Sunday, March 7, 2021

কোথায় ভুল

 কোথায় ভুল

এম এ মাসুদ রানা 


মনে

শুধু ভয়

সম্পদ সবার নয়

জগৎ হবে একদিন ক্ষয়


সেরা

যেন তাঁরা

অর্থ লুটচ্ছে যাঁরা

সভ্যতা হচ্ছে শিল্পহারা


মিথ্যা

আমি কই

কারো ক্ষতে রই

এমন মিথ্যুক কেহ নই।


আপন

অহংকারে ভরা

সুযোগ বুঝে তাড়া 

সর্বস্ব কেঁড়ে নেয় তাঁরা।


ধর্ম

ফুটে অকর্ম

সাধক বুঝে মর্ম

সবাই খুঁজে শুধুই কর্ম।


হিংসা

করে সবাই

আপন বুঝে না তাই 

স্বার্থে জন্যে করে জবাই।

Friday, February 26, 2021

বিচিত্র মন

 বিচিত্র মন 

এম এ মাসুদ রানা 


অন্তরে আছে যার কালো

মিঠা কথা শুধুই মুখে

প্রয়োজনে বুকে টেনে রাখো

স্বার্থের মহাসুখে। 


কিছুলোক আছে ধরাতে এমন

যেন সবার প্রিয়জন

প্রয়োজনে টিসুর মত করে 

ব্যবহার হলে প্রয়োজন।


সরলতা দেখলেই মনে করোনা

সে হলো বোকা

চালাকি মানে এমনটাতো নয়তো 

দিতে যাবে ধোকা।


হক্ব কথা বলা সৎ পথে চলা

মনুষ্যত্বের এক নীতি

স্বার্থের তরে ব্যবহার করে

হবেনা তার কোন প্রীতি।

দ্বীনদার নারী

 দ্বীনদার নারী

এম এ মাসুদ রানা 


তোমার অর্ধাঙ্গিনী হয় যদি

দ্বীনদার নারী 

শান্তির আলোয় ভরে যাবে

ঘর ও বাড়ি।


ভুল করেও খোঁজো নাকো

তুমি শুধু রূপ,

কিছুটা সময় কেটে গেলেই

রূপ হবে চুপ।


তুমি পারবেনা খেতে খাবার

সাথে না থাকে যদি নুন,

সংসার সুখী হবে না কখনো 

ছাড়া সাংসারিক গুণ।


তুমি তাকওয়ার গুণ যদি 

নারীর মাঝে পাও,

তুমি বিয়ের তরে চটপট 

রাজি হয়ে যাও।

নামাজ

 নামাজ

এম এ মাসুদ রানা 


নামাজ ছাড়া পাবেনা কেউ

দেখতে মুক্তির পথ

যতো টানো এই বেনামাজি

তুমি জীবনের রথ।


মিছে করো তারা সব শ্রম

টাকা আর ঘাম

আর যত সব আছে আমলের

নেই কোনো দাম।


মনে করো যদি আখিরাত

মানো যদি পরকাল,

নামাজ নিয়েই হবে কবরে

তোমার প্রথম সওয়াল।


পড়লে নামাজ সহজ হবে

বাকি সব জওয়াব, 

গুনাহ করে যদি রবের কাছে 

কাঁদো সিজদায়।

হৃদয়ের আঁচ

 হৃদয়ের আঁচ

এম এ মাসুদ রানা 


ভালোবাসা হয় না শেষ 

বেচে থাকে চিরদিন

তাই প্রেমের সাগরে করি

নিজে নিজেকে বিলীন।


প্রেম তরে কাঙাল হয়ে আছে মন

ভালোবাসার লোভে,

প্রেম হৃদয়ের কূপ দেখা পেলে

দ্বিধাহীন ডুবে আর ডুবে।


প্রেম নাকি হয় খোদার দান

তবুও হারায় কেহ জান,

নিরাশার সব ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে 

অপেক্ষায় থাকে প্রাণ। 


যেই প্রেমে থাকে শ্রদ্ধা ভক্তি 

মিনতিতে ধরি তাঁর পায়ে,

তার হৃদয়ের পবিত্র প্রেমটুকু 

মাখবো এই সারা গায়ে।

ক্ষণিকের জ্যোতি

 ক্ষণিকের জ্যোতি

এম এ মাসুদ রানা 


আমার ভাবনায় যা আসে 

তাই লিখে রাখি,

এর মর্মের মর্মে বুঝেশুনে 

করি মাখামাখি।


জানি সবই কোনোটাই

হবে না অমর,

ভাবধারার ভাষা মিলিয়ে 

খুঁজি নিজ ঘর।


অরূপার রূপ নিয়ে চিন্তায়

হয় রাত জাগা,

ক্ষণে ক্ষণে লিখে রাখি এই

সব ভালো লাগা।


সেই ভালো হয়ে জ্বলে যদি 

জাগরণের বাতি,

পলকে পলকে শেষ না হয়  

ক্ষণিকের জ্যোতি।

Wednesday, February 17, 2021

স্বকরুণ সুর

 স্বকরুণ সুর

এম এ মাসুদ রানা 


জীবনকে নিয়ে করে যায়

বড্ড অবহেলা,

তুমি যদি গো ফিরে আসো

কভু অবেলায়।


অপেক্ষায় প্রহরে পরে আছি

সাথে আছে মন,

ক্ষণে ক্ষণে অনুক্ষণে সেতো 

করে জ্বালাতন।


নষ্ট বীণায় বাজে কেন এতো

স্বকরুণ সুর, 

আত্মা থেকে আত্মার মাঝে 

হয়েছে বেসুর।


মৃত্যুর দিয়ে শেষ হবে আমার

স্বপ্ন হবে না মধুর

তুমি হাতড়ে বেড়াই পাবেনা খুঁজে 

ছুটবে দূর বহুদূর।

প্রেম

 প্রেম

এম এ মাসুদ রানা 


প্রেম নিয়ে হয় কতো রাগ

অনুরাগ অভিমান

হৃদয়ের সাজানো বাগিচায়

মরে কতো জন।


কতো মনে পুলকে পুলকিতে

সুখে সুখ করে অনুভব

কতো মন অপেক্ষা প্রহরে

নিভৃতে নিঃসঙ্গে ছাড়ে সব।


কতো মন দিনে দিনে হচ্ছে 

চিতাদাহে ভষ্ম 

কতো মন পাওয়ার আনন্দে

হয়ে থাকে উষ্ণ। 


কতো মন হৃৎপিণ্ডে স্পন্দনে

বিচ্ছেদ তরে করে হাহাকার

কতো হৃৎপিণ্ড দ্বয়ে স্বার্থকতায়

মধুর মিলনে একাকার। 


কেউ কেউ নিকোটিনের ধোঁয়ায়

ধুঁকে ধুঁকে হচ্ছে আঙ্গার 

কেহ কেহ আনন্দে অভিভূত হয়ে

সুখে নীড়ে করে ধড়ফড়। 


কত্তো জনে পরাজিত বলে 

জীবনকে দিয়ে দেয় বলি 

কত্তো জনে মিলনের সুরে 

খেলে কত্তো আনন্দের হলি।

ঘুণপোকা

 ঘুণপোকা

এম এ মাসুদ রানা 


যায় দিন থাকে কথা

থাকেনা পিছে পরে

কার এত দায় এতো ঠেকা

এতো কেন নড়ে? 


বিবেকের মনদোর আছে 

মোহোর দিয়ে বন্ধ

বিদ্বেষের মনোভাব চলে

গোলপাকে দ্বন্দ্ব।


মিথ্যার ঘুণপোকা ধরে ঘরে

সুদ ঘুষ কত কী? 

ওরা সবাই পান্তায় ঢেলে খায়

মন্দার গাওয়া ঘি।


মিথ্যার কথা মুখে চলে

সুনিপুণ কঠিন ছন্দ

সত্যের ভাবা ধারায় আরো

যেন লাল নন্দ।

ময়না

 ময়না

এম এ মাসুদ রানা 


দৃষ্টিরেখাকে আড়াল করে 

করি কতই ভাবনা

দৃষ্টিতে থাকা মুখটা হয়না 

সেটা তো আয়না। 


নবজাতক জন্ম নেওয়ার

পরেই কান্না শুরু করে,

আহ কি অদ্ভুত রীতিনীতি 

সময়ের গান ধরে! 


পশুর মনে পরতে পরতে

ঢেকে যায় ছলনায়,

আনমনা ভাবে ছবি আঁকি

করে কুনীতি রচনা। 


মুখে মধুর হাসি অন্তরে বিষ

নেই কোনো যাতনা

মনে কুদৃষ্টি নিয়ে চলে সর্বক্ষণে

মুখে বলে ময়না।

হীন শাসন ২

 হীন শাসন

এম এ মাসুদ রানা 


নয়্যের সূর্যটা যে, আজ

নির্বাসনে চলে গেছে 

দর্পে দর্পে ক্ষণে ক্ষণে সর্বত্রই 

হীন শাসন রয়েছে। 


ঘরে আর ঘরের বাইরে

কোন শান্তি নাই

ধর্ষন,খুন, গুম, ছিন্তাই আর

শুধুই বিবাদ ভাই।


জ্বলছে, জ্বালাচ্ছে আগুন 

হরদমে সব খানে

কি হলো, কি যে আবার হবে

তাতো রবে জানে।


দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথায়

দেশটা আছে ভরা

সৎ যত মানুষ আছে ধরাতে

সবাই আঁধা মরা।


কেউ বা চলে ধরণীর বুকে

শুধু টাকার গরমে

কেউ বা লুকায় ধরার বুকে 

সম্মান হারানোর শরমে।


ধর্মের বানী চালাই মুখে মুখে 

নিজেও বুঝে না মর্মটা

তারা মানতে নারাজ সত্য কথা 

বলে বড় হলো কর্মটা।

অশ্রুর গল্প

 অশ্রুর গল্প

এম এ মাসুদ রানা 


আপন আপন ভাবি যারে

সবি দেখি ক্ষণস্থায়ী

প্রিয়জনেই তার ভাঙ্গবে মন

এটাই হলো স্থায়ী। 


সুযোগের ফাঁদ পেতে রাখে

আপন রক্ত বংশ,

অবশেষে কাছে এসে করে

সুখের নীড় ধ্বংস।


বিষ দিয়ে ভরা দিশা নাই

বলে অশ্রুর গল্প,

ঝর্ণা মতো ঝরে দুটি চোখ 

আসে বলে অল্প।


স্বার্থের তরে কাছে আসে তারা

করে কত্তো ভঙ্গি, 

সুবিধা লাভের হরদমই করে 

প্রতারণাকে চিরসঙ্গী।

চিন্তা

 চিন্তা

এম এ মাসুদ রানা 


সংবিধান সরকারি লোকের হাতে

সবই ঠিকঠাক আছে,

কিছু ভুলে কি আসে যায়।

পুলিশি শাসন চলে স্বাধীন দেশে,

দাদার দেশটা লুটছে অনায়াসে।


চুরি ডাকাতি চলছে আজ

নীতি কথায় হয়নি কোন কাজ।

ফুরায়নিকো দিন এখনো তার

কোথায় কবে স্বাধীন হলাম আবার,

সেটাই চিন্তায়, বরং করছি বার বার। 


আমজনতা নিয়েছে বৈঠা হাতে

সুযোগ পেলেই ধান নিচ্ছে কাঁধে। 

বাস্তবে কেউ পায়নি এখনো, 

সত্যিকার স্বাধীনতার সন্ধান

রাখতে পারেনি শহীদের মান।

হারিয়ে যাবো

 হারিয়ে যাবো

এম এ মাসুদ রানা 


কত্তো শত চেনা মুখ,

হারিয়ে যায়, অচেনাদের ভিড়ে।

কত্তো শত প্রিয় মুখ

হারিয়ে যায়, অর্থের ভালোবাসার তীরে।

কত্তো শত প্রিয়জন 

প্রয়োজনের খাতিরে হারিয়ে যায় ধীরে ধীরে। 

মরীচিকার মত, 

কিছুক্ষণ থাকে হৃদয়ের ক্ষত

তারপর গতিশীল হয়, আবার জীবনে;

মানুষ হয় বহমান, প্রত্যেক্ষ পরোক্ষ ক্ষণে

অবশেষে,

মায়ার জাল ভেঙ্গে চূর্ণ করে;

একদিন,

আমিও সবার থেকে হারিয়ে যাবো।

পাক কোরআন

 পাক কোরআন 

এম এ মাসুদ রানা 


সর্ব কালের শ্রেষ্ঠ বানী সমষ্টি 

হলো পাক কোরআন, 

বিশ্বাবাসী আর জ্ঞানীর জন্য

সাফল্যতার সমাধান।


দেখতে লাগে পুস্তকের মতন

ধর্ম পুস্তক খুব সাধারণ,

অক্ষর দিয়ে ভরা পরশ রতন

পাঠ করতে নেই বারণ।


পাঠে প্রশস্ত হয় হৃদয় বেশী

জ্ঞানের রবি ঈমান শশী,

যুগল শক্তির পেয়ে জ্ঞান বিজ্ঞান 

আবিষ্কার রাশি রাশি।


কিতাবে আছে সমাধান সবি

তালাশ করো সব কিছু 

জ্ঞান বিজ্ঞান আবিষ্কার করে 

করছে তাঁরা মাথা নিচু।

মিলনের সুর

 মিলনের সুর 

এম এ মাসুদ রানা 


ধরণীর তলে আমরা মানুষ

সবাই এক পরিবার,

জাতি বর্ণ গোত্র ভিন্ন যদিও 

আছে হাজার হাজার।


রক্ত রং হয় না কারো সাদা

প্রাণে দুঃখ সয়না,

বায়ু-পানি, হাসি-কান্না, ক্ষুদা-নিন্দ্রা, 

ভিন্ন ভিন্ন হয় না। 


ধরনীর তলে আছে মানব জাতি 

কাজে হয়তো কাছাকাছি, 

প্রয়োজনের খাতিরে খুঁজি সবাইকে 

যোগাযোগ হয় না মিছামিছি। 


এই আমি হলাম অতি ক্ষুদ্র মানুষ 

সকলের কাছে একটাই দাবি,

এই পৃথিবী হলো স্বর্গের মতোই সুন্দর

মিলনের সুর গাইবো সবি।

Friday, February 12, 2021

ভিন্ন মন

 ভিন্ন মন 

এম এ মাসুদ রানা


তুমি  সবকিছু হ্যাঁ বলো

তুমি বলতে চাও না,

তোমার অনুভূতে আমি এক না।

সব ভালো তুমি দেখতে পাও না,

তোমার চোখে সব দেখো না।


তুমি সব ঘ্রাণ নিতে চাও,

সব ঘ্রাণ কিন্তু এক না।

তুমি সব কিছুই ধরতে চাও,

সবকিছু ধরা ঠিক না।


তুমি সব খাবারই খেতে চাও ,

সব খাবার খাওয়া উচিত না।

তুমি সব জায়গা ঘরতে চাও, 

সব জায়গা যাওয়া ভালো না।


তুমি আবার ফুটপাতে যেতে চাও না,

অসহায়দের নিয়ে ভাবো না।

তুমি অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে চাও না,

তোমার ইচ্ছা বাসনায় আমি এক না।


তুমি দরিদ্রপল্লি নিয়ে, ভাবো না,

তোমার ভাবনায় আমি এক না।

তুমি সব কিছু নিয়ে ভাব না  

আমি তোমার ভাবনায় এক না।


তুমি খারাপ বর্জন করতে চাও না,

তোমার সব অর্জন ভালো না।

তুমি মুক্ত আকাশ গড়তে চাও না,

তোমার ভাবনা আমার ভাবনা এক না।


রচনাকাল ১২/০২/২০১৮

Tuesday, February 2, 2021

নিজের মুখে শ্রেষ্ঠ না

 নিজের মুখে শ্রেষ্ঠ না

এম এ মাসুদ রানা 


নিজে নিজেই মুখে বলছো 

আমি সৃষ্টির সেরা,

মুখে মুখে বলছো ধর্ম কথা 

মন হিংসায় ভরা। 


ধর্মে দোহাই দিয়ে চলছে

স্বার্থসিদ্ধর রাজনীতি, 

নিজেকে বড় করতে চালাও

ভিন্ন ভিন্ন কুটনীতি।


যে হলো সৃষ্টি জগতের সেরা 

মুখে নাহি বলে,

কাজের মাঝে পরিচয় মিলে 

বৃক্ষ যেমন ফলে।

এই মেয়ে

 এই মেয়ে 

এম এ মাসুদ রানা 


এই মেয়ে ফ্রেশবুকে এসে

জান ডাকো কারে,

বাবু ডাকো যারে স্বামীর সোহাগ 

দেবে তোমারে। 


চেটিং করে রাত ভোর করো

সুরে সুরে কথা বল 

তুমি চালাও কথা ছন্দে ছন্দে 

সাজানো পথে চল।


ওলে আমার বাবু সোনা বলে

ডাকো আদরের ডাক,

ঠিক করে রেখেছো আগে থেকে

কথায় কথার আচ।


ভদ্র কোন ছেলে দেখা পেলেই 

স্বপ্ন দেখাও মিছেমিছি,

বিত্তশালী হলে সে আসবে তার

অনেক পাশাপাশি। 


বৃত্তিহীন ছেলে হলে আসবে না 

তার কাছাকাছি 

মেয়ে বলবে তুমি দূরে থাকো 

অনেক দূরে আছি।


মেয়ে এটাই হলো তোমার স্বভাব 

প্রতারণা প্রধান কাজ, 

উচিত শিক্ষা পাবে তুমি যখন 

তখনি মাথায় পরবে বাজ।

Tuesday, January 19, 2021

ইন্তেজার

 ইন্তেজার 

এম এ মাসুদ রানা 


ফের যদি তুমি ফিরে এসো তাই

চেয়ে চেয়ে ইন্তেজার। 

মানের মতো করে সাজাবো

এমন ভাবনায় আবার। 


দিন বল আর সেই রাতের গভীরে

খুঁজি আমি বারবার

সাথে খুব আকুলতা নিয়ে মনে

করছি যে ইন্তেজার।

হাসির ঝলক

 হাসির ঝলক

এম এ মাসুদ রানা 


তোমার হাসিতে আকাশ হাসে

তোমার হাসিতে জোছনা আসে।

তোমার হাসিতে ছন্দের ছড়াছড়ি 

তোমার হাসিতে প্রেমের জোড়াজুড়ি


তোমার হাসিতে রাত্রী হয়েছে মাতাল

তোমার হাসিতে প্রেম করেছে কাতল।

তোমার হাসিতে শুরু হয়েছে ভালোবাসি

তোমার হাসিতে প্রিয়া এসেছি কাছাকাছি।


তোমার হাসিতে মিষ্টি সুবাস ছড়ায়

তোমার হাসিতে আমার হৃদয় নাড়াই

তোমার হাসিতে আছে অনেক বিশালতা

তোমার হাসিতে ভেসে আসে আকূলতা।


তোমার হাসিতে করে মুক্তার ছড়াছড়ি 

তোমার হাসিতে আমিও করি নড়ানড়ি 

তোমার হাসিতে মিলনের গান ধরি

তোমার হাসিতে প্রেমের বাসর গড়ি।

মতামত

  মতামত 

এম এ মাসুদ রানা 


অহেতু মতামত দিও না তুমি

তোমার মতামতের যোগ্য কি আমি?

তুমি তো আমার থেকে অনেক দামী

মূল্যবান মতামত করো না কখনো বেদামী।


শান্তনা দেবার জন্য বলো না হাই

জোর করে কিছু করার দরকার নাই,

আমি আমাকে জানি, আমি শুধুই ছাই

আমার উপরে ঘি ঢেলেও কোন লাভ নাই। 


জীবনের গতি থেমে গেছে 

চলতে পারি না আগের মতো নেচে নেচে 

আত্ম হত্যা মহাপাপ জেনে এখনো আছি বেঁচে

কি হবে কুয়াশার মাঝে আলো নিয়ে ছুটে। 


তোমার চলন বলন সবে এসেছে বুঝে 

তবুও অবুঝ মন তোমার মতামত খুঁজে। 

তোমার তুলনা হবে না, কোন কিছু সমতুল্য

তোমার মতামতের দিতে পারবো না মূল্য। 


সেই তরে বলি আমি, 

তোমার মন যদি আমারে না চাই 

প্রিয় নাম ধরে ডেকো না আমায় 

সহজ করে বলে দিও আমায় বিদায়।

প্রিয়ার কাছে নিবেদন

 প্রিয়ার কাছে নিবেদন 

  এম এ মাসুদ রানা 


ওগো মোর প্রিয়তমা

থেকো না এতো দূরে

কাছে এসে পাশে বস

সবকিছু দিবো ভরে।


তোমায় স্বপ্নে দেখি আমি

গোধুলি এক বিকেলে 

বলেছিলে থাকবো চলবো 

সুখের কথা বলে বলে।


এলোমেলো জীবনটাকে

সুখে দিবে ভরে,

এই বাসনা মনের মাঝে

হরদমেই নড়েচড়ে।


সুন্দর করে গড়বো জীবন

বুঝবো নিজের মত,

কোমল হাতের ছোয়া পেয়ে

ভুলবো মনের ক্ষত।

শুধু তোমার জন্য

 শুধু তোমার জন্য 

এম এ মাসুদ রানা 


শুধু তোমার জন্যে

এই সাজ সাজ প্রহর,

সাজোয়া পৃথিবীর আকাশ 

তারার মিতালি জব্বর


শুধু তোমার জন্যে 

এই মৃদু মৃদু আলো,

উত্তুরের বাতাস গায়ে

শীতল বাতাস জমকালো।


শুধু তোমার জন্যে

এই মায়াবী চোখ,

হাজার নদী মতো স্রোত 

প্রতিক্ষণে ভেজা পলক।


শুধু তোমারই জন্যে

এই ঠোঁটে ছিলো হাসিহাসি

দূরের বনে আনমনে বসে থাকা

নিত্য কাঁদে বেহেলা বাঁশি।

স্বপ্নের রাষ্ট্র

 স্বপ্নের রাষ্ট্র

এম এ মাসুদ রানা 


আমি আমার রাষ্ট্রে,

কখনো হয়ে যাই প্রধানমন্ত্রী,

মন্ত্রী পরিষদও গঠন করি,

থাকেনা কারোই ভোটাধিকার ;

প্রয়োজন হয় না গণতন্ত্রের

দরকার হয় না আমলাতন্ত্রে

তৈরি করতে হয় না রাষ্ট্রীয় যন্ত্র।

 মন্ত্রে থাকে না গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ! 

থাকে না রাষ্ট্রের কোন সীমানা 

অবাধে চলতে নেই কোন মানা

কেউ কখনো দেয় না হানা 

সবাই মুক্ত এটা সবার জানা।

সবাই মুক্ত বিহঙ্গের মতো উড়ে 

চলে যাই দূর বহুদূরে থাকি ফুরফুরে।

তুমি প্রিয়ে

 ---- তুমি প্রিয়ে ----

এম এ মাসুদ রানা


জানি তুমি ভাঙ্গিবে হৃদয়

কঠিন পাথর দিয়ে,

ভাঙ্গে হৃদয় প্রবেশ করতে

চাও আলো নিয়ে। 


জ্বলবে কেমন, জ্বালাবে কেমন

টের পাবে নিজে,

পুড়াচ্ছো নন্দিত আঁধারে প্রদীপ 

জ্বলছো কৃত্রিম দিয়ে।


সবই জানো সঠিকভাবে তুমি 

সবটাই জানাও প্রিয়ে,

কোথায় যাবো, কেমনে রইবো 

তোমার সনে যাও নিয়ে।

Tuesday, January 5, 2021

মুখোশ

 মুখোশ 

এম এ মাসুদ রানা 


স্বাধীনতা মানে না আর কেউ  

গড়েছে চোরের দল

আমার ক্ষমতা রাখার তরে

করবো অনেক ছল।


মারবো মানুষ, জ্বালাবো আগুন

পুড়ুক মানুষ আজ

আমিতো বেশ মহা সুখেই আছি

বাজাই সুখের বাজ।


দেশের কথা বলি মুখেমুখে

চলছে চুরি রোজ

শত অন্যায় চলছে দেশে

রাখিনা তার কোন খোঁজ। 


মানবতা যে, মরেছে কবে

কষ্টই বেঁধেছে বাধ,

ভালর মুখোশ পরে আমি

চলছি দিন রাত।

সাম্যের পথ

 সাম্যের পথ

এম এ মাসুদ রানা 


নারীবাদী কিংবা পুরুষবাদী

ধরনীর বুকে ভরপুর,

ধর্মের মাঝেও চলে রেষারেষি

নৈতিকতা হয়েছে দূর


মৌলবাদী কিংবা হিন্দুবাদী

নিরপেক্ষতা বড্ড কম,

জাত অজাতের দ্বন্দ্বে এখন

নিরপেক্ষর আটকে দম।


পদ-পদাবলীর জোট পড়ে

মানুষ এখন মানুষ নায়,

মানুষ আমি মানুষ খুঁজি

সততার হয়েছে পরাজয়। 


মানুষ পাবো কোথায় গেলে

মানবতার নাগাল পাবো,

সুর মিলবে তাঁর গানে সুরে

সাম্যের পথে চলবো।

উল্টো জগৎ

 উল্টো জগৎ 

এম এ মাসুদ রানা 


হচ্ছে কেন উল্টোপাল্টা

কেমন আজব দেশ?

রূপের কাছে গুণ হারে

মিথ্যা দিয়ে সত্য শেষ।


ছাত্রের কাছে শিক্ষকের হারে

ভণ্ডের কাছে সম্মানী;

তর্কের কাছে ন্যায় হারে

মূর্খের কাছে জ্ঞানী!


টাকার কাছে শিক্ষা হারে

মূর্খের দেয় শিক্ষা;

পুত্রের কাছে পিতার হারে

এমন মোদের দীক্ষা।

মনের ঘোর

 মনের ঘোর 

এম এ মাসুদ রানা 


বুঝিনা মনের মতিগতি

কি যে হলো অাজ 

ফসকে গেলো, কুচকে গেলো 

অন্তরের ভাজ।


কষ্ট হলেও আমায় ভুলে 

ভালো থেকো,

তোমার প্রিয়জনকে তুমি 

মনে রেখো।


মনে থেকে ভুলতে যদি

কঠিন কষ্ট হয়

সহজ করে বলে দিও 

মনে নেই সংশয়। 


ছিলাম তো প্রয়োজনে 

আমি তোমার, 

তোমার কথাতেই কাটল 

মনের ঘোর।

অবনতি

 অবনতি

এম এ মাসুদ রানা


লজ্জায় মরে আজ ইসলাম বিশ্ব
কাফের খুশিতে মশগুল,
ফিতনার যুগে কুফরের জয়
সত্যকে বলেছে ভুল।


পীরের পায়ে সেজদায় পরে
সত্য সব জলে ভাসে,
মুসলমানদের কর্মে মুনাফিক
জয়ের হাসি হাসে।


রচনাকাল ০৬/০১/২০২১

Wednesday, December 30, 2020

টাকা

 টাকা

এম এ মাসুদ রানা 


সত্য ও মিথ্যার মাঝখানে 

টাকার বিস্তার হয় সবখানে। 

টাকায় বাড়ায় সব আপত্তি

টাকায় সৃষ্টি করে শক্তির ভিত্তি।


টাকায় বৃদ্ধি করে সম্মান

টাকায় হলো পৃথিবীর তামান। 

জগৎ জুড়ে টাকা উড়ে 

টাকার মেলায় অনেকে ধরে। 


রাজনীতি বলো সমাজকর্ম বলো

সর্বত্রই শুধু টাকা নিয়েই চলো।

অসৎ লোক পায় সুখ সাচ্ছন্দ্য

তারাই বসবাস করে মহানন্দে। 


টাকায় তাদের একমাত্র হাতিয়ার 

অর্থেই প্রয়োজনে করেছে তৈয়ার।

সুখের মাঝে খুঁজে দুঃখের ছায়া 

টেনে আনে বারেবারে মিথ্যে মায়া।

মৃত্যুঞ্জয়ী

 মৃত্যুঞ্জয়ী

এম এ মাসুদ রানা 


খোদার প্রেমে বন্দী হয়ে 

জনমভরে  কাঁদিল কাবায়

ঘোরাঘুরি জনম দাসী 

পিরীতের  ইবাদত খানায়।


আমার ভেতর আমিই সেটা

সেই আমিটাই সর্বময়!

আল্লাহর কথায় পথ ধরিয়ে

এই ত্রিভুবন আলোকময়!


তামান পৃথিবী আলোকিত

ভুবন বেশেই মুসাফির!

কণ্ঠে ধ্বনি সরল বাণী

আল্লাহু আল্লা শান তাকবির।

আমার কথা

 আমার কথা 

এম এ মাসুদ রানা 


মরুভূমির মরিচীকা দেখেছি, 

রুক্ষতার মাঝেও দেখেছি উল্লাস। 

আমি তোমাকে পেয়েছি সহজেই, 

হারিয়ে ফেলেছি সব প্রতারণা। 

তপ্ত বালুতেও ফোটে রক্ত রঙ্গিন ফুল

প্রতারকের প্রতারণা প্রতিশ্রুতি রক্ষায়।

মৃদু বাতাসে উড়তে দেখেছি, 

তোমার এলোমেলো কেশাম্বলী।

আমার সবই তোমায় দিয়েছি, 

তোমার ভালবাসার এক ডাকে,

মনের কথাও বলেছি অনায়াসে।

ভাঙ্গল আমার মনের ভুল! 

বৈরাগ্যকে ভালবাসা দিয়েছি

তোমায় ভালোবেসেছি।


সমদুঃখ

 সমদুঃখ

এম এ মাসুদ রানা 


এই যে তুমি চলে যাও 

আমার সামনে দিয়ে

আবার ফিরে দ্যাখ

 ক্লান্ত ভরা মন নিয়ে।


পশ্চিমে অস্তমিত হলো বেলা

চেষ্টায় ছিল না হেলা,

তুমি কোথাই যে চলে যাও

সুখকে দিয়ে দোলা।


তোমার চোখে দেখা যায়

সীমাহীন ব্যস্ততা, 

কাঁধে ঝুলানো থাকে ব্যাগ

অসম্ভব কিছু কথা।


এমন কি কর্ম ব্যস্ততায়

তুমি থাকো সর্বদাই? 

কাজের মাঝে ডুবে থেকে

ভাগ্য ফিরাবে তাই। 


তুমি ঘুচাতে চাও ব্যর্থতা

মনে প্রবল আশা,

সময় নেই ফিরে তাকানোর

নিজের প্রতি ভরসা।


তোমার ব্যথা ভরা মন 

সাফল্য খুঁজে সারাক্ষণ,

কথা ফোটেনা তাই মুখে

হৃদয়ে চলে হরদমে রণ।


তোমার দুঃখের যত কথা

যত বেদনা জমা বুকে,

পার না সুখটুকু চেয়ে নিতে 

রয়েছো শুধুই ধুঁকে।  


কোথাও রাখো সমদুঃখ মাথা

মিলে যদি শান্তি 

নিভে যায় যদি বুকের আগুন

একটু মিলে শীতলতা।


রচনাকালঃ- ২২/০৯/১৯ নোট

ভোজ

 ভোজ

এম এ মাসুদ রানা 


বাড়ির কাছে উপজেলা শহর

কৃষক কুমার নৌকা বায়

ন্যায়ের শাসনের লয় হলে

পৃথিবীর শোভা দেখা যায়!


আশেপাশে জাহান্নাম জ্বলে

জ্বলছে নরক অবিরাম,

অন্তবিহীন পান্থপথে কর্মফলে 

বাতাসে নড়ে অবিরাম। 


ভাল-মন্দ, সৎ-অসৎ 

কে বা রাখে কার খোঁজ,

নতুন এসে পুরনো পতন

পূর্ণদেহ শূন্যেই হয় ভোজ।

মরণকে স্মরণ করুন

 মরণকে স্মরণ করুন 

এম এ মাসুদ রানা 


যেদিন ফুরিয়ে যাবে জীবনের আশা

সেদিন হারিয়ে যাবে মুখের সব ভাষা।

প্রাণহীন দেহখানি ঘরের রইবে পড়ে,

স্বজনেরা আঁখি জল মুছবে আঁচলে।

গুণগান গায়বে তোমার মরণের পরে

মনে হবে 'দুনিয়াটা ছিলো মায়ায় ভরে।


নিঃশ্বাস থেকে যাবে, কার বিশ্বাস আছে?

কে বলতে পারবে, কে ক'দিন নিজে বাঁচে?

বাদশাহ হও-মেথর হও; ধনী কিংবা গরীব হও

মৃত্যুর জন্য  তোমরা সবাই সাদায় প্রস্তুত রও।


দু'দিনের এই মিছে মায়ার খেলা ঘরে;

কীসের এত্তো গর্ব করে রব বলো পরে?

মরণ যখন আসবে দুয়ারে; যেতে হবে ইশারায় 

যমদূত শিকার করবে তোমায় তার নিজ ইচ্ছায়।

অন্তিম নিদ্রা

 অন্তিম নিদ্রা 

এম এ মাসুদ রানা 


জীবন হিসাবের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে 

আজ করছি শেষ ঘুমের অপেক্ষা। 

পৃথিবীর চরম বাস্তবতায় স্থীর নিয়তি

অনন্ত জীবনে তরে দিতে হবে যাত্রাপথ। 

পালিয়ে বেড়ানোর নেই কোন উপায়

নিঃষ্ঠুর রহস্যময় নিশ্চিত শীতল মৃত্যু থেকে।


নেই কোন প্রস্তুতি, নেই কোন অবকাশ 

আকস্মিক নতুনত্বের ঘটবে আগমন। 

কামনা-বাসনা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির সমাপ্তি

সাধ-স্বপ্ন, ইচ্ছা-অনিচ্ছা সবে হবে বিনাশ

নিরুপায় নির্জনতায় বাধ‍্যগত গহীনে প্রস্থান।


অন্ধকার গন্তব্যে মুছে যাবে ক্ষয়িষ্ণু অতীত

বন্ধ হবে পৃথিবীর সমস্ত মায়া কান্না কোলাহল। 

অপ্রতিরোধ‍্য সময় নিয়ে যায় নির্জন নিরিবিলি 

সীমাহীন এক অন্ধকার গোপন কুঠরিতে

যেতে হবে তখুনি জীবনের শেষ ঘুম ঘুমাতে।

মধুকাল

 মধুকাল 

এম এ মাসুদ রানা 


ধূসর আকাশ-সাদা ঘুড়ি

চলে অদৃশ্য লাটাই দিয়ে

সে অর্থে হয় বেওয়ারিশ

নতুন সাঁজের আনাগোনা। 


টবে সাজানো ক'টা চারা

সরল ছন্দিত ছন্দে ভরা

ঝড়ো হাওয়া থমকে আসা

গুল্ম গুলো হয়েছে ছন্ন-ছাড়া।


রক্ত রাঙা রোজ ক্যাকটাস

পরিপাটি সাঁজে গন্ধরাজ,

শিশু-সুলভ চয়নে অর্কিড

সময়ের তরে কাঠগোলাপ।


বেমালুম দর্শকের আগমন

অযথা করে না পায়চারি

জীবিত-মৃত ইন্দ্রের খেলা

নিভৃত করে কেউ আর্তনাদ।

আমি ঘুমাতে পারি না

 আমি ঘুমাতে পারি না 

এম এ মাসুদ রানা 


হাজরো নিষ্ঠুরতায়

অনুক্ষণ ক্ষত-বিক্ষত করে আমায়;

আমি ঘুমাতে পারি না।


আমার দুটো নিদ্রাতুর আঁখি

ঘুমবিজড়িত হয়ে পড়ে,

মুহূর্তেই বীভৎস স্বপ্ন দেখে চমকে উঠি ;

আমি ঘুমাতে পারি না।


আমিও তো মানুষ

কে বলবে এটা মিথ্যা কথা?

জেগে জেগে কত যে স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন;

দেখার পরেই ভেঙে যায়,

ভেঙে যায় আবার শুরু করি।


স্বপ্নের এই ভাঙা-গড়াতেই দিন চলে যায় ;

স্বপ্ন নিয়ে স্বপ্ন দেখে কেটে যায় দিবস রজনী,

আমি ঘুমাতে পারি না।

সুখ

 সুখ

এম এ মাসুদ রানা 


কিছু সুখ লুকিয়ে থাক

কৃষ্ণচূড়ার ডালে,

কিছু ব্যথা বাসা বাঁধুক 

হৃদয়ের খালে।


কিছু দুখ হারিয়ে থাক

প্রেয়সীর গায়ে,

তবুও থাকি পরিশেষে 

শোকর আদায়ে।


প্রিয়ার ভুবন হয়ে উঠুক 

গোলাপের ঝাঁড়

বাগিচায় ফুল ও কাঁটা থাক

সুবাস তো অপার।


হাসনাহেনা, বকুল, বেলি

ফোটাও সমান

সুঘ্রাণে ভরে উঠুক প্রিয়ার

সুখের আসমান।

ফিরে এসো না

 ফিরে এসো না 

এম এ মাসুদ রানা 


প্রবঞ্চিত জীবনে কষ্ট দিয়ে যাও

সুখ পাখিটাকে কেড়ে নাও

তুমি আমাকে যন্ত্রণা দিয়ে যদি

অন্য কারো একজন হও।


তোমাকে বলবো না কোনো দিন

ভালবাসো ওগো আমায়

তোমার দেখানো পথ ধরে কোনদিন

খুজবো না গো তোমায়।


তুমি চলে যাও চলে যাও পাখি

দূর নীলিমার নতুন দেশে

বধু বেশে থাক তুমি  মহাসুখে

ফিরে এসো না আগের বেশে।

জিজ্ঞাসা

  জিজ্ঞাসা 

এম এ মাসুদ রানা  


কখনো জানতে চেয়েছো, আমি কেমন আছি?

বসন্তের কোকিল কি, এখনো ঘুম ভাঙ্গায়?

নাকি শীতের রিক্ততা আজও আচ্ছাদিত করে 

রেখেছেব আমার এই নগর। 


তোমার মিথ্যে আশ্বাস ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছো সব,

আমার সেই খবর কি তুমি রাখো?

আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছো নির্দয় ডাকাতের মতো,

আজ গৃহান্তরে গৃহহীন আমি। 


আচ্ছা, 

তুমি অপলোক দৃষ্টিতে চোখের দিকে চেয়ে বলতে,

স্বপ্নচারিণী, 

আমার পৃথিবীর সমস্ত মায়া তোমার দুই নয়নে বন্দি। 


তবে তুমি কেন আজ দেখতে পাও না?

কি এক অস্থির স্থিরতা এই দুনয়ন জুড়ে?

তুমি কি বুঝতে পারো না?

এ শহর আজ অন্ধকারে ঢাকা,

অনিশ্চয়তা চারিপাশে। 


নাহ্! 

তুমি অনেক বদলে গেছো, দীপ্তমান পৃথিবীতে।

তবে হ্যাঁ,

কখনো অন্ধকারে একাকিত্ব অনুভব করতে যেও না। 


কারণ, 

তখন আমার সমস্ত স্মৃতি চারিপাশ থেকে 

তোমায় আকড়ে ধরবে, তোমায় প্রশ্ন করবে।

তুমি উত্তর দিতে পারবে না।

সেদিন জীবন্ত লাশের যন্ত্রনা উপলব্ধি করতে পারবে। 


এই যন্ত্রনা খোঁচাতে খোঁচাতে রক্তাক্ত করে দিতে পারে,

তাই তুমি একাকিত্ব অনুভব করতে যেও না,

অনন্তকাল তুমি তোমার দীপ্তমান পৃথিবীতেই

" ভালো থেকো"।

জিয়া মানে

 জিয়া মানে

এম এ মাসুদ রানা 


জিয়া মানে বাংলার প্রাণ 

স্বাধীনতার ঢেউ! 

জিয়া মনে উন্নয়নের বানী

দেয়নি অন্য কেউ! 


জিয়া মানে ফসলের হাসি 

কৃষাণ কৃষাণীর গান,

জিয়া মানে রূপসী বাংলা

গ্রাম বাংলার প্রাণ।


জিয়া মানে আশার আলো 

কৃষকের ঘরে বাতি,

জিয়া মানে একটি বাংলাদেশে

আমরা স্বাধীন জাতি।

আপ্ত গুণ

 আপ্ত গুণ 

এম এ মাসুদ রানা 


যখন তোমার সাথে কেউ থাকে না

তোমার একাকীত্ব যখন  কাটে না

তোমাকে নিয়ে যখন কেউ ভাবে না

তোমার দৃষ্টিতে যখন কেউ আর আসে না


তখনি তুমি তুমি বলে ডাকো 

তোমার একাকীত্ব সময়ে আমার সাথে থাকো

তোমার মনের কথা আমায় কখনো বলো নাকো

তোমার সুখের তরে আমায় সাথে নিয়ে রাখো।


বুঝেছি আমি তোমার সব ছলাকলা 

সবার কাছে এইসব কথা কখনো যায় না বলা

আসোনা কাছে যখন আমার থাকে শুধু অবেলা

মহানন্দে থাকো যখন হৃদয় হয় আমার ঝালাপালা। 


তোমার ইচ্ছায় আসো তুমি 

তোমার ইচ্ছামত আবার ছেড়ে চলে যাও 

তোমার প্রয়োজনে তুমি আবার ডেকে নাও 

তোমার প্রয়োজন শেষে হও আবার উধাও। 


তুমি মনে করেছো তোমার ছলনা বুঝি না 

সবে বুঝি তাইতো আগের মতো তোমায় খুঁজি না

তুমি পাল্টে গেছো একেবারে শুধু সুখের তাড়নায় 

তুমি তোমার মুখে আমাকে একবারও না জানায়।

কাশ্মীর

 কাশ্মীর

এম এ মাসুদ রানা 


কাশ্মীরে মরে যারা তাঁরও

কারো ভাই বোন স্বজন,

তাদের হাহাকার চিৎকার 

শোন যায় গানের মতন। 


আমাদের মা বোনও ভাই 

আমাদেরই পুত্র, কন্যা,

কাশ্মীরে জমিনে শুধু বহে

মানুষের রক্তের বন্যা!


বির্তকবাদী আর কিছু 

তার দাস কুত্তায়!

ওরা মেতে উঠেছেরে 

মুসলিম গণহত্যায়!


নাই কি আপনার আমার 

ঈমানী কোন শক্তি,

প্রতিবাদ করলে তাহারা 

হতে পারে মুক্তি।


রচনাকাল ১৫/০৮/২০১৯

Saturday, December 19, 2020

তোমার ভাবনা

 তোমার ভাবনা 

এম এ মাসুদ রানা 


তুমি কি সত্যি ভাবো? 

আমি তোমাকে বিরক্ত করি

যদি ভেবে থাকো তাহলে বললাম সরি

তোমার বিপরীতেই এখন পথ ধরি।


অহেতুক বিরক্ত করতে আসবো না তোমায় 

অজান্তেও বদনাম করবো না আরা কামায়

ভেবো না দুষ্ট ও লম্পট আমায়

আড়াল করার চেষ্টায় আছি আমায়। 


তেমন করে তোমায় নিয়ে ভাবি না আর 

ফিরে দেখি না তোমাকে আর বার বার, 

হৃদয়ে আসে না আগের মতো হাহাকার 

করিও না কখনো আর তেমন চিৎকার,

নিজেকে নিজেই দিই শুধু ধিক্কার 

তুমি তোমাকে সাজিয়ে নিয়ও চমৎকার।

অবনতি

 অবনতি

             এম এ মাসুদ রানা 


ভূলুণ্ঠিত হয়েছে আজ বাংলার মানবতা 

সাম্যের গান ধরে কখনো কখনো যথাতথা 

শহীদের রক্তের আল্পনা হলো আবার বৃথা

মৌলিক অধিকার এখন শুধু মুখের কথা।


দেশে রয়েছে অনেক আধুনিক হাসপাতাল,

আধুনিক চিকিৎসকও রয়েছে বিদ্যমান

রয়েছে অনেক অনেক অত্যাধুনি যন্ত্রপাতি 

বানানো হয়েছে সবকিছুই বিলাসবহুল। 


তফাৎ রয়েছে শুধু ব্যবহারের জায়গায়

সিলিন্ডার আছে ভিতরে অক্সিজেন নাই 

শয্যা আছে সঠিক কোন রকম ব্যবহার নাই 

বিজ্ঞ চিকিৎসকের, পদোন্নতিও হয় নাই।


স্বাধীনতা অর্জনের পরক্ষণেই বলেছিলো সবে, 

অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান, ও শিক্ষা দিবে,

কেন অক্সিজেনের অভাবে হাসপাতাল প্রাণ নিবে?

প্রণের বিনিময়ে মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিবে।


হাসপাতালের বারান্দায় বাবা ফয়সাল কান্না করে 

সন্তানের শোকে জননীর  কেন তাঁদের অশ্রু ঝরে? 

তবুও পাষাণ্ড চিকিৎসকের হৃদয় নাহি নড়ে

সুচিকিৎসার বার্তা নিয়ে চিকিৎসক নাহি দৌঁড়ে।


আমরা জানতাম খোদার পরে বাঁচাই যদি প্রাণ 

এক কথায় সবাই বলে দিতো চিকিৎসা বিধান। 

চিকিৎসা ক্ষেত্রে শুরু হয়েছে ব্যাপক দর কষাকষি 

তারদের মূল্য আমরা না দিতে পারায় হয়েছি দোষী। 


চিকিৎসকেরা বাংলাকে করেছে এখন কসাইখানা 

তাই  যমদূত দিয়েছে সবুজ বাংলায় সরাসরি হানা

রূপসী বাংলা প্রিয়জন হারিয়ে হয়েছে সর্বহারা

ফজলে রাব্বীর স্বপ্নও এইবার হলো তো ছন্নছাড়া।

শামসুজ্জোহা

শামসুজ্জোহা

           এম এ মাসুদ রানা 


আমি দেখিনি অধ্যাপক শামসুজ্জোহাকে

তবুও তাঁর জন্য প্রাণ মাঝে মাঝে কাঁদে।

তিনি ছিলেন  রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক, 

জেনেছি বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাস পড়ে 

তাঁর জীবনটা দিয়ে গেছে তাঁর ছাত্রদের তরে।

জানার পরে বুকটা গর্ভে গেলো মোর ভরে

পিছু হটেনি তিনি তাঁর স্বজন বা মৃত্যু ডোরে। 

বলেছিলেন তিনি ওরা সকলে আমার সন্তান 

তাদের মারতে পারবে না থাকতে এই জান।

স্বাধীনতার ইতিহাস প্রথম বুদ্ধিজীবী করে গণ্য 

তাঁর জীবনী পড়ে নিজেও মনে হলো ধন্য।

শামসুজ্জোহা জন্ম নিবেনা কি বাংলায় আবার?

অন্যায় বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়াবে বার বার 

কোন ছাত্র মরবে না বাংলায় কারো নির্যাতনে আর।

নিষ্ফল বাসনা

 নিষ্ফল বাসনা

           এম এ মাসুদ রানা 


আমি জানি, তোমার থেকে জানি,

এখন তোমার নেই কোন কাজ

তাই তো এস এম এস করেছি আজ।

তুমি দাও নাই উত্তর, বলনি তুমি হাই

তাহলে কি আমি বুঝে নিবো আমার মূল্য নাই

আমার সাথে কথা বলতে, তোমার মনে নাহি চাই

বলা, চলা,কথা এসবের কোনোই দাম নাই। 

মূল্য চাইবো না, এস এম এসও করবো না, 

হুট করে হারিয়ে যাবো কোন এক অজানা পানে

যে পানে আমায় কেহ নাহি চিনে আর জানে।

তখন হয়তোবা, তখন তুমি মোরে খুঁজিবে 

মনের মাঝে স্বপ্ন নিয়ে অনেক কিছু বাঁধিবে

তোমার সাধ্য থাকিবেনা যে, গতি পথ রুধিবে

মাঝে মাঝে হাঁসি মাখা মুখে কান্নাও আসিবে।

হীন শাসন

 হীন শাসন

এম এ মাসুদ রানা 


দিবাকর আজ হয়েছে 

নিদারুণ ক্লান্ত 

দর্পে দর্পে চলে সর্বত্র 

শাসনে অশান্ত। 


ঘরে কিংবা বাইরে

কোথাও নাই শান্তি 

খুন ধর্ষণ ও বেবিচার

খেয়েছে সব অশান্তি।


জ্বলছে আগুন হরদমে 

শুনি সব খানে

কি যে হবে কি যে করি

বলি যাই জনে জানে।


দুষ্ট লোকে মিষ্টি কথায়

ভরেছে সোনার দেশ,

সৎ মানুষ লেজ গুটিয়ে

ভালোর স্বপ্ন শেষ। 


কেউবা আছে টাকার জোরে 

বাড়ায় গায়ের গরমে,

জ্ঞানীরা ইজ্জত লুকায়

নষ্ঠ হবে এই শরমে।


ধর্মের বানীর ছড়ায় তারা,

রাখে না মর্মবানী,

মানতে হয় তারা নারাজ, 

যতই করে কানাকানি।

ছলনাময়ী

 ছলনাময়ী 

এম এ মাসুদ রানা 


দুঃখ দিয়েছো তুমি 

কিছু বলিনি 

তুমি যে, ছলনাময়ী 

আগে জানিনি।


নিঝুম রাতে একাকী হলে

মন ভেঙ্গে যায়

স্মৃতি নামের স্মৃতির পাতা

আমায় কাঁদায়।


স্বপ্ন ভেঙ্গে স্বপ্ন নিয়ে 

সুখেই আছে তুমি

আমাকে কষ্ট দিয়ে কি 

সুখে রবে এমনি? 


১৩/১২/২০২০

আমরা প্রবাসী

 আমরা প্রবাসী

এম এ মাসুদ রানা 


পরিবার প্রিয়জনের  মায়া ছেড়ে

অন্য দেশে করি আমারা বাস,

শরীর দিয়ে ঝরে পরে কতোই ঘাম

তবু বলি মন তুমি একটু হাস।


প্রিয়জন চেয়ে রয় আমার দিকে

জোগাড় করে দেবো কড়ি বেশ,

হাজারো আঘাত সহ্য তবু বলি 

আমি খুব ভালো আছি বলে শেষ।


সারাটি বছর ধরে রেখে দিয়েছি

মনে জমা আছে যত বড় দুখ,

এতো ব্যথা যন্ত্রণা মনে নিয়ে 

বলি মুখে প্রবাসে অনেক সুখ।

প্রেম

 প্রেম

এম এ মাসুদ রানা 


সন্ধ্যা নামলো হঠাৎ করে, দিবসকে বিদায় দিয়ে

নিশাচরীর চরাচরের বিচরণের অধিকার নিয়ে।

সূর্যের আলোক রাশিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে

পৃথিবীর অভিনয়, সবে  কালো পর্দায় মুড়ে

আজ সন্ধ্যাটা নামে, হঠাৎ করে এসেছে দোরে। 

জোছনার বান ডাকে উঁকি দিবে জোনাকিপোকা 

দেখবে ভালোবাসার চিহ্ন হয়েছে থোকা থোকা।

মানুষের প্রেমে, ধরে নিও উর্বর ফসলী জমির মতো,

অনাগত শশ্যের মতো, নিষ্পাপ মুখ আসে কত্তো শত।

থেমে যাওয়া সময়ে ঝিঁঝিঁ পোকার হাঁক আর ডাক

চিতা প্রিয় হরিণীর রক্তের গন্ধের ঘ্রাণে চেয়ে থাক

উত্থাল পাথাল জোছনার স্রোতের মতো বেগ রাখ।

তবুও আরো শক্ত, বাঁধনে বাঁধে রাখতে হবে 

মানব মানবী বলবে, এই প্রেম অমর হয়ে রবে।

প্রার্থনা

প্রার্থনা 

এম এ মাসুদ রানা 


আমার মাথায় বড় ঋণের বোঝা

আমায় শুরু করেছে সবাই খোঁজা

বলতে পারি না জোরে কোন কথা

মাঝে মাঝে জীবনকে মনে হয় বৃথা।


আমার দিনে দিনে বাড়ে শুধুই দেনা 

সবাই বলে তেমাকে হয়ে গেছে চেনা

তুমি এমন এটাও হয়ে গেলো জানা 

লেনাদেনা করতে করবো সবাইকে মানা।


অভাব নিয়েছে নিরবধির রূপ 

সুখ হয়েছে আমার কাছে আগন্তুক 

দূঃখ বেদনা নিয়ে কাটে যুগ আর যুগ,

আমার জীবনে আসিবে না কি সুখ?


যাচি খোদর কাছে আমি কিছু সুখ 

আমার থেকে যাতে মুখ ফিরিয়ে নেই দুখ।

আমার জীবনে আসে যেন অনাবিল সুখ 

দেনার তরে মলিন হয় না যেন আমার মুখ। 


আসিবে যে, জীবনে শুভ দিন 

সেই দিনে থাকে না যেন আমার কোন ঋণ।

বুঝিবে তখন

 -------বুঝিবে তখন ---------

    এম এ মাসুদ রানা 


তুমি বুঝিবে, তুমি বুঝিবে,

আমি থাকিবো না যখন,

বাতায়নে রাতে দাঁড়িয়ে

আকাশের প্রাণ দেখিবে তখন, 

হাজার তারার জলসার মাঝে

আমায় খুজিবে তোমার মন। 


বুঝিবে সেইদিন বুঝিবে

চোখের জলে ভাসিবে বুক

শাড়ির আছলে মুছিবে চোখ

পাইবে না কোন জায়গায় সুখ।


আসল নকল চিনিবে

ভালো আর মন্দও জানিবে,

খুঁজিবে সেইদিন খুঁজিবে

নিশি রাতেও আমায় বুঝিবে,

ভেঙ্গে যাবে যখন তোমার ঘুম

দিশেহারা হয়ে খুঁজিবে।


হাতে নেবে আমার লেখা বই

খুঁজিবে আমি আছি কই,

পড়িবে আমার লেখা 

বলিবে তুমি ছাড়া কেমনে রই।


তুমি পড়িবে শুধু বইয়ের লেখা

বইয়ে আছে যে, ছবিটা আঁকা,

মনে মনে শুধু বলিবে কবি

আমার কথাগুলো ছিলো বাঁকা। 


কবিতা পড়িতে পড়িতে

তোমার নয়নে আসিবে জল,

পাগল হয়ে বলিবে

আমার কবি তুই কথা বল।


পাখি ডাকা ভোরে 

বাঁধিবে তোমায় ডোরে, 

আমার সমাধীর পাশ থেকে 

তুমি যাবে নাহি নড়ে।


নিথর প্রাণে থাকিবে দাঁড়িয়ে

জলভরা দু’টি চোখে 

আমায় তুমি বলে ডাকিবে,

আসিবে স্মৃতির কথা মুখে।


স্মৃতিময় স্মৃতি আঘাত করিবে

তোমার মনের ভিতর, 

বুঝিবে তখন বুঝিবে

সেই তরে করিবে ধড়-ফড়।

আধুনিক বিয়ে

 আধুনিক বিয়ে

এম এ মাসুদ রানা 


আধুনিকতার নেশায়

কোন তামাশায়!

মুসলমানেরা হরদমে

ঈমান হারায়!


প্রলয়কালের সাথে

তাল মিলিয়ে,

কেমনে মুমিন মুসলমান

করবে বিয়ে।


বিয়ের বাজার হয়েছে

বেজায় গরম,

যৌতুক দিতে নাই কোন

লজ্জা শরম।


দশ বারো লাখ 

টাকার কাবিনে,

নগদ বাকির সবে

থাকে জামিনে।


মোহরানা হয় নাকি

নারীর হক?

অনাদায়ে রয়ে যায়

ভেজার থাক।


ওই বিয়েটা হয় 

তেমন বকব্রতী, 

হলো না  বেশি

আর খরচাপাতি।

ঘুষ

 ঘুষ

    এম এ মাসুদ রানা 


চল্ চল্ চল্ প্রচুর ঘুষ পাবি চল্

সরকারি চাকরিতে এখন ঘুষ প্রবল

ছলে বা কৌশলে একটি পদ কর দখল

বিসিএস ক্যাডার কিংবা পিয়ান বল।


বর্তমানযুগে মানুষের এটাই গান

ঘুষের সুযোগ ও পেনশন পান

দোষ কি সবাই খায় আপ্নেও খান?

অবৈধ সম্পদ কারা না চান।


ঘরে ঘরে তোলে কেউ সময়ের দাবি

আইন করা হোক ঘুষে, মুখে মুখে রাখি।

ঘুষ হলো উন্নয়নের প্রধান একটা চাবি

বেশি ঘুষ নিলে আবার পুরস্কারো পাবি।


ঘুষ দিলে তুমিও তো ঘুষই পাবি

যা কিছু ক্ষতি করে দিবি শতগুণ নিবি

ঘুষ হয়েছে এখন জাতীয় একটা ছবি

সরকারি চাকুরী তরে তুমিও ঘুষ দিবি।


ঘুষ ছাড়া হয় কি এখন কোন কাম 

ঘুষ দিলে তো বেড়ে যাবে তেমার মান

সচিব, আমলা সবাই  করবে সম্মান

ঘুষ না দিলে, দিতে হতে পারে জান।

Thursday, December 17, 2020

জীবন

জীবন

এম এ মাসুদ রানা


জীবন সংগ্রামে চলছি একা

নেই কোন সজনীর দেখা,

কি আসে আর বা কি যায়

আয়োজন সবে হবে বৃথা?


তা নিয়ে আর কিছু ভাবি না

জয় না হয় পরাজয়,

হবে তো নিশ্চয়

হব মনে হয় যন্ত্রণায় ক্ষয়।


বারে বারে ফিরে আসে

ঘুরে যায় কি আর?

জীবন চলে কি ভাবনায়

তা নিয়ে আছে কি তার?


রচনাকাল ১৮/১২/২০১৭

Tuesday, December 8, 2020

ঘুষ

      ঘুষ

এম এ মাসুদ রানা 


চল্ চল্ চল্ প্রচুর ঘুষ পাবি চল্

সরকারি চাকরিতে এখন ঘুষ প্রবল

ছলে বা কৌশলে একটি পদ দখল

বিসিএস ক্যাডার কিংবা পিয়ান বল।


বর্তমানযুগে মানুষের এটাই গান

ঘুষের সুযোগ ও পেনশন পান

দোষ কি সবাই খায় আপ্নেও খান?

অবৈধ সম্পদ কারা না চান।


ঘরে ঘরে তোলে কেউ সময়ের দাবি

আইন করা হোক ঘুষে, মুখে মুখে রাখি।

ঘুষ হলো উন্নয়নের প্রধান একটা চাবি

বেশি ঘুষ নিলে আবার পুরস্কারো পাবি।


ঘুষ দিলে তুমিও তো ঘুষই পাবি

যা কিছু ক্ষতি করে দিবি শতগুণ নিবি

ঘুষ হয়েছে এখন জাতীয় একটা ছবি

সরকারি চাকুরী তরে তুমিও ঘুষ দিবি।


ঘুষ ছাড়া হয় কি এখন কোন কাম 

ঘুষ দিলে তো বেড়ে যাবে তেমার মান

সচিব, আমলা সবাই  করবে সম্মান

ঘুষ না দিলে, দিতে হতে পারে জান।

Monday, December 7, 2020

ঈদের ছড়া

 ঈদের ছড়া

এম এ মাসুদ রানা 


 

প্রতি বছর রমজান মাসে,

রোজা শেষে ঈদ আসে।

এসেছে ঈদ বছর ঘুরে

ঈদের আনন্দ সবার তরে।


 


ঈদগাতে আলোর বাহার,

আজকে ঈদে আনন্দ সবার।

নতুন পোশাক পরে সবে,

সন্ধ্যা আকাশে চাঁদ উঠবে।


 


ঈদের খুশি চলবে ভুবন ময়,

কররো মোরা বিশ্বজয়।

হিংসা ঘৃণা নয়কো করি ভাই,

আনন্দে উপভোগ করি সবাই।


 


ঈদ মোবারক বলি সবাই

হিংসা বিদ্বেষ মনে নাই ।

ঈদগাতে নমাজ পড়ে,

খুশির জোয়ার সবার তরে।


 


খুশির রঙে মাতবে ত্রিভুবন 

ঈদ আনন্দে থাকে সবার  মন।

আজকে খুশির ঈদের দিনে,

নাহি কেহ ঈদের আনন্দ বিনে।

বন্দি দাস

 বন্দি দাস

এম এ মাসুদ রানা 


একাত্তরে আমারা আজাদ হলেও

এখনো আমজনতার বন্দি দাস,

নিরবে সয়েতে হচ্ছে জনতাকে

পাগলা কুকুরের হিংস্র ত্রাস!


বাংলায় মুক্তি লড়াই চলুক আবার

সাগরে বুকে উঠুক ঢেউ!

বঙ্গ জাতির মুক্তির ফের আসুক 

সিপাহশালায় নতুন কেউ!


শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা

শেখ মুজিবের অগ্নিবানীর সুর!

বাংলায় কালো রাতের হোক অবসান

আসুক আবার নতুন ভোর!

মধ্য নিশি

 .                   মধ্য নিশি

             এম এ  মাসুদ রানা 


একা একা আগুনে  জ্বলতে জ্বলতে, 

আমি একদিন অগ্নি শিখাকেও, 

হাড় মানিয়ে নিশ্চয়ই হবো জয়ী। 


ঐ সুদূর গগনে আছে যে একটি চাঁদ  

কলঙ্কিত করে রেখে সেটাকেও আজ,

সুন্দর বসবাস ঘটবে এটাই তো কাজ। 


অন্ধকারকে জয় করে নিশান উড়িয়ে

আমব‍্যসার ঘোর যাবে একেবারে ফুরিয়ে, 

উদ্বীপ্ত আলোক ছটায় মনকে জুড়িয়ে। 


অবহেলিত অনাকাঙ্ক্ষিত কলঙ্কিত বেশে,

চাঁদের আলো নিয়ে পরে থাকে ধুলির মাঝে

পৃথিবী আলোকিত করবে আছে যে কাজে।


আর তখনি দিপ্তমান একা একা জ্বলতে থাকা,

প্রজ্বলিত অগ্নি শিখাও  জয়ের ধ্বনি দিবে।

কবিতায় তোমাকে

 কবিতায় তোমাকে 

এম এ মাসুদ রানা 


যখন মেঘময় আকাশভরা নীলের মাঝে সাদা'রঙ

মনের মেঘের পাপড়িগুলো সাজে আবার সঙ।

হাওয়ার সাথে বৃক্ষের শাখা প্রশাখা দুলে উঠে

সবুজ পাতায় প্রজাপতিরা আনন্দে নাচেও বটে।

মনের রঙে রঙ আকাশে রংধনুকে মাতিয়ে তোলে

সন্ধ্যার ভারা মনে হাসে তোমায় পরীরা ডেকে বলে।

একদিন সবুজ বাগানে যখন একাকী হলো দেখা

অন্তরচোখে কত্তো কথা মনে মনে হয়েছিল শেখা।

হৃদয়ের উচ্ছাসের পুষ্প গাছে পুস্প কলিও ফোটেনি

হটাৎ যখন কালো আকাশে তারার দ্যুতি  ঘটায়নি।

নিভৃত চমকহীন আকৃতিময় শেষযাত্রার পথিক

রঙ্গীন অক্টোপাস ঘিরে আছে সমুদ্রের তলদেশ!

অনেক দিন থেকে  নিজেই চেয়ে দেখিনি শেষে

চাওয়া পাওয়ায় মাঝে তোমার কথা শুধু আসে।

অতীত

 অতীত

এম এ মাসুদ রানা 


অতীত ভীষন কষ্টদায়ক

যায় না তো ভোলা,

অতীতের পাতা বদলে গেলে

প্রাণে দেয় দোলা।


অতীতের পাতা অনেক কঠিন

যায় না সহজে ঘুচা,

কত কিছু মনে করে ছুটেছিলাম 

তোমার পিছু বৃথা।


স্বপ্ন ছিল আমার মনে 

আরো ছিলো আশা,

হঠাৎ করেই ভেঙ্গে গেলো

গুছানো ভালোবাসা।


অতীত ভাঙ্গা মন নিয়ে

কেঁদেছি কত্তো রাতে,

চোখের জল মুছিয়ে দেবে

কেউ ছিল না সাথে।


মনের সাথে যুদ্ধ করে 

ভুলতে চেয়েছি তোমায়

রাতের আধাঁর বাড়লে পরে

অতীত এসে যায়।


অতীতের পাতা প্রখর হলে

ব্যথা বাড়ে বুকে,

আমায় তুমি ভুলে গিয়ে

আছো অনেক সুখে।


অতীত গুলো থাকুক আমার

তুমি থাকো সুখে,

অতীতের পাতা ঝাপসা হয়ে

অশ্রু ঝড়ুক চোখে।

নামাজ

নামাজ

এম এ মাসুদ রানা 


মাগো আমি পড়বো নামাজ  

উঠবো সকাল বেলা,

করবো না আর মোয়াজ্জিনের 

আযান অবহেলা।


শীতের দাপটে যতই থাকুক

নেই পরওয়া আর, 

আযান শুনে শয্যা ছেড়ে

ঘর থেকে হবো বার।

৭১এর শহীদ

 ৭১এর শহীদ

এম এ মাসুদ রানা 


৭১এর শহীদদের কথা মনে আসলে

শুধুই দু"নয়ন অশ্রুতে ভাসে। 


কোন পিতা তার জীবনের বিনিময়ে,

সন্তানের সুখ রচনা করতে গিয়েছিল।

কোন ত্যাগী পিতা তার দু"নয়ন ভরা 

সুখের স্বপ্ন বিনিময় করেছিলো 

সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রচতে গিয়েছিলো!


পিতার ত্যাগের নষ্ট সন্তানেরা আজ,

পঙ্গু জননীর সিনায় রাখে পা।

গলায় চালায় অস্ত্র কিসের আশায়!

আহ! কি নির্মম যন্ত্রণা হয় তাঁদের!

আহা! কি  আত্মচিৎকার চিৎকার! 


মা ও মেয়ের নির্মম লড়াই!

আমি লজ্জায় মরে যাই,

দু'হাতে মুখ লুকাই,

বেদনার চোখ লুকিয়ে আড়ালে কাঁদি।

সেই সব নষ্ট সন্তানেরা অধম

সব দেখে শুনে চুপ করে থাকি।

আমি মুক্তি চাই

আমি মুক্তি চাই 

এম এ  মাসুদ রানা 


আমি যখনি ছিলাম বেকার 

ছিলো না কোন আকার

তুমি কথায় কথায় দিয়েছো 

আমায় অনেক ধিক্কার 


সয়ে ছিলাম তোমার শত কথা 

রখিনি কোন আবদার 

আমি যে সত্যি বেকার তাই তো 

ছিলো না জানার অধিকার।


মনে মনে জপেছিলাম কতই না 

রঙ্গিন খামের স্বপ্ন 

দেখার সাথে সাথে করেছিলাম 

মনে হয় এটাই রত্ন।


আমার স্বপ্ন একান্ত আমারি ছিলো 

জানেনি কেহ কোন ক্ষণে

সফল হবার চেষ্টার তরেও আমিও 

ছুটেছি কত্তোই রণে রণে।


এখনো তো আমি বিজেতা রণ সৈনিক 

প্রতিদিন বলো কত্তো কৌতুক 

ক্ষণে অনুক্ষণে সুখী হবার তরে দিতে 

চাও আমাকে অনেক যৌতুক। 


স্বার্থ তুমি পাওনি খুঁজে তেমার যখন 

তুমিও দূরে ছিলে তখন

তুমি এখন কেন বলো তবে আমায়

আমার সবকিছুই তোমার এখন?


প্রশ্ন করি তোমাকে আমি এখন 

তুমি তো ভালোবাসনি তখন

আমি নিঃস্ব, বৃত্তিহীন ও বেকার 

আকার ছিলো না যখন।


আমি চাই না তোমার স্বার্থের প্রম

 যে, অর্থ খুঁজো সারাক্ষণ 

আমি হেতু খুঁজিনি  যে, কোন রণে

তাই মুক্তি চাই সর্বক্ষণ।

আমি আমার মতো

 আমি আমার মতো 

এম এ  মাসুদ রানা


আলোর মাঝে কুয়াশা আমি 

হাসির মাঝে কান্না, 

আমার জীবনে এসেছে যা কিছু

তা আর ভুলা যায় না?


মাঝে মাঝে  বলে অনেকেই 

আমি নাকি ভাঙ্গা আয়না

লোকে বলে কখনো আমার 

মুখ দেখাও যাবে না?


আমার দিকে তাকালে হবে

বলে নাকি পাপ?

তাইতো দেখাতে চাইনি তোমাকে

আসেও যদি চাপ।


তখনিই বুক ফেটে যায় আমার 

সয়তে পরিনা অপবাদ, 

নিদ্রাহীনতায় কেটে গেছে যে, 

জীবনের কত্তো রাত।


তোমার বচনে, তোমার সাথে চলার 

হয়েছি কি আমি যোগ্য? 

আমার মতো হতে গেলে তোমার 

লাগে অনেক বড় ভাগ্য। 


আমি তো কিছু নিতে আসি নাই 

তোমাদের সুখের নীড়ে,

যা কিছু আছে আমার কাছে দিবো

তোমাদের মন উজার করে।


আমি আমাকে নিয়ে ভাবি না কখনো 

ধরেছি সাম্যের গান 

তোমারদের চাওয়ার মাঝে পায়নি 

আমার ছন্দের মান। 


আমাকে আমার মতো চলতে দাও 

এতেই কি আসে যাই,

মৃত্যুর মুখোমুখি হয়ে গেলেও আমি

বাঁচার অনুকম্পা নাহি চাই।

Friday, November 27, 2020

মন্ত্রী পরিষদ নিয়ে কথা

 মন্ত্রী পরিষদ নিয়ে কথা   

 "এম এ মাসুদ রানা" 


মন্ত্রী পরিষদের পরিকল্পনায়

ক্ষেপেছে মহিষ ও গোরু,

রেগে বেগে বলে মানুষ গুলো 

করলো আবার কি শুরু? 


মাছ ভাত আর কোরমা পোলাও 

আমরা আরা কি খাই?

খড়, ভুষি, ঘাস আর কচুরিপানা 

আমরা বাঁচার জন্যই চাই ।


সেটাতেও তোর হাত দিলে

হিংস্র মানব জাতি, 

মন চাচ্ছে  দানব গুলোর

মাথায় মারি ঘুষি লাথি। 


গোরু বলল দেখছি আমি 

তোরা আমার চেয়েও গোরু, 

কেমন করে এমপি মন্ত্রী হলো

মোরা মারি মাথায় ঝাড়ু?


ছাগল বলে ওরা হলো পাগল

কেমনে সংসদে পেল ঠাই ,

পাবনার সেই পাগলা গারদ 

সংসদকে বানাতে চাই। 


ঘোড়া ভেড়ার গভীর দৃষ্টি 

কচুরিপানার তরে, 

এগুলোও যদি মানুষে খায়

না খেয়ে যাবো মরে।


আমি বলি মাননীয় মন্ত্রী 

একটি বয়ান শুনুন, 

কচুরিপানার ভাবনা ছেড়ে 

ভালো কিছু নিয়ে ভাবুন ।


মাঝে মাঝে অনেকেই বলছে

খাদ্য খেতে কম,

কেউ বলেছে ভাত না খেয়ে 

আলু খাবেন হরদম।


জনতায় তাদেরকে বলে পাগল 

কতই দিয়েচ্ছে ধিক্কার,

মন্ত্রী পরিষদে মন্ত্রী হতে গেলে 

প্রয়োজন আছে শিক্ষার।


রচনাকাল:১৮/০৩/২০২০ ইং

প্রায়োপবেশন

প্রায়োপবেশন 

এম এ মাসুদ রানা 


অনাদর একোন অনাদর, 

বড় অবহেলা পেলাম ভালোবেসে, 

নিঃশ্বাস টুকু রেখে হারিয়ে য়াবে শেষে। 

এমন কি করবো বলো? 

কেমন করে রব একা? 

ফিরে দেখো এখনও আছি দাঁড়িয়ে,

আমি যায়নি এখনো  হারিয়ে

হাত দু'টো রেখেছি বাড়িয়ে! 

কেন হঠাৎ তুমি এলে?

হৃদয়ে জায়গা করে নিলে,

আপন করে নিয়েছিলে।

পেয়েও হারানো যায় না, 

হারিয়ে যাবার করছো বাহানা।

বাঁচার মানে টা যাবে হারিয়ে

যদি মন থেকে দাও তারিয়ে! 

শুনছো কি তুমি আমার কথা?

বুঝেছো আমার মন কি চাই? 

অতি গোপনে তোমায় শুধাই

আগে করো নাই কেন যাচাই?

এখন করো না আর বাছাই।

এমন করছো কিসের আশায়

পাগলামি করো কোন নেশায়।

বিচ্ছেদের বেদনা করে শনশন 

এখন করি মরনের জন্য অনশন।

আমার যাবার বেলায়

আমার যাবার বেলায়    

এম এ মাসুদ রানা 


তুমি বললে, 

তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও ;

আমার সীমানা ছেড়ে দূর বহুদূরে

আসতে চেওনা আবার কখনো ফিরে।

তোমাকে রাখতে চাইনা সাজানো নীড়ে 

অচেনা হয়ে যাও অচেনাদের ভীড়ে।

নতুন করে সাজাও নিজেকে কোন তীরে 

বলবো না তোমার চলল আস্তে না ধীরে। 


আমি চলে যাবো, চলে যাবো দূর বহুদূরে 

আসবো না কখনো কারো সাজানো নীড়ে।

সাজিয়ে নিবো নিজেকে আচেনাদের কাছে

নিজেকে নিয়েই নিজে থাকবো আমি বাঁচে।

আপন মনে বাঁধবো বাসা এক নতুন তীরে

কেহই বলবে না তোমার চলন কেন ধীরে।


আমরা যাবার বেলায়, আমি চেয়ে চেয়ে ছিলাম 

ফিরে যাবো আশা ছিলো ডাকবেই ভাবলাম।

ডাকলে না শুধু তুমি চেয়ে চেয়েই কাঁদলাম

মনকে প্রশ্ন করে আনেক কিছুই যাচলাম।

ফুল হাসে তাই ভ্রমর প্রেমেতে পড়ে 

হৃদয়কে হৃদয় দিয়ে পুড়িয়ে প্রেম বীরহ গড়ে।

চেয়ে দেখ একবার এই দিকে জল পরে পাতা নড়ে 

বিচ্ছেদের যন্ত্রণা তবুও তোমার হৃদয়ে নাহি ধরে।

জীবনের হিসাব

 জীবনের হিসাব

এম এ মাসুদ রানা 


নয়ন হয়েছে অশ্রু সজল, 

মনে কষ্ট প্রয়োগ করে বল, 

মুখে লুকানো হাসির ছল

চারপাশে অট্টহাসির ছলবল।


যে হাসিয়ে ছিলো, এক শুভ লগ্নে

সেই আবার কাঁদায়, অতি যতনে,

তবুও, নিরবে হেঁটেই চলি সুখের পতনে

পথের পর পথ ঘুরে খুঁজি অমূল্য রতন।


আমার নেই কোন জীবনের গল্প

আমার জীবনটাই অতি অল্প।

গল্প আছে  হয়ত সল্প

সল্প গল্পেই করি আবার কল্প।


তবুও, খুঁজি গল্পের শেষ অধ্যায়,

কল্পনায় ভাসি,কল্পনায় ডুবি তাই। 

কেটে যাচ্ছে সময়, জীবন যাচ্ছে বেশ

জীবনের হিসাব কষতেই সময় শেষ।

তোমাকে বলছি ললনা

 তোমাকে বলছি ললনা

এম এ মাসুদ রানা 


আমি তোমাকেই বলছি ললনা 

আমার দু'টো কথা শুনো না। 

কথায় কথায় করো কেন বাহানা?

তোমার হাসির মাঝেও থাকে ছলনা।


তুমি তো ধূর্তবাজ, জ্বেলে দাও প্রণয়ের ধূপ

আছে যে, তোমার মায়াবতী, মায়াবী রূপ 

তোমার চলন বলনে হও নাই কখনো শিষ্ট  

সুবিধার তরে হয়ে না আবার কখনো দৃষ্ট।


তোমার আদপহীনতায় বেয়াদব বানাও

তোমার আসল রূপটি নাহি কাওকে জানাও।

তোমার ছলনার পদতলে পৃষ্ঠ করছো কত প্রাণ 

দিয়েছো কি তাদের পবিত্র ভালোবাসার দাম।


নারীরা হয় সম্মানের নরেরা তাই যেন জানে 

খুঁজে না যেন বিপরীত কোন কিছুর মানে,

সম্মানের চোখে দেখুক তোমাকে সর্বক্ষণে

তোমার কুকৃতি বলে না যেন জনে জনে।


জোর নিবেদন করি তোমার তরে, 

তোমার বেহিসাবি চলনে যেন আরা নাহি কেহ মরে।

তোমরা তোমাদের জ্ঞানের দরজা খুলে দাও, 

সভ্য চলন-বলন ও পোষাক-আষাক বেছে নাও।

Thursday, November 19, 2020

মা

 মা 

এম এ মাসুদ রানা


মা'গো!

তোমার আঁচল এতো যে নিরাপদ 

আমি বুঝতে পেরেছি আজ।

তোমার গর্ভ হতে জন্ম আমার 

তবু কেন এত জীবনের লাগি বাজি।


মা'গো! 

তোমার আমার একই নরীতে বাধা প্রান 

ভুলে যাইনি গো মা আজো আমি।

কাজের চাপে ভুলে আছি মা

'করো না অভিমান! 

করলে অভিমান 

তোমার অভিমানে হবে অকল্যাণ। 

তুমি মমতা ময়ী মা' গো তুমি মমতা ময়ী!

আমি পরাজিত তুমি জয়ী।।


মা'গো! 

তোমার কাছে তোমার খোকা 

তোমার জীবনের চাইতে দামী 

তাইতো আমারে রেখেছিলে 

যঠরে জানে অন্তযামি।


মা'গো!

তোমার বকনিতে মধু মাখা 

মাগো শাষনেও আদর মাখা! 

আমি দৃষ্টির আড়ালে গেলে 

পরে মাগো তোমার হৃদয় হাহাকার করে।


 মা'গো!

আমি  অধম মা'গো ;

তোমার সন্তান, 

তুমি উওম আমি জানি,

মা'গো বড়ই আমি অপরাধী!

Wednesday, November 18, 2020

তোমার যাবার বেলায়

 তোমার যাবার বেলায় 

       এম এ মাসুদ রানা 


তুমি চলে যাবে, তবে চলে যাও, 

ফিরে এসো না, এই চেনা ভুবনে 

এই ক'দিনে তোমায় চিনেছে বা ক'জনে।

তুমি চলেই যাবে যদি কেন এসেছিলে? 

আমার খড়কুটোর এই ছোট্টো ঘরে

বসে ছিলে অগোছালো বিছানায়। 

বলেছিলে কতই না মধুর কথা 

রেখেছো কি মনে কিছু যথাতথা।

তোমার যত কথা বলেছো একসাথে, 

তোমার মন তখনও উঠেছিল নেচে

তোমার মন এখন নতুন ভুবনে গেছে

তাইতো বিদায় নিবে আমার কাছে। 

তোমার হরিণী চোখ, মায়াবতী কপল 

পরিশেষে দিয়ে গেলে আমায় ছবল।

Tuesday, November 17, 2020

তুমি

  তুমি  

এম এ  মাসুদ রানা 


তুমি হতাশার মাঝে আশা

তুমি নিরাশার মাঝে ভালোবাসা।

তুমি আবেগ ভরা মনের মাঝে বিবেক

তুমি অভিমানের মাঝে নিরভিমান।

তুমি শিশির মাঝে মিষ্টি সকাল

তুমি ক্লান্ত দুপুরের মাঝে প্রশান্তি।

তুমি গ্রীষ্মের রোদ্দুরের মাঝে শীতল হাওয়া

তুমি বর্ষার কর্দমাক্তর মাঝে বসন্তের ফুল।

তুমি ছেলেবেলার ক্রোধের মাঝে প্রবল উচ্ছাস 

তুমি ছোটবেলার দুষ্টুমির মাঝে শিষ্ট। 

তুমি মরুভূমির মধ্যে একমুঠো ঘাস 

তুমি মরীচিকার মাঝে পানির সন্ধান। 

তুমি কুৎসিত এর মাঝে পরম সুন্দরী

তুমি হৃদয়ের গহীনে অনুপমা, অনন্য, অনবদ্য।

Thursday, November 12, 2020

হতাশীর প্রত্যাশা

  হতাশীর প্রত্যাশা

এম এ মাসুদ রানা 


আমি নিরর্থক, আমি নয় কোন খানে স্বার্থক,

কথায়-কথায় সময়ে, অসময়ে করি চিৎকার 

চারিদিকে শব্দ শুনি শুধুই শুনি হাহাকার 

কারো করো কটু কথায় হৃদয় হয় ছাড়খাড়।


আমারে ধরতে করতে না কোন কৌশলের দরকার

আমি হয়ে গেয়েছি যে, তোমার সমাজে নিরাকার। 

আমায় খুঁজতে  দিতে দিতে হয় না কোন খানে হানা

আমায় ডাকলেই পাওয়া যাবে এটও তোমার জানা।


আমার সাথে  করো তুমি অনেক ছলাকলা 

বলতে চাই অনেক কিছু, হয় না কখনো বলা

মনকে বলি তোমাকে তো করবেই সবাই হেলা

তোমার জীবন নদীতে যে, ভাসে দূখের ভেলা।


আমায় করেছো হেলা, কাঁটছো আসময়ের বেলা 

তুমি তৈরী করেছো তোমার ভুবনে আনন্দের মেলা

তোমার মনানন্দের তরে আমার সাথে তোমার খেলা

আমায় দিয়ে তোমার ক্লান্ত মনকে শান্ত করে নিলা।


ভেবো না তুমি, আমি কিছুই বঝিনা

তোমার মনে লুকানো কথা সবাই জানি।

চেষ্টায় আছি, আমি আমাকেও যেন পাল্টে পরি

তোমার মতোই হতে পারি যেন অতি তারাতাড়ি

সেই তরে তোমার সাথে করি না কখনো বাড়াবাড়ি।


রচনাকাল ১১/১১/২০২০

চরম প্রতিবাদ

 চরম প্রতিবাদ 

এম এ মাসুদ রানা 


স্রষ্টা যাঁর প্রতি হয়েছে খুশি

দান করেছে সম্মান

কারো কি ক্ষমতা আছে?

করবে তাঁকে অসম্মান! 


জ্ঞানের ভান্ডার তাঁর হাতে

ধরণীর বুকে শ্রেষ্ঠ

তাঁকে নিয়ে ব্যাঙ করো

কেন বোকারাম কেষ্ট?


তাদের প্রতি চরম ঘৃণা

বাঁজে উঠে শরীরটা

আমি বলি তাদের মাথায়

মার লাথি আর ঝাঁটা। 


তাঁকে নিয়ে কুৎসা রটাটে

হয় না যেন সাহস 

তাঁকে নিয়ে ব্যাঙ করা 

নয়তো এতো সহজ।


তাদের প্রতি আমার ধিক্কার 

জানায় চরম প্রতিবাদ 

তাঁকে নিয়ে ব্যাঙ করে কেউ 

পাবে নাতো মাফ। 


রচনাকালঃ ১১/১১/২০২০

Monday, November 9, 2020

প্রেম এসেছিল নীরবে

 প্রেম এসেছিল নীরবে

লাবিব আল সরকার, এই নাম সম্পর্কে ও তার জন্মসূত্র পিতামাতা তা সবার অজানা। কেন না কোনো এক ডাস্টবিনের পাশ্বে এক পাগলী এক নির্জন প্রান্তে শিশুটিকে কুড়িয়ে পেয়েছিল। শিশুটির শরীরে তেমন কোন প্রতীক ও কোন রকম পোষাক পরিহিত ছিলো না। 

বেশ কয়েকদিন শিশুটিকে সযত্নে রেখে যেখানে সেখানে ঘুরে বেড়াত। যেখান সেখান থেকে ময়লা ও নোংরা খাবার খাওয়াতো শিশুটিকে।

এমন এক সকালে এক নিঃসন্তান ভদ্রমহিলা রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়, পাগলীটার কোলে এই কোমলমতি শিশুটাকে দেখ, (এক অপরিচিত নোংরা বস্ত্র পরিহিতা মহিলার কোলে শিশুটিকে দেখে) দেখতে পেয়ে ভদ্র মহিলা এগিয়ে গেলেন। 

শিশুটিকে জড়িয়ে রেখেছে মহিলাটি। শিশুটিকে জরিয়ে রাখার করণে বয়স তেমন বোঝা না গেলেও পা দুটো দেখে মনে হয় ৩ থেকে ৪ মাসের বেশি বয়স হবে না। শিশুটির মা যে এই মহিলা নয় তা সহজে বোঝা যায়। মহিলাটির বয়স কম করে হলেও ষাটের বেশি হবে। তবুও শিশুটাকে বুকে আগলে রেখেছে অনেক যতনে। পাগলী হলেও শিশুটার প্রতি ছিলো তার অনেক ভালোবাসা, এটা বুঝতে ভদ্রমহিলাটার বাকি রইলো না। ভদ্রমহিলাটা ভাবলো শিশুটা এখানে এমন অবস্থায় থাকলে বাঁচতে পারবে না এটা নিশ্চিত। শিশুটাকে বাঁচাতে হবে যে কোন উপায়ে।


এই ভদ্রমহিলাটা ছিলো মরনব্যাধি রোগে আক্রান্ত, যে কোন মূহুর্তে চলে যেতে হতে পারে আত্মা দেহের বাহিরে। মৃত্যুর অপেক্ষায় থাকে সবসময়, কখন আসে যমদূত তাকে দেখা করতে।


এই আগন্তুক মহিলা নিজের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় শিশুটিকে উদ্ধার করে এক অনাথ আশ্রামে রেখে দেন। সেই মহিলাটি নিজের কাছে না রেখে। প্রায় খোঁজ খবর রাখতেন শিশুটির, যাবতীয় খরচও বহন করতেন, এভাবে তার দিন চলে যেত , শিশুটি পাঁচ বছরে পা দিয়েছে। সেই আগন্তুক মহিলাটি নিঃসন্তান হওয়া মাতৃসুলভ মন দিয়ে শিশুটির থাকার স্থায়ী ব্যবস্থা করে দিয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে সারা জীবনের বিদায় নিলেন এই মায়াভরা  ধরণী তল হতে।


তারপর অনেক কথা, তার জীবনে অনেক বাধা পার হতে হয়েছে লাবিব আল সরকারকে । স্কুল জীবনে অনেক সমালোচনা কটুকথা ও ব্যঙ্গর মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু ওকে থামিয়ে রাখা যায়নি কেবল তার মেধা ও কর্মকুশলতার কারণে। তিনি ছিলেন অনন্য মেধার অধিকারী, সহপাঠী ছাড়াও আশ্রমের প্রায় সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকাটা তার স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সবার সাথে সবসময় হাসি খুশিতে থাকতো। সবাইকে মাতিয়ে রাখতো বিভিন্ন ছন্দ কথা দিয়ে।


আনন্দ ও মুক্ত স্বাধীনতায় সে অতিবাহিত করল ইই স্কুল ও কলেজ জীবন। হাই স্কুল ও কলেজ জীবনে ছিলো তার ব্যাপক সফলতা। অনেক পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিল সে। এগুলো প্রতিটি সফলতার পিছনে ছিলো তার কঠোর প্ররিশ্রম ও দূরদর্শিতা। 


তারপর কলেজের চৌকাঠ অতিক্রম করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করল। সেখানে ও মাথা উঁচু করে পথচলা শুরু করলো। তবুও সে নিজেই কোন কোন মহূর্তে, যেন পরাজিত সৈনিকের মতো মনে হতো। কারণ কৈশোর জীবনে তার পরিচয়টা সে বুঝতে পারেনি, বয়ঃসন্ধি ও কালের পরিবর্তনের সাথে তাকে আঘাত করে। সময়ে অসময়ে খুঁড়ে খুঁড়ে জখম খায়। 

যখন সে একা থাকত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মানপত্র গুলিতে চোখ বুলিয়ে দেখে নিত। জীবনে চলার পথে কোনো না কোনো সময় বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়, তাই হয়েছিল লাবিব আল সরকার জীবনে। 


সেদিন ছিল বৈশাখী পূর্ণিমা। প্রতি বছরের ন্যায় এবছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠান সূচীতে ছিল কবিতা, নৃত্য, সঙ্গীত আর ছিল এক বিশেষ আলোচনা সভা। 

আলোচনার বিষয় ছিল বর্তমান যুব সমাজের কাছে কাজী নজরুল ইসলাম কতটা জনপ্রিয় ? 

জীবনানন্দ দাশের "বনলতা সেন" কবিতার বিশেষ আলোচনা ও আবৃত্তি। 

আর সমস্ত অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিল লাবিব আল সরকার। রাত তখন প্রায় দশটা। বিচারক মণ্ডলী মূল মঞ্চের বিপরীত দিকে বসে আছেন। দর্শক সংখ্যা গত বছরের থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে। মাঝে মাঝে দর্শক হাততালি দিচ্ছে মনানন্দে। ছোটরা বেলুন ও বিভিন্ন খেলনা নিয়ে খেলা করছে। কোথাও আবার আতসবাজি ফোটানোর আওয়াজ। প্যান্ডেলের মধ্যে কোথাও ফেরিওয়ালা খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে। সব মিলিয়ে এক অসাধারণ রাত্তির সম্মুখীন লাবিব আল সরকার।

হঠাৎ আলো নিভে গেল। বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে কিসের চিৎকার, হৈ হুল্লা, হুড়োহুড়ি পড়ে গেল চারিদিকে। ঠিক সেই সময় কারা যেন এসে জাপটে ধরল লাবিব আল সরকারকে। টেনে নিয়ে গেল মঞ্চের বাইরে, গায়ে মারও পড়ল লাবিব আল সরকারের । তারপর কি হল আর কিছুই জানেনা লাবিব আল সরকার।

অচেন অবস্থায় পরে রইল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে।.........  একজন তাকে নিয়ে ভর্তি করেছে এক নার্সিংহোমে।


অচেতন অবস্থায় কেটেছে কয়েকদিন। যখন তার চেতনা ফিরল চোখ খুলে দেখল কোনো এক নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে আছে। পাশে বসে আছে চেনা মুখ অতিথি। অনুষ্ঠান সূচীতে তার নাম ছিল। জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’কবিতা আবৃত্তি করবে। বাবা মাকে নিয়ে এসেছিল সেদিন। বাকি বিষয়টা লাবিবের অজানা।

অতিথির সঙ্গে ব্যাক্তিগত ভাবে আলাপ হয়নি কোনোদিন। লাবিব কিন্তু সেদিন দেখল খুব আপনজনের মতো পাশে বসে আছে। ছোট শিশুর মতো চোখে ভরে গিয়েছিল সেদিন। কথা ছিলনা দুজনের মুখে। অতিথি হাতের রুমাল দিয়ে চোখ মুছাতে গিয়ে নিজের চোখের জল গড়িয়ে পড়ছিল। অতিথিকে কাছে পেয়ে লাবিবের স্বপ্ন দেখছিল। নানা প্রশ্ন জেগেছিল তার মনের মনের গোপনে । কে এই মেয়েটি, কেনই বা তার পাশে বসে আছে? চার দেয়ালের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাওয়ার এক অনন্য সুন্দর রোমান্টিকতা অনুভবের অনুভূতি হচ্ছিল লাবিবের।

ঠিক তখনি অতিথি পরিস্কার ভাবে বলল

কেন এতো চিন্তা করো? 
কিসের এতো ভাবনা তোমার?

এইতো আমি আছি তোমার পাশাপাশি। 


মনটাকে স্থীর করার চেষ্টা করল লাবিব। 

কিন্তু তার আগে চোখ পড়ল অতিথির দিকে। পরনে হালকা রঙের গোলাপি শাড়ি, পাশে থাকা রজনীগন্ধার তোড়া, এলোমেলো কেশ ভাগে বকুল ফুলের মালা দিয়ে জড়ানো, কপালে আলতো করে বসানো ছোট গোলাপি টিপ, খোলা জানালা দিয়ে পড়ন্ত বিকেলের শেষ আলোর রেখা পড়েছে শাড়ির ভাঁজে। বড়ই সুন্দর লাগছিল অতিথিকে। 

অতিথি এমন ভাবে কাছে আসবে তা লাবিব বুঝে উঠতে পারেনি। 

আর পারেনি বলেই রোমান্টিকতা ছুঁয়ে যাচ্ছিল একে অপরকে।

অতিথি বলল –
‘সারাক্ষণ কার কথা ভাবছেন ? 

কেনই বা ভাবছো? 

এই ভাবনার দরকার কি আছে? 

আমি তো রয়েছি তোমার পাশে।


লাবিবের চোখে জল। ছড়িয়ে পড়া আঁচলের এক কোন দিয়ে লাবিবের চোখ মুছিয়ে দিয়ে অতিথি বলল। 
এমন করে ভেঙে পড়লে তোমার শরীর খারাপ হয়ে যাবে। 

যাক সে কথা ডাক্তারবাবু বলেছেন আজ তোমাকে ছুটি করে দেবে। 

তাই আমি আগেই চলে এসেছি। বাবা মা একটু পরে গাড়ি নিয়ে আসছে।

এদিকে সন্ধের বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলে উঠল। সেই আলোতে অতিথিকে এক পলকে দেখে নিল লাবিব। এমন এক সময়ে যৌবনা যুবতীর সন্নিধ্যলাভ লাবিবের কাছে পরম আনন্দের বিষয় ছিল। 

এমন সময় নার্সিংহোমের সামনে একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল। অতিথির মধ্যে বেশ খুশির ভাব। জানালা খুলে দেখে নিল বাবা ও ভাই গাড়ি থেকে নামছে। কিন্তু তখন অতিথির চোখে মুখে এক বিষণ্নতার ছাপ। 

সে বলল –
এই যে তোমার ছুটি, এবার কোথায় যাবেন বল,

তোমাকে পৌঁছে দেওয়া হবে সাবধানে থাকবেন কিন্তু’।
লাবিব ভাবল কোথায় যাবো, 

আশ্রম থেকে এসেছি কতদিন হয়ে গেল। লাবিব আর কিছু বলতে পারছিল না। এমন সময় অতিথির বাবা এসে ঢুকল। কিছু বলার আগেই লাবিবকে নিয়ে গাড়িতে উঠল। লাবিবকে কথা বলার সুযোগ দিচ্ছে না। গাড়ি চলতে আরম্ভ করল। পৌঁছালো অতিথির বাড়ি। লাবিব হয়ে উঠল পরিবারের একজন। অতিথির সংস্পর্শে বেশ ভালোই কাটছিল লাবিবের দিনগুলি।

সেদিন ছিল ফাগুনী পূর্ণিমা। চাঁদ উঠেছে আকাশে , অন্য দিনের মতো এ-রাত্রিটা বেশ মোহময় লাগছিল। জানালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় কদম আর বড় অশ্বথের গাছ। ফুলে ভরে গেছে কদম গাছ। আর অশ্বথের ঝুড়ি গুলো মাটিতে নেমে এসেছে। ঘুম নেই লাবিবের। কাছে পেতে চায় অতিথিকে। 

এ এক নীরব ভালোবাসা টানছে

মনটা করে সবসম ছটপট, তাকে দেখার আশায়, দুটি কথা বলবো অতিথির সাথে। মাঝে মাঝে মনে অনেক ভয়ও আসে।

রাত কতটা হবে তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। চোখে ঘুমও আসছে না। এমন সময় খুব হালকা কন্ঠস্বর ভেসে আসছে। হালকা হলেও বোঝা যাচ্ছে কার গলা। অতিথির মা ও বাবা কথা বলছে অতিথির জন্ম পরিচয় নিয়ে। অতিথি মন দিয়ে শুনছিল, শুনছিল লাবিবও। চাঁদ যে কখন গড়িয়ে পড়ছে পশ্চিম আকাশে তা বুঝতেই পারেনি লাবিব। হয়তো সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে, আর কেউ জেগে নেই। জেগে আছে শুধু লাবিব। কেবল ছোট একটি কাগজে লিখল 
আমাকে খুঁজো না অতিথি..........।

তেমার তরে আমার মনে প্রেম এসেছিল নিরবে।



লুকোনো স্মৃতি

লুকোনো স্মৃতি

৫ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ রাত্রি তখন ঠিক ৯টা ছুঁই ছুঁই । হঠাৎই মোবাইল ফোনের আওয়াজ। বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অন্যমনস্কতাকে সরিয়ে ফোনের দিকে মনোনিবেষ করল। তৎক্ষণাৎ দৌড়ে এসে ফোনটি হাতে তুলে নিল। দেখল অচেনা এক নম্বর। ফোন ধরবে কি ধরবে না এই নিয়ে নিজের মনের ভিতর মতবিরোধ দেখা দিচ্ছিল। কেননা কয়েক দিন আগে এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন এসেছিল। ফোন ধরা মাত্রই নিজের ফোনের সমস্ত নথি চুরি হয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে সাইবার ক্রাইম যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এই কথা ভাবতে ভাবতে ফোন কেটে গেল। আবার কিছুক্ষণ পর আবার সেই নম্বর থেকে ফোন বাজল। এই নম্বর হয়ত পরিবারের কারুর চেনা , এইসব কথা ভাবার পরও তার ফোন ধরার প্রতি অনিহা দেখা গেল। সে নিরুপায় হয়ে ফোন ধরল। ফোনটি ধরার সঙ্গে সঙ্গে এক মহিলার কন্ঠস্বর ভেসে এলো

ভালো আছিস নিলু।

কন্ঠস্বর চেনা চেনা মনে হলেও সেই মুহূর্তে বুঝতে পারেনি। কার গলা , কে আবার আমাকে এরকম আমাকে সম্বোধন করে। কিছুক্ষণ স্তম্বিত হয়ে থাকার পর কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে উঠল –

কে তুই ; 

আমি তো বুঝতে পারছি না , 

দয়া করে বলবি আমায় কে তুই ‘।

এই কথা বলার পর অধির আগ্রহে কান পেতে শুনতে লাগল উত্তর পাওয়ার জন্য।

ফোনের ওপারে মহিলা কন্ঠস্বরটি নিলুর এইরকম প্রত্যুক্তি শুনে নিজেকে সরিয়ে নিল। 

সে আশা করেনি নিলুর কাছ থেকে এরকম কথা গুলো শুনতে পাবে বলে। 

মহিলাটি ভেবেছিল অনেকদিন পর কথা হচ্ছে ,নিলু নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে কথা বলবে। 

কেননা বহু দিনের বন্ধুত্ব।

মাঝখানের কয়েক দিনের আমার আচরনে এখনও রেগে রয়েছে নিলু।

এই কথা ভেবে ফোন কেটে দিল। 

নিলু কিন্তু বুঝতে পারেনি যে ফোন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তৎক্ষণাৎ নিলু ও ফোন ব্যাক করলো। কিন্তু কোন লাভ হলো না।

তার কারণ মহিলাটির ফোন বন্ধ। 

তখন থেকে নিলু আরও অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল। 

কেন জানিনা নিজেকে আর স্থির রাখতে পারছে না । 

সে অধীর আগ্রহে ব্যকুল চিত্তে মুখিয়ে ছিল কখন সে ওই মহিলাটির গলা শুনতে পাবে , ও তার নাম জানবে।

এই কথা ভাবতে ভাবতে রাত কেটে গেল , পরের দিন সকালে নিলু আর একবার চেষ্টা করল যাতে ফোন ধরানো যায়। কিন্তু সেই একই কথা। ফোন রেখে দিয়ে আবার বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো। কিন্তু জানতো সে একদিন না একদিন আবার ফোন করবে। কারণ নিলু বুঝেছিল কোনোদিন তার সঙ্গে আমার নিশ্চয়ই পরিচয় ছিল । নিলু জানতো একবার যখন কথা হয়েছে আবার কথা হবে কোনো না কোনোদিন। নিলু সেই প্রতীক্ষায় রইল । প্রতীক্ষা মতো সেইদিন আবার সন্ধ্যায় আবার ফোন এলো। নিলু আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিল পরিচয় আগে নেবে।

-‘কে তুমি ? 

পরিচয় না দিলে আমি কথা বলবো না’।

অপর দিকে মহিলাটি পরিচয় না দিয়ে থাকতে পারলো না। 

সে নিজের পরিচয় ব্যক্ত করলো নিলুর কাছে।

পরিচয় তো আমি দেব ;

তার আগে কয়েকটা কথা বলছি সেটা শুনে তুই যদি বুঝতে পারিস আমি কে।

মহিলাটি পরিচয় দেওয়ার ঢঙে নিজের বর্ননা করতে লাগল।

মনে আছে তোর আমরা দুজন সেই ২০০৭ সাল থেকে এক সঙ্গে পড়তাম। মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর দুজনের বিষয় প্রায় একই ছিল , শুধু দুটি বিষয় আলাদা । ২০১৪ সালের প্রথমের দিকে আমি তোকে কিছু বলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম কিন্তু ভয়ে আমি বলতে পারিনি।

এই কথা শুনে নিলু নিস্তব্ধ হয়ে ফোনটি কানে ধরে রেখে শুধু দাঁড়িয়ে থাকল কোনো কথা বলল না। কেন এরকম হল তার ; সে কি আগে থেকেই জানত , 

নাকি আরো কিছু। 

নিলু ফোনটি কেটে দিল। 

দুই হাত মুখে চেপে ধরে নিজের পাতা বিছানায় মুখ নিচু করে শুয়ে পড়ল। নিলু ভাবতে লাগল একি করে হতে পারে যাকে আমি একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিলাম , সে আনার আমার কাছে , আমাকে ফোন করছে । নিলু নিজেকে অনেকটা নীচে নামিয়ে নিল।

একি হতে পারে , 

কি ঘটেছিল সেদিন কেনই বা নিলু তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।

সবে মাধ্যমিক শেষ করে নতুন ক্লাসে ভর্তির আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে কারণ যেই স্কুলে মাধ্যামিক পর্যন্ত পড়েছে সেই স্কুলে আবার পড়ার জন্য। আবার পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা হই হুল্লোড় আরও অনেক কিছুই। সেই সঙ্গে কৈশোর অতিক্রম করে বয়ঃসন্ধিতে পা , মনকে একজায়গায় রাখার চেষ্টা করলে ও কিছুতেই আর সংযত হয় না। নতুন ক্লাস , নিজেদের মনে কোন এক চাপ থাকলেও পুরোনো বন্ধুবান্ধব পেয়ে সবাই খুশি। ক্লাসে নতুন কিছু মুখও দেখা গেল , যারা অন্য স্কুল থেকে এসেছে। পুরোনো নতুন দের নিয়ে এভাবেই কাটছিল দিনগুলি। আবার মাঝে মধ্যে মনে হতো আর মাত্র দুই বছর , কয়েকটা দিন কেটে গেলে সবাই আলাদা , এই বিষয়টা নিয়ে নিজেরা প্রকাশ না করলেও একটা চাপানোত্তর সৃষ্টি হয়েছিল।

এই ভাবে ৫-৬ মাস কেটে যাওয়ার পর নিলুর সামনে আকস্মিক ভাবে শ্রুতি নামের এক মেয়ে। নিলু অবশ্য তাকে চিনতো। নিলু ভেবেছিল প্রতিদিনের মতো কোনো সাহায্যের জন্য এসেছে । কিন্তু সেদিনের তার চাউনি ছিল অন্যরকম । 

নিলু তো 

অনায়াসে বলে ফেলল –

কী বল ?

শ্রুতি বলে উঠল

আজ আমি কিছু সাহায্য চাইতে আসিনি। 

তোকে কিছু বলতে এসেছি’।
তো বলনা কী অসুবিধা হয়েছে , 

আমি তো রয়েছি সব সমস্যার সমাধান করে দিচ্ছি।
‘আমি তোকে ভালোবাসি’।
এই কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে নিলুর সারা শরীর শীতল হয়ে এলো। যেন নিথর দন্ডায়মান বৃক্ষের মতো দাঁড়িয়ে থাকল। নিলু ভেবেছিল পাঁচ বছর একই ক্লাসে পড়াশুনা করেছি আমার তো কোনো মনে হয়নি , আর মনে হবার মতো কিছুই নেই , নিজেরা নিজেদের মতো একসঙ্গে মেলামেশা করেছে। 

নিলু এক মনে কি যেন ভাবছিল। 

তখন শ্রুতি বলে উঠল
কি এত ভাবছিস ; কিছু তো বল।
নিলু যখনই কিছু বলতে যাবে শ্রুতি আবার বলতে আরম্ভ করল 


‘তুই আজ আর আমায় ফেরাতে পারবি না । তোকে এই কথাটা বলবো বলে কতদিন অপেক্ষা করছি , কিন্তু নিজের মধ্যে সাহস পাইনি। যখন আমরা ক্লাস ফাইভ এ পড়তাম তখন একে অপরকে ভালোভাবে জানি না । যেদিন তোকে প্রথম দেখলাম সেদিন ছিল এক বৃষ্টির দিন। ছাত্র ছাত্রী বেশী না আসার জন্য একসঙ্গে ক্লাস হয়েছিল , আর তুই ক্লাসের মনিটর ছিলি। আর আমি তোকে স্যারের কাছে মার খাইয়েছিলাম। তুই প্রচুর কেঁদেছিলি। প্রথমে রাগের মাথায় আমি আনন্দ পেলেও পরে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। 

আর তখন কী ভালবাসা , 

কী প্রেম কিছুই জানতাম না? 

শুধু তোকে দেখলে আমার ভালো লাগত।এরপর আর অনেক ঘটনা রয়েছে।

তুই আমাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিসনা।'


এই সব কথা শোনার পর নিলু বলে উঠল 
‘দেখ তোর ধারণাটাই ভুল , আমরা সহপাঠী ভালো বন্ধু ও বলতে পারিস , আর এই সব ভালোবাসা আমি মানি না। আমার পক্ষে এইসব ভালোবাসা প্রেম করা সম্ভব নয় , আর আমি তোর ভালোর জন্যই বলছি সামনে পরীক্ষা আছে তাতে মন দে। তোকে তো ভালো রেজাল্ট করতে হবে’
আরও বলল

‘জানি আমার উপর তোর রাগ হচ্ছে , রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক। জানি আমাকে ভুলতে তোর কষ্ট হবে , যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাকে ভুলে যা , যত তাড়াতাড়ি ভুলতে পারবি তত তাড়াতাড়ি তোর নিজের সাফল্যের দিকে এগোতে পারবি।'

এই বলে নিলু ফিরে এলো। শ্রুতি যথাস্থানে দাঁড়িয়ে থাকল।
কয়েক দিন পর পরীক্ষা , পরীক্ষায় মন দিতে চাইলেও কিছুতেই মন বসতে চাইছিল না । কোনো রকমে পরীক্ষা শেষ হলো , যে যার নিজের রাস্তায় পাড়ি দিয়েছে , তবুও শ্রুতি আশায় বুক বেঁধেছিল। রেজাল্টের দিন আবার দেখা হবে। হয়তো বা নিলু সেদিনই তার প্রত্যাশা পূরণ করবে। সেদিন নিলু রেজাল্ট নিতে এলো না। শ্রুতি রেজাল্ট হাতে দাঁড়িয়েছিল শুধু একবার নীলুকে জানাবে তার রেজাল্ট ভালো হয়েছে । কিন্তু আর বলা হলো না। সেদিনের পর থেকে নিলুর সঙ্গে আর কোনোদিন দেখা হয়নি।

আবার ফোন বাজল , শ্রুতি আর নিজেকে সামলাতে না পেরে বলেই ফেলল আমি শ্রুতি।

‘তুই কেমন আছিস , 

অনেক দিন পর নাম্বার জোগাড় করে তোকে ফোন করলাম । এর পরেও তুই আমার সঙ্গে কথা বলবি না।'

পুরোনো বান্ধবীর সঙ্গে কথা হচ্ছে , নিলু বাইরে আনন্দিত হলেও অন্তর যেন ফেটে যাচ্ছে । যাকে একদিন ফিরিয়ে দিয়েছিল সে আবার ফিরে এসেছে । আবার সেই পুরোনো বন্ধুর মতো কথা হয় । কিন্তু শ্রুতি যেন নিজেকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও সে যে আগের নীলুকে পেয়েছে। সময় পেলেই নীলুকে ফোন আর নীলু বসে থাকত কখন সেই পতিক্ষিত গলা শুনতে পাবে।নিলু তার আগের ভুল বুঝতে পেরে ঠিক করেছিল ভুল শুধরে নেওয়ার সময় এসেছে । এবার সে মনস্থির করল সামনে সরস্বতী পূজার দিনই তাকে সেই কথাটা বলবে সে যে কথাটা শুনতে চেয়েছিল , তাকে নীলু ফিরিয়ে দিয়েছিল। দুজনের কথাবার্তায় ঠিক হলো তারা সরস্বতী পূজোর দিন একে অপরকে এক ভালো উপহার দেবে। নীলু ভাবল শ্রুতি হয়তো আমাকে আবার সেই কথাটা বলবে। আবার উল্টো টাও হতে পারে আমি যদি সেই কথা বলি এই যদি আমাকে ফিরিয়ে দেয় । সে যাই হোক আমি বলবোই।

পঞ্চমীর সকালে তাড়াতাড়ি প্রস্তুত হয়ে অঞ্জলীর জন্য রওনা হয় স্কুলের দিকে। সবুজ পাজামা সবুজ পাঞ্জাবিতে নীলুকে খুব সুন্দর লাগছিল। দুজনে একসঙ্গে অঞ্জলী দেবে বলে নীলু অপেক্ষা করতে লাগল। কখন শ্রুতি আসবে আর কখন অঞ্জলী দেবে। স্কুলে অনেক ভিড় ,আর এই ভিড়ে খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল। যতটা সম্ভব খোঁজা যায় ততটাই চেষ্টা করতে লাগল, কিন্তু পাওয়া গেল না। 

নিরাশাগ্রস্ত হয়ে একজায়গায় চুপটি করে বসে ভাবতে লাগল। কেমন দেখতে হবে শ্রুতিকে , ওকি সেই আগের মতোই হবে নাকি শরীরের পরিবর্তন ঘটেছে। সে আগে যখন অঞ্জলী দিতে আসত কি অপরূপ সুন্দর লাগত তাকে। 

যখন শাড়ী পড়তো, চোখে কাজল লাগত, রজনীগন্ধার মালা দিয়ে খোঁপা বাঁধতো, তখন ওকে ফাল্গুনের শুক্লপঞ্চমীতে এক স্বরস্বতীর মতো লাগত ওকে। তাহলে কেন তাকে আমি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। এই সব কথা ভাবতে ভাবতে ক্রমে অঞ্জলী শেষ হতে চলল। এদিকে পুরোহিত মশাই ডাকছে যারা বাকি রয়েছে তাদের অঞ্জলী দেওয়ার জন্য। শ্রুতি আসবেনা ভেবে নীলু বিষণ্ন বদনে মণ্ডপের দিকে এগোতে লাগল। হঠাৎ তার চোখে পড়লো ফুলের সাজি হাতে স্কুলের সেই চিরায়ত নীল পাড়ের সাদা শাড়ী পরে এক মহিলা স্কুলের গেট দিয়ে মণ্ডপের দিকে এগিয়ে আসছে। প্রথম দেখাতে চিনতে না পারলেও মণ্ডপের দিকে এগিয়ে আসতে তাকে চিনতে পারলো।
‘এই তো শ্রুতি’।
এই আনন্দমুখর অনুষ্ঠানে কেন এমন শাড়ী পরে এসেছে। কোথায় গেল সেই ফুল দিয়ে খোঁপা বাঁধা, কোথায় গেল সেই চোখের কাজল কোনো কিছুই নেই শ্রুতির বদনে। এখন এসব কথা ভাবার সময় নয়, অনেকদিন পর দেখা হয়েছে আগে অঞ্জলী শেষ করি তারপর বাকি কথা। শ্রুতি কাছে আসতেই নীলু বলে উঠল
‘চল শ্রুতি আগে অঞ্জলী দিয়ে দিই’।
‘হ্যাঁ,চল অনেক দেরি হয়ে গেল’।

দুজন একসঙ্গে অঞ্জলী দিল,দেওয়ার পর প্রসাদ খাওয়া শেষ করে একটা নিরিবিলি জায়গায় বসে দুজনে মিলে গল্প করতে লাগল। নীলু যেই বলতে যাবে সেই কথাটি অমনি সেই সময় মা-মা চিৎকার করতে করতে এক বাচ্চা মেয়ে তাদের দিকে দৌড়ে আসছে। নীলু এদিক ওদিক তাকাল কাউকে দেখতে পেল না। সেইখানে কেবল তারা ছাড়া আর কেউ ছিলনা। বাচ্চা মেয়েটিকে দেখে মনে হয় তিন বছরের বেশি হবে না। সেই মেয়েটি দৌড়ে এসে শ্রুতিকে জড়িয়ে ধরল, শ্রুতি তাকে কোলে তুলে নিল। ততক্ষনে নীলু ভারাক্রান্ত মনে পরাজিত সৈনিকের মতো ফিরে আসছে। শ্রুতি যখন চোখ তুলে দেখে নীলু অনেকটা দূরে চলে গেছে। শ্রুতি ডাকল নীলুকে
‘নীলু শোন, দাঁড়া তুই, আমার উপহার টুকু নিয়ে যা’।
নীলু পিছন না ফিরে উত্তর দিল 
‘না থাক, আমি উপহার পেয়ে গেছি’।

———-/—-সমাপ্ত———-/——