ইসলামী রাজ্য কায়েম চাই।


ততটুকু সুযোগ দাও খোদা তুমি

আমরা শহীদি মরন চাই,

আমি কি লিখতে কি লিখেছি

ভুল হলে ক্ষমা দৃষ্টি দেখ ভাই।


রচনাকালঃ- ১৯/১১/২০১৯

দ্বন্দ্ব

 দ্বন্দ্ব 

এম এ  মাসুদ রানা 


অনুরাগের খুন হয়েছে 

ভালবাসা উঠেছে শৃঙ্গে,

ধর্ষিত ললনা বলে না

কথা চলমান বঙ্গে।


দ্বন্দ্ব মন্দ বাড়ে গোল

অপমান জানে শুনে

মিথ্যায় বেরে যায় সংশয়

প্রনত নেই বিনয়ে!


আস্ফালন দাম বাড়ে নাই 

নিন্দা করলেও দুখ

লোভে হয় দৈত্যের নীতি

প্রশস্ত হয় মুখ!


অভিলাষীতে নেই কোন সুখ

ক্ষয় করে পিঞ্জর

ঈমানের জোর নেই আর

খুঁটিও হয়েছে নড়বড়!

স্বচ্ছন্দতা

 স্বচ্ছন্দতা

এম এ  মাসুদ  রানা 


রক্ত লালে লাল হয়েছে 

উদীয়মান সূর্য্য মতো,

সবুজের মাঝে উঠল জেগে

রক্তিম অর্ক কতো।


স্বাধীনতার জোয়ার আসলো 

সারি সারি গাছে,

চারদিকে ছড়িয়ে পরেছে

প্রভাত ফেরির পাখি ঝাক,

বিহঙ্গী দিলো দূর গগণে উড়াল

উড়তে উড়তে দেয় নাচ।


শহীদের আত্মার কান্না দেখে,

আকাশ অঝোরে কাদলো,

চোখের কোটায় ঝরাল জল

মুক্ত হয়েও নাহি হাসল।


রক্ত বয়ে ভেসেছিল মাটির

পিপড়ের বাসায় বন্যাও,

সেই লোহিতে লাল হয়েছে 

অশ্রু ঝড়া কান্নাও,

বিজয় নামের পড়বে মালা

হবে না কোন অন্যায়।


শহীদের পোড়া লাশটি দেখে

শকুন ও বাজ ডাকলো শেষে, 

ভর দুপুরে চিৎকার মারে

আর্তনাদের করুন বেসে,

কান্না চেপে খুঁড়ছে মাটি 

স্বজনের প্রান হারিয়েছে যে।


সবকিছু ফেলে দিল হেসে

দেশটা স্বাধীন হল শেষে,

মায়ের বুকে সন্তান নামে

বলছি সবাই নেচ নেচে ।

ভাগাভাগি

 ভাগাভাগি

এম এ মাসুদ রানা


মোর অর্থে বাজেট করো

সংসদে হয় ভাগ,

ভাগাভাগিতে কমতি হলে 

করি তোরা রাগ।


জনগণের অর্থ ঠকিয়ে নিয়ে

হয়েছো তোরা শক্তিধর, 

এই বলতেই হইছো বেজার

বলিস মর পাবলি মর,

তোর ভাগ্যের চাকা হবে লরচর

বলো সবাই মিলে ধর।


দেশের বোঝা বইছে পাবলিক

করছে তাঁরা কান্নাকাটি, 

বলিস তোরা, করিস তোরা অনিয়ম

আয়েশে চলে হাটাহাটি। 

মুখোস পরা জনদরদী হয়ে বলিস,

দেশের তরে জীবন বাজি।


তোরা হলে ভণ্ড নেতা

মোগো বলিস কংস মামা।

মামার সাথে বাজি নিয়ে 

সোনার বাংলা হল তামাতামা।


তোদের যুগল চরণে পরি

মোর পাওনা মোরে দে

তোদের কর্মফলে যা পাবে 

সেটাই তোরা নে।


সবিনয়ে বলি তোদের শুনো

বেহিসাবি করিস না ভাগাভাগি,

ক্ষধার তরে কাতর মোরা 

করি না তবুও রাগারাগি। 


রচনাকাল ১৮/০৯/২০১৮

সন্তপ্ত

   সন্তপ্ত    

এম এ মাসুদ রানা 


পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল আজ অতিশয় অবসন্ন  

ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের আল্পনা শুধুই কল্পনা। 

মূল্যহীন হয়েছে বাহান্ন, ঊনসত্তর  কিংবা একাত্তর আবার,

এই প্রশ্ন জাগে মনে সবার। 


দেশের তরে হয়েছে দু'লক্ষ মা, বোনের সম্ভ্রম হানি 

ইতিহাস পড়ে প্রতিটি কথায় তো জানি।

আজ কম্পনে কম্পিত হয় মা বোনের হৃদয় 

অশ্রুসিক্ত নয়নে বলে এরই তরে হয়েছি কি সম্ভ্রম হারা?


কাঙ্খিত শহীদ মিনার তো হলো নিষ্প্রাণ 

তাই গাইতে পারেনা, সে সেই বিদ্রোহী কোন গান।

স্মৃতিসৌধ আছে শুধু স্মৃতির পাতায় আঁকা 

পাতার উপর পাতা পরে সে-তো আছে ঢাকা।


পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল রূপান্তর হয়েছে কারাগার 

বন্দি না হয়েও আজ জনজীবন হচ্ছে ছারখার।

দেওয়ার কথা থাকলেও পায়নি মৌলিক অধিকার 

এমন স্বাধীনতার ছিলো কি এমন দরকার?


তখন বলেছিলাম সবে এই প্রাণের বিনিময়ে 

হে খোদা বাংলায় একখানি পতাকা দিও।

সকলের প্রার্থনায় দিয়েছো লাল সবুজের পতাকা 

ভিন্ন ভিন্ন মত একত্রিত করে হয়েছিল আঁকা। 


এখন পতাকা আছে শুধু ইতিহাসে 

তাঁর সম্মান সব ধুয়ে মিশে গেছে। 

করতে পারে না শুধু সে আত্মচিৎকার 

সে যে নিষ্প্রাণ,  আছে শুধু তার আকার।


মোরা করতে চাই এই অশান্ত বর্গমাইলকে শান্ত

শহীদের রক্তে অাল্পনার মান দিয়ে হবো ক্ষান্ত। 

ফিরে পাবে বাহান্ন কিংবা ঊনসত্তর তাদের সম্মান 

প্রয়োজনে আবারো আরে দিবো তাজা তাজা প্রাণ।


সোনার বাংলার তরে ধরেছি আবার বিদ্রোহী গান 

বিদ্রোহ করে ফিরিয়ে আনবো হারানো স্বাধীনতার মান।

স্বাধীনতা রক্ষায় বাজি ধরেছি মোদের প্রাণ

স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিদের করবো খান খান।


রচনকাল ২০/১০/২০২০

Wednesday, October 21, 2020

মানবতা

মানবতা 

এম এ  মাসুদ  রানা 


ধর্ষণের বাজে কম্পন 

ভেতর-বাহির সর্বত্রই। 

মানবতা কোথায় তুমি?

আছো কোন গগণে?

খুঁজি তোমায় সর্বক্ষণে

যাচিও আমি জনে জনে। 


ক্ষমতার দোহাই দিয়ে

করবে কত মানুষ গুম?

আর করবে কত খুন।

বিলীন হয়েছে মনাবতা

মঞ্চে বলে কথার কথা

বৃথা হয়েছে স্বাধীনতা। 


মলিন হয়েছে মায়ে বদন

মায়ের কষ্ট দেখে ক'জন।

ক্ষণে ক্ষণে হারাছে স্বজন

শোকে ফলে করেনি ভজন।


মায়ের সম্মান হবে ফিরাতে

বর্বরতাকে হবে তারাতে,

অন্যায় ও দুনীতিকে হবে হারাতে

মোদের দাঁড়াতে হবে রুখে।


নষ্ট করতে হবে কালো হাত

সেই তরে ভুলে হবে জাতপাত।

আর হবে না কথার কথা

ফিরে পেতে চাই স্বাধীনতা

কারো তরে থাকবে না হীনতা

বাংলায় জাগ্রত হবে মানবতা।

নিষ্কৃতি

  নিষ্কৃতি 

   এম এ  মাসুদ  রানা 


সরল ভাবে, সহজ বিষয়

যায় না বলা, ক্ষণে ক্ষণে!

অনেক ক্ষণে, অকপট বিষয়

বোধের ভুলে, দুর্বোধ্যও হয়!


সুবোধ্য ব্যপার, অবন্ধুর করে

অনেকে তো, নেয় না ঋজুতে!

শুরু করে, কলঙ্ক খোঁজা

সহজ করে, হয় না যাচা।


উদ্বেগ যতই আসে এই মগজে,

যাই কি লেখা খুব সহজে?

অনেকে আবার বলেই ফেলে

ভাবের আবেগ দিয়ে বলে চলে।


না হয় যদিও দোষ, তত্ত্বজ্ঞানের কাছে

তবুও কী ভাই নিষ্কৃতি আছে।

বিদ্রোহীর বানী

বীদ্রোহীর বানী 

এম এ  মাসুদ  রানা


রক্ত দিয়ে কেনা মানচিত্রে শকুনের আনাগোনা 
জীবন দিয়ে এনেছি তোমায় এটাও জানাশোনা 
কামুক বাসনায় হায়েনারা শুরু করেছে জাল বুনা
তোমার পবিত্রাতাকে করছে তারা এখন তুলোধুনা।

মানচিত্র তোমার রক্ষায় যারা রক্ষা যন্ত্র, 
তারাই পড়ে না তোমার রক্ষায় রক্ষা মন্ত্র 
তোমায় ভোগের তরে ধরে তারা কু-তন্ত্র 
তাদের তরে ব্যবহার করে না পবিত্র গ্রন্থ। 

তোমার অবয়বে তারা পড়াতে চায় না প্রসাধনী
স্বার্থ সিদ্ধ লাভে হতে পারে অনায়াসে খুনি 
এমতাবস্থায় তারাই দাবী করে জ্ঞানী আর গুণী 
কথায় কথায় বলে তারা তারাই দেশের মনি। 

দেশের কল্যান তরে তোলে যারা নিশানার ঝড়
সমাজপতিরা তাদেরকে বলে ওদের তোরা ধর।
দেশের তরে অনেকেই এখনো দিয়ে যায় প্রাণ
অনেকেই তাদের সম্মানে তরে ধরে জয়গান। 

বারে বারে বলে সেই বিদ্রোহী সৈনদল 
নিরবে বসে থেকে হবে না কোন ফল। 
পবিত্র মানচিত্র যখন আছে শকুনের ডানায়, 
তখনি দিতে হবে কলমের ডোগা দিয়ে হানা
বিদ্রোহীর বানীতে ঘায়েল হবে হয়েনার দল

দ্বিধা

  দ্বিধা

          এম এ মাসুদ রানা 

                                                         

কঠিন সময় হচ্ছে পার,

কিছু কথায় স্রোত ধরে রাখা। 

যুক্তিক বানীতে থেতো করা হলো

কয়েকটি কঠিন কথার কথা।  

পাতায় ছিলো এক ফোঁটা বৃষ্টির জল ,

উপমা দিয়ে করছে যে, টলমল। 

বিশ্বাসের মধ্যে লুকিয়া থাকা কিছু কথা,

ওজনও নেই জানা, এটাই তো বড় ব্যথা

মনের গভীরে একটু আসে তো যথাতথা

হয়তো সময়ে অসময়ে অনেক কথা।

অবলম্বন চাইছে, 

মেঘের ওপর আঁকা আছে ধুসর নক্সাখানি

তোমার কথায় কথা মিলিয়ে তা জানি 

প্রেষ্যে হয়েছে অনেক কথা এটাও তো মানি

হাই বলবো এখন যায়নি মনের দ্বিধা খানি।

দিশেহারা মন

 দিশেহারা মন 

এম এ  মাসুদ  রানা 


পরন্ত  বিকেলে 

মায়াবী চোখ

এলোমেলো চুল

আর  মুখে হাসি।


কি যে, মন চায় 

আমি কি যে, করি

সেই তরে শুধু নড়ি

মন চায় ভালোবাসি। 


অজানা দিগন্তে 

অজানা প্রান্তে।

মন চাই শুধু জানতে

পারি না কিছু  মানতে ।


উদাসী মন করে গন্ গন্

অজানা শব্দ করে ঝনঝন 

কীটপতঙ্গ করে ভনভন 

সাহসে হয়েছি টনটন। 


কিছু খুঁজার তরে 

রয়েছি তো পরে

তবুও নাহি কেন নড়ে

তাহলে কি যাবো ঝরে।


অযাচিত অশোভনে

কোন কিছুর লোভনে

তার কিছু শ্রবণে

আছি কোন এক ভবনে।

ফিরে পেতে চাই

  ফিরে পেতে চাই 

  এম এ  মাসুদ  রানা 


আবার একটা কঠিন সংগ্রাম চাই 

সংগ্রাম ছাড়া কখনো শান্তি নাই।

স্বাধীনভাবে বাঁচা হয়ে গেছে দায়

জনসাধারণ বলে সর্বক্ষেত্রে হায় হায়।


সুবর্ণ জয়ন্তী এসে গেছো মাথার কাছে

মৌলিক অধিকার নিয়ে নাহি কেহ বাঁচে।

এখনো কেন সর্বসাধারণ অধিকার যাচে?

তাহলে কী এই স্বাধীনতার মূল্য আছে?


স্বাধীনতা তুমিও তো রক্ত দিয়ে কেনা

সেই রক্তের নেই কি কোন রকম দেনা?

আমারও দরকার আছে তোর কাছে জানা

জানতে চাইলে করে সবাই শুধু মানা 

তোমাকে তো বুহু প্রাণের বিনিময়ে আনা।


তোমার তরে রক্ত গঙ্গায় করতে হবে আবার স্নানান

তোমার তরে রণ  হবে সবাইকে দিতে হবে জানান

তোমার রক্ষায় দিতে হবে নতুন নতুন তাজা প্রাণ 

রণ করে ফিরে পেতে চাই  স্বাধীনতার মান।

কলঙ্ক মুক্ত হতে চাই

 কলঙ্ক মুক্ত হতে চাই 

এম এ  মাসুদ  রানা  


ভাটির জননী, তুমি এখনো নিরব কেন? 

তুমি তোমাকে নিয়ে ভাবো না কেন? 

তোমার প্রতিবাদ করতে এতো বিড়ম্বনা কেন?

তোমার নিজের প্রতি নেই কেন অনুতাপ? 


তোমার প্রতি মাঝে মাঝে হয় অনেক রাগ 

তোমার প্রতি তবুও থাকি অনেকটাই সজাগ। 

তোমার প্রতি থাকে  অনেক অভিযোগ,

তোমার প্রতি তবুও থাকে অনেক অনুরাগ।


তোমাকে রক্ষা করতে যারা রক্ষাকবচ 

তারাই আজ কেন এতোটা অবুঝ?

তারাতো তোমার কামুক বাসনায় মক্তো

তাই তার হতে পারেনি তোমার শক্ত ভক্ত।


তুমি প্রতিবাদী হও প্রতিশোধ নেওয়ার তরে

সবাই নিশ্চুপ হয়ে যায় যেন তোমার ভরে

সকল ধৃষ্টতা যেন তোমার ভয়ে নড়ে 

আবার তার সবাই তোমার জয়গান ধরে।


নৎসাৎ করে দাও সেই কুচক্রী মহল 

কুচক্র করে যেন তারা না পাই কোন ফল 

যেন তারা ফেলাতে না পরে কারো চোখে জল

জ্বালিয়ে দাও তোমার প্রতিবাদী দাবানল। 


তুমি ধ্বংস করে দাও তাদের কালো হাত 

ভেঙ্গে দিতে হবে তো তাদের বিষদাঁত 

কুকর্মের তরে হয় যেন তাদের হয় লাজ

প্রভাতে বলতে চাই  কলংকমুক্ত হলাম আজ।

Tuesday, October 20, 2020

আমি আমার মতো

 _____ আমি আমার মতো 

         এম এ  মাসুদ  রানা 


তোমাকে বলি,

তুমি অর্থশালী, অর্থ আছে তাই 

তুমি বিত্তবান,  সম্পদ আছে তাই 

তুমি শক্তিশালী, শক্তি আছে তাই  

তুমি ক্ষমতাশালী, ক্ষমতা আছে তাই। 


তোমাকে বলি,

আমি অর্থহীন, অর্থ নেই তাই 

আমি বিত্তহীন, সম্পদ নেই তাই 

আমি নিরবল, গায়ে জোর নেই তাই 

আমি অসহায়, আমিই নিরুপায়। 


তোমাকে বলি 

তুমি মতামত কিনতে এসো না 

তুমি অর্থের লোভ দিয়ে ডেকো না

তুমি শক্তি প্রয়োগ করতে চেয়ো না

তুমি ক্ষমতা আমায় দেখাও না।


তোমাকে বলি,

আমি অর্থহীন, অর্থের নেই কোন লোভ 

আমি বিত্তহীন, সম্পদের প্রতি নেই লোভ

আমি নিরবল, শক্তি দিয়ে পেতে চাই না ফল

আমি অসহায়,  করো উপর ভর করে পেতে চাই ঠাই।


তোমাকে বলি,

অহেতুক বিরক্ত করো না আমায়

অহেতুক লোভ দেখাইয়ো না আমায় 

অহেতুক বল প্রয়োগ করো না আমায়

অহেতুক ক্ষমতা দেখাইয়ো না আমায়।


তোমাকে বলি, 

আমাকে আমার মতো থাকতে দাও

আমাকে আমার মতো বাঁচতে দাও

আমাকে আমার মতো চলতে দাও 

আমাকে আমার মতো বলতে দাও।

Saturday, October 10, 2020

সোনালীর তরে

সোনালীর তরে
এম এ মাসুদ রানা

সোনালী,
বিচিত্র বিশ্বাসে ভরা নীল আকাশ
বৃষ্টির জলে ভেজা মাঠ-ঘাট।

সোনালী,
মনে পড়ে অতীতের কথা!
নাকি, দিব্যি ভুলে গেছো সব অতীত?
এক দোরে বাঁধা ছিলাম দু'জন,
প্রেমে মাতাল ছিল দু’টি মন।
তোমার এমন কি হল?
তুমি এত ভূলোমন হলে কেন?

সোনালী,
মনে করে দেখো
সেদিন ছিল আমার জন্মদিন।
আচ্ছা কিভাবে তুমি ভুলে যাও
এমন মধুর দিনের মধুর ক্ষণ!
তুমি কি অভিমান করেছো?
নাকি রাগ করেছো?
আমার সাথে কি আর বলবেনা কভু কথা?
আমি তো তোমার রাগ ভাঙাতে জানতাম।
তবে আজ কেন পারছিনা বলো?

সোনালী,
মনে পড়ে কি তোমার?
গ্রামের মেঠো পথে চলা, যেন হাওয়ায় উড়ে
চলছিলাম আমরা, অজানা দূরে গগণ পুরে।
পথ থেকে পথের প্রান্তরে ছিলনা তো অন্ত!
তোমার হাত ধরে চির সবুজ মাঠে হাঁটা।
হাঁটছিলাম যখন ক্লান্তিহীন, উৎফুল্ল মন,
তুমি কি করে ভুলে গেছো সেদিনের উষ্ণ আলিঙ্গন।
তোমার চোঁখে মুখে ফুটেছিল অদ্ভুত এক অনুভূতি
তবে কেন আজ এত উদাসী আমার তরে জানাবে কিছু।

সোনালী,
বন্ধু সকল বলে তুমি নাকি হয়ে গেছো পর?
তুমি নাকি এখন অন্যেকে সাঁজিয়ে তোমার বর?
আমি বিশ্বাস করিনা,
আমি বিশ্বাস করতে পারি না!
কি করেই বিশ্বাস করি বলো?
তুমি তো আমায় পাগলের মত ভালবাসতে
সময়ে অসময়ে, বেলা অবেলায় কাছে আসতে।
এসব কি কখনো মিথ্যা হতে পারে?

সোনালী,
মনে পড়ে নাকি তোমার?
বর্ষার জলে করছিলে খেলা
পাতায় পাতায় ছিল প্রজাপ্রতির মেলা
বোঝে উঠতে পারি নি কখন নেমেছিলো বেলা।
কি করে ভুলে গেলে তুমি?
কেনই বা তোমার এমন স্মৃতি ভ্রম হল?
আমায় একটু বলবে কি তুমি
তো সেই স্মৃতিতে পুঁড়ে মরি আমি।
স্বরনালী সুখ আর সিগ্ধ শ্বাসে
তোমার কথা যেন প্রাণে বাঁজে
কাছাকাছি ছিলে তুমি বলেছি রবে সারাক্ষণ 
তাই তো হৃদয়ে চলে আমার বিরহের রণ।

Thursday, October 8, 2020

ক্ষয়

            ক্ষয়
এম এ মাসুদ রানা

ডাক!
অস্থি মজ্জায় ঘ্রাণ;
শব্দে শব্দের হাতছানি,
মনে অবস্থাও হলো জানাজানি।
মনের সত্তা আবছা নীল
অকারণে এক অনুভূতির ফীল।

মন!
মুখের এঁটো কথা,
হিংসার আলনাতে,
প্রতিহিংসার জানালাতে,
তুমি এসেছিলে সমলাতে।

ঝোলানো!
অর্থ না থাকায় করবো অনশন,
অনশন ভাঙ্গল সে সকালের। 
আত্মভোলা মেঘে বার্তা নিয়ে এলো,
আর দিতে হবে না লেকচার। 

সর্বহারা সংশয়!
কুড়িয়ে পেলাম ফোনে 
ঠিক তখনি প্রশ্ন জাগলো মনে
আমি দিতে পারবো কি?
ভালোবাসার দানা ..
রাখতে পারবো তো তার মান!

আর্তচিৎকার

আর্তচিৎকার
এম এ মাসুদ রানা

বুকের গভীরে চাপাকান্না কখনো দেখা যায়?
দেখেছো তো তার চোখে গঙ্গা ও যমুনার বান!
তুমি দেখতে নাহি যদি পাও,
তাহলে ঐ কলেজ পারার গলির পথে যাও,
দেখতে পাবে লাল সবুজে পতাকাটির হাহাকার,
শুনতে পাবে সন্তান হারা মায়ের আর্তচিৎকার।
যে ডিসেম্বরে আয়োজন করো রঙ রঙের বাতি,
সেই রাতেও তো খালি হয় মায়ের কোল খানি।
বোনটি আমার বোন ডাক শোনার অপেক্ষায়,
চাপাকান্নাও ধরে রাখে দু'চোখে,
কখন যে ডাক দিয়ে বসে, ভাইটি বোন বলে।
সেই আশায়, সেই অপেক্ষায়,
মা বোন আজও ঐ কলেজ পারার গুলিতে কাঁদে।
স্বাধীনতার পক্ষে আছি বলে তো আজো হাসি
স্বাধীনতার মর্মকথা যখন যাচি, আর্তচিৎকারে ভাসি।
কোথায় মৌলিক অধিকার, হলো না এর সাধিকার
এই স্বাধীন বাংলায় হয়নি কোন অপরাধীর বিচার
এই জন্যেই মাঝে মাঝে করি আর্তচিৎকার।

শুভ রাত্রি

      শুভ রাত্রি 
এম এ মাসুদ রানা

ঘুমটা ও আঘাত হানে
আসে ক্ষণে ক্ষণে,
মন চাই না আর ছুটতে
আর বনে বনে।

ঘুমের ঘর কান্না করে
হারালাম কি জীবন?
ঘুমের মাঝেও ছুটে যায়
সুখ করতে হরণ।

হিসাব কি যায় মিলানো 
ঘুমের মাঝে গল্প?
তুমিও কি  ঘুমিয়ে পরবে
সময় খুবই স্বল্প?

তাই তো এখন হলাম আমি
একা যাত্রী, 
তোমায় এখন বললাম আমি 
শুভ রাত্রি। 

Wednesday, September 30, 2020

কর্ম করো

          কর্ম করো
     এম এ মাসুদ রানা 

ধর্ম মেনে কর্ম করো, জীবনটাকে গড়ো
কর্ম ছাড়া ধরণী তলে, হয়নি কেহ বড়ো।
কর্ম করবে নিজের জন্য, রবে প্রতি ডোরে
কর্ম ফল আসলে পরে, গর্বে বুকটা ভরে।

কাজ করলে মজুরি পাবো, এমন নীতি মানো
মজুরি বুঝে কর্ম খোঁজে, সুখ জোড়িয়ে আনো। 
ধর্মের মাঝেও কর্ম আছে, সবারই জানা আছে
কর্ম করে রোজগার করে অনেকে সুখে গেছে। 

কর্ম করে খানা জোগাই, এটা সবাই জানি
অলস হয়ে বাচার কথা, কেহ নাহি মানি। 
সাজাতে থাকি নিজের ভুবন ভিন্ন কর্ম করে
আশা কারো আরো এনাম বরের কাছে ধরে।

লজ্জা ছেড়ে আপন কাজে কর্মজীবী  হও,
কতই জনে তো গেয়ে গেছে কর্মজীবীর গান
তাঁদের কথার মাঝে  কর্মের ছিলো অনেক দাম
রয়েছে ওঁদের কর্মগুনে ভুবন জুড়ে অমরত্বে মান।

বন্ধু

বন্ধু
এম এ মাসুদ রানা

বন্ধু হলো সুখের বাসা
খোদার সেরা দান
বন্ধু হলো আপন স্বজন
সবাই বলে জান।

কঠিন সময়ে পাশে থেকে
জোগায় মনে বল
আমি আছি তোমার সাথে
সামনে এবার চলো।

সত্যিকারের বন্ধু সে হয় 
দুঃখে পাশে থাকে
ভরসা দেয় কিছু হলে 
আমায় সাথে রেখে।

বন্ধু ছাড়া জীবন বৃথা 
বন্ধু গড়ে নাও
মনের মত বন্ধু পেতে
খোদার দয়া চাও।

নামাজ পড়ি

____ নামাজ পড়ি
__ এম এ মাসুদ রানা

নামাজ হলো বেহেস্তের চাবি
মানতে হবে ভাই,
পড়লে নামাজ পাবে নাজাত
নামাজ পড়তে চাই।

যতই থাকুক ব্যস্ত সময় তবও
নামাজ পড়ো ভাই,
নামাজ ছাড়া জান্নাতে যাওয়ার
কোন পথ নাই?

কুরআনে নামাজের কথা লেখা
আছে বিরাশি বার,
নাজাজ ছাড়া দেয় না যেন
কবর ঘরে পার।

আল্লাহর বিধাণ মেনে নামাজ
কায়েম করবো আজ,
নামাজের মাঝে কষবো না দুনিয়াবি 
আছে কোন কাজ।

বাঁচার অধিকার

বাঁচার অধিকার 
এম এ  মাসুদ রানা 

ধর্ষকদের হয় না সাজা
তারা মনান্দে চলে,
এম.পি, মন্ত্রী, নেতা সবাই 
প্রতিরোধের কথা বলে।

চলতো যদি ন্যায়ের শাসন
ধর্ষক পেতো সাজা,
ধর্ষণ করে পার পেত না
মন্ত্রী কিংবা নেতা।

দুঃখ হলেও সত্য এটাই
ন্যায়বিচার মিলে না
তোমার হয়ে কথা বলে
পকেট ভরে দিলে যা।

এইটাই হলো বাস্তবতা
চলছে এমন ভাবে
যাদের আছে টাকার গরম
মানুষ তারাই তবে!

এমনি করে চলবে কত্তো 
এমন নির্মম অবিচার, 
স্বাধীন বাংলায় নাই কি মোদের
বেঁচে থাকার অধিকার।

Sunday, September 27, 2020

ছন্নছাড়া

_____ ছন্নছাড়া
_ এম এ মাসুদ রানা

তুমি আজ নেই পাশে
বড্ড একা লাগে,
এমনটা হবে একদিন
বুজিনি তো আগে।

রাত্রি যতো গভীর হয়
স্মৃতি হয় ততই ভাবি,
ঘুরে ঘুরে চোখের সম্মুখে
আসে তোমার ছবি।

এক সময়ে নিদ্রার ঘরে
স্বপ্নে তুমি আসো,
সুখের নায়ে পাল উড়িয়ে
গান গাও আর ভাসো।

আমি সবই বুঝেছি আজ
স্বপ্নের মাঝে স্বপ্নঝড়া
বাঁচার মাঝে আছে মরা
জীবন হয়েছে ছন্নছাড়া।

Tuesday, September 22, 2020

আমি

___________ আমি
________ এম এ মাসুদ রানা 

তুমি বলো, আমি আমিত্বেই বিভোর, 
খোলে দেখি না, বলো মনের দোর। 
নিজের ভাবনায় থাকি, এটাই আমার স্বভাব,
সর্বক্ষেত্রে নিজের জন্যে, রাখো অনেক জবাব 
কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত, কষতে থাকো হিসাব।

আমি আমিত্বেই থাকি, এটা তোমার মনের ভুল 
মনের দোয়ার খুলে, দেখি সবারই মনের কূল
অযাচিত হয়ে গেলে, সরাসরি মারে দেয় হুল।
অন্যের তরে কিছু করতে হলে পেতে হয় মাশুল 
আমি যে, সকলের তরে রহিতে চাই সর্বদাই ব্যাকুল।

আমি আমিত্বেই থাকি না জব্দ 
অন্যের তরে কিছু করতে হৃদয়ে হয় শব্দ;
তবুও তো কেহ করতে পারে না কখনো কবজ্ব
সবার কাছাকাছি থাকতে নিজেকে করেছি হেফজ।

তোমার মনের ধারণায়, সঠিক ভাবে ছড়ায় না
তোমার গভীরে থাকে, সর্বদাই অন্য সব ধারণা। 
তোমার তুমিতেই, থাকে বিষন্ন মন মানসিকতা 
তোমার ভাবনায় রাখো, কথার কথা যথাতথা
তোমার মতো করতে পারি না, কখনো বোকাসোকা।

আমি আমিত্বেই থকি না, কখনো বিভোর 
আমি সবই দেখে করি, এই মনকে সবুর।
আমি কখনো কখনো, দেখে করি না দেখার ভান
আমি ভাবি না এতেই, চলে যাবে আমার মান
আমি কারো জন্যও করি, কখনো নিজেকে কোরবান।

আমার আমি

______ আমার আমি
____ এম এ মাসুদ রানা

আমার হারিয়ে যাওয়া কবিতা;
আমার হারিয়ে যাওয়া ছবিটা।
আমার হারিয়ে যাওয়া শৈশব
আমার হারিয়ে যাওয়া কৈশোর।

আমার নষ্ট জীবন ;
আমার ছন্নছাড়া মন।
আমার মনে বাজে করুন সুর,
আমার অতলে আসে বিশ্রী দেবাসুর।

আমার বেহিসাবী ভালবাসা ,
আমার বেসামাল কাছে আসা।
আমার বেমালুম চলন বলন
আমার অগোছালো কথার ধারণ।

আমার আলোকিত হারিয়ে যাওয়া শহর,
আমার আলোকিত জীবনে নেমেছে কহর।
আমার নীল নীলিমায় আঁধারে ঘনঘটা
আমার দিবসে আলোর মাঝে কুয়াশার ছটা।

তুমি এসো মেঘলা আকাশে, মেঘ হয়ে,
তুমি এসো দূঃখ ভরা মনে,  কষ্ট হয়ে।
তুমি এসো ক্লান্ত হৃদয়ে, অবসন্ন হয়ে,
তুমি এসো জরাজীর্ণ দেহে, দূর্বলতা নিয়ে।

ফিরে আসবেই আমার জীবনে, 
আসবে না কেউ স্বাধীনতা হরণে।
অপেক্ষায় আছি তোমায় করবো বরণ
তাই সময়ে অসময়ে করি তোমায় স্মরণ।

Friday, September 18, 2020

উল্টো পাল্টা

উল্টা পাল্টা 

এম এ মাসুদ রানা


উল্টে গেছে শব্দমালা
পাল্টে নিও অর্থমালা।
ভালো বললে মন্দ বুঝো
শান্তি বললে অশান্তি।


ঘৃণা করার পরিবর্তে কি?
ভালবাসার অর্থ বুঝায় না।
দুরে যাওয়ার বিপরীতে
কাছে আসার পথ খুঁজো না।


তুমি আমায় রাখোনি মনে,
আমি তোমায় রাখেছি দমে।
আমার কথা যদি আসে কোন ক্ষণে
বুকের ক্ষত চিহ্ন পরবে তোমার মনে।


অনেক ভাল আছি আমি
না হয় তুমি মানিয়ে নিও।
তুমি আমায় ভুলে গেলে
জানিয়ে দিয়ো পত্র দিয়ে।

প্রতিশোধ

             প্রতিশোধ 
       এম এ মাসুদ রানা

তুমি আমার ক্ষত স্থানে গাচুলি দিয়ে যাও
এটাতে তুমি অনেক সুখ পাও।
ভেবেছো এই স্বভাবে পাবে না জবাব
এতে তো হয় আমার অনেক আজাব
তখনি মনে আনন্দে বলো শাবাশ শাবাশ।

নীল গগনে সূর্যটাও তো থাকে ফাঁকা
কেউ করতে পারে না তার সাথে দেখা।
দেখতে চাইলেও হবে এটা শুধুই বৃথা
যেমন সবাই জানে নিম ফল তিতা।

তুমি আমায় নিয়ে যাও অজানা কোন আকাশে
ফিরিয়ে দাও ফিরে আসার ঠিকানা দাও না শেষে,
আমি পথহারা হয়ে, নিরাশ হয় না অবশেষে,
ফিরে আসতে চেষ্টা করি অজানা পথ দেখে দেখে
তখনি আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠো নেচে নেচে।

তুমি আমায় ক্ষত স্থান বিক্ষত করে যাবে,
তোমায় আমি ছেড়ে দিবো সহজে কিভাবে,
আমিও প্রতিশোধ নিবো কোন এক সময়ে,
ভেবো না নিরব আছি, শুধু তোমার ভয়ে।
আমিও নিবো প্রতিশোধ চরম প্রতিশোধ
আমার থাকবে না তখন কোন হিতাহিত বোধ
শত চেষ্টা করেও করতে পারবে না প্রতিরোধ।

অভিসারিণী

____ অভিসারিণী
   এম এ মাসুদ রানা

তোমার অন্তঃসত্ত্বায় অন্তঃপুরে
যখনি ডাকিলাম মা
তখনি বললে ভুবনে আসবে তুমি
তা হবে না, তা হবে না।

ছুটেছিলে বিদিশায় দুষ্ট নেশায়
মিছে কিছু পাবার আশায়
চলেছিলে আপন মনে অজানা বনে
মাতাল ছিল যৌবন তৃষ্ণায়।

ক্ষণি ক্ষণের আবেগে তোমার
কয়েক মিনিটের সুখ!
তুমি কেন মা দেখতে দিলা না
আমায় ধরনীর মুখ?

এমনি করে তো আসিনি
তোমার গর্ভে আমি!
পৃথিবীতে নাকি সন্তান হয়
জীবনের থেকে দামি?

সুখের তরে কেন তুমি
আমায় গর্ভে নিলে?
সুখের শেষে আমায় কেন
কেটে ফেলে দিলে?

রোজ হাসরে আসবে তুমি
ঠিকই আমার কাছে!
কি বলবে খোদার কাছে
রেখেছো তো বেছে?

আমায় তো মরেছো তুমি
বাঁচিয়ছো আমার মান!
নয়তো সবাই বলতো আমায়
অবৈধ নাজায়েজ সন্তান!

নিষিদ্ধ সুখ পেতে তুমি
আমায় গর্ভে নিলে!
কলঙ্ক থেকে বাঁচতে তুমি
ডাস্টবিনে ছুড়ে দিলে।

তোমার মাতো করনি ওগো'মা
তোমার সাথে অবিচার এমন?
তুমি তাঁর কাছে অমূল্য রতন
সয়ে ছিলো যন্ত্রণা কেমন?

তেমার সাথে করতো যদি
তোমার মাও এমন!
বুঝতে ওগো'মা  তুমি সেদিন
মৃত্যু যন্ত্রণা কেমন!

Thursday, September 17, 2020

রক্তদান

রক্তদান
এম এ মাসুদ রানা

মানুষে মানুষে হচ্ছে বাঁচার লড়াই,
কেহ নাহি গাই মানবতার গান।
চারিদিকে ঝরছে রক্ত করছে চিৎকার
সবাই জানে সবার রক্তের একই আকার।
রক্তদানে আমাদের হয় কত্তো ভয়!
হবে কি কখনো সত্যিকারের মানবতার জয়?
এসো সবাই গাই মানবতার জয়গান
চলো সবাই আমরা করি স্বেচ্ছায় রক্তদান।
রক্তের অভাবে হারায় না যেন কোন প্রাণ
সবার মাঝে থাকুক ভালোবাসা অফুরান।
রক্তে নেই কোন জাত-পাত, ধর্ম কিংবা বর্ণ
এই কথাটি আমাদের জীবন হোক অর্থপূর্ণ।
আমরা সবাই এসে যদি করি রক্তদান
তাহলেই তো বাড়বে এই জাতির মান।
রক্তদানে ফিরে পেতে পারে কেউ প্রাণ
রক্তদানের দিতে পারবে না কোন প্রতিদান
রক্ত দিলে হয় কি কখনো কোন ক্ষতি?
কেন রক্তদানের থাকে অনেক ভয়-ভীতি?
যদি মানুষের মত মানুষ হতে চাও
তবে তুমি সেচ্ছায় রক্ত দাও৷

Sunday, September 13, 2020

অশরীরী প্রেম

অশরীরী প্রেম
এম এ  মাসুদ রানা 

চুপি চুপি করে অবুঝ মন 
প্রেমে পরেছো যখন
মিছে কিছু পাবার আশায়
অভিসারীর কালোমেঘ
নিষিদ্ধ কামনার রং
দেখেছো রঙিন স্বপন
নিভৃত রুদ্ধতার দ্বারে।

ঠোঁটে ঠোঁটে মিলিয়ে নয়
শরীরে প্রনয়ের সাথে নয়
চোখে চোখে দেখা শুধু  নয়
তিব্রতার অনুভূতির অনুভবে;
মনের মাঝে উতল তরঙ্গের তরে;
ছুঁয়ে দিতে হয় প্রেমময়ী মন
রাধাপদ্ম সৌরভে জুটেছিল যেমন।

তুই বালিকা

তুই বালিকা 
এম এ মাসুদ রানা 

বালিকাটি দেখিতেছে প্রাকৃতিক রুপ
আকাশে ছিলো তখন অনেক ধুপ,
বৃষ্টি আসিবে বলে প্রকৃতি হয়েছে চুপ
মেঘ দেখিয়া গৃহস্থালির সব কিছুই চুপ।

বালিকাটি দেখিতেছে বর্ষণের মেঘ
মাঝে মাঝে বলিতেছে তুইও চেয়ে দেখ।
ঘুড়িটা উড়িতেছে না আগে মত বেশ
গগনে থাকিবার আশা হয়েছে তাহার শেষ।

পাখিটা খিদের জ্বালায় করিতেছে চুঁই চুঁই
তখনি শুনিলাম আয় কাছে আয় তুই তুই।

বালিকাটি দেখিতেছে বৃষ্টি ভেজা পাখি
দেখিতে দেখিতে হইয়াছে সজল আঁখি।
পাখিগুলোকে আনন্দ দিয়াছে ফাঁকি
বালিকাটির কপলে নেই আর হাসি
তাহার হৃদয়ে বাজে করুণ সুরে বাঁশি।

স্বপ্ন অয়ন

----------- স্বপ্ন অয়ন ------------
       এম এ মাসুদ রানা

ভুলে ভুলে শুরু হয়েছে জীবন
ভুলে ভুলে হবে হয়তো মরণ,
ভুলের মাঝেও করি তোমায় স্বরণ
কাজের মঝেও থাকে না কোন ধরন।

ভুল দিয়ে জীবন হলো সবে শুরু,
ভুলে ভুলে তো মন করে দুরুদুরু।
আমার কল্পনার মাঝে আছে কল্পনা
এটা নিয়ে করি কত্তো সব জল্পনা,
মনের মাঝে আছে আঁকা কত আল্পনা
মনে যে, স্বপ্ন বুনেছি এটাও অল্প না।

তোর মনের মাঝে আসেনি কোন ভাবনা
আমায় নিয়ে করোনি কোন সাধনা
মনের মাঝে বাঁধানি কোন রকম বসনা
আমারে মনের মাঝে একটুও রাখো না।

আমার করুন ক্ষণে হয় না তোর যাতনা,
তাই তো কোন প্রহরেও তুমি আসো না,
কেমন আছিস! তুমি এটও তো যাচো না,
আমায় নিয়ে তুমি কখনো কিছুই ভাবনা?
তোমার ভাবনাতে আমার কিছু নেই 
দ্যাখো না তো তুমি আমায় কাছ থেকেই। 

বলি তোরে অতি যতনে, 
আমারে যদি না করো স্বরণ
বুঝে নিয়ও তখনি হবে আমার মরণ
দেখবে আমার আত্মা বিধাতা করেছে হরণ। 
করো না তখনো মন নিয়ে ছলনা 
ছলনার মিষ্টি কথা কখনো বলনা।

আমারও তো মন আছে, আমারও তো মন
ব্যথা পেলে সেও তো ভাসাবে নয়ন,
ভাল আর মন্দে করতে পরে তো চয়ন
ভুলের মাঝে আঁকতে পারে তো স্বপ্ন অয়ন।

গোধুলির বিকেলে

গোধুলির বিকেলে 

   এম এ মাসুদ রানা


দেখা হলো কোন গোধুলী বিকালে নিরালায়
কথা হলো দুজনে দুজনায় 
গোধুলীর বিকালে ছিলো অনেক তাপ
কথার মাঝেও হয়নি আনমনা।

প্রথমে হলো কিছু সামান্য ভোজন
সেখানে দেখালাম কিছু স্বজন,
ডাকতে ডাকতে ক্লান্ত  হয়ে গেলাম 
পরে দেখে তাঁরা আমার বদন।

হাসি খুশি ছিলাম তো অনেক বিভোর 
তবুও কথা হয়নি শেষ,
টুকিটাকি দুষ্টুমি আর মিষ্টি কথার মাঝে
কথা হচ্ছিল তবুও বেশ।

নির্জন নিরিবিলি, ছিল না চেচামেচি 
বসেছিল তো অনেক কাছাকাছি, 
কথার মাঝে কথা হয়েছিল অনেক বেশি 
মাঝে মধ্যে হয়তো চোখাচোখি। 

কথা শুরু হলো একসাথে হাটাহাটি 
রাস্তার পাস নিয়ে কাটাকাটি, 
মাঝে মাঝে বলে আমি চিল্লাতে পারি
চিল্লাবো বলে করে ছুটাছুটি। 

কিছু হলো কেনাকাটা এটা ওটা সেটা
খাকি খামে হলো বাঁধা, 
দাম নিয়েও হয়েছিল অনেকে কথা
মূল্য দিতে হলাম বৃথা। 

শেষমেষে আবারও হলো নতুন ভজন 
তখন ছিল না কোন স্বজন,
তারাহুরো করে খেয়ে বলে হলাম আমি প্রথম
বাড়ি ফিরার তরে চলে আয়োজন। 

পরিশেষ বাড়ি ফিরা একসাথে দু'জন
রাস্তায় বেজেছিল মোবাইল ফোন,
আলাপ আলোচনায় ফিরতেছিলাম 
কারো ফোন ধরিনি তখন।

অধীর আগ্রহে দাঁড়িয়ে ছিলো আমার তরে
আমার এক অতি আপনজন, 
কিছু কথা বলতে বলতে কি খাবো বলল যখন
একটু দেরী হলো বললাম তখন।

মনের কথা

 মনের কথা 
এম এ মাসুদ রানা 

রোজ আমি ঘুরি ফির, তড়িঘিড়ি
জীবনে তারনার তরে,
ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরে বলি
স্বপ্নগুলি গেল মরে।

আমি ঘুরি ফির আর খুঁজি
জীবনের কঠিন মনে,
জীবন যে জীবনের কাছে বন্দী
জীবন তাতো জানে।

হেলা আবহেলায় করে কোলাহল
খুঁজি শুধু কর্মের ফল,
চারিদিকে ছুটাছুটি করে পায় না খুঁজে
পানের এক গ্লাস জল।

ক্লান্ত দেহ তার সাথে অশান্ত মন
মাথাটা করে ফনফন,
কথার মাঝে কথা বলি শুধু আমি
ফোন বাঁজে টনটন।

অশান্ত মনের কথা সবাই বলে
শুধু যথাতথা।
সবার কাছে অনায়াসে পেয়ে থাকি
ব্যথা আর শুধু ব্যথা।

কেহ তো বুঝে না এই মনের কথা
লুকিয়ে আছে কি ব্যথা
বুঝতে চাই তো গভীরে গভীরভাবে
সময় নেই বলে শুধু কথা।

বুঝল না কেহ এই মনের কথা
করল না তো কেহ রফা
জনেজনে ঘুরে ফিরে হলাম একা
কেহই শুনল না মনের কাথা।

অপেক্ষা

অপেক্ষা
এম এ মাসুদ রানা


আমি সেই সময় টুকু চিনি
যাকে তোমরা অপেক্ষা বলো!
অপেক্ষা যে অপেক্ষা নয়,
মনে হয়, প্রতিটি মুহূর্তে বিষ পানের শামিল।
প্রতিটি দমে, পলে অনুপলে, ক্ষণে অনুক্ষণে,
মনে হয়তো দীর্ঘ্য দিনের মতন
যখন তোমরা বলো, অপেক্ষা কর,
একটু অপেক্ষা কর,
আমি আসবো, আবার আসবো।


অপেক্ষায় কেটে গেছে দিন, মাস, বছর
বলেছো তোরা যাই, চোখের পলকে আসবো,
হৃদয়ের প্রবণতাও নিভে গেছে অপেক্ষার তরে।
কিছুটা সময় বাকী আছে,
লাশ হয়ে পরে রব অচেনাদের কাছে,
তোমার তরে অপেক্ষায় থেকে যদি নাহি বাঁচি
লাশ হয়েও থাকতে পারবো কিছুক্ষণ তোদের কাছাকাছি
অপেক্ষায় রেখে গেছো শুধুই মিছামিছি।


বলি কারো তরে অপেক্ষা করবো না আর,
অপেক্ষা করতে করতে করেছি জীবনটা পার
সেও কারো জন্যে অপেক্ষা করেনি তো আবার!
সময় বয়ে চলে তার গতিতে,
অনেকটা মৃত্যুর মতো,
তবুও মরিনি এখনো আমি।

হয়নি যাবার বেলা

 হয়নি যাবার বেলা 
 এম এ মাসুদ রানা  

যেদিন এই দেহে থাকিবে না প্রাণ
সেদিন দুঃখ কষ্ট সবে হবে অবসান। 
বিদেহী হবে আত্মা আমার
কমল দেহ করে চুরমার।

আত্মীয় স্বজনরা করবে শুধু চিৎকার 
পিতা-মাতা ভাই-বোন পাবে না নিস্তার 
সময়ে অসময়ে করবে তাঁরা হাহাকার 
বলবে খোদা এই ছিল তোমার বিচার।

বন্ধু বান্ধব শুভাকাঙ্ক্ষী সকল 
একবার দেখার জন্য হবে তাঁর বেকুল।
পড়শীরা দেখে বলবে হলো কি আবার
সেবায় ত্রুটি এমন কি ছিলো তাঁর 
কেন পৃথিবীতে থাকতে পারলনা আর।

সেই ক্ষণে তুমিও বলবে কি কিছু কথা
রেখো না আমার তরে পেয়েছো তুমি যে ব্যথা।
কিছু কিছু ভুল আছে মেনে নিতে হয় 
জমিয়ে রাখলে তা শুধু বারাবে সংশয়। 
অভিযোগ থাকলে তুমি লুকিয়ে রেখে
বিরহ গড়াবে শুধু সত্যি ডেকে।

সন্ধ্যার ছন্দে

________ সন্ধ্যার ছন্দে
          এম এ মাসুদ রানা  

পাখিদের ঐক্যতানে গান
তুই সন্ধ্যা এবার নাম।
বাগানে গোলাপ, জবা, গাঁদা
দোলনচাঁপার গন্ধও চাঁপা।
গৌধুলি বিকালে নানান রঙ্গে রঙ
ধরেছো তুমিও আমার সঙ।
দোলছে গোলাপ কলি, বাদমী কলমী,
ঝিলে ফোটেছে সাদা শাপলা, আর পদ্ম
তোমার আমার সঙ্গোপনে ছিল না ছদ্ম।
অভিসার ছন্দ আনে আপন মনে
গুছানো খোঁপার কোন এক কোনে।
ধরি ফুল দুই আঙ্গুলে,
চুপি চুপি কইছি কথা আসে যেন মঙ্গলে।
ভেঙ্গে গেছে লাজ, ভয়,
নিরবতায় হাতে হাত একটা কিছু কয়।
অপলক দৃষ্টিতে, মিষ্টি মিষ্টি কথা রয়
তবুও মনের মাঝে সংশয় হয়।
তোমার স্পর্শে হৃদয়ে শিহরণ জাগে,
মধুর আলিঙ্গনের তরে আমায় ডাকে।

শহর

শহর
এম এ মাসুদ রানা 
নগরের নাগরিক, সভ্যতায় সভ্য সমাজ
দফায় দফায় কঠিন কাজ বেরেছে আজ।
গনতন্ত্র , রাষ্ট্রযন্ত্র, চালায় কি এক ভিষণ যন্ত্রে
পুঁজিবাদ ও সহিংসতাও চলে কোন মন্ত্রে।
আমি এই নগরের নাগরিক, সভ্যতায় সভ্য,
গনতন্ত্রের নিয়ামক, পুঁজিবাদের নিশানা নিয়ে লিখবো গদ্য।
তাঁহারা কি করে জানবে আমাদের ক্ষুধার কথা?
জাত-পাত, ধর্ম,  মধ্যবিত্ত চর্চার বিষয় কথা বলে বৃথা।
হিংসা, বিদ্বেষ, অন্যায়, ব্যাভিচার, নির্যাতনে একাকার 
গভীরে আমাদের বসবাস, ক্ষুধা আর তৃষ্ণার হাহাকার।
আকাশকুসুম লোভ লোভ দেখিয়ে সৃষ্টি করে তুলকালাম 
চেয়ারের চাষাবাদের নেশায়, তাঁহারা হয় বেশামাল।
কখনো বেরিয়ে আসে বর্ণচোরা মূখ, লোভের দীর্ঘশ্বাস,
চকচকে চোখ, লকলকে জিহবা আর লালার স্রোত
ছায়াটাকেও সন্দেহের চোখে দেখে, বিশ্বাসে আছে  ক্রোধ।
খুন, ধর্ষণ, জ্বালাও, পোড়াও, অবরোধ আর হরতাল,
পদাশ্রিত হতেই হবে, এই নিয়ে হয় তাঁরা মাতাল
লোভের তারনায় তাঁহারা খুঁড়ে দেখে পাতাল।

ইন্দ্রজাল

 ইন্দ্রজাল
এম এ মাসুদ রানা 

কোন এক নিষিদ্ধ রাত
কুয়াশা মাখা অন্ধকারে কাত।
আমার পাশে একজন মায়াবী
হাতের ইশারায় করে ভিন্ন দাবী।
হাতের মুঠোয় পেষিত আমার হাত
কিছু করতে চাইলে চলে যাবে জাত।
জল স্থল অন্তরীক্ষের সকল বাস্তবতা
হারিয়ে যাচ্ছে রহস্যময় গভীরে মনের কথা!
আমার চোখ খেলা করে তার চোখে,
পদ্মার স্রোতে ভেসে আছে অজানা রোগ।
মাকরাশা অদ্ভুত দ্রুততায় বুনে চলে তার জাল,
প্রতিটা টানে টানে জ্বালাময়ীর ভালবাসা ঝাল।
হঠাৎ হানা দেয় দমকা হাওয়া,সব মুহূর্তেই ছিন্ন ভিন্ন,
কোথায় ঊরে যায় কুয়াশার চাঁদরে তন্নতন্ন। 
এক স্বপ্নহীন অনশ্তিত্তের অন্তহীন ঘুম,
স্বপ্নের চাদরে চাষ করছি একাএকা পাহাড়ি জুম।
রাত্রির কোন প্রহর ঘোষণা করছে শেয়ালের দল?
চাঁদের মুখে ডানা মেলে ঊরে যায় এটাই পখিদে বল।

শুন্যতা

শুন্যতা 
 এম এ মাসুদ রানা 
মনের গভীরে দীর্ঘ মায়াময় ছায়ামূর্তি
শয়নে স্বপ্নে চলে আসে ভিন্ন উক্তি 
উক্তির মাঝেও থাকে তো যুক্তি
এরই মাঝে প্রাণে নিয়ে আসে শক্তি
শুন্যতা থাকা শর্তেও সৃষ্টি হয় ভক্তি।
যখন নিরবে চক্ষু তুলে তাকায়!
মনে গভীরে আবার ছায়ামূর্তি আঁকায়।
দীর্ঘশ্বাস হতে থাকে দীর্ঘ, তপ্ত হয় হৃদয়
আকাশের ওপারে আকাশ, আছে ততই। 
বাতাসে প্রিয় গন্ধ, খোঁজে স্পর্শ, শিহরণ
এতে জাগবে মনে ভীতর আরো জাগরণ 
তখনি মন দিয়ে মন হবে হরণ।
নিবিড় মেঘের দল খোঁজে কোলাহল
নিবিড় মনে আসে আরো বেশি মনোবল। 
খুঁজে পায় শুন্যতা, পাণ্ডুর, বিবর্ণতা 
নিরবে নিবিড়ে হবে যতশত মনের কথা।
হঠাৎ খামচে ধরে,ছিরেফেলতে ইচ্ছে করে
হৃদয় আমার! মায়াবি স্বপ্নের আঘাত প্রতিক্ষণ
শুন্যতার কারণে কখন আসবে আমার মরণ
পূর্ণতা না হলে কেউ করবে না কখনো স্মরণ।

তোমার অতলে

তোমার অতলে
এম এ মাসুদ রানা 

গভীর রাতে নেমেছে পরীরা আজ,
জোছনার আলোয় হচ্ছে তাদের কাজ।
রুপালী নদীর বুকে রয়েছে তারা শুকে
নিটোলে উঠেছো কিসের তরে ঝুঁকে।

সজল নয়নে চকিত ছলছলা পানি,
বিলাসী অহংকারেও দিয়েছে হাতছানি। 
ঠোঁটের ভাঁজে অগ্নি জোছনার রূপ
ডাকিতেছে নীরব প্রণয়ের ধুপ।

ছুঁয়ে দেবো আশাতীত ভালবাসার ছাপ,
আমার হবে বলে ধরবে, এই হাত।
খুঁজে নেই অনন্ত মধু মাস পশুরা খায় ঘাস
তখুনি মনে হয় তোমার অতলে হল বাস।

অপরিচিতা

অপরিচিতা
এম এ মাসুদ রানা 

পরিচিত জনও মাঝে মাঝে ভীষণ অপরিচিত লাগে।
অন্ধকারে পেঁচার ডাকে  প্রিয়ার কান্নাও কানে বাজে।
রোদেলা দূপুরটাকেও মাঝে মাঝে অপরিচিত লাগে
কা কা ডাকে তোমার বিচ্ছেদের ডাকও মনে জাগে।

তুমি কি একবারও ভাবে দেখনি?
আমার বুক ছাড়া, অন্য কারো বুকে সুখী হবে না
একটু কোমল পরশে ঝলসে যাবে তুমি;
পায়ের নিচে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য থাকবে না ভূমি! 

আমি মনে মনে ভেবেছিলাম 
লাল পলাশের মত ফাগুনের ফুলে ফুলে
এটা ফাগুন ভাবা ছিল তোমার ভুলে ভুলে
হাতছানি দিয়েছিল বিচ্ছেদ দুলে দুলে।
তখনি তোমাকেও লেগেছিল ভীষণ অপরিচিতা
তোমাকে ভালোবাসা হলো আমার বৃথা!
গাঙ চিলের মতো মেলেছো বিলাসী ডানা
উড়ে গিয়ে দিবে কখন কাকে হানা।
ওহ! 
কি ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছিল তোমায় 
ব্যথিত হওয়া পরেও থাকতে পারি নাই ঝিমায়।

বসনায় অধীর

 বসনায় অধীর  
            এম এ মাসুদ রানা 

জীবন যেখানে ছিলো, 
সেখানেই থমকে আছে।
ফিরে যদি আসতে চাও 
টেনে নিবো আমি আবার। 

আমার শহরে ডাক পরেছে,
ধুলো মেঘ ব্যস্ততা থমকে রয়েছে। 
আসছে কত্তো সুমিষ্ট সতেজ বাতাস 
থাকছেনা এতে কোন তিক্ততার আচ।

এখানে তুমি আর আমি বলবো কথা,
কথার মাঝে থাকবে না যথাতথা। 
প্রচন্ড কোলাহলে কতো নিরবতা
এটাই তোমার প্রতি আমার একাত্মতা।

অভিমান ভাঙ্গবে কি তোমার  সহসা?
অভিমান আছে কি হৃদয়ে কঠিনভাবে বসা?
দীর্ঘশ্বাস এখনো হয়নি এক রতিও নিরাশ
আশা আছে করবে তুমি এই হৃদয়ে বসবাস।

বাঁচিবার সাধ

____বাঁচিবার সাধ
 এম এ মাসুদ রানা

অমানিশার নিকষ আঁধারে বসে আছি
বিষের পেয়ালা সাজাবো বলে।
তারাদের জলসা হবে কোন কালে
ঘোর নেশায় বিভোর হয়ে আজি !

হৃদপিণ্ডের জমানো রাশি রাশি খুনে
ভালোবাসা গেয়ে ওঠে গুনগুনিয়ে।
বহমান যৌবন-নদী ধরেছে বাজী-
তবুও ক্লান্ত মনে দূর্বার মৃত্যুমহারথী।

 সন্ধ্যায় হাসনাহেনা ফুলের গন্ধে মাতাল
জোনাকিদের মিটিমিটি আলো দিতে হয়নি দেরী,
ঝিঁঝিঁ পোকারাও হয়নি ক্লান্ত একই সুরে গেয়ে;
ক্লান্ত শুধু আমি তোমার পথ চেয়ে চেয়ে৷

জীবন জীবনের কাছে এত দামী বুঝিনি আগে, 
কাটে না বিষণ্ণ প্রহর কাল গুনে গুনে৷
এখনও মরিনি আমি বিরহের কুটিল বিষ পানে,
তোমার ফেরার প্রতীক্ষা আজো বাঁচিবার সাধ আনে৷

অনুভুতি

 অনুভুতি
 এম এ মাসুদ রানা 

দু'লাইন পদ্য আর কিছু ছন্দ
সামান্য অনুভূতিতে হয়েছে বন্দ।
হিসেবি ছন্দ, বেহিসেবি শব্দ করো না জব্দ
অচেনা মাতাল নদীতে থাকবে না জলাবদ্ধ। 
হৃদস্পন্দের মতো ক্ষণে ক্ষণে জাগে অশান্ত ঢেউ
আগুন জ্বলে প্রতিটি চূড়ায় চূড়ায় জানেনা কেউ। 
সোনালী আলোর স্রোতে কি ভেসে যায় ঢেউ?
কথায় কথায় করতে পাবে না হেউ।

অপলক দৃষ্টিতে, গুধলি ভীষণ তমিশার উদাস নৃত্য 
অনেকেই জানে না, নৃত্যের মাঝে আছে কি কৃতিত্ব? 
আমি তবে এখন কি জোছনা নিয়ে কবিতা লিখবো?
আমি তবে এখন কি তাঁরাদের নিয়ে গল্প লিখবো?
জোছনার জলে ভেজা মায়াবী এক নারীর কথা
তাঁর জ্বালাময়ী কথার কথায় আছে মনের ব্যথা। 
যার নেশা ধরা বাঁকা চুলে অজস্র তাঁরা জ্বলে।
যে সাদা বকুল গন্ধ ছড়ায় মেঘের ভাঁজে ভাঁজে
হৃদয়ের গভীরে কিছু কথা এখনো জমা আছে।

সুখ

________ সুখ ________
___ এম এ মাসুদ রানা ___

সুখ তো সে চলে গেছে
রেখে গেছে শুধু স্মৃতি।
তোমার ঠিকানা নিয়েছি
দরজায় দাঁড়িয়ে আছি
আমার তরে নিমন্ত্রণে।
কতো কথা রয়ে গেছে
কতদিন চলে গেছে
চলে গেছো অন্য ঠিকানাটায়
পরে আছি ধুলির মাঝে
প্রতিক্ষায় আসবে কি কাজে?
চেনা মুখ অচেনা রাস্তায়
দেখি আমি কত বারে বার
সুখের দেখা হয় যদি আবার
দেখা দিয়ে যাও বলে সবার,
ভাবি আমি এই বুঝি এলে
আমার ঠিকানায়।
অবশেষে নিঃশ্বাস হয় গো ভারী
তবু্ও ঘুরি ফিরি টারিটারি।
মনে হয় প্রভাতেই হবে তোমার দেখা
সেই খুশি নিয়ে ঘুরি একা একা
হবে তো আবার তোমার দেখা।

ফেলে আসা শিমুলতলা

★★ ফেলে আসা শিমুলতলা ★★
★★★ এম  এ  মাসুদ রানা ★★★

নীল আকাশের নীল রঙে নীল হয় জল
হিজলের ফুলে হয় বৃষ্টি নুপুর!
বকুল ফুল দিয়ে তৈরী হাতের কাকন 
রেশমী রুপালী চুড়ি ভেঙ্গে হয় চূর্ণ বিচূর্ণ 

দক্ষিনা বাতাস বয়, মন হয় উদাসী
সাথীকে খুঁজতে হয়েছিলাম অতি সাহসী
মুখে থাকবে সর্বক্ষণে সুখের হাসি
ফেলে আসা শিমুলতলার স্মৃতি বেকুল।

নীরব জোছনায় নির্জনে সাপের হিসহিস
কানের কাছে অভদ্র মশা করে ফিসফিস। 
ভেসে যায় পূর্নিমায় জোছনা মাখা মেঘে
বসে আছি শিমুলতলা গোলাপ বাগানে শেষে।

ভালোবাসার গান

_______ ভালোবাসার গান
____    এম এ মাসুদ রানা

তুমি যদি থাকতে পাশে,
আমিও থাকতাম তোমার কাছে।
বিকেলের স্নিগ্ধ আলোয়,
কথার মাঝে কথা থাকবে না ঝাঁঝাল।
দিতাম তোমায় সব বাগানের ফুল
বাশের পাতায় তৈরি করতাম দুল
ফুলে ফুলে সাজিয়ে দিতাম বেনী গাঁথা চুল।
স্বর্ণলতায় হাতে দিতাম কাঁকন গড়ে
খোঁপায় গুজে দিতাম একটি গোলাপ ফুল।
সাদা ফুলের গন্ধে মাতাল তোমার হরিনীর চোখ
দিশেহারা সেই চোখে চোখ রেখে থাকতাম অপলক,
নীড়েফেরা পাখিদের দল যেমন মেলে ডানা,
ছোঁয়ায় অভিমান হয়ে যেত বিকেলের আলো ফান।
সন্ধ্যের শীতল বাতাসে ছড়ায় ভালোবাসার গান

ভিন্ন আকাশ

_________ ভিন্ন আকাশ __________
          এম এ মাসুদ  রানা 

আমার আলোর পাখি, 
আমার আকাশটা আজ তোমার কাছে ভিন্ন ,
তাই তো করছো অচেনা আকাশটাকে ছিন্ন।
চাঁদের গায়ে ভালোবাসার কথা লিখে দিলাম
তোমার আকাশটাকে ভালোবেসে কি পেলাম।

আমার আলোর পাখি; 
কতকাল রাখবে বন্দী নিজেকে অন্ধকারে?
প্রতিটি নেশা ধরা পূর্নিমার রাতে,
ভিন্ন ভিন্ন পোষাকে নতুন তোমার সাঁজ।
তুমি নিজেকে আটকাতে পারবে কি?
মুক্তভাবে খোলা আকাশের নিচে চলা।
তোমাকে আসতেই হবে ফিরে
অচেনা আকাশের নীড়ে। 

আমার আলোর পাখি, 
চাঁদ গলা জোছনা শিক্ত ভালবাসার কথা
চকিতে তোমার খোপা খুলে দেওয়া যথাতথা। 
সাঁতার কাটবে সেই খোলা চুলে দূর্বার 
অপ্রতিরোধ্য প্রেমিকের চঞ্চল ঠোঁটের মত
চক্ষু ছুয়ে দিবে , ওষ্ঠ যুগল দেখে তোমার।
সারা গায়ে, সারা রাত আঁকবে রঙ্গিন ছবি
মনে করো, তোমার আকাশে সর্বদায় থাকবে রবি।

আমার আলোর পাখি, 
আমাকেতো তুমি  আর আটকাতে পারবেনা।
তোমার আমার আকাশটা আজ ভিন্ন তাই ,
চাঁদের গায়ে ভালোবাসার কথা লিখে দিলাম।
তোমার ভালোবাসা অনাদর হলেও নিয়ে লিনাম,
আমার যত্ন গড়া ভালোবাসাও তোমাকে দিলাম।

তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি

__তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি __
এম এ মাসুদ রানা

অনেক বেশি ভালোবাসি তোমাকে
বনলতা নাকি আমার সরলতা?
কতটুকু বুঝবে নিশিত অন্ধকারে
ক্লান্ত জীবনানন্দ হয় তো শান্ত!
তারও বেশি দেখেছি তোমায়
জোছনার আলোকিত রজনীতে আমি।

বিভোর ছিলাম তোমার সুগন্ধী চুলে!
দু লাইন পদ্যের ছলে, সে তছ্নছ করে দিলে
ভেবোনা, আমি তো আছি তোমার কাছাকাছি।
জোনাকির রঙ্গে ঝিলমিল পান্ডুলিপিতে
নতুন কবিতা জন্ম নিবে তো আবার।
চোখ-মুখ থেকে মুছে যাবে বিদিশার নেশা,
পদ্ম পাপড়ি চোখে তাকাবে আমায় ভালোবেসে।
কোনো এক বর্ষা মেঘ ডাকা পূর্নিমার রাতে,
তুমি থাকবে শুধু আমার অতি কাছে।
অবারিত জোছনার আলোয় ভালোবাসাবাসি,
হাজার বছর ধরে হাটবো, দূর্গম পথ পাশাপাশি
তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি।

Monday, September 7, 2020

মনের বচন

মনের বচন
এম এ মাসুদ রানা 

আবার হবে তো দেখা 
শেষ দেখা নই তো,
আবার হবে তো কথা 
শেষ কথা নই তো।

আবার আসবে তো কাছে
শেষ আসা নই তো,
আবার বসবে তো কাছে
শেষ বসা নই তো।

আবার হবে তো মজা 
শেষ মজা নই তো,
আবার হবে তো হাসা
শেষ হাসা নই তো।

আবার হবে তো চলা
শেষ চলা নই তো,
আবার হবে তো বলা 
শেষ বলা নই তো।

Saturday, September 5, 2020

শিক্ষক ও শিক্ষা

শিক্ষা ও শিক্ষক
এম এ মাসুদ রানা

শিক্ষক মাষ্টার ছোট একটি শব্দ
করে না কারো সাথে গর্ব।
সমাজটাকে সাজাতেব হয়েছে ব্যস্ত
শিক্ষার্থীকে শিক্ষা দিতে বুদ্ধি রটায় কত্ত।

বাবা-মা' জন্ম দিলো ,শিক্ষক দিলো শিক্ষা,
সঠিক পথে চলতে উপদেশে ছিল না অপেক্ষা। 
ভাল আর মন্দে, দুঃখ আর আনন্দে
মন্দ কথা নাহি বলে, ভাল হতে বলে ছন্দে।
শিক্ষাগুরুর সম্মান , কেউ করে না আসম্মান
যায় যদি যাক তাদের প্রাণ।

সময়ের সারাক্ষণ,পড়াতে চায় তোনা মন
ঘুরতে মন চাই যখন তখন।
কটুক্তি আর কটু কথা বলে কত্ত যথাতথা
তাঁদের কথায় পায় না কখনো ব্যথা।
রাগে পরে পরে স্নেহ ভালোবাসায় দেয় স্থান 
আমায় ভালো করতে তাঁর বিভিন্ন কথাও ছড়ান।
সমাজের প্রিয়জন ,তোমরাই সুধীজন 
তোমাদের কাছে ছুটে যেতে চাই যখন তখন।
সেই কথা মনে আসলে আবেগে ফেটে পরে মন।

Wednesday, September 2, 2020

কৌমুদীর রূপ

কৌমুদীর রূপ
এম এ মাসুদ রানা

পাংশু জোছনা আর ক্ষণ অন্ধকারে ডুবা
পৃথিবীর সব স্বপ্নময় স্বপ্নের মতো,
ত্রিস্রোতা নদীর জলে জমাট বাধা
সপ্নের ফাঁদ গুলো ভেসে যায় জেনো!

গহীন অরণ্য আর অচেনা সব ডাকে
ধ্যান ভেঙ্গে তাকাই,
স্বপ্ন আর বাস্তবতা মিশে একাকার-
কুল করে কাহার কণ্ঠ শুনে আমার বিকার!

যেন তুমি ডাকিতেছ মিশে যেতে জলে
সেইখানে তোমার রূপ ভেসে যায়ে বলে!
আমায় নিয়ে যেতে করেছো ছল
তবুও হায়ায়নি এখনো মনবল।

Saturday, August 29, 2020

প্রাপ্যতা

প্রাপ্যতা
এম এ মাসুদ রানা

নির্জন নিরিবিলি বসে গল্প করি
বর্ষার আকাশে স্রোতহীন নদীতে ভাসায় তরি।
প্রবাহমান নদীর স্রোতের কাছাকাছি,
মনে মনে বলি এসো প্রিয়া গল্প করি।
তোমার মায়াবী কথাগুলো শুধু আমারেই কাঁদায়
এই ভেবে ভেবে আমার দু'চোখ ভাসায়।

কী ভেবেই তুমি নিয়েছ পলাতকা নারী সাঁজ?
দখিনা বাতাসে ডেকে যায় পূর্নিমার চাঁদ।
রোদে সোনালী চুল উড়ে, ঢেকে দেয় চোখ,
শুকনো হৃদয় তখনি দেখে রূপালী মেঘ।

অনাদর অবহেলায় পরে কেটেছে বেলা 
দেখবে ক্ষত বিক্ষত লাশ ধংসের প্রমত্ত মেলা।
ছিন্ন ভিন্ন রুপালী চাঁদখানি পরে আছে ধুলির মাঝে
জোছনায় বৃষ্টির প্রতিক্ষা নিরব হৃদয়েও বাজে।
হেমন্তের কাঙ্গাল রাতে তুমি করিবে অনুভব,
এতে হবে না প্রাপ্যতায় প্রাপ্তি সব।

আর কত দিন আর কত রাত

★★★ আর কত দিন আর কত রাত ★★★
★★★★★  এম এ মাসুদ রানা  ★★★★★

আর কত দিন, কত রাত
বিরহ বেদনায় কাঁদাবে আমায়।
এমন কিছু করবে তুমি 
একথা ভাবিনি কখনো আগে।
জানি তুমি থাকবে গো আমার হয়ে
তাই তো দিয়েছি পরান উজার করে
রাখিনি কোন কিছু আগলে ধরে।
সে দিনের সেই স্মৃতি আজো মনে পড়ে
সে দিনের সেই কথা আজো প্রাণে ধরে
সেই কথা স্মৃতি মনে হলে হৃদয় কেঁদে কেঁদে মরে।
তুমি কি আগে এমন কথা ভাবোনি?
তোমার দেওয়া তোমার ছবিটি পেয়ে
রেখেছি আমার হৃদয় মাঝে আপন করে
তবু তো নয়ন আমায় বারে বারে কাঁদায়।
তুমি  কি কেঁদেছিলে কখনো আগে?
তাই বুঝি আমাকে কাঁদাতে তোমার হৃদয় নাহি বাঁজে
বিরহ বেদনা দেওয়া তোমার কি সাঁজে!
অতীত স্মৃতি কথা তোমার মনে তো আসে।

Tuesday, August 25, 2020

অমীমাংসিত

অমীমাংসিত
এম এ মাসুদ রানা

হৃদয়ে অবহেলার রক্ত ঢাকা
আর কতকাল বইবো বলো?
মনের ভিতরে মন আছে বলেই -
তাই শুধু তোমাকেই চাই!
শুধু বিষ, আর শুধু বিষ,
সাথে থাকে অহর্নিশ।
আর কতকাল এই লুকোচুরি
খেলা আর খেয়ালি।
পাওয়া না পাওয়ার লড়াই!
কথায় কথায় করো এতো বড়াই,
কেনই বা বদলে গেলে!
আসতে পারো না কি কোন ছলে?
এতো করুণায় তোমার হৃদয় নাহি গলে।
কতকাল চলবে অমীমাংসিত সালিশ?
আবেগে অশ্রু জলে ভিজে কোমল বালিশ

Friday, August 21, 2020

কারাদণ্ড

______   কারাদণ্ড
        এম এ মাসুদ রানা 

আমি কার সাথে শুই?
কার সাথে ঘুমাই?
আমার কিছুই জানা নাই! 
পুরনো কথার কাছে ফিরে আসি বারবার, 
 ফিরে যাই, অতীতে, হই একাকার।
মুক্ত করতে চেয়েছিলো আমায়,
মুক্ত করতে পারে নাই। 
আমি জানি না, আমি জানি না, 
আমার মুক্তি হবো কখন ও কোথায়!
শুন্যতার সাদা শেওলায় ভেসে গেছি
একা একাই কারাগারে বসে আছি।
স্মৃতির পাতাগুলো এলোমেলো চারপাশ,
মুহূর্তে শুনবো কারাদণ্ডের স্বাদ।

Sunday, August 16, 2020

ভাল মানুষ

 ভালো মানুষ 
এম এ মাসুদ রানা

সাধনা হলো মোর শিক্ষা করা
শুরুর শিক্ষায় সাধনাকে ধরা।
আজ হয়াছি সাধনা সিদ্ধি
করিনি গুরু সাথে কোন যুক্তি।
বলি নাই মন্দ কথায় কোন ছন্দ 
হয়নি কখনো গুরুর সাথে দন্দ।

রাতেরো আকাশে চন্দ্রের আলোকে
বলে থাকি তো মোরা জোছনা, 
কেহ বলে আয় চাঁদ আয় কাছে আয়
চাঁদ মামা আয়, দুটো কথা বলে যায়।
চাঁদেরে কে চাই, ধূলির মাঝে 
জোছনা হলে সবাই আসতে চাই কাছে।

মুকুট পড়ে দাঁড়িয়ে থাকে রাজার বেসে
সে কি রাজা হবে কখনো শেষে-মেষে,
অন্ধকারে জ্বললে আলো, দূর হয় আধার 
মানুষ হবি, দরকার হবে না কাঁদার।
ভালো মানুষেরে গুণীরা করেছে কদর
সর্বক্ষণে তাঁহারা পেয়েছে সবার আদর।

Sunday, August 9, 2020

করোনাকালে

_____   করোনাকালে   _____
____ এম এ মাসুদ রানা ____

অন্তরঙ্গ দূরত্ব
পুরোনো নিয়মে তারা ঘুরপথে ফিরে আসতে চায়—
জানালার ধুলোট কাচে ছোপ ছোপ ছায়া বোনে,
সাড়া তোলে ব্যালকনিতেও।

কী দুঃসাহসে!
খকখক কাশি, বুড়োদের হাসির মতো ঠকঠক বাজে।
নতুন যারা, তারা চোখ মেলতে চায়
বন্ধ চোখের তারায় কড়কড়ে বালি 
তবু কী আহ্লাদে পিটপিট তাকায়!

জানালা-কপাট বন্ধ, রুদ্ধ ব্যালকনি
কারও আসার নেই, যাওয়ার নেই
বাতাস না, ধূলিকণা না, নিশ্বাসও না
পুরোনোরা কালো দাঁত ঝিকিয়ে হাসে;

কত দূরে যাবে
কতটা দূরে গেলে দূরত্বকে নিরাপদ বলবে তুমি!
কতটা দূরত্ব নিরাপত্তা দিলে দূরত্বকে দূরত্ব বলবে তুমি!
অন্তরঙ্গ দূরত্বে মানুষের মৃত্যুতে হয়।

টোকন ঠাকুর, খিদে ও খাদ্য
কেউ আমেরিকা যাবে, যাক
সামর্থ্য আছে যাওয়ার।
কেউ স্ট্রবেরি খাবে, খাক
সামর্থ্য আছে খাওয়ার।

 তুমি কি খাবে?
কোথায় যাবে? 
কি বা আর তুমি খেতে পারো?
কোথায় আর যেতে পারো?
মরবার আগে পেট পুরে খাও,
খিদে যা আছে তাই খেয়ে যাও।

আমি কি খাব? 
কোথায় যাবো?
এমন দেশ কি আছে? 
যেখানে মানুষ মানুষে ভেদাভেদ নাহি আছে,
রোগীদের প্রতি অনুরাগ সবার থাকে।